অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 555বার পড়া হয়েছে।
ওগো তুমি যে আমার কত প্রিয়
কেমন করে বুঝাই বল।
তুমি তো তা জান না
জেনে ও না জাননা।
অনেক সময় ধরে চেষ্টা করছে আনোয়ার আরিফার রাগ কমাতে।মন ভাল করার জন্য সে গান গাচ্ছে ।পাশের ছোট্ টোকাই মেয়েটা হাসছে।
আপা রাগ রাইখেন না ।ভাইজান খুব ভাল দেখেন।এইযে আপনার লাইগা ফুল কিনব বলে এই ফাকে ফুলের তোড়াটা গছিয়ে দিল আনোয়ারের হাতে টোকাই মেয়েটি।
আনোয়ার হেসে ফেলল বলল কিরে তুই ও তো দেখি ভাল পলিটিকস শিখে গেছিস মালা গছাই দেওয়ার।
না আমি জানি ভাইজান আপনি এখন অবশ্যই আপার রাগ কমানোর লাগি ফুল কিনবেন।
আরিফার এখন ও রাগ কমেনি।দাত কিড়মিড় করে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।আজকে সে প্রতিজ্ঞা করছে আজকে কিছুতে আনোয়ারের সাথে কথা বলবেনা।প্রতিদিন দেরী করবে।এইভাবে পার্কে একা একটা মেয়ে কতক্ষন বসে থাকতে পারে।আশে পাশে বাজে লোকের ভিড় জমে যায়।ওইগুলি মনে করতেছে সে ওইধরনের মেয়ে।এক ফাজিল বেপরোয়া বখাটে তার চারিদিকে চক্রাকারে ঘুরছে আর বলছে
একা নাকি যাবা নাকি?
রাগে আর ভয়ে আরিফার ইচ্ছা হচ্ছিল আনোয়ার এর মাথাটা ছেচে ।প্রায় আধাঘন্টা পরে বাবু নাচতে নাচতে আসছে।
আমি কালকে থেকে পার্কে আসছিনা যাও।সে বেশ ঝাঝের সাথে বলল।
আমি কি ইচ্ছা করে দেরী করছি সোনা।এমন পাজী আমার বসটা ।আমি সব গোছাই বের হচ্ছি বলবে আমাকে এই ফাইল নিয়ে আসেন ।আমার রিপোর্টে ছোট ভূল হলে ও কাটা ছেড়া করে আবার প্রিন্ট করতে বলে।
ফাজলামী নাকি? শারমীন এবার আনোয়ার এর বসের বিরুদ্ধে গজরাতে থাকে।তুমি করবে কেন বলবে সব লাইট অফ করে দিয়েছ কম্পিউটার বন্ধ ।
ওইভাবে কি আর বসের সাথে বলা যায়।কাজ করতে হলে এগুলি সহ্য করতে হবে।
তাদের মুখোমুখি ওই বদ ছেলেটা এখন ও বসে আছে।বেপরোয়াভাবে আনোয়ার কে সম্পূর্ন অগ্রাহ্য করে আরিফার দিকে তাকিয়ে আছে।
দেখনা এইজন্য তো মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে।বদটা আধাঘন্টা ধরে আমার পিছনে লাগছে।
দাড়াও বেটারে শায়েস্তা করতেছি আমি বলে আনোয়ার উঠে দাড়াল।
না না আরিফা আতকে উঠে হাত ধরে আনোয়ার থামানোর চেষ্টা করল।বাদ দাও বাজে ছেলে।হয়ত পকেটে ছুরি টুরি নিয়ে বসে আছে।
আনোয়ার আরিফার হাত ছাড়িয়ে উঠে দাড়াল।
ছেলেটা এখন ও বেপরোয়াভাবে সাঈদকে অগ্রাহ্য করে আরিফা কে লক্ষ্য করে শীষ দিয়ে যাচ্ছে আর গান গাচ্ছে আমি রোমিও তুমি জুলিয়েট।প্রেম করিতে আর করনা গো লেট।
আনোয়ার আস্তে গিয়ে পাশে দাড়াল বদটার ।সানগ্লাস টা খুলে নিল চোখ থেকে।ছেলেটা এই আক্রমনের জন্য প্রস্তুত ছিলনা।সাধারনত দেখা যায় কাপল হলে প্রেমিকার নিরাপত্তার কথা মনে করে ছেলেরা ঝামেলায় জড়াতে চায়না।কাজেই বখাটা ভাবছিল আনোয়ার মুখ বুঝে সব সহ্য করবে।কিন্তু তার পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব ছিলনা আনোয়ার তার দ্বিগুন ত্যাদোড়।অন্যায় দেখলে এখানে পাচ ছয়টা ছেলে থাকলে ও এগুলিরে পিটিয়ে যেত।সে মারামারি বিশৃংঙ্খলা করতে পছন্দ করেনা তাই বলে অন্যায় আচরন কখনও মুখ বুঝে হজম করেনা।এটা তার বাবার শিক্ষা।যতটুকু সম্ভব অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে অসহায়কে সাহায্য করবে।
কি ব্যাপার আমার সানগ্লাস ছেলেটা তোতলাতে শুরু করল।
দাড়া দেখি তোর চোখ ঠিক আছে নাকি ? অপারেশান লাগবে মনে হয়।তুই তাকাই আছিস আরেকদিকে আমি ভাবছি তাকাই আছিস আমাদের দিকে।তুই ট্যারা নাকিরে।
ছেলেটা টেরা না হলে ও ত্যাড়া।জবাব দিল তেরছা করে।
না টারা না তবে মাঝে মধ্যে সামনে যা দেখি ট্যারা হয়ে যাই।
তাই দাড়া তোর ট্যারা চোখ এমন ট্যারা করমু এখন এই চোখ দিয়ে যাতে আর মেয়ে দেখতে না হয় বলে ঠাস ঠাস করে সেকেন্ডের মধ্যে ফাজীলটা বোঝার আগে দুই গালে দুই চড় মেরে বসল।
এবার বদটা ভয় পেয়ে উঠে দাড়াল কিন্তু শাসিয়ে গেল যাওয়ার আগে।
কাছে আসা মাত্র আরিফা এক চিৎকার দিল।আশ্চর্য তোমার কি দরকার ছিল মাস্তানী করা।
আনোয়ার ও মনে মনে রেগে গেল আরিফার উপর।আমি মাস্তানী করলাম না মাস্তানকে টাইট দিলাম?
ওই হল একই কথা।আরিফা ও সমান তালে চিৎকার করে জবাব দেয়।টেনশন আর ভয়ে তার দিশেহারা অবস্থা।
বেয়াদব তোমাকে বিরক্ত করছিল তোমার উচিত ছিল তার জবাব দেওয়া।সেটা তো করনাই আমি করছি এখন আমার সঙ্গে ঝগড়া করছ।রাগে বিরক্ত হয়ে আনোয়ার জবাব দেয়।
এবার আরিফা অপ্রস্তুত হয়ে যায়
মেয়েরা কি এসব জবাব দিতে পারে? কুন্ঠার সাথে বলে।
অবশ্য ই জবাব দিবে।কখন ও এগুলোকে ভয় পাবেনা।ভয় পেয়ে চুপ করে এগুলির অন্যায় কে প্রশ্রয় দেওয়া হয়।দরকার হলে স্বাভাবিক ভদ্রভাবে প্রতিবাদ করে বলবে যে আপনি বন্ধ করুন এসব।অন্যায়কারীর চোখের দিকে তাকিয়ে সাহসের সাথে বলবে।অন্যায়কারীর মেরুদন্ড বাকা হয়।তোমার প্রতিবাদে সে ভয় পেয়ে যাবে।তাছাড়া মনে করবে ভাল কাজ করার সময় আল্লাহ র নাম নিয়ে নিবে।আললাহ ই সাহায্য করবে।
আস্তে আস্তে আরিফা শান্ত হয় এবং সে কিছুটা লজ্জা অনুভব করে নিজের ভীত দূর্বল হৃদয়ের পরিচয়ে । একই সঙ্গে মনে মনে আনোয়ার এর জন্য গর্ব অনুভব করে ভিতরে ভিতরে।
দুজনে মনে সংকল্পের মত বলতে থাকে যাই হোক না কেন আমার অন্যায়ের সাথে বাস করবনা কখন ও।দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে একটু হাসল।
তখন সন্ধা ঘনিয়ে আসছে দেখে হাতের ব্যাগ নিয়ে দুজন উঠে দাড়াল।আস্তে আস্তে বাসার দিকে রওয়ানা করল।মনে তাদের দৃঢ় প্রত্যয় সুন্দর আগামী দিনের পথ চলায়।
সমাপ্ত
৬২৯ বার পড়া হয়েছে
প্রতিবাদ তো করবো,
তার ও যে এ যুগে বিপদ…….
অনেক ভাল লাগলো।
কাশেম ভাই আপনি কবিতা লিখছেন না কেন?আপনি ভাল আছেন তো? আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপু অনেক ভাল লাগল । দোয়া রাখবেন ।
ধন্যবাদ শাহীন।গল্পটা ঠিকমত লেখা হয়নি।এডিট করতে হবে।তরপর ও ধন্যবাদ পড়ার জন্য
গল্পটি ভাল লাগর । আর যাই হোক । ফুলের তোরা দিয়ে কিভাবে মান ভাঙ্গাতে হয় অন্তত তা তো শিখলাম । শুভ কামনা । ভাল থাকুন ।
ধন্যবাদ রহমান ভাই
কাশেম ভাইয়ের সাথে সহমত ।
আমিও শান্ত এর সাথে একমত।
খুব সুন্দর গল্প ।
ধন্যবাদ ।
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা সুমন।দুইটুকরা কাশ্মীরি শাল কোথায়।জোড়া লাগাতে চাচ্ছিলাম।
সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে হবে।
ধন্যবাদ আমির ভাই।সুন্দর মন্তব্য।
আমাদের অনুভূতি গুলো দিন দিন ভোতা হয়ে গেছে। এখন আর প্রতিবাদ করার ভাষা পাই না। ইচ্ছাও হয় না।