আমরা করব জয় একদিন
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 532বার পড়া হয়েছে।
দশম পর্ব
এই পাহাড়টার একটা সুন্দর শেপ আছে।খেয়াল করেছ আরিয়ান?নোয়া বেশ উতেজিত হয়ে ছোটাছুটি করছে পাহাড়ের একমাথা থেকে আরেকমাথায়।তাকে দেখে মনে হচ্ছেনা শত্রুর তাড়া খেয়ে প্রানভয়ে ভীত হয়ে তারা এই পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে।
আরিয়ান স্নেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সন্তানের দিকে। অন্য মানুষের পক্ষে এমনকি নোয়ার পক্ষে ভাবা দূরহ হবে আরিয়ান আর তার রক্তের বন্ধন।।আরিয়ান আর নোয়ার বয়সের পার্থক্য বেশী হলেও হবে দশ বছরের প্রভেদ ।নোয়া আরিয়ানকে তার বন্ধুর মত মনে করে ।মঙ্গলগ্রহের টুইন ক্লোন হিসাবে তার পূনর্জন্ম টাইম মেশিনের সময় সংকোচনে সে তার মূল বয়স থেকে পনর ষোল বছর পূর্বের পৃথিবীতে চলে এসেছে।তাকে স্বাভাবিকভাবে নোয়ার চেয়ে সামান্য বড় তার বড় ভাই এর মত মনে হবে।বাবার মত কিছুতে মনে হয়না।
আইমার চেহারায় শরীরে সময় প্রকৃতির ছাপ পড়ে গিয়েছে।আইমা তার কিছুটা বয়স্ক হয়ে যাওয়া চেহারা দেখে ওয়লেটের আয়নায়।দীর্ঘি্নিশ্বাস ফেলে ভাবে জেলানের সাথে আমাকে আর মানায়না।আমি এখন আর পূর্বের সম্পর্ক নিয়ে ভাববনা।জেলান এখন আমার কাছে মৃত ।শুধু এক স্মৃতি ।সে এখন আরিয়ান আমার ছেলের বন্ধু।তাকে নিয়ে কল্পনা করা এখন আর শোভা পায়না।
আরিয়ান এসে তার পাশে বসে পড়ল।নোয়া আশেপাশে দেখতে গিয়েছে তার টেলিষ্কোপিক ক্যামেরা নিয়ে।পরিচয় হওয়ার পর এই প্রথম দুইজন একা পরস্পরের কাছাকাছি হল।আইমা একই আবেগ বোধ করছে ।জেলান তার কাছে থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় যেই আবেগ ছিল এখন সেই আবেগ বিদ্যমান মনে ।আসলে চেহারায় জেলানের কোন পরিবর্তন হয়নি পরিবর্তন যা হয়েছে তা আইমার।
আইমা কেমন আছ?গভীর আবেগে জেলান জিজ্ঞাসা করে।
খুব আবেগপ্রবন হয়ে যায় দুইজনে।আর কোন কথা দুজনের মুখে আসেনা।
নোয়াকে দৌড়ে আসতে দেখে দুইজনে ছিটকে উঠে দাড়ায়।
আরিয়ান তোমার সাহায্য দরকার।নোয়ার স্বরে উত্তেজনা।
শত্রপক্ষকে কাছাকাছি ঘুরতে দেখছি।আমি আমার ক্যামেরার মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল রেইনবো তৈয়ারী করতে যাচ্ছি।যার ফলে তার বিপরীত দিকে ক্লাউড তৈয়ারী হবে।আমরা ক্লাউডের আড়ালে আত্নগোপন করব।এই ক্লাঊড স্মোক এর আবরন ভেদ করে ওরা আমাদের খুজে পবেনা আপাতত।
ব্র্যাভো মাই সন ব্রিলিয়ান্ট আইডিয়া খুশীতে উত্তেজনায় আরিয়ান চিৎকার করে বলে।
সঙ্গে সঙ্গে আরিয়ান আইমা দুজনে বিব্রত হয়ে পড়ে।
নোয়ার এসব দিকে মনোযোগ নাই।কিংবা আরিয়ান কিছু বললে সে ব্যাপারটা নিয়ে মাথা না ঘমিয়ে বলল আস বাবা আমাকে একটু হেল্প কর।হেসে বলে।
ক্যামেরার দুইটা বিশাল নব আছে যেটা দিয়ে দুইজন দুইপাশে চমৎকার রেইনবো আর দুইপাশে ক্লাউড তৈয়ারী করে ফেলল একমিনিটের কম সময়ে।তারা তিনজনে ক্লাউডের মাঝখানে আত্নগোপন করে বসে রইল।
টানা দুইঘন্টা নোয়া আরিয়ান ক্যামেরায় চোখ রেখে বসে রইল।তারা দেখছে সাইবর্গদের গতিবিধি।কিন্তু শত্রুপক্ষ এখন ও সন্ধান পায়নি।ক্রমাগত তারা আরিয়ানদের মাথার উপর চক্কর দিয়ে যাচ্ছে।তাদের ট্রান্সমিট ডিভাইস অ্যারো কি দিয়ে আরিয়ানদের গতিবিধি ঠিক জায়গায় নির্দেশ করছিল কিন্তু যেহেতু স্মোক রেডিয়েশানের কারনে টিভি স্ক্রীনে কিছু দৃশ্যমান হচ্ছিলনা তারা ভাবছিল ডিভাইস নষ্ট হয়ে গিয়েছে সম্ভবত।
শেষে তাদের একজন যে সবচেয়ে হিংস্র বুদ্ধিমান সেই বলল আমরা ট্রান্সমিট ডিভাইসকে কেন ফলো করছিনা? কামেরা না থাক তো কি হয়েছে? ওদেরকে আমি ঠিকই খুজে বের করব।
সরাসরি ট্রান্সমিটের ডিরেকশনে নির্ভূলভাবে আরিয়ান নোয়াদের স্মোক নেট বরাবর আসতে লাগল সাইবর্গ দল এখন ।
শেষ মূহূর্তে নোয়া বুঝতে পেরে চিৎকার দিয়ে উঠল।আরিয়ান মাম্মিকে বাচাও।তোমরা টাইম মেশিনে করে পালাও ।আমি এদেরকে দেখছি।
আরিয়ান নোয়ার কোন কথা শুনলনা।একহাতে আইমাকে অন্য হাতে নোয়াকে ধাক্কা দিয়ে টাইম মেশিনে বসিয়ে সুইচ অন করে দিল অতীতের পৃথিবীতে।সঙ্গে সঙ্গে মেশিন ঘুরতে ঘুরতে আরিয়ানের দৃষ্টিসীমা সাইবর্গ দুষ্ট হানাদারদের ত্রিসীমানা থেকে অনেক দুরের অতীতের পৃথিবীতে চলে গেল।
আইমা নোয়া চিৎকার করার সময় ও পেলনা।
দুষ্ট সাইবর্গের কিলার বাহিনী আরিয়ানকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলল।
হ্যালো আরিয়ান আমরা বহুকাল যাবত তোমকে খুজে যাচ্ছি।সেইতো ধরা পড়লেই।শুধু শুধু হয়রান করালে আমাদের নিজে ও হয়রান হলে।বলল ভয়ন্কর দর্শন ভেন্কেশ সাইবর্গ।
এটাকে পিটিয়ে যানে তোল।চিৎকার করে দলের লোকদের হুকুম দিল।
সম্পূর্ন অসহায় নিরুপায়ের মত বন্দী হল আরিয়ান পুনরায়।
এদিকে আরিয়ানের টাইম মেশিন উড়তে উড়তে তারা এসে পড়ল অচেনা সুন্দর সবুজ ভূমিতে।আইমা চমকে তাকিয়ে দেখে তার পাশে বালক নোয়া বসে আছে।
মাম্মি তোমকে এত সুন্দর ইয়াং লাগছে কেন?নোয়া উত্তেজনায় চিৎকার করে উঠে।
নোয়া আমরা অনেক আগের সময়ে অন্তত বিশ থেকে পচিশ বছর আগের পৃথিবীতে চলে এসেছি সময় বলয় ভেঙ্গে টাইম ট্র্যাক্সে।
দুইজন দুইজনের দিকে বিষ্ময়ের চোখে তাকিয়ে রইল।
তারা সম্পূর্নরুপে ভূলে গেল আরিয়ানের কথা।
আরিয়ানকে বসানো হয়েছে মঙ্গলগ্রহের কনডেম টর্চার সেল যেখানে ভয়ন্কর প্রিজনারদের শাস্তি দেওয়া হয়।চেয়ারে বসিয়ে হাত পা লক করে দেওয়া হল।
চোখ বন্ধ করে সে তার প্রিয়তম স্ত্রী পুত্রের কথা ভাবল শেষবারের মত।
(চলবে)
৬৪৩ বার পড়া হয়েছে
খুব ভাল হচ্ছে বিজ্ঞান কল্প কাহিনী । শুভ কামনা । ভাল থাকুন ।
ধন্যবাদ রহমান ভাই। ভালো থাকবেন।
ভাল লাগল এই পর্বও। লিখে যাও আপি
ধন্যবাদ আপি।
আপনার মাধ্যমে আমরা একজন দুর্দান্ত কল্প কাহিনী লেখক পেয়ে গেলাম —– স্যালুট আপনাকে ।
আপনাকে ও রিটার্ন স্যালুট। ভালো থাকবেন
চলতে থাক
অনেক ভাল লাগা।
ধন্যবাদ কাশেম কবি। ভালো থাকবেন