আমরা করব জয় একদিন
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 782বার পড়া হয়েছে।
পঞ্চম পর্ব
সে দাড়িয়ে আছে গোলাকৃতি বিশালাকার মঙ্গলগ্রহের সবচেয়ে পুরাতন ইতিহাস কক্ষে।যেখানে যুগ যুগ ধরে সব মানবসভ্যতার ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে।সবচেয়ে পুরাতন থেকে গতকালের ইতিহাস পর্যন্ত সংরক্ষন করা হয়েছে অতি নির্ভূলভাবে যত্নসহকারে।এই ইতিহাস কক্ষটির সীমানা হবে ৪৫০০ হাজার কিলোমিটার বর্গমাইল।পুরো কক্ষপ্রদক্ষিন করতে সাধারনভাবে কয়েকশত বছর লাগার কথা যা তার পাওয়ার টাইম মেশিনের মাধ্যমে মাত্র পাচমিনিটে প্রদক্ষিন করতে সক্ষম হয়েছে।যা সে খুজছিল তার সন্ধান এখন মেলেনি।তার মত মিক্সড মঙ্গলগ্রহের প্রানীদের জন্মবৃত্তান্ত জানার চেষ্টা করছে গত কয়েকদিন ধরে।
তার নাম আরিয়ান নিনিয়াত।সে এখানে কম্পোট্রনিক সেন্টারে মহাকাশ খ্যাত আইওয়াতে কর্মরত একজন পারমানবিক বিজ্ঞানী।তার পারমানবিক শক্তির স্পেস ডিসটরশন ফিল্ড এর সুত্র এক্স টু যাবতকালের পদার্থবিদ্যা গনিতবিদ্যার পূর্বের সব এটমিক থিয়োরীকে ভূল প্রমান করেছে।মাত্র আঠার বছর বয়সে সে পরিনত হয়েছে জীবন্ত কিংবদন্তী এই গ্যালাক্সির সবচেয়ে বিখ্যাত পারমানবিক বিজ্ঞানী।
তার মতে যেহেতু ফিল্ড সবসময় অপরিবর্তনীয় ডিসটরশনের ফাকগুলি সবসময় ভরাট থাকবে এবং এই ফিল্ডগুলি সবসময় পাই r2 কনষ্ট্যান্ট কম্পোন্যান্ট হিসাবে কাজ করবে ।গোটা সৌরজগতে এই অভাবনীয় থিয়োরী হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে।অনেক বুজুর্গ বিদ্বান মহাকর্ষ বিজ্ঞানী শ্রদ্ধামিশ্রিত কৌতুহলের সাথে তাকে দেখতে লাগল।
যে বড় হয়েছে এক অ্যাসাইলামে যেখানে তার মত মিক্সড প্রানীদের বিতৃষ্ণার চোখে দেখা হয়।সে না মানুষ না যন্ত্র সম্পূর্ন রকমের।তার আশ্রমে সবাই তাকে দেখত অনেকটা ভয় শ্রদ্ধা মিশ্রিত ঘৃনার চোখে।সবজায়গায় সে নিজেকে একচ্ছত্র অধিপতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করত ।সে রেসে গাড়ীর আগে পৌছে যায়।খুব দ্রত স্টেপে পাহাড়ের চুড়ায় পৌছে যায়।অসম্ভব কঠিন পাজল বড় বড় বোদ্ধারা মিলাতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছে তাদের বক্তব্য এই পাজল ভূয়া এর কিছু পার্টস অবশ্যই মিসিং সেটা সে সমাধান করে ফেলে একমিনিটের ও কম সময়ে।তার অসাধারন মেধা দক্ষতার কারনে তার সমবয়সীর সঙ্গ থেকে বঞ্চিত।সবাইকে তাকে কাছে আসতে দেখলে পালিয়ে যায় নিজের অদক্ষতা প্রকাশের ভয়ে।সে নিজে ও ঠিক প্রানখুলে কার ও সাথে মিশতে পারেনা।
কোথায় যেন আমার প্রভেদ এখানের মানুষের সাথে।যদি আমি কৃত্রিম উপায়ে ল্যাবরেটরীতে সৃষ্ট রোবট গুলির মত হই তাহলে কেন এত জিনিস আমাকে ভাবায়।
কে আমি?
কোথা থেকে এসেছি?
কেন আমার মনে হয় সুদুর অতীতে কোথাও আমার অস্তিত্বের শিকড় আছে।
এই প্রশ্নগুলি কুরে কুরে খাচ্ছে তাকে গতকিছুদিন হল।থেকে থেকে বিষন্ন হয়ে যাচ্ছে কোন একটা স্মৃতি ঝলকের মত যেন ফ্লাশব্যাক হয়ে তার মেমরীতে ঠাই করার চেষ্টা করছে।
সন্ধা আগত প্রায় গত তিনদিন ধরে এই গ্রহের উথ্থান শতবছরের ভৌগলিক ইতিহাস মহাশূন্যের প্রানীসভ্যতা তন্ন তন্ন করে সার্চ করল।এখন ও সন্তুষ্ট হওয়ার মত তথ্য খুজে পায়নি।
আমি নিশ্চয় ভূল ওয়েব সাইটে ব্রাউজ করছি।ভীষন মন খারাপ হয়ে গেল তার।মন খারাপ হলে এখানের ব্লু আইস ফ্লাওয়ার লেকটাতে কিছুক্ষন বসে থাকে।এর পানি উপর থেকে দেখা যায়না সারাবছর আইস দিয়ে ঢাকা থাকে।সম্পূর্ন নীল রংয়ের বরফ তাতে শুভ্র সাদা গোলাপ ফুটে আছে ।ফুলের উপর বসে আছে সব বিচিত্র রংয়ের প্রজাপতি।আবার বরফের উপর কৃত্রিম কিছু ডাক ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পিছনে থেকে কার ও হাতের স্পর্শ পেল কাধে।
হোয়াটস হ্যাপেন্ড মাই ডিয়ার?এখানে একা বসে আছ কেন?জিজ্ঞাসা করলেন আ্যাজারন বেন তার বস সহকারী বিজ্ঞানী বলা যায়।আবার তিনি একইসঙ্গে এই আশ্রমের সুপারিন্টেন্ডেন্ট।তিনি আরিয়ানকে অত্যন্ত স্নেহের চোখে দেখেন।
আমি জানিনা ফাদার সবসময় কোন একজন মানুষ আমাকে ডাকছে নিকট অতীত থেকে।আমি কোথাও যেতে চাচ্ছি তার বাধায় থেমে যাচ্ছি।
আপনি বলতে পারেন আমকে কোথা থেকে আনা হয়েছে?
সে কথা অনেকবার বলেছি সান তোমাকে ল্যাবরেটরীতে তৈয়ারী করা হয়েছে কৃত্রিমভাবে।বললেন বেন।
সে কথা সবসময় শুনি অসহিষ্ণুভাবে পায়চারী করতে করতে বলে সে।আর ও কিছু অবশ্যই আছে ।কেন আমি এসব স্বপ্ন দেখি ফাদার বেন আপনি বলতে পারেন।অসম্ভব সুন্দর সুমধুর স্বরে কেও যেন গান গাইছে।কেও যেন ডাকছে আমাকে দুর পাহাড়ের ওই পার থেকে ফাদার।আমি শান্তি পাচ্ছিনা কিছুতেই।এক টা যন্ত্রনা আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আন্কল বেন।
বেন একই সঙ্গে ফাদার আন্কল স্যার।
আ্যাজাবন বেন একটু কাতর হয়ে পড়লেন আরিয়ানের হতাশায়।যা তিনি কখন ও শোনাতে চাননি আজকে মুখ ফসকে তা বলে ফেললেন মায়ায় পড়ে।
আমাকে বলা হয়েছে তোমাকে তাই জানানো হোক।কিন্তু আমার পিসিতে তোমার সম্পর্কে যে তথ্য আছে আসলে আমি তোমার যন্ত্রনা দেখে জানতে গিয়ে এই তথ্যগুলি বের করি।
না না নিনি আমি এটা শেয়ার করতে পারিনা তোমার সাথে।এটা কোড ভাঙ্গার সমান অপরাধ।এমনকি ওরা জানলে আমার কোর্ট মার্শাল হবে তার শাস্তি এটমিক চুল্লীতে মৃত্যূদন্ড।
থাক তবে আমি জানতে চাইনা আমার জন্মরহস্য ফাদার।বিষন্ন গলায় কথা শেষ করে নিনিয়াত উঠে দাড়ায়।
নিনিয়াত চলে যেতে উদ্যত হতে তিনি বলে উঠলেন
নিনি দুইযুগ আগে পৃথিবী নামক গ্রহের ধ্বংসের কথা আলোচনা করি
হ্যা হ্যা বলুন উত্তেজনায় অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে ফাদারের দিকে
তুমি ছিলে সেই সভ্যতার সর্বশেষ মানব।তোমাকে তারা হত্যা করেছিল।শুধু তোমাকে নয় পুরা পৃথিবীর পারমানবিক বিপর্যয়ের জন্য তারা দায়ী ।তোমাদের পৃথিবীর কিছু উচ্চাভিলাষী বিজ্ঞানী এই বিপর্যয়ের সঙ্গে জড়িত। আমাদের রাজা সাইকোবর্গ তার কমান্ডো সাইকোসিস গ্রপ তাদের এক অমানবিক গবেষনাগার আছে এখানে।গবেষনার কাজে মানুষের প্রানকে তারা গিনিপিগের মত ব্যবহার করছে।তারা তোমার জীবন্ত দেহ থেকে প্রথমে অস্রপ্রচারের মাধ্যমে ব্রেইন অপসারন করেছে অতঃপর হৃদপিন্ড অপসারন করে ল্যাবরেটরীর অত্যাধুনিক ৯৪ মডেল রোবটে তা সংযোজন করেছে।আর তোমার দেহ খাচাটি আমাদের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।বলে তিনি একটি চাবির গোছা দিলেন আর দিলেন কিছু পাসওয়ার্ড আর সংরক্ষিত ওয়েব সাইটে ঢুকার ডোমেইন নাম্বার।
ALE3468/'[][oiuy7/’ghyfjl অদ্ভুত এক কোড দিলেন কাগজে লিখে তার জন্মরহস্য ভেদ করার জন্য দিলেন বেন নিনিয়াতকে।
আ্যাজাবন খুব ক্লান্ত ভাবছেন আজ রুমে গিয়ে ঢুকবেন আর বিছানায় চলে যাবেন।সেই সুযোগ আর ওনার হলনা।তার বেডরুমে ইজিচেয়ারে কেও একজন অন্ধকারে বসে অপেক্ষা করছেন।
হাওডি অ্যাজারবন আপনার সব কুশল তো? তিনি উত্তর করার সুযোগ পেলেননা এটম বুলেটের ধাক্কায় পড়ে গেলেন এবং তাৎক্ষনিক মৃত্যূবরন করলেন।
নিনিয়াত খুব দ্রত সার্চ করে যাচ্ছে লষ্ট ওয়াল্ড এই ওয়েব পেজটির নাম।অথার আননোন।
শেষ পেজে এসে থেমে গেল স্ক্রীনে যার মুখ ভেসে উঠল তা দেখার জন্য যেন সে প্রস্তুত ছিলনা। এ যেন আয়নায় সে নিজেকে দেখছে।
লাইব্রেরী কক্ষে কার ও ছুটে আসার পদশব্দ শোনা যাচ্ছে।আরিয়ান টের পেল তারা তাকে ধরতে আসজে।তার ভিতর থেকে কেও বলল পালাও দ্রত।খুব দ্রুত স্পেস সূট পরে নিল যার সাথে লাগানো আছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টাইম মেশিনটি।
জানালা দিয়ে সে ঝাপিয়ে পড়ল মহাশূন্যে।দরজায় দেখা গেল লাইব্রেরীর সশস্র প্রহরীদের ঠিক তখনই।
(চলবে)
৮৫৫ বার পড়া হয়েছে
এই বারের পর্বটা ভাল আর আকর্ষণীয় হয়েছে। সায়েন্স ফিকশন এ এতদিন আপনার শুধু ফিকশন ছিল, এবার মনে হচ্ছে সায়েন্স এসেছে। আপনি অনেক টার্ম ব্যবহার করেছেন। এগুলোর ব্যবহার বেশ ভাল হয়েছে। তবে খেয়াল রাখবেন যে ভুল টার্ম যেন না আসে। অনেক অনেক সুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ। ভুল টার্ম যাতে না আসে সে চেষ্টা থাকবে। তবে যে টার্মগুলি আমি ব্যবহার করব সম্ভবত তার সাথে আপনার পরিচয় থাকবে । এজন্য আমি চাই আপনি আমার লেখার ভুল দেখিয়ে দিবেন। আমাকে অ্যডভাইস করবেন।আমার তথ্যভান্ডার সমৃদ্ধ না।সব বিজ্ঞান টার্মগুলি এখন মনে নাই।
আপনি পড়ে কমেন্টস করেছেন সেজন্য অনেক কৃতজ্ঞতা।
যতই পড়ছি ততই ভাল লাগছে। তবে কেন জানি আমি বিজ্ঞান কাহিনী লিখতে পারছি না।
বিজ্ঞান কাহিনী লিখতে হলে সাইন্স এর বাচ্কগ্রাউন্ড থাকতে হবে। বা কিছু সাইন্স মাগাজিন বা কিছু বিজ্ঞান টার্মস অনু পরমানু সামান্য কিছু জ্ঞান থাকলে শুরু করতে পারেন। চাইলে কিনা করতে পারে মানুষ । আপনিও পারবেন । ঘটনা আপনার মাথায় আছে শুধু সামান্য অনু পরমানু রিলেটেড তথ্য জেনে নিলে হবে। ধন্যবাদ কমেন্টস এর জন্য।
খুব ভাল লাগছে ।
অনেক অনেক শুভকামনা ।
ধন্যবাদ সুমন
অনেক অনেক শুভকামনা ।
বিজ্ঞানের ছাত্র নই, তাই বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী লিখতে সাহস করিনা । আপনার লেখা খুব ভাল । লিখে যান অবিরত । শুভ কামনা ।
কিছু বিজ্ঞান সাময়িকী পড়ুন।বিজ্ঞানর কিছু টার্ম মানবদেহ প্রান লম্পর্কে সামান্য নলেজ নিশ্চয় আছে?তাহলে শুরু করে দিতে পারেন।সাহস করে ফেলুন লিখে ফেলুন।হয়ে যাবে।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।শুভকামনা।