খান ভবন হরর
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 982বার পড়া হয়েছে।
সপ্তম পর্ব
গাড়ির ভিতরে মানুষ গুলো ভয়ে আতঙ্কে জমে গেল। যদিও সবাই এখানে কম বেশি সবাই সাহসী। অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সাথে লড়তে লড়তে সবার মনোবল সাহস অনেকটা ই কমে গিয়েছিল। মশালধারী রা তাদের গাড়ির কাছে ক্রমাগত এগিয়ে আসছে। এখনো তাদের মুখ দেখা যাচ্ছেনা মশালের আলোতে ও। মনে হচ্ছে মুখোশে ঢাকা সবার মুখ।
আমরা সবাই একসঙ্গে আচমকা ঝাপিয়ে পরে নেমে ওদের দিকে গুলি করা শুরু করব। মনে রাখবে ওদের ছত্রভঙ্গ করা ই হবে উদ্দেশ্য।আহত বা মারা নয় সরাসরি আক্রমন করলে আমরা গুলি করব নচেত নয়। বলল পুলিশ এর লিডার টি।
সবাই গাড়ি খুলে লাফ দিয়ে নেমে দৌড়াতে দৌড়াতে আকাশের দিকে আর তাদের পা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে লাগলো। লোকগুলি লাফ দিয়ে আশেপাশের অন্ধকার এ অদৃশ্য হয়ে গেল মুহুর্তের মধ্যে। পুলিশ দুজন তাদের বুহ্য এর মধ্যে রহমান সাহেব আর আহত পুলিশ কে নিয়ে দরজার সামনে ধাক্কা দিতে লাগলো। তারা এখনো জানেনা খান ভবনের ভিতরের মানুষ গুলির কি অবস্থা।
হে আল্লাহ সবাইকে ঠিক রাখো রহমান সাহেব মনে মনে গুঙিয়ে উঠেন।
তিন চার মিনিট পরে দরজা খুলে গেল। ভিতরে দেখা গেল সবার আতঙ্কিত মুখ।
খুব দ্রুত ঘরে ঢুকে শক্ত ভাবে সব দরজা বন্দ করে তালা লাগিয়ে দিল সব দরজায়।
ওরা আক্রমন করেছে আমাদের একজন পুলিশ বলে উঠলো। তার মুখ এখনো ফ্যাকাশে হয়ে আছে।
কি হয়েছে আমরা ও বাহিরে এদের হামলা সামনে থেকে আল্লাহ র রহমতে উদ্বার পেয়ে আসলাম বললেন রহমান সাহেব।
দরজায় ধাক্কার আওয়াজ পেয়ে আমরা দরজা খুলে দেই। ভেবেছি আপনারা হবেন পুলিশ টি বলল। অনেকক্ষণ কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে আমি একটু মুখ বের করে যা দেখলাম পুলিশ টি আবার আতকে উঠলো।
দেখি অনেকগুলি ভয়ংকর দেখতে মানুষ কালো পোশাকে আপাদমস্তক ঢাকা তাদের সাথে ভয়ংকর চেহারার কুকুর না নেকড়ে ঘরের দিকে আসতেছে। আমি দৌড়ে দরজা বন্দ করলাম। একটা কুকুর লাপ দিয়ে আমার গায়ে পড়তে নিছিল। এই ভাই আমারে বাচাইছে। সামিয়ার এক চাচাত ভাই কে দেখিয়ে বলল।
মুখোশ পরা মনে হলো। কেও ভয় পাবেনা। আমরা ও আছি অনেক মানুষ। সাহস দেওয়ার চেষ্টা করলো পুলিশ এর লিডার টি।
রহমান সাহেব মুগ্ধ হয়ে গেলেন তার সাহস দেখে। তার হাতের ক্ষত এখনো ভয়ংকর হয়ে আছে। কিন্তু সবাইকে সাহস দিয়ে যাচ্ছে।
প্রতি দরজা জানালার মুখে আমরা অস্র নিয়ে পাহারায় থাকব। আপাতত রাত্রি টা কোনভাবে টিকে থাকতে পারলে সকালে সবাইকে নিরাপদে যার যার জায়গায় পৌছে দেওয়া হবে।
আজকে রাতে ঘুমাবনা। সবাই পাহারায় থাকব। ওরা আবার আসবে। বলা যায়না ওরা যেকোনভাবে ঘরে ঢুকার চেষ্টা করতে পারে।
মেয়েরা সবাই ভয়ে চিত্কার করে উঠলো।
আরো দুই ঘন্টা পার হলো এইভাবে। শত্রুপক্ষ থেকে কোনো সারাশব্দ পাওয়া গেল। সবার আস্তে আস্তে একটু ভয় কমতে লাগলো। সবাই দরকারী কাজ সারতে লাগলো। কেও কেও ওয়াশ রুম এ গেল। হাত মুখ ধুলো।
সারাদিন এর ঝামেলায় সবাই খেতে ভুলে গিয়েছিল। প্রচুর খাওয়ার তারা অর্ডার করে নিয়ে এসেছিল। এখন সব খাওয়ার নিয়ে সবাই ছোট ছোট প্লেট বাটি যে যার মত নিয়ে খেতে শুরু করলো।
কেও কেও দেওয়ালে হেলান দিয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলো।
একটা তীক্ষ্ণ আওয়াজ পেয়ে লাফ দিয়ে উঠে দাড়ালো সব ছেলেরা। শব্দ টা মনে হচ্ছে ছাদের থেকে আসছে।
ছাদ তো বন্দ তাইনা ? একজন পুলিশ জিজ্ঞাসা করলো।
একজন বলল সম্ভবত বন্দ। কিন্তু কারো দেখার সাহস হলনা।
চল আমি তুমি গিয়ে চেক করে দেখি। লিডার আরেকজন পুলিশ উপরে সিড়ি দিয়ে ছাদ দেখার জন্য গেল।
উপর থেকে জোরে চিত্কার শোনা গেল। সবাই ভয়ে হিম হয়ে গেল।
কোনো কিছু ডানা ঝটপটের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে উপর থেকে তার সাথে গুলির আওয়াজ। সম্ভবত পুলিশ দুজন বিপদে পড়েছে।আমাদের সাহায্য দরকার তাদের।
সামিয়ার সাহসী বন্ধু টি আর সামিয়ার তিনজন চাচাত ভাই চারজন ভাঙ্গা বিছানা থেকে চারটা বড় লাঠি খুলে নিল। আল্লাহ এর নাম নিয়ে ছাদের দিকে রওনা করলো ।
ছাদের কাছে ওরা যা দেখল তাতে তাদের আত্না উড়ে গেল। পুলিশ দুজন পরে আছে সিড়ির কাছে মারাত্নক জখম হয়ে দুজনের মুখে হাতে অসংখ্য আচর খামচির দাগের মত। ব্যথায় দুজনে চিত্কার করছে। দুইজন লাঠি দিয়ে পাখিগুলি কে তাড়া করার চেষ্টা করল। যাওয়ার পর দৌড়ে ছাদের দরজা ছিটকিনি বন্দ করে দিল।
আহত দুই পুলিশ চার জন কাধে করে আকড়ে নিচে নিয়ে আসল।
এবার আর কারো চোখে ঘুম নাই। সবাই অনাগত বিপদের আশংকা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে অপেক্ষা করতে লাগলো অজানা ভয়ংকর শত্রুর।
(চলবে)
১,১১২ বার পড়া হয়েছে
ও মাই গড ! কালো পোশাকর ভয়ঙ্কর মানুষগুলো কি পিশাচ সাধক না নিজেরাই জোম্বি জাতীয় কোন মৃত প্রেতাত্বা ।
টিভি সিরিজ ওয়াকিং ডেড এর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে কাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি আর এ্যাকশন দেখে ।
যাই হোক , খুব ভাল লাগছে গল্পের টানটান উত্তেজনা আর ভৌতিক পরিবেশের প্রভাব বিস্তার ।
পরবর্তী পরবের অপেক্ষায় রইলাম ।
ধন্যবাদ সুমন।আমার লেখার চেয়ে মন্তব্যে উত্তেজনার আঁচ বেশী পাওয়া যাচ্ছে।খুশী হলাম এত থ্রিল ছড়ানোতে।শুভকামনা থাকল অনেক।
এ তো দেখছি সপ্তম পর্ব !!! তার মানে এর আগে আরো অনেকগুলো পর্ব আছে, যা নাকি পড়াই হয়নি আমার!! তারপরও এটা পড়ে বেশ ভালো লেগেছে, হয়তো আরজু আপুর লিখার দক্ষতার জন্য। খুব চমৎকার লিখেছেন আপনার এই পিশাচ কাহিনী। ভালোলাগা আর মুগ্ধতা রইলো।
এত চমৎকার কমেন্টস করে তো ফেরদৌসী আপু খুশী করে দিয়েছে।অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য কমেন্টস করার জন্য।অনেক শুভকামনা থাকল।
শরীর কাটা দিয়ে উঠে আপি ভয়ংকর
কাহিনী পড়ে। লিখে যাও সাথেই আছি
এইতো চাই আপি।কাটা লেগে দাড়িয়ে পড়।অনেক ধন্যবাদ আপি কমেন্টসের জন্য।শুভকামনা থাকল্।
তারপর কি হলো? খুব সুন্দর হচ্ছে লেখা। শ্রদ্ধা জানবেন।
তারপর কি হলো পরের পর্বে জানবেন।ধন্যবাদ আপনি আমার শ্রদ্ধা জানবেন।
থর সইছে না কিন্তু,
অপেক্ষায় আছি,
শুভ কামনা।
ধন্যবাদ কাশেম ভাই।শুভ কামনা।