তারুয়া সমুদ্র সৈকত যেন কক্সবাজার-কুয়াকাটাকেও হার মানিয়েছে!!!
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1337বার পড়া হয়েছে।
দ্বীপজেলা ভোলার একমাত্র সমুদ্র সৈকত তারুয়াকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে তা হয়ে উঠছে না। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকরা সেখানে যেতে পারছেন না। যারা যাচ্ছেন তারাও জীবনের ঝুঁকিসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অথচ পর্যটন মন্ত্রণালয় কিংবা স্থানীয় প্রশাসন একটু উদ্যোগ নিলে পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতটিতে অনায়াসেই যেতে পারেন।
জেলা শহর থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে এই তারুয়া সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। একশত পয়ত্রিশ কিলোমিটার পাকা সড়কের পর পনের কিলোমিটার নৌ-পথ পেরিয়ে সেখানে যেতে হয়। চারিদিকে জলরাশি বেশিষ্ট সাগরের উত্তাল ঠেউয়ে পলি জমতে জমতে প্রায় ৪০ বছর পূর্বে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে উঠে তারুয়া। তারুয়া সমুদ্র সৈকতে পর্যটকরা একই সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন বিশাল সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাশি, নানা জাতের পাখিদের কল-কাকলি, বালুকাময় মরুপথ আর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের ছায়াঘন মনকাড়া নিবিঢ় পরিবেশে সময় কাটানোর সুযোগ, বৈচিত্রময় প্রাণী আর সাগরের উত্তাল গর্জন সব মিলিয়ে মায়াবী হাতছানী। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে দ্বীপটিকে সাজিয়ে তুলেছেন। তবে সেখানে এখনো গড়ে উঠেনি মানুষের বসবাস। এখানে হরিণ ও ভাল্লুকসহ নানা প্রাণী ও দৃষ্টিনন্দন মাটি রয়েছে। সবুজ বৃক্ষের সমারোহ আর পাখিদের কলরবে মুখরিত তারুয়া দ্বীপ পর্যটন এলাকা হিসেবে গুরুত্বের দাবী রাখে। তারুয়ায় দাঁড়িয়ে ভোররে সূর্যের আগমনী বার্তা দেখা যায়। পাশাপাশি সন্ধ্যার আকাশে সিঁড়ি বেয়ে এক পা দুপা করে লালমিায় ভরে ওঠার সেই অতুলনীয় দৃশ্যও দেখা যায়। পর্যটক আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে মুগ্ধতার বন্ধনে আবদ্ধ করার যাদুকরি শক্তি রয়েছে এই তারুয়া দ্বীপরে। আর রাতে নতুন শাড়িতে ঘোমটা ঝড়ানো নব বধূর ন্যায় নিঝুমতায় ছেয়ে যায় পুরো এলাকা। পর্যটক আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে মুগ্ধতার বন্ধনে আটকে দেয়ার যাদু রয়েছে যেন তারুয়ায়। তাই দেশের তৃতীয় সমুদ্র সৈকত হিসাবে তারুয়া গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন ভ্রমনার্থীরা। কিন্তু তারুয়া সমুদ্র সৈকতের এই প্রাকৃতিক রূপ-সৌন্দর্যের কথা দেশবাসী তো দুরের কথা ভোলার বহু মানুষের কাছে এখনও অজানা।
তারুয়ায় শীতকালের চিত্র কিছুটা ভিন্ন ধরনের। সুদুর সাইরেরিয়া থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখিদের আগমনে যেন নতুন রূপ ধারন করে এলাকাটি। তখন পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয় তারুয়া।
সমুদ্র সৈকতটিতে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত কোন নৌ-যান নেই। বিশেষ ব্যবস্থায় কিংবা রিজার্ভ করা স্পীড বোট, ট্রলার বা ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া করে সৈকতে যেতে হয় পর্যটকদের। সৈকতে নামার জন্য কোন পন্টুন বা টার্মিনাল নেই সেখানে। যে কারণে পর্যটকরা সেখানে যাবার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারছেন না। যারা এই কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে প্রকৃতির টানে সেখানে যান, গিয়ে মুগ্ধ হন ঠিকই কিন্তু নিরাপত্তাসহ সুপেয় পানি বা বিশ্রামাগারের অভাবে চরম বিড়ম্বনার শিকার হন।
এখানে যদি হোটেল-রেস্তোরাঁ থাকতো তাহলে মানুষ এখানে এসে ৫-৬ দিন থাকতে পারতো। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে এখানে আরো বেশি পর্যটক এসে ভীড় জমাবে। এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে তারুয়া সমুদ্র সৈকতটিকে একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। তারা জানান, পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য একটি টার্মিনাল, একটি পুলিশ ফাড়ি, একটি রেস্ট হাউজ প্রয়োজন। তাহলে আমাদের এলাকা উন্নত হবে। আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবী করছি, ঢালচরের হাজারো মানুষের প্রাণের দাবী। আজকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তাদের মত করে আমাদের এই এলাকাটা যেন পর্যটন এড়িয়া হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
কিভাবে যাবেন:
বন ও সাগরে তারুয়া দ্বীপ ভোলা শহর থেকে তারুয়ায় যেতে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হলেও নৌ-পথে যাওয়ারসহজ উপায় রয়েছে।
কোথায় থাকবেন:
তারুয়া দ্বীপ এখনো ওতোটা প্রসিদ্ধ না হয়াই সেখানে তেমন কোন থাকার ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তবে আপনি ভোলা শহরে থেকেই তারুয়া দ্বীপের সৌন্দর্য উপবোগ করতে পারেন।
তথ্য সূত্রঃ বিভিন্ন দৈনিক।
১,৬৬০ বার পড়া হয়েছে
অসাধারন!!
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
দেখার ইচ্ছা আছে, যাবার ইচ্ছা আছে কিন্তু সময়ের অভাবে যেতে পারি না।
তারুয়া সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে আমার ও অজানা ছিল।আপনার লিখা পড়ে জানলাম।আশা করছি বাংলাদেশে এবার গেলে দেখে আসতে চেষ্টা করব।ছবিগুলি দেখে আমার ও খুব পছন্দ হয়েছে জায়গাটা।
ধন্যবাদ আপনাকে ।সবসময় আপনি লিখুন আমাদের মত।আপনার লিখা থেকে পাঠককে বঞ্চিত করবেননা।
অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকরা সেখানে যেতে পারছেন না।
বাংলাদেশে এই রকম অনেক জায়গা আছে যা পর্যটন এর জন্য খুব ভালো।
আজ নতুন একি সুন্দর সৈকত এলাকা সম্পর্কে জানলাম।