ফুলের নাম ফিউসা বা ফুসিয়া (Fuchsia)
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 3521বার পড়া হয়েছে।
বেশ কিছুদিন আগে কলকাতার সানন্দা ম্যাগাজিন এ এক ডিজাইনারের সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম ।উনি বলেছিলেন তার ডিজাইন আর রঙের খেলা সবই প্রকৃতি থেকে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে নেয়া। আসলেই যদি একটু খেয়াল করে দেখি তাহলে দেখব প্রকৃতির মাঝেই আছে সব রঙ আর রুপের মেলা।
সময়টা সেপ্টেম্বর এর শেষ অক্টোবর এর শুরু ।খুব সংক্ষিপ্ত একটা ট্যুর এ আমি আর মাহমুদা আপা গেলাম নেপাল। হাতে সময় ছিল খুব কম তারপরও দু একটা জায়গায় কি না গেলে চলে? শত হোক বিদেশে এলাম । সেবার লুম্বিনি আর কাঠমান্ডুর আশেপাশে একটু ঘুরেছিলাম।
কাঠমান্ডুর কাছেই আছে লালিতপুর জেলা আর সেখানে আছে ফুলচকি পাহাড়। সেই পাহাড়ের পাদদেশে প্রকৃতি তার রূপের ডালি বিছিয়ে বসে আছে । সে পথে যাওয়ার সময় আমি প্রথম এই ফুল দেখি।
আমার তো বিশ্বাস হচ্ছিল না এটা প্রকৃতির সৃষ্টি । প্রথমে ভেবেছিলাম মানুষের হাতে তৈরি ফুল। একটা মাচার মত স্থানে নিচে মুখ করে ঝুলে ছিল এই ফুল।
আমার অনুরোধে ড্রাইভার গাড়ি থামালে আমি নিচে নেমে ভাল করে দেখলাম । নাহ এটা মানুষের তৈরি না আসল ফুল ই। রানি গোলাপি আর বেগুনির কন্ট্রাস্টে গড়া অসাধারন সুন্দর এক ফুল।
সে সময় এর নাম ওরা বলতে পারে নাই ,আর যে নেপালি নাম বলেছিল তা আমি বুঝি নাই । পরে যখন আবার থাইল্যান্ড যাই তখন পাতায়ার মাদাম নং নুচ বাগানে গিয়ে জানতে পারি এই ফুলের নাম ।
ফুলটির নাম ফিউসা বা ফুসিয়া ।
ফরাসি উদ্ভিদবিদ ও সন্ন্যাসী সর্ব প্রথম এই ফুলটি কারাবিয়ান দ্বীপ হিস্পানিওালা যা কিনা বর্তমানে ডমিনিকান রিপাবলিক এবং হাইতি, সেখানে ১৬৯৬ থেকে ১৬৯৭ এর মাঝামাঝি সময়ে আবিস্কার করেন ।
পরবর্তীতে ফরাসি উদ্ভিতবিদ চার্লস প্লুমিয়ার এই ফুলের নাম জার্মান উদ্ভিদবিদ লেওহারত ফুচস এর নামে নামকরন করেন ফুসিয়া ।
আসল জার্মান ভাষায় এর উচ্চারণ হয় ফুক্সিয়া (“fook-sya” /ˈfʊksja) কিন্তু ইংরেজি উচ্চারণে বলা হয় ফিউসা (fyusha” /ˈfjuːʃə) ।
বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ১১০ জাতের ফুসিয়া দেখতে পাওয়া যায় । এদের বেশির ভাগ প্রজাতি দক্ষিন আমেরিকায় দেখা গেলেও কিছু কিছু প্রজাতি মধ্য আমেরিকা থেকে মেক্সিকো আর নিউজি ল্যান্ড থেকে তাহিতি পর্যন্ত দেখা যায় ।
উষ্ণ ক্রান্তিয় আর উপক্রান্তিয় অঞ্চল এই ফুল এর আদি আবাসস্থল । এই ফুল জাপান চিন নেপাল এ দেখা যায় তবে দুই একটা প্রজাতি ।
বাগানের জন্য আদর্শ অসাধারন রঙের বৈচিত্রে ভরপুর এই ফুল পুস্পপ্রেমীদের মনে আলাদা স্থান করে নিয়েছে ।
বিশ্বায়নের এই যুগে তাই ফুসিয়া/ফিউসা তার আদি আবাস স্থল ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলেও দেখা যায় ।
৩,৪২৫ বার পড়া হয়েছে
ফুসিয়া সম্পর্কে জানতে পেরে ভালো লেগেছে । পরবর্তীতে আর অনেক কিছু জানতে পারব বলে আশা করছি । ধন্যবাদ
ভাল লেগেছে আপনার এই জন্য আমারও ভাল লাগল ।চেষ্টা থাকবে পরবর্তীতে আর ও কিছু জানানোর । ধন্যবাদ
খুব সুন্দর তথ্যবহুল পোষ্ট, আপা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ ,ভাল থাকুন
অসম্ভব সুন্দর পোস্ট আপি। এই ফুল আগে দেখিনি। ধন্যবাদ আপি
নতুন জিনিষ দেখাতে পেরে আমি আনন্দিত,ভাল থাকুন আপু