Today 23 Nov 2024
banner
নোটিশ
ব্লগিং করুন আর জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের রিটার্ন বিমান টিকেট! প্রত্যেক প্রদায়কই এটি জিতে নিতে পারেন। আরও আছে সম্মানী ও ক্রেস্ট!
banner

আত্মসম্মানবোধ?

লিখেছেন: সেতারা ইয়াসমিন হ্যাপি | তারিখ: ১০/০৩/২০১৫

এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1675বার পড়া হয়েছে।

যখন ইন্টার মিডিয়েট প্রথম বর্ষে পড়ি বাংলা ক্লাস নিতেন নমিতা ম্যাডাম,পড়ার ফাঁকে একদিন আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন “নারী” আর “না’রি” র মধ্যে পার্থক্য কি? সেদিন মনে অনেক আস্থা নিয়ে বলতে পেরেছিলাম “নারী” মানে আল্লাহর সৃষ্টি “মানুষ” আর “না’রি” মানে “পারিনা”। আমার এহেন ঝটপট উত্তর শুনে খুব খুশি হয়ে ম্যাডাম বলেছিলেন “ভেরি গুড”। আজ নমিতা ম্যাডাম বেঁচে নেই, খুব করে মনে পরছে হঠাৎ সে দিনটার কথা, ম্যাডাম বেঁচে থাকলে কাছে গিয়ে “সরি” বলে আসতাম, বলতাম আমার সেদিনের উত্তরটা ভুল ছিল ম্যাডাম “নারী” মানে মানুষ নয়, “নারী” মানুষ হয়না, “নারী” তো কেবল রূপক অর্থে মানুষ, “নারী” কেবলই পণ্য, “নারী” শুধুই ভোগের সামগ্রী।

“নারী”র নিজস্বতা বলে কিছু থাকতে নেই, শুনেছি “নারী”কে নাকি বিধাতাই সৃষ্টি করেছেন পূরুষের বাঁদী হিসাবে, সেবিকা হিসাবে, ক্লান্ত, শ্রান্ত পুরুষ তাঁর তেষ্টা মিটাবে “নারী”র স্পর্শে, কামুক পুরুষের কামনা পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত “নারী” তাঁর বাহুবন্দী দাসী। “নারী”র ইচ্ছে অনিচ্ছের তোয়াক্কা কে করে? “নারী” মেনে নেয়, ভাবে এই তাঁর পরম ধর্ম নিজেকে পুরুষ মানুষের যোগ্য ভোগ্য পণ্য হিসাবে গড়া।

“নারী” খুব ছোটবেলা থেকেই তোমাকে কোনঠাসা করে বাড়তে দেয়া হয়, শেখানো হয় কিছু চিরাচরিত বুলি,যার বাইরে তুমি যেতে পারোনা, যদি যাও সমাজ সংসারের কি বীভৎস ঘৃনাভরা দৃষ্টি সবার, যা সইবার ক্ষমতা দেয়নি বিধাতা তোমায়।

আজন্ম পরাধীন তুমি, তোমার চলাফেরায় জীবনযাপনে তুমি কোন না কোনভাবে অন্যের উপর নির্ভরশীল, কোথাও তোমার নিরাপত্তা নেই, বাসে, ট্রামে চলার পথে তোমাকে নিজের সম্ভ্রম রক্ষায় কুঁকড়ে থাকতে হয়। কোন পুরুষ মানুষের পাশে বসে তুমি সহজ হতে পারোনা কখনও, কারণ তাঁরা তোমাকে মানুষই ভাবেনা। তাই নিজের সিট এর বাইরে এসে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় তোমার গাঁয়ে গাঁ ঘেষার সুখটুকু থেকে তাঁরা কেন বঞ্চিত হবে? হাত পা ছড়িয়ে না বসলে মানুষ হিসাবে তাঁদের যে বড় আত্মসম্মানে লাগে, তাতে তোমার সুবিধা না অসুবিধা তা নিয়ে ভাবার মত সময় কই? আর সেই মনমানসিকতা টুকুই বা ক’জনের আছে? !!!

তোমাকে সেই শৈশবেই শেখানো হয় কি করে সব দিক মানিয়ে চলতে হয়। কারণ তুমি যে “নারী” তোমাকে পারিনা বললে হবেনা তুমি যে সর্বংসহা…হা হা হা হা ।। সব সইতে হবে তোমাকে। কি বিশ্রীভাবে চলে তোমার প্রদর্শনী। চোখে জল আসে আমার। কেউ তোমার মনটা দেখেনা, দেখেনা তোমার যোগ্যতা, তাঁর চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় তোমার দেহ শৌষ্ঠব, তোমার রুপ লাবন্যতা, যৌবনে কি ডিমান্ড তোমার…তোমাকে উপমা দেয়া হয় “হেভি মাল”… ছিঃ…লজ্জায় ঘৃনায় মরে যেতে ইচ্ছে করে আমার। “নারী” তোমাকে যারা “মাল” বলে সম্বোধন করে আমার তাঁদের মানুষ বলতে ঘেন্না হয়, খুব খুব বেশি ঘেন্না।

“নারী” সত্যি কি তুমি মানুষ? এর পরও কি তুমি নিজেকে মানুষ বলবে? পথে ঘাটে, আনাচে কানাচে, টিভি’তে পত্রিকার পাতায়, যেখানেই চোখ রাখি সেখানেই তোমার অপমান, তোমার অবহেলা, তোমার অসম্মান। মানুষ হিসাবে তোমার স্বীকৃতি দেয়নি স্বয়ং বিধাতাও, যার সৃষ্টি লগ্নেই অবহেলা তাঁর আবার কিসের আত্মসম্মানবোধ?

(আমি পূরুষ বিদ্বেষী কোন লিখা লিখতে চাইছিনা। আমি কেবল সেইসব মানুষদেরকে আমার মন থেকে ঘৃনাটুকু জানাতে চাইছি যারা “নারী”কে সম্মান করতে জানেনা আর তাই তাঁদের আমি মানুষও মনে করিনা কিন্তু দুঃখজনক হলেও আসল সত্যিটা হলো আমাদের এই নোংরা সমাজ ব্যবস্থায় এই শ্রেণীর কথিত মানুষের সংখ্যা এত বেশি যে হাতে গোনা যে কয়জন প্রকৃত মানুষ আছে তাঁরা মাথা তোলে দাঁড়াতেই পারেনা !!!)

 

1926786_1493098637643089_6769222191751120642_n

১,৬৪৩ বার পড়া হয়েছে

লেখক সম্পর্কে জানুন |
আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ... নিজেকে মানুষ ভাবতেই বেশি ভাল লাগে। আমার Academic Background: M.Sc. in Botany, MBA করেছি Bank Management -এর উপর, তারপরে PGDHRM Complete করলাম BIM (Bangladesh Institute of Management) থেকে....। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। বর্তমানে সেনা কল্যাণ সংস্থা-তে আছি...রিসার্স অফিসার হিসাবে... আমি লেখক নই...তবে লেখা আমার রক্তে মিশে আছে কারণ বাবা ছিলেন সাংবাদিক...ছোটবেলা থেকেই লিখার চেষ্টা করতাম...বাবার পত্রিকায় তা প্রকাশও হতো যদিও কোনটাই বাবার মন মত হতোনা তবুও আমাকে উৎসাহ দেয়ার জন্যই হয়ত ছাপতেন সেসব লিখা...যার কোনটাই আমি সংরক্ষন করে রাখতে পারিনি...হয়ত গুরুত্বই বুঝিনি তখন...আজ বাবা নেই পৃথিবীতে...আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম লেখা কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো আমাকে লেখাটা ধরে রাখতেই হবে অন্ততঃ বাবার জন্য। তাই মাঝে মাঝে হাবিজাবি লেখার চেষ্টা করি। খুব সাধারণ জীবন-যাপন করতে ভালোবাসি...বাবা বলতেন কারো উপকার করতে না পারলেও কারো ক্ষতির চিন্তা যেন মাথায়ও না আনি...সেটা মেনে চলার চেষ্টা করি। সুখী হওয়ার চেষ্টা করি, অল্পতে খুশি থাকার চেষ্টা করি আর সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজে বেড়াই তাঁর সৃষ্টির মাঝে। নিজের অবস্থান থেকেই চেষ্টা করি আশেপাশে সুবিধাবঞ্চিত-মানুষদের জন্য কিছু করতে। মানুষকে মানুষ ভাবতেই বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি মানব ধর্মই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধর্ম।
সর্বমোট পোস্ট: ৪৪ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ২৪৩ টি
নিবন্ধন করেছেন: ২০১৪-১২-০৩ ১০:০৫:০৯ মিনিটে
banner

২ টি মন্তব্য

  1. স্বপ্নীল মিহান মন্তব্যে বলেছেন:

    মূল্যবান জিনসের কদর বেশি থাকে। সৃষ্টি কর্তা নারীকে পুরুষের সহযাত্রী হিসেবেই সৃষ্টি করেছিলেন, তিনি কি জানতেন না প্রথম মানব একাকী এই পৃথিবী তে আসবে? তার সঙ্গী বানানোটাই এখানে মূখ্য। আর নারী কে পণ্য আমরা এবং কিছু নামধারী নারী স্বেচ্ছায় করেছে। প্রকৃতির নিয়ম আর মানুষের নিয়ম সম্পূর্ণ উল্টো জগৎ।

  2. অনিরুদ্ধ বুলবুল মন্তব্যে বলেছেন:

    //”“নারী” মানে আল্লাহর সৃষ্টি “মানুষ” আর “না’রি” মানে “পারিনা”//

    আপনি ভুল করেন নি। আপনার জবাব তখনো ঠিক ছিলো এখনো সঠিক।
    বেশি ভেবে অযথা বিভ্রান্ত হবেন না। মাথা উঁচু করেই বাঁচতে শিখুন।
    কতিপয় দুষ্ট পুরুষের হীণমন্যতার জন্য নিজেকে খাটো করে রাখার কোন মানে হয় না।
    তেমনি বলতে পারি কতিপয় নারীর খারাপের দায়ও সব নারীর বহন করা চলে না।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন.

go_top