ঈদ…সেই সময়……।
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1208বার পড়া হয়েছে।
আমাদের সময়ের বলতে আমাদের শৈশবের ঈদগুলো ছিল প্রকৃতির সাথে ঘেঁসা । যেমন , আমরা গ্রামীণ প্রাকৃতিক আবহে ঈদ শুরু করতাম । রমজান শেষে ঈদের আগের দিন সন্ধ্যে বেলা বাড়ীর বাইরে ঈদের চাঁদ দেখার আনন্দ ছেলে বুড়ো সব বয়সী মানুষেরা উপভোগ করতো । ঈদের দিন খুব ভোরবেলা ফজরের নামাজ শেষে সকলে মিলে নদীতে যেতাম গোছল করতে । ঈদের দিনের সেই পামরোজ সাবানের সুগন্ধ আর চোখে জ্বালা ধরা ফেনা আজো যেন শৈশবের সেই প্রকৃতির ঈদকে বার বার মনে করিয়ে দেয় । বাড়ি ফিরে ঈদের সকালে বছরের কাঙ্খিত নতুন জামা কাপড় তথা নতুন সেন্ডেলের ঘ্রান আনন্দের এক অন্য মাত্রার সংযোগ ঘটাতো । সকালের নাস্তার মেন্যুতে থাকত একটি বিশেষ খাবার আর তা হলো বাড়ীতে তৈরী চিড়ার সাথে টক দই যা খেতে হতো গুড়ের সংমিশ্রণে । সেই সময় আমাদের গ্রামগুলোর বেশীরভাগ ঈদগাহগুলো ছিল নদীসংলগ্ন মাঠে । বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দুরের সেই ঈদগাহে সামিল হতে ওজুর জন্য নদীতে নামতে হতো উঁচু পাড় থেকে প্রাকৃতিক সিঁড়ি বেয়ে । হুজুরের বয়ানে নিমগ্ন মানূষের নামাজ ও দোয়া শেষে কোলাকুলিতে ঘটত একে অপরের সৌহার্দ্যতা । সেই ঈদগাহ ছিল যেন হাজারো মানুষের মিলন মেলা !
- আজ আমাদের গাণিতিক হারে আর্থসামাজিক উন্নয়নের সাথে জ্যামিতিক হারে কমছে সৌহার্দ্যতা । গ্রামের সেই হাজারো মানুষের মিলনমেলা ঈদগাহ গুলোকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে প্রত্যেকের বাড়ির আঙ্গিনায় নিয়ে এসে কেমন যেন মেকি সভ্যতার এক সমাজ গড়ছি ! যেমন আজ সেই একান্নবর্তী কালচার ধ্বংস হয়ে আমরা প্রত্যেকে আত্মকেন্দ্রীকতার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি । ফলস্বরূপ আমাদের ভবিষ্যত্ প্রজন্মগুলো প্রকৃতি থেকে সরে গিয়ে অমানিশার ঘোর অন্ধকারের প্রতিনিধিত্ব করবে এটাই হয়তো স্বাভাবিক ! সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা ।
১,১৮৩ বার পড়া হয়েছে