উপন্যাস ” পাথরের মানুষ ” পর্বঃ ৮
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1374বার পড়া হয়েছে।
হুমায়রাকে মা পছন্দ করেছে , তাই আলমকে ভেঙ্গে বললো মেয়েটি কিন্তু খুব সুন্দর ।
কোন মেয়েটি মা ?
এখন তো চিনবি না , এক সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলছিস । মনে নেই না ?
ও ,তুমি হুমায়রার কথা বলছো ।
হ্যাঁ , ওকে আমার বউ বানাতে ইচ্ছে করছে ।
চিন্তা করবেন না , আল্লাহ যদি ভাগ্যে লিখে রাখে তো নিশ্চয় হবে ।
আস্তে আস্তে ওদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতায় পৌছে গেল । এ প্রেম যেন লাইলী মজনু , শিরিন ফরহাদ , রজকিনী চণ্ডীদাস ও পার্বতী দেবদাস ছাড়াও সকল বিশ্ব প্রেমিকদের পিছনে হটিয়ে দিল ।প্রতিদিনের খবর ও আবেগ প্রকাশ করতে পারে চিঠি ও সাক্ষাতে । এভাবে বছর দুয়েক পেরিয়ে গেল এদের খাঁটি প্রেমের সম্পর্ক ।
এখন দুজনই এস এস সি পরীক্ষার্থী । আর মাত্র ১ মাস পর দুজনের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে । একদিন হুমায়রা চিন্তা করল পরীক্ষায় পাশ করার পর কে কোন কলেজে পড়বে তা নির্দিষ্ট নেই । কলেজ জীবনে আমার থেকে সুন্দর মেয়ে পেলে যদি আমাকে ভুলে যায় । তখন আমার কি হবে , এ চিন্তা ওকে ঘুমাতে দেয়না , আলমকে হারানোর ভয় ওকে প্রতিনিয়ত তাড়া করছে । তাই নিরুপায় হয়ে আলমকে প্রস্তাব দিল ,
শেষ পরীক্ষার দিন আমরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করব । কলেজে পড়লে তোমার সাথে তেমন কথা হবেনা দেখা হবেনা । আমি থাকতে পারবনা আমার খুব কষ্ট হবে ।
তুমি কি পাগল হয়েছ ? প্রতিষ্ঠীত না হয়ে বিয়ে করলে দুজনকে কষ্টের পাথারে শুকনো পাতার মত ভাসতে হবে । কোন কূল কিনার খুঁজে পাবনা । সামনে দেখবে ঘোর আন্ধার , চোখে দেখবো সরিষা ফুল তখন ভালবাসা পালিয়ে যাবে ।
আমরা তো সংসার জীবনে ব্যস্ত হবনা , দুই এক মাস পালিয়ে থাকব । যখন উভয় পক্ষ মেনে নিবে তখন তুমি তোমার বাড়ি থেকে আর আমি আমাদের বাড়ি থেকে ।
তোমার বাবা কি তোমাকে পড়াবে ?
অবশ্যই পড়াবে । তুমি জাননা আব্বু আমাকে বেশি আদর করেন । যখন যা চেয়েছি তা পেয়েছি কোন দিন না বাক্য মুখে তুলেনি , তুমি এ নিশ্চিত থাকতে পার । প্রিয়া খুব কষ্ট পাবে বিধায় না বলতে পারল না আবার হ্যাঁ ও বলতে পারল না । তাই আলম বলল ,
তুমি যা ভাল মনে কর ।
বৃহস্পতিবার এস এস সি পরীক্ষা শুরু হলো , দুটি সুখের পায়রা একই রুমে পাশা পাশি বেঞ্চে পরীক্ষা দিচ্ছে । দুজনের পরীক্ষা খুব ভালই হচ্ছে । পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী , শেষ পরীক্ষার দিন পালিয়ে গেল কাশিম বাজার এক চাচার বাড়ি । এ রাতেই বিয়ের সমস্ত কার্য সম্পন্ন হলো । প্রায় দুই মাস আত্মগোপন রইল এক জোড়া কোকিল কোকিলা ।
এদিকে উভয় অভিভাবকরা বিভিন্ন জায়গায় তন্ন তন্ন করে খুঁজছে । কিন্তু কোথাও সন্ধান মিলেনি । আদরের ছোট ছেলের চিন্তায় আলমের মা খানা পিনা বন্ধ করে দিয়েছে । তার মুখে একটি মাত্র বোল আলমকে এনে দাও । জাহিদের মাধ্যমে সংবাদ পেল আলম হুমায়রাকে বিয়ে করেছে । এ খবর মাহফুজ স্যারও জেনে গেল । আলমের ভাইয়েরা এ বিয়ে মেনে নিতে পারল না । মা নানা ভাবে বুঝিয়ে বলল ,
ভুল তো করেই ফেলেছে এখন আর কি করার মেনে নে তোরা । বলা যায় না ছেলে মানুষ রাগের মাথায় যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটায় । এ ভয়ে মা দিন রাত কেঁদে থাকে । মায়ের এ অবস্থা দেখে মেনে না নিয়ে কোন উপায় ছিলনা । দু দিন পরই আলম নতুন বউকে নিয়ে বাড়িতে হাজির ।
এদিকে মাহফুজার স্যার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল । এমন কি অনেকের সামনে বলেছে ঐ মেয়েকে ত্যাজ্য করে দিয়েছে । ও মেয়ের পরিচয় তিনি কখনোই দিবেন না । হুমায়রার দুলা ভাই বাদশা সন্ত্রাস শ্বশুরকে বুঝিয়ে বলল ,
আপনি এত উত্তেজিত হবেন না , ছোট মানুষ আবেগের ফলে ভুল করেছে । আমি সমাধান করতেছি আপনি কোন চিন্তা করবেন না ।
( চলবে )
১,৩৯১ বার পড়া হয়েছে
ভালো লাগলো ।
পড়লাম সাথে আছি।
পড়ছি শান্ত ছোট ভাই। লিখে যাও।অনেক শুভকামনা রইল তোমার জন্য।
ভাল লাগল । লিখে যান অবিরত । শুভ কামনা ।
ভাল লাগল সত্য গল্প