চক্ষু,রেটিনা যে ভাবে কাজ করে -২৫(৫)
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1367বার পড়া হয়েছে।
বা হতে ডানে-
১)Ragnar Granit
জন্ম: ৩০ অক্টোবর ১৯00, হেলসিংকি, ফিনল্যান্ড।
মৃত্যু: ১২ই মার্চ১৯৯১, স্টকহোম, সুইডেন।
পুরস্কার প্রাপ্তির সময় যেখানে কর্ম রত ছিলেন: Karolinska Institutet, স্টকহোম, সুইডেন।
২) Haldan Keffer Hartline
জন্ম: ২২ডিসেম্বর ১৯০৩ , Bloomsburg, PA, USA
মৃত্যু: ১৭ইমার্চ ১৯৮৩, Fallston, MD, USA
পুরস্কার প্রাপ্তির সময় যেখানে কর্ম রত ছিলেন: Rockefeller University, New York, NY, USA
৩) George Wald
জন্ম:: ১৮ই নভেম্বর ১৯০৬, New York, NY, USA
মৃত্যু: ১২ইএপ্রিল ১৯৯৭, Cambridge, MA, USA
পুরস্কার প্রাপ্তির সময় যেখানে কর্ম রত ছিলেন: Harvard University, Cambridge, MA, USA
উপরোক্ত ৩ জন বিজ্ঞানী রেটিনার ফিজিওলজিক্যাল এবং কেমিক্যাল এর উপর কাজ করিয়া মেডিসিন অথবা ফিজিওলজীতে ১৯৬৭ সনে নোবেল বিজয়ী হন। (১)
রেটিনা কী?
পূর্বেই বলা হয়েছে,একটি ক্যামেরার অভ্যন্তরে ছবি ধারনের জন্য যেমন ফিল্ম থাকে, যেখানে বস্তুটির ছবিটি পতিত হয়, চোখের রেটিনাটাও ঠিক তেমনি বাহিরের বস্তুটি হতে আলোক রশ্মী রেটিনার উপর পতিত হয়ে বস্তুটির ছবি প্রতিফলিত হয়।চিত্র-১
চোখের অভ্যন্তরে বস্তু হতে নির্গত আলোক রশ্মীর ভ্রমন এপর্যন্ত শেষ। কিন্তু তখনো আমরা কোন বস্তু দেখতে পারিনা। কারন, মূলতঃ আমাদের এই চক্ষুগোলকের কোন কিছু দেখবার কোনই ক্ষমতা নাই।
হ্যাঁ, তার জন্য অত্যন্ত সুন্দর, নিশ্চিত,অথচ বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কী সেই বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যবস্থা?
কী করে এই রড ও কোন কোষে?
একেবারে সোজা সাপ্টা উত্তর । আর তা হল এই বিশেষ RECEPTOR কোষগুলী, রেটিনার উপর পতিত আলোক রশ্মীকে সরাসরি বৈদ্যুতিক প্রবাহে রুপান্তরিত করিয়া, সেখানে VISUAL CORTEX হতে প্রেরিত বিশেষ স্নায়ু OPTIC স্নায়ু তারের মধ্যদিয়ে VISUAL CENTER PRIMARY তে (১ম দৃষ্টি কেন্দ্র) কে পাঠিয়ে দেয়। (চিত্র-৪, ৫,৬)
V1 বার্তাটি V2 কে পাঠিয়ে দেয়।
এ সমস্ত বিষয় আগের পর্বে জানতে পেরেছেন।
যেমন ধরুন আপনি রাস্তায় চলবার পথে হঠাৎ দেখতে পেলেন আপনার পায়ের অতি নিকট দিয়েই একটি বিষাক্ত সর্প অতিক্রম করে যাচ্ছে। তখন আপনার প্রয়োজন অতিদ্রুত ও জোরের সহিত একটা লম্ফ দিয়া সর্পটাকে অতিক্রম করে যাওয়া বা এড়িয়ে যাওয়া।
VISUAL CENTER-2 বিশ্লেষন করার পর V2 ঐ তথ্যটাকে CEREBRAM এর আর একটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে FINAL CONCLUSION ও সিদ্ধান্ত হওয়ার পর MOTOR CENTER কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ লওয়ার নির্দেশ দেয়।
FINAL CONCLUSION কেন্দ্রকে বার্তা পাঠিয়ে দিলে, MOTOR কেন্দ্র আপনাকে দ্রুত লম্ফ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাংস পেশীগুলীকে স্নায়ু তারের মধ্য দিয়ে বৈত্যুতিক বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে করায়।
এভাবেই চোখের দ্বারা আমরা ঠিক যেমন ভাবে কোন কিছু দেখে থাকি, আবার একই ভাবে আমাদের মস্তিস্ক এর সংগে সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় কাজ গুলিও করিয়ে থাকে।(৩)
রেটিনার আকার আকৃতি
রেটিনার ব্যাসার্ধ -২২ মিমি,পুরত্ব-০.৫ মিমি। রেটিনার প্রান্তকে বলা হয় ORA SERRATA। রেটিনার কেন্দ্রে একটি সবচেয়ে শক্তিশালী দৃষ্টি কেন্দ্র রয়েছে, যাকে বলা হয় FOVEA. রেটিনার যে স্থানে অপটিক স্নায়ু গুলী একত্রিত হয়ে একটি SPOT তৈরী করেছে তার নাম BLIND SPOT. এই স্থান দ্বারা চোখ কিছু দেখতে পায়না।(২)(চিত্র-১)
এবার আসুন এই অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ রডছ(RODS) ও কোনছ (CONES) কোষ গুলী সম্পর্কে কিছু জানা যাক।(চিত্র-২)
রেটিনাতে প্রায় ১২০ মিলিয়ন “রড” কোষ রয়েছে। এই কোষ গুলী ডিম লাইটে দেখার সময় সচল হয়। এরা কোন রং দেখতে পায়না। আর “কোন” কোষ গুলী দিনের আলোকে দেখে এবং রং গুলী চিহ্নিত করতে পারে। “কোন” কোষের সংখ্যা ৬ মিলিয়ন এর মত।
আপনি যদি হঠাৎ দিনের আলোক হতে সিনেমা হলের পর্দার অভ্যন্তরে অন্ধকারে প্রবেশ করেন, তাহলে প্রথমে কয়েক মিনিট কিছুই দেখতে পাবেননা।
তার কারণ আপনি দিনের আলোকের মধ্যে থাকাবস্থায় আপনার “কোন” কোষ গুলী কাজ করতেছিল। আর “রড” কোষ গুলী তখন অকেজো ছিল।
আর যখন আপনি অন্ধকারে ঢুকে গেলেন তখন “কোন”কোষ অন্ধকারে দেখতে পারেনা। আর অন্ধকারে দেখার জন্য “রড” কোষ কে কার্যকরী হতে কয়েক মিনিট সময় লাগে।
তাই অন্ধকারে প্রথম কয়েক মিনিট দেখতে পাননা।
বিভিন্ন “কোন” কোষ বিভিন্ন ধরনের রং চিহ্নিত করে। একারনে যদি কারো হলুদ রং চিহ্নিত কারী “কোন” কোষ নষ্ট হয়ে যায় তখন সে হলুদ রং চিনতে পারবেনা। একই ভাবে লাল বা সবুজ রং চিহ্নিত কারী “কোন কোষের বেলায় ও ঘটবে।
ঐ ব্যক্তি যদি তখন রাস্তায় গাড়ী চালাতে যায় তখন সে রাস্তার সিগনালের আলোর লাল, সবুজ রং পার্থক্য করতে পারবেনা, এবং রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটাবে।
একারনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার সময় চোখের রং দেখার পরীক্ষাও লওয়া হয়। (চিত্র-৩)
চোখের এই গুরুত্বপূর্ণ রেটিনা কাদের দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়?
যে সমস্ত ডায়েবেটিক রোগীর BLOOD GLUCOSE নিয়ন্ত্রনে রাখেনা তাদের দ্রুত DIABETIC RETINOPATHY হয়ে চক্ষু নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশী।
অতএব সাবধান!! ডায়াবেটিছ হতে সর্বদা সতর্ক থাকুন!!
চিত্র-১
চিত্র-২, একটি “রড” ও একটি “কোন” কোষ।
চিত্র-৩, “কোন” কোষ গুলী বস্তুটি রং নির্ধারণ করতে পারে।
চিত্র-৪ রেটিনার “রড” (বামে) ও “কোন” (ডানে) কোষ হতে আলোক হতে রুপান্তরিত বিদ্যুৎ প্রবাহ সব চাইতে যে সোজা পথে ও হোরাইজনটাল ও অ্যামেক্রিন কোষের মধ্য দিয়ে ঘুরে আসা পথে, মস্তিস্কের দৃষ্টি কেন্দ্রে পৌছাইতে পারে।
চিত্র-৫, রেটিনা স্তরের পূর্ণ ডায়াগ্রাম। এখানেই “রড” ও “কোন” কোষ বস্তুটি হতে প্রতিফলিত আলোক রশ্মীকে বিদ্যুৎ প্রবাহে রুপান্তরিত করিয়া মস্তিস্কের পিছনের দৃষ্টিকেন্দ্রে পাঠানো হয়।
চিত্র-৬ (মস্তিস্কের পিছনে রেটিনা হতে 0PTIC স্নায়ুর মাধ্যমে কোন বৈদ্যুতিক বার্তা VISUAL CORTEX নামক স্থানে পৌছিলে , দৃষ্টিকেন্দ্রের V2 নামক স্থান সেটা বস্তুটির আকার, অবস্থান, রং ও গতি বিশ্লেষন করে ফেলার পরই আমরা সেই বস্তুটি দেখতে পাই ও তার সম্পর্কে জানতে সক্ষম হই।
চলবে-
পূর্ববর্তী পর্ব সমূহ দেখতে নীচের SITE এ যান-
২৫ তম পর্বের রেফারেন্স সমূহ-
১) http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/1967/
২) http://en.wikipedia.org/wiki/Retina
RETINAL WORK
৩) http://www.vetmed.vt.edu/education/curriculum/vm8054/EYE/CNSPROC.HTM
৪) NURO SCIENCE FOR KIDS
http://faculty.washington.edu/chudler/retina.html
৫) http://www.nkcf.org/how-the-human-eye-works/
১,৩৫২ বার পড়া হয়েছে