Today 23 Nov 2024
banner
নোটিশ
ব্লগিং করুন আর জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের রিটার্ন বিমান টিকেট! প্রত্যেক প্রদায়কই এটি জিতে নিতে পারেন। আরও আছে সম্মানী ও ক্রেস্ট!
banner

দি ওল্ড ম্যান এন্ড দি সী – আর্নেস্ট হেমিংওয়ে – ১৬

লিখেছেন: হামি্দ | তারিখ: ১০/০৮/২০১৪

এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1636বার পড়া হয়েছে।

বাংলা রূপান্তর © হামিদ 

সূর্যটা এখন অসহনীয় উত্তাপ ছড়াচ্ছে । বুড়ো ঘারে আর পিঠে সে উত্তাপ অনুভব করছে তীব্রভাবে । দাঁড় টানার সময় পিঠ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে ঘামের ফোঁটা। টোনা মাছগুলো আবার পানির নিচে চলে গেছে । যেসব মাছ টোপ হিসেব ব্যবহার হয় তাদের সবগুলোকেই জেলেরা টোনা বলে । এসব মাছের আসল নাম কেবল সেসময় বলা হয় যখন মাছগুলো বিক্রি করা হয় কিংবা নিজেদের মধ্যে টোপ হিসেব বিনিময় করা হয় । 

‘আমি ইচ্ছে করলে দাঁড় ছেড়ে দিয়ে ভেসে যেতে পারি অথৈ সাগরে, কিংবা বড়শির রশিগুলি পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে বেঁধে নিয়ে ঘুমিয়েও যেতে পারি । কিন্ত না, আমি এসবের কোনটাই করবো না। কারণ গত চুরাশি দিনে আমি কোনো মাছ পাইনি। আজ আমার পঁচাশিতম দিন । আজ মন দিয়ে মাছ ধরতে হবে’ – ভাবছিল বুড়ো । আর ঠিক তখনই দেখল একটা বড়শির সবুজ ফাৎনায় বেশ জোড়ের সাথে টান পড়েছে । 

‘মনে হয় পেয়েছি’- ভাবতে ভাবতে অনেক সাবধানে এমনভাবে বৈঠাটা তুলে নিল বুড়ো যাতে নৌকাটা কোনোমতেই দোল না খায় । ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল আর তর্জনী দিয়ে বড়শির দড়িটা আলতো করে ধরে রাখলো। তবে তাতে কোনো টান অথবা ভার অনুভূত হল না। দড়িটা হালকাভাবে ধরেই থাকলো বুড়ো । অল্পক্ষণের মধ্যই আবার টান অনুভূত হলো দড়িতে। যেন পরীক্ষা করে দেখছে মাছটি এমন হালকা একটা টান । তবে বুড়ো ঠিকই বুঝে ফেলল জিনিসটি আসলে কী । এটা একটা মারলিন মাছ। এক শ’ বাঁও নিচে সারডিন পোনার টোপটা গিলেছে। ছিপ থেকে দড়িটা খুলে হালকাভাবে ধরে রেখেছে বুড়ো যাতে প্রয়োজন হল আরও দড়ি ছেড়ে ঢিল দিতে পারে । মাছটা বুঝতেই পারবে না যে সে ধীরে ধীরে আটকে যাচ্ছে বড়শিতে । 

‘এই মাসে যখন এতো দূর আসতে পেরেছে তখন বোঝাই যাচ্ছে মারলিনটি বেশ বড়ই হবে’ – মনে মনে ভাবে বুড়ো । 

‘ভাল করে গিল বাছা, বেশি করে খা । অনেক তাজা সারডিন আর টোনা মাছের টোপ আছে বড়শিতে । ভাল করে গিলে ফেল। আছিস তো ছয় শ’ ফুট পানির নিচে গভীর অন্ধকারে । দরকার হলে আরেকটা চক্কর দিয়ে আয় অন্ধকার ঠান্ডা পানিতে । তারপর আচ্ছা মতো গিলে ফেল তাজা টোপসহ বড়শিটা’ – মনে মনে বলে বুড়ো । 

দড়িতে প্রথমে হালকা একটা তারপর বেশ জোড়ালো একটা টান অনুভব করল বুড়ো । মনে হচ্ছে সারডিন এর মুড়োটা বড়শির মাথা থেকে খুলে নিতে চাচ্ছে । তারপর আবার নিস্তব্ধতা । কোনো সাড়া নেই মারলিনটির । 

‘ফিরে আয় বাছা ! আরেক পাক ঘুরে যা ! গন্ধটা শুঁকে দেখ । কী চমৎকার তাই না? ভালো করে খা । সারডিন শেষ হলে তো টোনা তো আছেই । শক্ত, ঠান্ডা আর কী দারুণ মজার ! খেয়ে নে ওগুলো । লজ্জা পাসনে বাছা’ – চেচিয়ে চেচিয়ে বলছিল বুড়ো । 

বুড়ো আঙ্গুল আর তর্জনীর মাঝখানে দড়িটা ধরে রেখে অপেক্ষা করছে বুড়ো । তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তার সেই বড়শিটার দিকে । তবে অন্য বড়শিগুলোও চকিতে দেখে নিচ্ছে । কারণ মাছটি সাঁতরে পানির উপরের স্তরেও উঠে আসতে পারে । এসময় আবার মৃদু টান লাগল দড়িতে । 

‘আবার খাবে সে । হে ঈশ্বর ! তাকে টোপটা গিলতে সাহায্য করো’ – স্বভাবগতভাবে চেচাচ্ছে বুড়ো । 

ঈশ্বর মনে হয় এইবারে তার ডাক শুনবে না । মাছটি মনে হয় চলে গেছে । অনেক্ষণ বড়শিতে কোনো টান নেই । 

‘না, কিছুতেই চলে যেতে পারে না সে । যীশু জানে সে চলে যায় নি । সে আবার আসবে । হতে পারে সে আগেও কোন বড়শিতে আটকে গেছিল । সেসব মনে করে হয়তো সে বড়শিটা গিলতে দেরী করছে’ বলতে লাগল বুড়ো । 

কিছুক্ষণের মধ্যই দড়িতে আবার মৃদু টান অনুভব করলো বুড়ো । আবার খুশির ঝিলিক দেখা গেলো তার চোখে মুখে । 

‘এখন তারই পালা । সে এখন খাবেই ‘ – নিজে নিজেই বলতে লাগলো বুড়ো ।

১,৬১২ বার পড়া হয়েছে

লেখক সম্পর্কে জানুন |
ভবের এই খেলাঘরে খেলে সব পুতুল খেলা/ জানি না এমন খেলা ভাঙে কখন কে জানে................. খেলা ভাঙার অপেক্ষায় এই আমি এক অদক্ষ খেলোয়ার ............
সর্বমোট পোস্ট: ৫০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ২২৭ টি
নিবন্ধন করেছেন: ২০১৩-১০-২৯ ০৯:২৩:৫৯ মিনিটে
banner

৬ টি মন্তব্য

  1. সোহেল আহমেদ পরান মন্তব্যে বলেছেন:

    শুভেচ্ছা শুভ প্রয়াসে।

    ভালো থাকুন

  2. আরজু মূন জারিন মন্তব্যে বলেছেন:

    পড়ছি হামিদ ভাই এখন ও। একসঙ্গে কত কিছু যে করি। কোন দিন যে মাথা ঘুরিয়ে পড়ি। আল্লাহ মালিক। ….

    অনেক ভাললাগা লেখায়। শুভেচ্ছা রইল।

  3. এস এম আব্দুর রহমান মন্তব্যে বলেছেন:

    বরাবরের মতই ভাল লাগল । শুভ কামনা ।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন.

go_top