নারী দিবস এবং স্মৃতিচারণা
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1912বার পড়া হয়েছে।
“আন্তর্জাতিক নারী দিবস “- দিবসটার
কথা মনে হলেই কেমন একটা শিহরণ ছড়িয়ে পড়ে ভিতরে!
এমনিতেই আমি পরিবারগত ভাবে বিশেষ দিবসগুলোর প্রতি একটু সংবেদনশীল। প্রতিটা বিশেষ দিবসই বিশেষ তাৎপর্য নিয়ে আসে আমার কাছে। আমার ছোটখাটো অ্যাকটিভিটিসও থাকে দিনগুলো ঘিরে! না,এখনকার মতো ফেসবুক এর কল্যাণে রোজ দে,হাগ ডে,চকলেট ডে-র মতো আজগুবি ডে নিয়ে তোলপাড় -মাতামাতি না, দশবছর আগে এসব ছিলোও না! তখন জাতীয় দিবসগুলো ছাড়া ছিলো মাদার্স ডে,ফাদার্স ডে, ভ্যালেন্টাইন’স ডে, টিচার্স ডে,ফ্রেন্ডশিপ ডে- এসব।
সন্তানের মধ্যে চেতনাবোধ জন্মাতেই বোধহয় আমার জননী আমাকে প্রতিবছর “নারী দিবস “,”কন্যা শিশু দিবস “-এ হালকা পাতলা উপহার দিতেন! জননীর এই উপহার সূত্রেই আমার নারী দিবস সম্পর্কে জানা এবং তারো অনেক পরে জানা এর ইতিহাস।
যাহোক, আজ আর ইতিহাস টানছি না, নারী দিবস নিয়ে কলেজ লাইফের একটাঘটনা মনে পড়ে গেলো আজ- সেটাই শেয়ার করি সবার সাথে!
আমি তখন ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। বিজ্ঞান বিভাগের স্টুডেন্ট,হুঁশ জ্ঞান সব ফেলে সকাল বেলায় দৌড়াতে দৌড়াতে গিয়েছি ক্যামেস্ট্রি টিচারের বাসায় প্রাইভেট পড়তে! সাতসকালের দৌড়াদৌড়িতে ভুলেই গিয়েছিলাম- তারিখটা ৮ মার্চ!
দু’জন ফ্রেন্ড প্রমি আর অনামিকা দেখি কলেজ ড্রেস পরে এসেছে। প্রাইভেটের একঘন্টা পর কলেজ টাইম,পরতেই পারে! আমি অবশ্য প্রাইভেটের পর বাসায় গিয়ে ড্রেস পরে আসবো।
কিন্তু প্রমি জানালো আসল কথা -জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেতে হবে কলেজ ড্রেসে, একটা রচনা প্রতিযোগিতা আছে নারী দিবস উপলক্ষে! উদ্যোক্তা -মহিলা অধিদপ্তর।
রচনা প্রতিযোগিতার কথা শুনে মন লাফ দিলো, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো -আমার তো ন্যুনতম প্রস্তুতিটুকুও নেই!
প্রমি টানাটানি করতে করতে জানালো রচনার বিষয় কঠিন কিছু না। এখন আর মনে নেই,তবে বিষয় সম্ভবত ছিলো “জাতির কল্যাণে নারীর ভূমিকা ” টাইপ কিছু। শুধুমাত্র কলমের. ওপর ভরসা করে করেই ফেললাম অংশগ্রহণ! ভয় যে লাগেনি, তা না -আন্তঃজেলা কম্পিটিশন বলে কথা!
লিখে এলাম রচনা। দুপুরে একটা সেমিনার শেষে রেজাল্ট দেয়ার কথা। যাবোনা যাবোনা করে অনেক সময় নষ্ট করলাম। শেষপর্যন্ত যখন গেলাম- সেমিনার, রেজাল্ট -সব শেষ!
তারপরো কাকে যেন খুঁজে খুঁজে রেজাল্ট জানার চেষ্টা করলাম। ওমা! চক্ষু চড়কগাছ! দাঁত বত্রিশখানা (না,তখন বোধহয় আঠাশটা ছিলো!) বের হয়ে গেলো -আমি কম্পিটিশনে প্রথম হয়েছি!!
সেমিনার শেষ হয়ে গেলেও একজন এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করলেন,তখনো জানতাম না -তিনি ফরিদপুরের কৃতিসন্তান-লেখক-সমাজসেবক রুশেনারা ইমাম!
প্রতি নারী দিবসে এই দৃশ্যটা একবার হলেও আমার চোখে ভেসে ওঠে!
নারী দিবসের শুভেচ্ছা রইলো সবার জন্য……বিশেষ করে নারী সহব্লগারদের জন্য ……
১,৮৭০ বার পড়া হয়েছে
ভালো লাগলো নারী দিবসের ভাবনা ও স্মৃতিচারণ, সুখস্মৃতিগুলো সব সময় বেঁচে থাকে ভালোলাগার অনুষঙ্গে, আর সেটা যদি হয় এমন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি তাহলে তো কথাই নেই, নারী দিবসের শুভেচ্ছা রইল ।
ধন্যবাদ, ইমতি ভাই। এরকম সুখস্মৃতিগুলো প্রত্যেকের ভিতরে বেঁচে থাকুক আজীবন!
দারুন দারুন । ভাল লাগল জেনে
ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নেবেন, দীপঙ্কর ভাই।
একটু দেরিতে হলেও আপনাকে নারী দিবসের একরাশ শুভেচ্ছা ।
একরাশ ভালোবাসা তোমার জন্য,আপু! 🙂
কেন আপা – নারীদিবসে কি পুরুষরা শুভেচ্ছা পেতে পারে না?
তাহলে একমাত্র নারী দিবসেই নারীরা শুভেচ্ছা পাবে অন্যদিন ….?
বিসমিল্লায়ই তো বৈষম্য বাঁধিয়ে দিলেন! না না এ ভারি অন্যায় –
প্রকারান্তরে কিন্তু আপনি নারীদেরই ঠকাচ্ছেন…
উঁহু, দাদাভাই। এই দিবসটাই এমন! যাদের অর্জন, পুরস্কার টা কেবল তারাই পাবে…যুগ যুগ ধরে!
মন খারাপ করার কিন্তু কোন দরকার নেই, আপনাদের জন্য “ভাইফোঁটা ” বরাদ্দ করলাম! হাসুন তো এবার!!
নারী দিবস এবং স্মৃতিচারণা লেখাটা সুন্দর হয়েছে ।