বাঁশ ঢলা, আমার ছেলেবেলা ও প্রাসঙ্গিক আবশ্যকতা ।
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1422বার পড়া হয়েছে।
আমার ছেলেবেলা আমার জন্য এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা । যেখানে মানুষজন সেখানে আমার অনুপস্হিতি । এমনকি উপর দিয়ে হেলিকপ্টার যখন সশব্দে গমন করত তখন আমার অবস্হান হতো চৌকির নিচে । স্কুলে যাতায়ত চতুর্থ শ্রেনী থেকে । তবে দ্বিতীয় শ্রেনীতে নাম থাকা অবস্হায় একবার ক্লাসে গিয়েছিলাম এবং স্বভাবসিদ্ধ ভয়ের কারনে টিচারকে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলতে পারিনি । অগ্যতা স্কুলের মাটি আমার মূত্রজলে সিক্ত হল । আমারও স্কুল ক্লাশ সাঙ্গ হলো । তারপর বাবার ক্রমাগত চেষ্টায় স্কুলে যাতায়ত শুরু করলাম চতুর্থ শ্রেনী থেকে । ক্লাশের প্রথমদিন ক্লাশ টিচার জামাল স্যার আমাকে বাঁশ ঢলা দিয়ে স্কুল ফাঁকির ভবিষৎত সম্বন্ধে সাবধান করে দিলেন । সেদিনের বাঁশ ঢলা আমার মতো ফাঁকিবাজকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত নিয়মিত রেখেছিল । তারপর আর বাঁশ ঢলা খাওয়া হয়নি, আমারও আর নিয়মিত হয়ে উঠা সম্ভব হয়নি ।
বাঁশ ঢলা জিনিসটা তেমন ব্যাথাদায়ক না হলেও উপস্হিত সহপাঠীর সামনে যৎকিঞ্চিত অপমানজনক ছিল । বাঁশ ঢলা দেওয়ার প্রক্রিয়াটা একেবারে সাদামাটা । একহাতের দুই আঙ্গুল গোল করে ধরলে যে পরিধির সৃষ্টি হয় তার সমান পরিধির তিন চার ফুটের একখানা শুকনো বাঁশ পিঠের উপর দিয়ে সজোরে ঘষাঘষি করলেই এই প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয় । রাষ্ট্র আজ জ্ঞান বিজ্ঞানে অনেক এগিয়েছি । তাই ঘষাঘষি বন্ধ । টিচারদের হাতে বেত এমন ভয়ানক অনাচার রাষ্ট্রের কাছে প্রবাদতূল্য অপরাধ । রাষ্ট্র অবৈধ অস্ত্র, মাদক, ঘুষ এসব ছোটখাঠো কর্মের ক্ষমা দীনতা দেখাতে পারে তাই বলে শিক্ষকের হাতে বেত ! হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক জালিয়াতি নেহায়েত সামান্য অপকর্ম, এখানে দু’চারটা ইংরেজী দিয়ে শাসন করলেই হয় । কিন্তু শিক্ষকের বেত্রাগাত এতো নাজায়েজ কর্ম । চাকরীচ্যূতও এর উপযুক্ত শাস্তি হতে পারে না । ব্যাটাকে দু’চারদিন জেল না খাটালে রাষ্ট্রের এ পাপ কিছুতেই মোছন হবে না । সাত খুন কেন সওুর খুন করলেও রাষ্ট্র তার কৃতজ্ঞার দায় মেটাতে পাশে থাকতে পারে তাই বলে’তো শিক্ষক সম্প্রদায়ের মানব বিধ্বংসী বেত’কে আস্কার দেওয়া সম্ভব নয় ।
রাষ্ট্রের বাঁশ ঢলা’র আবশ্যকতা নেই । আমার ব্যক্তিজীবনে এর আবশ্যকতা ছিল । তাহলে স্নাতক পর্যায়ে ফরম পূরন করতে গিয়ে টানাটানিতে পড়তাম না । টানাটনির সেই অভ্যাস আজো আমার রয়ে গেছে । তাই মাঝে মাঝে মনুষ্যত্ব নিয়ে নিজেই টানাটানিতে থাকি । অবশ্য ধার দেনা বাকি বক্কা’ই আমার জীবনের উল্লেখযোগ্য স্মৃতি ।
বিঃদ্রঃ বাঁশ ঢলা বন্ধ নিয়ে আমার আফসোস নেই । আমার আফসোস কোনটার আবশ্যকতা বেশী ছিল ?
………….নিঃশব্দ নাগরিক ।
১,৩৮৯ বার পড়া হয়েছে
রাষ্ট্রের বাঁশ ঢলা’র আবশ্যকতা নেই । আমার ব্যক্তিজীবনে এর আবশ্যকতা ছিল । তাহলে স্নাতক পর্যায়ে ফরম পূরন করতে গিয়ে টানাটানিতে পড়তাম না । টানাটনির সেই অভ্যাস আজো আমার রয়ে গেছে । তাই মাঝে মাঝে মনুষ্যত্ব নিয়ে নিজেই টানাটানিতে থাকি । অবশ্য ধার দেনা বাকি বক্কা’ই আমার জীবনের উল্লেখযোগ্য স্মৃতি ।
বিঃদ্রঃ বাঁশ ঢলা বন্ধ নিয়ে আমার আফসোস নেই । আমার আফসোস কোনটার আবশ্যকতা বেশী ছিল ?
+++++++++++++++++++++++++++++
ধন্যবাদ ।
ভালই বাঁশ ঢলা দিলেন, বাস্তব চিত্র লেখায় ভাল লাগল অনেক ভালা থাকেন
আপনিও ভাল থাকেন ।
টিচারদের হাতে বেত এমন ভয়ানক অনাচার রাষ্ট্রের কাছে প্রবাদতূল্য অপরাধ ।
খুব প্রয়োজনীয় একটা কথা।এটা নিয়ে ভাবা দরকার।শাসন প্রয়োজন।
ভাল থাকবেন ।
আরজু আপা সাথে সহমত
নাইস