ভুতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এলো???
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1734বার পড়া হয়েছে।
পূর্ব প্রকাশের পর
মেয়ে মারা যাওয়ার পর প্রায় দুইমাস হতে চলল সুমিত্রা আবার কাজে জয়েন করেছে।এই দীর্ঘ দুই মাস সে মনোয়ারা বেগম বা তার ছেলের কোন খবর নিতে পারেনি।নিবে কিভাবে সে নিজে ই ছিল জীবন্মৃতের মত। যার জন্য কষ্ট করে বাচা কষ্ট করে কাজ করা সেই মেয়েকে ভগবান তুমি তুলে নিয়েছ কি উদ্দেশ্যে সে তুমি জান ভগবান।বুক মোচড়ানো দীর্ঘনিশ্বাসের সাথে কথাগুলি বেরিয়ে এল বুকের গভীর থেকে।
ফিটফাট হয়ে জেনারেল ওয়ার্ড এ সাত নম্বর বেড এ আসল।আজকে এ সুমিত্রার মেইন পেশেন্ট।তার পাশের আট নম্বর বেড ছিল মনোয়ারা বেগমের ছেলে দিদারের।আজকে এসে দেখে নুতুন রোগী।কাওকে জিজ্ঞাসা করেও কোন সদুত্তর পেলনা।ব্যাকুল হয়ে সে বৃদ্ধা মহিলাটির খোজ জানতে চাইল সবার কাছে। তার নিজের মা খুব অল্প বয়সে মারা গিয়েছে।মায়ের আদরের স্মৃতি তার তেমন নাই। এই বৃদ্ধা মহিলা টি কিছু টা তার মায়ের জায়গা নিয়ে নিয়েছিল।
সারাদিন কাজের মধ্যে তার একটা মন মনোয়ারা বেগম আর তার ছেলেকে খুজে ফিরছিল।অন্য ওয়ার্ডে খোজ করল কেও কিছু বলতে পারছেনা।বিকাল পাচটায় কাজ শেষ করে বের হতে আবুল ভাই সিনিয়ার ওয়ার্ড বয়ের সাথে দেখা।
আপা আজকে জয়েন করলেন নাকি?শুনছি আপা আপনার সব কথা।আল্লাহর কি ইচ্ছা কে জানে।এই মাসুম শিশুটারে কেন মায়র কোল খালি করে এভাবে নেয়।মায়ের কথা একবার ও ভাবলনা।কত খারাপ মানুষ পৃথিবীতে বাইচা আছে।আল্লাহর খেলা আমি বুঝিনা।সমবেদনায় বলে আবুল নামের ওয়ার্ড বয়টি।
থাক এসব কথা আবুল ভাই।আপনি ভাল আছেন তো? সুমিত্রা আন্তরিকতায় জানতে চায়।
কথাপ্রসঙ্গে মনোয়ারা বেগম আর তার ছেলের কথা জানতে চাইল সুমিত্রা।
আপা ওই পোলার ফাসি হইছে।আহারে আপা মাটার চিৎকার যদি দেখতেন শয়তানের ও চোখে পানি আসব।সবাই চেষ্টা করছিল ফাসীর অর্ডার বন্ধ করত।কিন্তু বেটা শয়তান জজ রাজী হয়নাই।
খবর টা আক্ষরিক অর্থে সুমিত্রাকে শকের মত আঘাত করল।তার হাত থেকে ব্যাগ ছিটকে মাটিতে পড়ে গেল।সে অচেতনের মত মাটিতে বসে পড়ল এই বৃদ্ধার কষ্টের কথা মনে করে।
হায় ভগবান আমি আমার কষ্ট নিয়ে বেশী অস্থির ছিলাম।কিছু মানুষ মনে হয় আমার চেয়ে অনেক কষ্টে আছে।
আবুল ভাইয়ের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে মনোয়ারা বেগমের বস্তিতে এসে যখন পৌছল সুমিত্রা প্রায় সন্ধা হয়ে গিয়েছে।
ছোট একটা ছনের ঘর ঠেলা দিতে দরজা সরে গেল।ভিতরে কেও একজন কষ্টে কাতরাচ্ছে।সামনে গিয়ে দেখে একজন বৃদ্ধা মহিলা শিয়রে বসে বাতাস করছে কাওকে।তাকিয়ে মনোয়ারা বেগমকে দেখতে পেল।প্রথমে সে চিনতে পারছিলনা সুমিত্রাকে। চেনার পর হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হল ।
হাউ মাউ করে কাদতে কাদতে সুমিত্রাকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।
মাগো আমার সামনে আমার ভাল বাবারে ফাসী দিছে ওই খারাপ মানুষ গুলা।আল্লাহ ওগোর বিচার করব বলে চিৎকার করে কাদতে থাকে।
আহ এই পৃথিবীতে এত দূঃখ কষ্ট।ভগবান তোমার পৃথিবী থেকে কবে এই দূঃখ কষ্ট সরিয়ে নিবে।আমরা যে আর সইতে পারছিনা।হাহাকারের মত মনে মনে সে বলতে থাকে।
মনোয়ারা বেগমের কান্নার বেগ একটু প্রশমিত হলে জোর করে নিজের হাতে সুমিত্রা খাইয়ে দিল দোকান থেকে কিনে আনা খাওয়ার গুলো।
মনোয়ারা বেগমের সব জিনিস গুছিয়ে তার সঙ্গে তার বাসায় নিয়ে আসল।সুমিত্রা যেমন নিজের মায়ের মত করে বুকে আগলে জড়িয়ে নিয়ে এসেছে তেমনি মনোয়ারা বেগম ও যেন সুমিত্রাকে জড়িয়ে তার হারানো ছেলের অভাব পূর্ণ করতে চাইল।দুই আপনজন হারা দূঃখী হৃদয় পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা খুজতে চাইল।
(পরবর্তীতে)
১,৭৮১ বার পড়া হয়েছে
মাঝখান থেকে পড়লে বোঝার অসুবিধা হয়।তবে ধারাবহ ও কাহিনী ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ তাপস দা আপনার কমেন্টসের জন্য।
ভাল লাগছে লেখাটি । লিখে যান অবিরত । ভাল থাকুন সতত ।
ধন্যবাদ রহমান ভাই। আপনি ও লিখে যান অবিরত।ভাল থাকবেন।
প্রথম থেকে পড়িনি বলে আফসোস হচ্ছে ! তবে আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি তা পুষিয়ে নেবো ! কারণ এ অবধি যতটুকুন পড়েছি তাতে লিখাটা সত্যিকার অর্থেই উপভোগ করছি ! লেখিকার উজ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি !
ধন্যবাদ আহসান হাবীব মন্তব্যের জন্য।অনেক শুভ কামনা রইল।
মনোয়ারা বেগমের কান্নার বেগ একটু প্রশমিত
হলে জোর করে নিজের হাতে সুমিত্রা খাইয়ে দিল
দোকান থেকে কিনে আনা খাওয়ার গুলো।
কাঁন্না , খাবার গুলো হবে বুঝি ,মনে হয় টাইপে ভুল হয়েছে ।
কাহিনী বেশ সুন্দর করে সাঁজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন ।
ভাল লাগা জানালাম ।
ধন্যবাদ শান্ত।এখন থেকে তুমি আমার লিখা এডিট করে দিবে কেমন।
মাঝখান থেকেই বোধয় পড়তেছি। এলোমেলো লাগছে ঘটনাগুলি। তবুও ভাল লাগছে
এই লেখাটা একটু এলোমেলোই।খুশী হলাম আপনারা পড়ছেন কমেন্টস করছেন।এটা অনেক বড় পাওয়া।ধন্যবাদ ছবি।
পড়লাম ম্যাডাম। শুভ কামনা রইল।