শাড়ী……….(শেষ)
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 2005বার পড়া হয়েছে।
অন্বেষা ফোন করে বলে দিল যে তার পরনে থাকবে গোলাপি শাড়ী, হাতে গোলাপি গোলাপ ।
আর আরিফের পরনে থাকবে নীল টিশার্ট, আর হাতে লাল গোলাপ ।
যথাসময়ের আগেই অন্বেষা পৌঁছে গেল সেখানে ।
আরিফ পৌঁছল ২০ মিনিট পর। অপেক্ষা যে কি জিনিস অন্বেষা এখন বুঝতে পারছে। ঘড়ির প্রতিটা মিনিট অন্বেষার কাছে মনে হচ্ছে এক একটা বছর। অন্বেষার সামনে একটা ছেলে এসে বলছে তুমি কি অন্বেষা। অনেকটা বিরক্ত হয়ে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখে আরে ও যে আরিফ। অনেক্ষন চেয়ে চেয়ে দেখল আর ভাবল সে যা ভেবেছিল তার চেয়েও অনেক স্মার্ট আরিফ। অন্বেষা ভাবছে আরিফ যেন তাকে নিয়ে কি ভাবছে?
আরিফ হালকা খাবারের অর্ডার দিল। খেতে খেতে তাদের ভাললাগা আর মন্দ লাগা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হল। দেখা হওয়ার পর আরিফই অন্বেষাকে বাসায় পৌছিয়ে দিল ।
এভাবেই সময় গড়িয়ে তাদের বিয়ের ক্ষণ ঠিক হল । দুই পরিবারের মতেই তাদের বিয়ে হয়ে গেল ।
-এই শোন । তুমি কিন্তু সব সময় শাড়ী পড়েই আমার সামনে থাকবে।
-আচ্ছা । শাড়ীই পড়ব ।
এভাবেই কয়েকমাস তাদের আনন্দে কেটে যায় ।
একদিন আরিফ বলল শোন তোমার আর চাকরি করার দরকার নেই। মা বাবা তোমার চাকরিকে ভাল চোখে দেখছেন না আর তা ছাড়া আমি তো বেশ কামাচ্ছি। আমাদের সংসার ভালই চলে যাবে। তুমি বাসায় মা, বাবা আর ঘর-সংসারের দিকে খেয়াল রাখ। এখন থেকেই ঘর গুছিয়ে নাও নিজের মত করে। অন্বেষা বুঝতে পারল না আরিফ কেন তাকে চাকরি ছাড়তে বলল। যাক অবশেষে আরিফের কথা রাখে অন্বেষা, চাকরিটা ছেড়েই দিল।
অন্বেষার এখন সময় কাটে ঘরে বসে । শাশুড়ি ননদের যাচ্ছেতাই ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে তার দিনগুলো কেটে যায় ।
আরিফ সারাদনি শেষে রাতে বাসায় ফিরে । তখন আর কোন কিছুই বলার সময় থাকে না অন্বেষার।
সপ্তাহে একটা দিন ছুটি থাকে আরিফের কিন্তু সেই দিন আরিফ নিজেকে আর তার বন্ধুদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কেন জানি আরিফের অন্বেষা প্রতি নজর দিচ্ছে না। অনেক কষ্ট হয় এসব কথা মনে করে অন্বেষা তবুও নীরবেই সহ্য করতে থাকে সব কিছু ।
অন্বেষা ভাবতেই পারেনি বিয়ের পর আরিফ এভাবে পাল্টে যাবে। অন্বেষার এখন মনে হয় আরিফ তাকে ভালবাসেনি তার সাথে রাত কাটানোর সঙ্গী হয়েছে মাত্র। ছি ছি নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকে অন্বেষা ।
ঘুম ভেঙে গেল আরিফের দরজায় ধাক্কার ফলে
-কি হল । রাতে কি আমি খাব না?
-হুম । আসছি
-তোমার কি কোন কান্ড জ্ঞান নেই । এত রাত পর্যন্ত খাইনি তা কি তুমি জান না । আশ্চর্য ।
-সরি । চোখ লেগে গিয়েছিল ।
-এখন কত বাহানা খুজতেছো। আচ্ছা তোমার এত রূপ কেন? পুরুষদের মাথা খারাপ করা মেয়ে ।
-আরিফ, মুখ সামলে কথা বল
-বলব না, কি করবে তুমি?
-সহ্যের একটা সীমা আছে । এত রাতে চেঁচামেচি করোনা প্লিজ। যাও খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।
-করব, একশবার করব । আজ তোমার সব রূপ পুড়িয়ে শেষ করে দিব ।
-আরিফ আমাকে আর তোমার সহ্য না হলে আমাকে তালাক দিয়ে দাও
-হ তালাক দিমু আর তুমি নতুন নাগর নিয়া ঘুরবা।
-ছি আরিফ, তোমার মন এত ছোট কেন? ছিহ
অন্বেষা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল ।
অনেক রাত পর্যন্ত চলল তাদের ঝগড়া, শেষে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ল দুইজন ।
সকালেও না খেয়ে আরিফ অফিসে চলে গেছে ।
অন্বেষা কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারে না ।
আরিফ অফিসে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ননদ আর শাশুড়ি অন্বেষাকে অনেক কথা শুনাল।
নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল অন্বেষা । কিছুই করার নাই তার । কি করবে? কোথায় যাবে? কার কাছে বলবে তার করুণ কাহিনী।
এসব ভেবে ভেবে তার আলমারি খুলে শাড়ীগুলো দেখতে লাগল । আর চোখ গড়িয়ে জল পড়তে লাগল ।
আরিফ কেন এমন হল । কেন? কি দোষ তার……….
এইতো সেদিনই ফোনে আলাপকালে অন্বেষা জিজ্ঞেস করেছিল, আরিফ কেন তুমি আমাকে ভালবাস? তুমি তো আমাকে দেখনি? জানও না । কেন? বলতো ।
তখন আরিফ বলল- আমি জানি আমি তোমাকে কোনদিন দেখিনি, পারসনালি চিনি না, এমনকি জানিও না। তোমার সাথে আমার দেখাও হয়নি। তবুও এই অল্প কয়েকদিনের অনলি কথা বলার মাধ্যমে আমি তোমাকে অন্তত কিছুটা হলেও বুঝার চেষ্টা করেছি অথবা বুঝতে পেরেছি । আই থিংক আমি একটু বেশী ইমোশনাল। যাই হোক আমি তোমার কেউ না বা তুমিও আমার কেউ না তাও আমার তোমার সাথে কথা বলতে ভাল লাগে, কথা বলতে ইচ্ছা জাগে ।
তুমি কথা না বললে মন খারাপ হয়।
আই নো আমি তোমাকে কিছুটা হলেও ফিল করি এন্ড আই ক্লিয়ারলি নো দেট ইটস কলড ওয়ান কাইন্ড অফ লাভ……..
হ্যা আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি, বাট কেন ভালবাসি বা কি হিসাবে ভালবাসি অর আমি এই ভালবাসাকে কে কোন অর্থে বুঝাব সেটা আসলেই আমার জানা নেই ।
অন্বেষা আমি কি তোমাকে বুঝাতে পেরেছি ।
অন্বেষা চিন্তা করে দেখল কত গভীরতা ভালবাসার মধ্যে । কত টান তার জন্য আরিফের । আরিফের এমন কথা শুনে অন্বেষা সত্যিই মনপ্রাণ দিয়ে ভালবেসে ফেলল আরিফকে ।
বিছানায় বালিশে মাথা রেখে এসব কথা ভাবছে আর অন্বেষার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে। বুকের ভেতরটা কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। অনেক প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে মনের জানালায়। এই গল্পের শেষ কোথায় ভেবে পাচ্ছে না অন্বেষা। অন্বেষাকে কি চলে যেতে হবে আরিফ কে ছেড়ে? না এভাবেই দিনের পর দিন কষ্ট করবে আরিফের জন্য না সব কিছুর সেই আগের মত হবে …. ।
২,০৪৯ বার পড়া হয়েছে
শাড়ীতে সুন্দর দেখায়
সুন্দর মানায়
আর চুড়িতে যেন
পুতুল পুতুল দেখায়,
এবার চুড়ি নিয়ে লিখুন।
হুম লিখব। টিপ নিয়েও ধন্যবাদ
গল্পটা আমিও শেষ করলাম।
ধন্যবাদ ভাইয়া
শাড়ী র গল্প পড়লাম।ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
আন্তরিক ধন্যবাদ আপি
বেশ লাগলো ভাই ।
অনেক ধন্যবাদ
গল্পটি ভাল লাগল । শুভ কামনা ।
অসংখ্য ধন্যবাদ রহমান ভাইয়া
ভাল লাগল । ধন্যবাদ আপনাকে সংক্ষিপ্ত করে বাস্তব একটি ঘটনাকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার জন্য ।
থ্যাংকু
ধন্যবাদ আপনাকে সংক্ষিপ্ত করে বাস্তব একটি ঘটনাকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার জন্য ।
অনেক ধন্যবাদ ক্রাউন