Today 23 Nov 2024
banner
নোটিশ
ব্লগিং করুন আর জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের রিটার্ন বিমান টিকেট! প্রত্যেক প্রদায়কই এটি জিতে নিতে পারেন। আরও আছে সম্মানী ও ক্রেস্ট!
banner

শিবপুর উপজেলা

লিখেছেন: সুরাইয়া নাজনীন | তারিখ: ১৫/০৫/২০১৫

এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1706বার পড়া হয়েছে।

 

শিবপুর বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

1

প্রশাসনিক এলাকা

দক্ষিণে রায়পুরা, নরসিংদী সদর ও পলাশ উপজেলা, পূর্বে বেলাব ও রায়পুরা উপজেলা, উত্তরে মনোহরদী উপজেলা এবং পশ্চিমে পলাশ উপজেলা ও গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলা অবস্থিত

ইউনিয়নের নাম

১. জয়নগর ২. যোশর ৩. বাঘাব ৪. আয়ুবপুর ৫. চক্রধা ৬. মাছিমপুর ৭. পুটিয়া ৮. সাধারচর ৯. দুলালপুর

ভৌগোলিক অবস্থান

২৩.৫৬ হতে ২৪.০৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০.৩৮ হতে ৯০.৫০ ডিগ্রি র্পর্ব দ্রাঘিমাংশে শিবপুর উপজেলা অবস্থিত

নামকরণ

এ এলাকায় খড়গ রাজাদের শাসন আমল ছিল ৬০০-৭০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। খড়গ রাজাদের ৫ জন রাজা ছিলেন। তাদের নাম: (১) রাজা খড়োগাদ্যাম, (২) মহারাজা জাতখড়গ, (৩) মহারাজা দেব খড়গ, (৪) রাজা রাজভ্রট্ট ও (৫) রাজা বলভ্রট্ট। এ বংশের প্রথম তিন রাজা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং পরবর্তী দুই রাজা ছিলেন শৈব হিন্দু। এই শৈব শব্দ থেকে শিব শব্দের উৎপত্তি এবং তা থেকে জায়গাটির নাম শিবপুর নামকরণ করা হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। পূর্বে এলাকাটি হিন্দু দেবতা শিব পুজার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তাই ধারনা করা হয় হিন্দু দেবতা শিব এর নামানুসারে জায়গাটির নাম শিবপুর নামকরণ করা হয়েছে

উপজেলার গ্রাম সমূহ

জয়নগর জয়নগর ,দড়িপুরা, বেতাগিয়া, ভেড়ামারা, নৌকাঘাটা, ধনাইয়া, আজকিতলা, কামরাব, কুমারটেক, সীমারবাগ, সুজাতপুর, ছোটাবন্দ, জয়নগর, গিলাবের, দেবালেরটেক, বাঘমারা, জয়নগরপূর্বপাড়া, আষ্টানী, , যোশরপাড়া, ডুপিরটেক, বেতাগী, দাসপাড়া, জামঘর, জামিরা, কান্দাপাড়া, পালপাড়া, ঋষিপাড়া, সুনারোতলা, জুলারটেক, মৈশেরটেক, পাহাড় জয়নগর, টেকপাড়া, সুজাতপুর শিবপুর পৌরসভা আব্দুলখানা, শিবপুর পশ্চিম ও সৈয়দেরগাঁও, বাজনাব, বান্দারদিয়া, নগরবেকারপাড়া ও শিবপুর পূর্ব, চালতাকান্দি ও বানিয়াদী, আড়ালী, কুতুবেরটেক ও বালিয়াহানী, চক্রধা ও কানাহোটা, আশ্রাফপুর পূর্ব ও নগর ফলবাড়িয়া, আশ্রাফপুর পশ্চিম যোশর আগরপুর, মাকাল্লা, ভিটিখৈনকুট, দক্ষিণ কামালপুর, ছোটাবন্দ, লালখারটেক, কামারটেক, চৈতন্যা, যোশর, চান্দারটেক, উত্তর আগরপুর, শরীফপুর, কুলুরটেক, টঙ্গিরটেক, পুরানা আটশিয়া, আমরাতলী, কামালপুর, কাজিয়ারা, লেটাব, মাছিমনগর, মালিয়ারা, নৌকাঘাটা, নন্দিরটেক, মুরগীবের, দেবালেরটেক, পাহাড়ফুলদী, শৈকারচর, শ্রীরামপুর, সৃষ্টিগড়, ভঙ্গারটেক, আটশীয়া, জাঙ্খারটেক বাঘাব আক্রাশাল, বাঘাব, বাহারদিয়া, বিরাজনগর, ব্রাহ্মন্দী, বড়কান্দা, খড়কমারা, চাদপাশা, চৌপট, হামুরদিয়া, ইটনা, জয়মঙ্গল, খৈনকুট, কুন্দারপাড়া, লামপুর, নাওহালা, পাঁচপাইকা, পশ্চিম গোবিন্দপুর, সফরিয়া, শ্রীফুলিয়া আয়ুবপুর আধঘটিয়া, আয়ুবপুর, বংশিরদিয়া, আলীয়াবাদ, ঘাগটিয়া, জাঙ্গালিয়া, ভুরভুরিয়া, কান্দাপাড়া, চন্দনদিয়া, হিজলিয়া, শানখোলা, দক্ষিণ নোয়াদিয়া, ঘাশিরদিয়া, গোড়ারগাঁও, খৈশাখালী, শাষপুর, ত্রিশা চক্রধা আশুতিয়া, বৈলাব, ভাটগাঁও, মোহরপাড়া, দোপাথর, সাতপাড়া, চান্দারটেক, বাড়ৈগাঁও, আটারদিয়া, বিলসরণ, চান্দলভাঙ্গা, ঘুশু, লাকুশি, মজলিশপুর, নিনগাঁও, পূবেরগাঁও, সাতপাড়া মাছিমপুর দত্তেরগাঁও, চৌঘরিয়া, ধানুয়া, বাজনাব, বানিয়াদী, মধ্যপাড়া, মাছিমপুর, খড়িয়া, ভিটিপাড়া, মিয়ারগাঁও, বান্দারদিয়া পুটিয়া দক্ষিণ কারারচর, শেরপুর, গোল্লাকান্দা, সৈয়দনগর, পুরানদিয়া, পুটিয়া, উত্তর কারারচর, কামারকোষা, ভরতেরকান্দি, মুন্সেফেরচর, চরপিতাম্বরদী, কামারগাঁও, কারারচর, কুমরাদী, সালুরদিয়া, মোল্লাকান্দা, পাটুয়ারপাড়, তেলিয়া সাধারচর দক্ষিণ সাধারচর, মৈশাদী, সৈয়দেরখোলা, উত্তর সাধারচর, ব্রজেরকান্দি, কালুয়ারকান্দা, খুপী, সাধারচর, তাতারকান্দি, সিরারকান্দা, খালপাড়, পলাশী, হরিহরদী, গোবিন্দি, মাধবদী, সিকান্দরদী দুলালপুর দুলালপুর, দরগারবন্ধ, আলীনগর, নন্দীরগাঁও, মধ্যনগর, মানিকদী, লাখপুর, কাজীরচর, গড়বাড়ী, সাতপাইকা, হরণখোলা, চন্ডিবর্দী, ভিটিচিনাদী, শিমুলিয়া, পাড়াতলা, বিলচিনাদী, বাহেরতলা

ইতিহাস

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন শীতলক্ষা, আড়িয়াল খা, পাহাড়িয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদীর তীর বিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্য লালিত এবং বাঘাব, জয়নগর ও যোশর ইউনিয়নের লালমাটির উচু নিচু, সমতল, ছোট বড় টিলা, টেক ও পাহাড়ের নয়নাভিরাম অরণ্য আবরণে আবৃতে গড়া শিবপুর উপজেলার মানুষের খাদ্যাভাস, আচার-আচরণ ভাষা ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এ এলাকায় খড়গ রাজাদের শাসন আমল ছিল ৬০০-৭০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। খড়গ রাজাদের ৫ জন রাজা ছিলেন। তাদের নাম: (১) রাজা খড়োগাদ্যাম, (২) মহারাজা জাতখড়গ, (৩) মহারাজা দেব খড়গ, (৪) রাজা রাজভ্রট্ট ও (৫) রাজা বলভ্রট্ট। এ বংশের প্রথম তিন রাজা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং পরবর্তী দুই রাজা ছিলেন শৈব হিন্দু। পূর্বে এলাকাটি হিন্দু দেবতা শিব পুজার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এই এলাকার ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় শিবপুর উপজেলার সভ্যতা বহুপ্রাচীনন ও ঐতিহ্যবাহী। এই এলাকায় প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন সভ্যতার বাহক হিসেবে প্রমাপক।

 

সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে শিবপুর উপজেলার অবদানও অনস্বীকার্য।উপজেলার‘জয়মঙ্গল’ নামে পাহাড়ী গ্রামে আবিস্কৃত হয়েছে গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রা।আশ্রাফপুরে আবিস্কৃত হয়েছে সপ্তম শতাব্দীর মহারাজাদেব খড়গের তাম্রলিপি এবং অষ্টধাতুর নির্মিত বৌদ্ধ নিবেদন স্ত্তপ।এই আশ্রাফপুরেই আবিস্কৃত হয়েছে গৌড়ের স্বাধীন নরপতি আলাউদ্দিন হোসেন শাহেরপুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন নসরৎ শাহের রাজত্বকালে নির্মিত একটি অতিপ্রাচীন মসজিদ।

প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনসমূহ

উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের কামরাবর ধুপিরটেক গ্রামে বৌদ্ধ পদ্ম মন্দির আবিস্কার করা হয়েছে। আবিষ্কৃত এই বৌদ্ধ পদ্ম মন্দিরটির স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট দেব খড়গের স্বাক্ষর অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে ৭ম দশকের বলে অনুমতি হয়। ধারনা করা হয় প্রায় ২৫০০ বছর আগে এই জায়গায় বৌদ্ধদের পদ্ম নামে একটি মন্দির ছিল। কারণ এখানে যা পাওয়া গিয়াছে তার মধ্যে ৭০ সেঃ মিঃ দৈর্ঘ্য ও ৭০ সেঃ মিঃ প্রস্থ ইটের দেওয়াল পাওয়া গেছে এবং ওয়ালের পূর্ব দিকে ৩ ফুট দূরে বারান্দার মত আরেকটি ওয়াল পাওয়া গেছে এবং দুই দিকে দুইটি দরজার মত পাওয়া যায়। এই জায়গাটি খননের জন্য বাংলা মাপে প্রায় ৫ গন্ডা জমি ক্রয় করে খনন কার্যক্রম চালাচ্ছে। যোশর ইউনিয়নের টঙ্গিরটেক নামক স্থানে প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বের প্রত্নতাত্বিক প্রচুর নিদর্শন আবিস্কারের পর্যায়ে খনন কাজ চলছে। জানখারটেক এলাকায় প্রত্নতাত্বিক প্রাচীন নিদর্শন আবিস্কারের পর্যায়ে রয়েছে। জয়মঙ্গল পাহাড়ী গ্রামে আবিস্কৃত হয়েছে গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রা। আশ্যাফপুরে আবিস্কৃত সপ্তম শতাব্দীর মহারাজাদের খড়গদের তাম্রলিপি এবং অষ্টধাতুর নির্মিত বৌদ্ধ নিবেদন স্তুপ। কুমরাদী গ্রামে লালমাটি এবং প্রাচীন পুরাকীর্তির নমুনা বাংলার সুলতানি আমলের স্থাপত্য শৈলীর এক উজ্জল নিদর্শন। প্রাচীন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদী হাড়িদোয়ার পশ্চিম তীরে অবস্থিত কুমারটেক এলাকার প্রায় ১০/১২ হাত মাটির নিচ থেকে প্রাচীন মৃৎপাত্র, ভগ্নটুকরা এবং মাটির তৈরি ছোট ছোট গোলা পাওয়া গেছে। কতিথ আছে এগুলো খ্রিস্টপূর্ব হাজার হাজার অব্দের সময়কালের মৃৎপাত্র এবং শিকারীদের ব্যবহার উপযোগী গোলা।

জনসংখ্যার উপাত্ত

জনসংখ্যা: ৩,১৫,৬৬৭ জন (পুরুষ ১,৫৪,২২৩জন ও মহিলা ১,৬১,৪৪৪জন)। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: ১.৩৫ %। জনসংখ্যার ঘনত্ব: ১,৪৫০ জন/বর্গকি:মি:।

শিক্ষা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

জয়নগর এ এ ইউ হাই স্কুল, জয়নগর ডিগ্রী কলেজ, জয়নগর হাজ়ী নোয়াব আলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, জয়নগর দাখিল মাদ্রাসা, ছোটাবন্দ শহীদ স্ম্রতী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, আজকিতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আজকিতলা দাখিল মাদ্রাসা, কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়, নোকাঘাটা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছোটাবন্দ হাই স্কুল, সবুজ পাহাড় মহা বিদ্যালয়, ধানুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যআলয় শিবপুর পাইল্ট হাই স্কুল, শিবপুর পাইল্ট ্বালিকা বিদ্যালয়, শিবপুর শহীদ আসাদ সরকারি কলেজ,

অর্থনীতি

শিবপুর উপজেলা মূলত কৃষির উপর নির্ভ্রশীল তবে টেক্সটাইল কারখানা গড়ে উথেসে।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

আব্দুল মান্নান ভুইয়া

শহীদ আসাদ

কবি বেঞ্জির আহমেদ

 

চিত্তাকর্ষক স্থানসমূহ

সোনাইমুড়ি টেক

আশ্রাফপুর গায়েভী জামে মসজিদ: শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামে অবস্থিত।

শহীদ আসাদের সমাধিস্থলঃ সমাধিস্থল নরসিংদী জেলাধীন শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে শহীদ আসাদের সমাধিস্থল।

জমিদার মোহনী মোহন সাহার বাড়ীঃ শিবপুর ইটাখোলামোড়/শিবপুর কলেজ গেইট হতে পশ্চিমে দিকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে উত্তর সাধারচর গারদ বাজার অবস্থিত।

লাখপুর জমিদারবাড়ী

ধুপিরটেক বৌদ্ধ পদ্ম মন্দির: শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের কামরাব ধুপিরটেক গ্রাম

জানখারটেক পুরাকীর্তি

কুমরাদী শাহ মনসুরের মসজিদ ও দরগাহ

 

১,৬৮৪ বার পড়া হয়েছে

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ২৪ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ০ টি
নিবন্ধন করেছেন: ২০১৩-০৯-১৭ ০৮:০৮:৫৭ মিনিটে
banner

৪ টি মন্তব্য

  1. জসিম উদ্দিন জয় মন্তব্যে বলেছেন:

    শিবপুর বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। প্রাচীন সভ্যতায় লালিত এই শিবপুর উপজেলা । খুব ভালো লেগেছে এত সুন্দর করে শিবপুর উপজেলাকে তুলে ধরেছেন ।

  2. সবুজ আহমেদ কক্স মন্তব্যে বলেছেন:

    জানলাম শিবপুর উপজেলা

    ভাল লাগলো অনেক

  3. টি. আই. সরকার (তৌহিদ) মন্তব্যে বলেছেন:

    শিবপুর বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা । এবার বোধ হয় নরসিংদী জেলার উপজেলাকে নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন ।

    অনেক ভালো । চমৎকার সব তথ্য জানা যাচ্ছে আপনার পোস্ট থেকে ! লিখতে থাকুন…

  4. এই মেঘ এই রোদ্দুর মন্তব্যে বলেছেন:

    গায়েবি মসজিদ সত্যিই নাকি

    ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন.

go_top