Today 10 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

প্রাণের প্রিয়তমা(র্পব-১০)

: | : ২২/০৬/২০১৩

(পূর্বে প্রকাশের পর)
গ্রামের একজন অসহায় গরিব মেয়ে আমেনা অনেক কষ্টের পর আই.এ পাশ করে। আই.এ পর্যন্ত সরকার বিনা বেতনে পড়াইছে বিধায় আই.এ পাশ করতে পারছে। তা না হলে এতটুকুও সম্ভব হত না। টাকা পয়সার অভাবে বি.এ পাশটা করতে পারল না। কিছুদিন পূর্বে তার বাবা মৃত্যুবরণ করে। বাবার অকাল মৃত্যুতে তাদের সংসারে নেমে আসে অভাব, অনটন ও দুঃখভরা হৃদয় বিদারক করুণ পরিণতি। তার বড় ভাই দু’বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পাটা হারায়। এখন তিনি পঙ্গু অবস্থায় বাড়ীতে দিন কাটাচ্ছেন। তার জন্যে কোন হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করতে পারেনি কেউ। অভাবের তাড়নায় আজ আমেনা দিশেহারা হয়ে দু’চোখে সরশে ফুল দেখছে। তার দিকে চেয়ে আছে বৃদ্ধ মা, পঙ্গু বড় ভাই ও ছোট একটা বোন। তার স্বপ্ন ছিল ভাল ভাবে লেখাপড়া করে চাকরী করে সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন- স্বপ্নই রয়ে গেল। পিতাকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নিয়ে ভাসিয়ে দেন তাদেরকে দুঃখের সাগরে। আজ আমেনা দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছেনা। চাকরীর সন্ধানে ঢাকায় আসে আমেনা। যেখানে যায় সেখানেই বড় করে সাইনবোর্ড লেখা ‘কর্ম খালি নাই’। শুধু মাত্র ফার্মগেট এসে এক জায়গায় দেখতে পেল ‘কর্ম খালি’। লেখাটা পড়ে তার মনে একটু আশার আলো ফুটল। আল্লাহর নাম স্মরণ করে অফিসের ভেতরে প্রবেশ করল।
আমেনাকে দেখে সুইপার বলল, কাকে চাই।
আমেনা বলল, আমি বসের সাথে দেখা করতে চাই।
সুইপার বসকে বলল, স্যার আপনের সাথে একটি মাইয়া দেহা করতে চায়।
বস এ মুহূর্তে একটা ফাইল দেখছিলেন। সুইপারের মুখে মেয়ে শব্দটা শুনতে পেয়ে তার চেতনা ফিরে এল। বস নয় নারী লোভী মনির খানের এ কোম্পানি। তিনি একাই এর দেখাশুনা করেন। মাঝে মাঝে সুন্দরী রমণী পেলে চাকরীর লোভ দেখিয়ে তাকে ভোগ করনে। সেই চরিত্রহীন মনির খান সুইপারকে বললেন, ওকে এখানে আসতে বল।
সুইপার এসে আমেনাকে বলল, এই যে আফা আপনারে স্যার যেতে কইছে।
আমেনা বলল, আচ্ছা ঠিক আছে চল। বলেই সে মনির খানের রুমে প্রবেশ করল।
আমেনা মনির খানের রুমে প্রবেশ করতেই তিনি চমকে উঠলেন। এ যে পূর্ণিমার চাঁদ দেখছেন। তার রূপের জলকে সারা রুম যেন আলোকিত হয়ে গেল। বুকে পুরুষ ঘায়েল করার মত পাহারের সু-উচ্চ যন্ত্র দু’টি ব্লাউজ থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। মনির খান তাকে দেখে হা করে তাকিয়ে রইল। কিছুই বলতে পারছে না। মনে হয় যেন এক্ষুনি খেয়ে ফেলবে তাকে। সে ভাবছে, যে করেই হোক এ মেয়েকে ভোগ করতে হবে। তাকে হাত ছাড়া করা যাবে না। এবার তিনি নিচের দিকে চোখ নামিয়ে বললেন, বস।
আমিনা চেয়ার টেনে তার সামনাসামনি বসল।
মনির খান ইজি চেয়ারে বসে কলম কামরাচ্ছেন আর বলছেন, এবার বল, তোমার প্রবলেম কি?
আমেনা মিনতি মাখা কন্ঠে বলল, স্যার আমি এক অসহায় গরিব মেয়ে। টাকার অভাবে আমি আজ আপনার এখানে এসেছি। তবে স্যার ভিক্ষা করতে নয়। বাড়ীতে আমার একজন বৃদ্ধ মা, পঙ্গু ভাই ও ছোট একটি বোন আছে। সংসারের হাল আমার হাতে। স্যার দয়া করে যদি একটা চাকরী দেন তাহলে আপনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকব।
মনির খান ভাবছে, এই তো সুবর্ণ সুযোগ। এখন ওকে যা বলব টাকার জন্যে ও তাই করবে। এভাবে তিনি মেয়েদের দুর্বল দিকগুলো খুঁজে তাদেরকে আয়ত্তে আনেন। পরে সুবিধা মত সময় ভোগ করেন। মনির খান কলমটা টেবিলের উপর রেখে চেয়ারে হেলান দিয়ে বললেন, চাকরী তোমাকে দিব; তবে একটি শর্ত আছে।
কি শর্ত। চাকরী পেলে আমি আপনার সব শর্ত মেনে নেব। বর্তমানে টিউশনী করে সংসার চালাচ্ছি। যেভাবে হোক স্যার আমাকে একটা চাকরী দেন।
মনির খান কিছুক্ষণ ভেবে বললেন, শর্ত হল আজ রাতে আমার সাথে থাকবে।
একথা শুনে আমেনা বেগম চমকে উঠলো। এমন প্রস্তাব দেবে সে ভাবতেও পারে নি। এ কেমন জঘন্য কথা বলছে। এ আমি কোথায় আসলাম ভেবেই বলল, না স্যার এমন পাপ কাজ আমি করতে পারব না। এটুকু বলেই আবার ভাবতে লাগল, নারীর সতীত্ব হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। সামান্য কিছু অর্থের জন্যে আমার সতীত্ব বিলিয়ে দেব তা হতে পারে না। সতীত্বহীন নারী বেঁচে থাকার চেয়ে সতীত্ব নিয়ে মরে যাওয়া উত্তম। না এখানে থাকা যাবে না। সতীত্ব নিয়ে অন্য কোথাও কাজের খোঁজ নিব। তবু আমি সতীত্ব দিতে পারব না। এখানে থাকলে আমি সতীত্ব নিয়ে বাড়ী যেতে পারব না।
মনির খান তাকে ভাবতে দেখে বললেন, ভাবনার কিছু নেই। বেতন তোমাকে ডবল দেব। মাঝে মাঝে আমাকে একটু সময় দেবে তাহলেই চলবে। তুমি যা চাইবে তাই পাবে। তোমার পরিবার আর কষ্ট করবে না। তুমি কি চাও তোমার জন্যে তোমার পরিবার কষ্ট ভোগ করুক। নিশ্চয় চাবে না। তাহলে রাজি হয়ে যাও। তোমার ভাল হবে।
না স্যার আমি নারী। তাই বলে আপনাদের মত অসভ্য চার পায়ের জানোয়ার নই। অসহায় হয়ে আজ আপনার এখানে চাকরীর জন্যে আসছি। তাই বলে আমার দুর্বলতার সুযোগ পেয়ে আমাকে ভোগ করতে চাচ্ছেন; তা কিছুতেই হবেনা। এ কথা বলেই আমেনা যাওয়ার জন্যে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল।
মনির খান তার কথায় রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলল, এই দাঁড়াও। কোথায় যাচ্ছ? সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না। এই বলেই ড্রয়ার থেকে পিস্তলটা বের করে বললেন, দেখেছ আমার হাতে এটা কী?
আমেনা পিস্তল দেখে ভয়ে চুপসে গেল। ভয়ে তার গলা শুকিয়ে গেল। চোখের সামনে এমন পিস্তল আর কখনো দেখেনি।
মনির খান পিস্তলটি নাড়িয়ে নাড়িয়ে বললেন, আর এক পা এগুলে এই পিস্তলের বুলেটটা তোমার বুকে গিয়ে পিষ্ট হবে। অতএব আমার কথায় রাজি হয়ে যাও। তাহলে তোমার মঙ্গল হবে।
আমেনা ভাবে, এ কেমন কঠিন পরীক্ষায় সম্মুখীন হলাম। আমি এখন অসহায় খেলার মাঠের বল হয়ে গেলাম। খেলোয়ার যেমন যেমনি খুশী তেমনি পিঠিয়ে গোল দেয়, ঠিক আমাকে আজ তিনি পিঠিয়ে গোল দেয়ার চেষ্টা করছে। এখন আমি কি করব। যদি আমার সতীত্ব রক্ষার জন্যে আমার মৃত্যু হয় তাহলে আমার মা, ভাই-বোনের অবস্থা কি হবে?
আর ভাবতে পারছেনা আমেনা। মা, ভাই-বোনের দিকে তাকিয়ে নিজেকে অবৈধ প্রস্তাবে রাজি করতে বাধ্য হয়। তার সারা শরীর ঘেমে যাচ্ছে।
মনির খান তাকে চুপ থাকতে দেখে ধমক দিয়ে বললে, কি ব্যপার চুপ করে আছ কেন? মরবে নাকি আমার প্রস্তাবে রাজি হবে।
আমেনা অনেক কষ্টে বলল, আমি রাজি।
এবার মনির খান খুশী হয়ে পিস্তলটি রেখে বললেন, এতক্ষণে লক্ষী মেয়ের মত কথা বললে। একথা বলেই সুইপারকে ডেকে খাবারের ব্যবস্থা করেন।
সন্ধ্যা যখন ঘনিয়ে আসে তখন মনির খান আমেনাকে গাড়িতে করে বাসায় নিয়ে আসেন। পরে তাকে তার নিজস্ব রুমে নিয়ে যায়।
মনির খান যখন যাকে ভাল লাগত তখন তাকে ভোগ করত। তার এই ভোগ করার কৌশল ছিল লোমহর্ষক ও অদ্ভুদ প্রকৃতির। তার রুমে আছে রঙিন টেলিভিশন। ভিসিডি সেট সহ অসংখ্য ব্লু-ফিল্মের ক্যাসেট। তাকে সাজানো মদের বোতল। আমেনাকে রুমে এনেই মনির খান ব্লু-ফিল্মের ক্যাসেট লাগিয়ে দিলেন। একে একে টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে উঠল নারী-পুরুষের উলঙ্গ যৌন মিলনের দৃশ্য। এসব দৃশ্য দেখেতো আমেনার সর্বাঙ্গে কামনার আগুন জলে উঠল। আমেনার আঠার বছরের নিষ্পাপ যৌবন। কখনো যার দেহে কলঙ্কের দাগ লাগেনি। এ পর্যন্ত কোন পুরুষের স্পর্শ লাগেনি। সেই নারীর দেহে আজ প্রথমে পাপের স্পর্শ লাগল। আজ টাকার জন্যে সে কিংকর্তব্যমিমূঢ় হয়ে দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজে লিপ্ত হতে যাচ্ছে। নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। কিন্তু কি করবে? কিছুই করার নেই তার। কারণ পুরুষ শাসিত সমাজে সে যে আজ ভোগের সামগ্রী। সে যে আজ মানুষ নামের নারী লোভী নর পশুর হাতের শিকার।
মনির খান বিবস্ত্র হয়ে মদের বোতল নিয়ে মদ্য পান করছে আর বলছেন, খাবে তুমি? খেয়ে নাও, দেখবে খুব মজা লাগবে। বলতে বলতেই তার দিকে এগিয়ে আসছে।
মনির খানকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে আমেনা মনে মনে বলছে হে খোদা! তুমি আমাদের দেশে নারী সরকার দিয়েছ। অথচ এই সরকার পারছেনা আমাদের মত অসসহায় নারীদের ইজ্জল রক্ষা করতে। আজ সারা দেশে হচ্ছে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ। হচ্ছে দেশ বিদেশে নারী পাচার। কে করবে এর প্রতিকার? এখন একমাত্র তুমিই পার এ সব নর পশুদের হাত থেকে আমাদেরকে বাঁচাতে।
কোন নারীর প্রতি তার দৃষ্টি পড়লে তার রেহায় নেই। যেভাবে হোক ছলে বলে কলা কৌশল সে নারীকে ভোগ করবেই। তার এই পশু লালসায় শিকার হয়ে অনেক নারী দিয়েছে জীবন। ছেড়েছে ঘর বাড়ী। ভেঙ্গেছে স্বামীর সংসার। এমন করে দিন দিন সর্বনাশ করে যাচ্ছে অসহায় নারীর সতীত্ব।
আজ মনির খান আমেনাকে পেয়ে বেহুস হচ্ছেন যে, দুনিয়ার কোন কিছুই তার খেয়াল নেই। এমনকি রুমের জানালা লাগাতে ভুলে গেছেন। নরপশু মনির খান ধীরে ধীরে আমেনার কাছে এসে তাকে বিবস্ত্র করে জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়। আর আমেনা ফুটবলের মত একা মাঠে পড়ে রইল। মনির খান যেমন খুশি তাকে নিয়ে খেলছে।
এদিকে সোনিয়া সকালেই সাকিবের কাছে যায়। বিভিন্ন জায়গায় তাকে নিয়ে ঘুরাফেরা করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরল। হঠাৎ কি মনে করে বারান্দায় আসল। এখানে এসেই তার নজর চলে যায় মনির খানের রুমের দিকে। জানালার ফাঁক দিয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তার বাবার কু-কর্মের দৃশ্য।
একি দেখছে সে! এমন জঘন্য কাজ তার বাবা করতে পারে! লজ্জায় ঘৃনায় তার সমস্ত মুখ ফ্যাকাশে হয়ে উঠল। শিহরিত হয়ে উঠল তার সারা শরীর। দৃষ্টি সরিয়ে নিল ঐ রুম থেকে। দ্রুত রুমে এসে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে, হে আল্লাহ! এ দৃশ্য দেখার আগে আমার মরণ হলো না কেন? মেয়ে হয়ে বাবার…। নাহ্ আর আমি এ বাড়িতে এক মুহূর্তও থাকতে চাই না। এ কথা ভেবে কাপড় চোপড় গুছিয়ে একটা ব্যাগে ভরল। তারপর তর তর করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসল। একটা রিক্সা ডেকে দ্রুত সাকিবের বাসায় চলে আসে।
সোনিয়াকে ব্যাগ হাতে সন্ধ্যা বেলা আসতে দেখে সাকিব আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেল।
সাকিব বলল, কি ব্যাপার সোনিয়া। তুমি না এই মাত্র গেলে; আবার আসলে কেন? আর ব্যাগইবা হাতে কেন?
সোনিয়া সাকিবের হাত ধরে বলল, চল।
কোথায় যাব? বল তোমার কি হয়েছে? তোমার মুখ এমন ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে কেন?
তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালোবেসে থাক তাহলে চল কাজী অফিসে বিয়ে করব।
একি বলছ তুমি! কি হয়েছে বলতো আগে।
বলব, সব বলব। তার আগে এক্ষুনি চল আমাকে বিয়ে করতে হবে।
আহ সোনিয়া তুমি কি পাগল হয়ে গেলে?
না আমি পাগল হয়নি। সম্পূর্ণ সুস্থ্য আছি।
তাহলে এ মুহূর্তে বিয়ের কথা বলছ কেন? আর বিয়ের জন্য তো প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে। আমি তো কোন প্রস্তুতি নেই নি।
আমিও তো কোন প্রস্তুতি নেই নি।
বাড়ীতে কিছু না জানিয়ে…।
সে ব্যবস্থা আমি করব।
তাছাড়া টাকা পয়সার ব্যাপার স্যাপার আছে।
সে ব্যাপারে তোমার কোন চিন্তা করতে হবে না। আমি টাকা নিয়ে আসছি।
না সোনিয়া এত বড় ভুল আমি করতে পারব না। আগে তোমার সব সমস্যার কথা খুলে বল।
না। আজ আমি তোমার কোন কথা শুনব না। এখন যদি তুমি আমাকে বিয়ে না কর তাহলে আমি বাধ্য হব আত্মহত্যা করতে।
একি! বলছ তুমি! এ হয় না। না না সোনিয়া এ হতে দেব না আমি।
এখন সাকিব কি করবে। সে এখন উভয় সংকটে পড়ে গেল। এ মুহূর্তে তাকে বিয়ে না করলে যেই ত্যাজী মেয়ে সত্যি সত্যি আত্মহত্যা করবে। আর বাড়িতে না জানিয়ে বিয়ে করাও ঠিক হচ্ছে না। কারণ কত কষ্ট করে লালন পালন করেছে চাচা, মা তারা। তাদেরকে না জানিয়ে কীভাবে বিয়ে করবে সে। কিন্তু কি করবে। ভালোবাসার কাছে সব কিছু হার মানে। শুধু ভালোবাসার জন্যে সোনিয়ার কথায় রাজি হতে বাধ্য হল।
সোনিয়ার দেয়া পাঞ্জাবীটা পড়ল সাকিব। আর সাকিবের দেয়া শাড়ীটা পড়ল সোনিয়া। দু’জনে কাজী অফিসে এসে বিয়ের কাজ সমাপ্ত করল। সাকিব সোনিয়াকে জীবনের জন্যে সাথী করে নিয়ে আসে বাসায়। এখন যে সোনিয়া প্রাণের প্রিয়তমা থেকে প্রাণের প্রিয়তমা স্ত্রী হয়ে গেল। বাসার আশে পাশের সবাইকে তাদের বিয়ের কথা জানাল। নববধূ বাসায় এসে রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল। সাকিব তার স্ত্রীকে রান্নার কাজে সাহায্য করছে। এক সময় সাকিব সোনিয়ার দিকে এক পলকে তাকিয়ে রইল।
সোনিয়া এ দৃশ্য দেখে বলল, কি জামাই এভাবে চাতক পাখির মত তাকিয়ে কি দেখছ? তোমার প্রিয়তমাকে নাকি স্ত্রীকে?
সাকিব ঠোঁঠের কোণায় এক ঝলক হাসির রেখা টেনে বলল, দু’জনকেই দেখছি।
এভাবে একের পর এক মজার মজার কথা বলতে বলতে রান্না শেষ করল।
এদিকে মনির খান তার কু-কর্ম সমাপ্ত করে মেয়েকে খুঁজছেন। কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। বুয়ার কাছেও বলে যায়নি। কোথায় যেতে পারে চিন্তায় অস্থির। এতক্ষণে তার টনক নড়েছে। নিজের রুমে মনির খান ধপাস করে বসে যান। এমন একটা যুবতী মেয়ে বাড়ি থেকে না বলে চলে যাবে তা ভাবতেও পারেনি মনির খান। এখন রাত বাজে দশটা। এখনও বাসায় ফেরেনি। এতে বাবার তো চিন্তা হবার কথায়। কিন্তু এ চিন্তাটা যে মনির খান আগে করেন নি। সাবুর দানার মত ঘাম বেয়ে পড়ছে মনির খানের কপাল বেয়ে। টেলিফোনের রিসিভারটি হাতে নিয়ে ডায়াল করল বোন মাহমুদার বাসায়। রিং বেজে উঠল। হ্যালো। কে?
আমি তোর ভাই মনির খান বলছি।
কি উদ্দেশ্যে এতদিন পর বোনকে তলব করলে?
তোদের এখানে কি সোনিয়া এসেছে?
কেন? কি হয়েছে?
ওকে আজ দুপুর থেকে খোঁজে পাচ্ছি না।
বলেন কি!
হ্যাঁ।
কিন্তু ভাই সে তো আমাদের এখানে আসেনি।
এ কথা শুনে মনির খান ফোনটি ছেড়ে দিলেন।
অপর প্রান্ত থেকে মাহমুদা বলছে, হ্যালো। হ্যালো ভাইয়া কথা বল।
নাহ! কোন শব্দ আসছে না। পরে বিরক্ত হয়ে মাহমুদা ফোনটি রেখে দিল। তারপর মনে মনে বলল, ভাই তুমিতো সারা জীবন পাপ করে আসছ। আজ হয়তো সেই পাপের শাস্তিস্বরূপ তোমার কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে গেছে।
মনির খান তাদের আত্মীয় স্বজন যারা আছে; তাদের সবার কাছে ফোন করে জানিয়ে দিলেন। কিন্তু কোথাও কোন হদিস মেলেনি।
এদিকে সাকিব ও সোনিয়া রান্না শেষ করে খেতে বসলো। সোনিয়া ভাত মেখে বলল, আজ তোমাকে আমি নিজ হাতে খাইয়ে দেব। এতদিন লোকলজ্জার ভয়ে কিছু করতে পারে নি। এখনতো আর বাঁধা নেই। আজ তো তিন অক্ষরের কবুল বলে পৃথিবীর সবচেয়ে আপনজন হয়ে গেলাম।
সাকিব বলল, ঠিক আছে। তোমার যা ইচ্ছে তাই কর।
সাকিব হা করে তার মুখখানা এগিয়ে দেয়। সোনিয়া ছোট শিশুর মতো তাকে ভাত খাওয়াতে থাকে আর নিজেও খেতে থাকে।
চলবে…
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-১)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-২)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৩)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৪)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৫)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৬)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৭)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৮)পড়ুন।
প্রাণের প্রিয়তমা(পর্ব-৯)পড়ুন।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top