রঙ্গিন ফানুশ (শেষ পর্ব)
( ২য় পর্বের লিঙ্ক )
এগার
রূপক বাসায় ফিরে ওর মাকে সব বলল। মা শুনে তো চিৎকার করে উঠল। রুপকের মা বলল, ‘তোর বাবাকে আমি এ কথা কিভাবে বলব? সে তো একথা শুনলে হার্টফেল করে মরেই যাবে।’ খাবারের পর রুপকের মা রুপকের বাবাকে আস্তে আস্তে সব বলল।
রুপকের বাবা সঙ্গে সঙ্গে রূপককে ডেকে পাঠাল তার রুমে। রূপক রুমে আসলে রুপকের বাবা রূপককে প্রথমেই একটা চড় দিল।
রুপকের বাবাঃ তোকে এই কথা শোনার জন্য মানুষ করেছি। এত টাকা পয়সা দিয়ে প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়াচ্ছি, তা কি প্রেম কইরা উড়ানোর জন্য? তোর লজ্জা করল না আমাকে এ কথা বলার। যেখানে তোর ভাই এখনও বিয়ে করেনি! যারা টাকায় এখন সংসার চলছে। কোথায় পড়ালেখা শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াবে, বাপ-মা কে দেখবে, তা না এখনই নিজেরটা বোঝা শুরু করে দিছে! তোর বিয়ে আমরা ঠিক করব। এই বয়সে প্রেম কইরা বেড়ানোর মত কোন বেহায়া মেয়েকে নয়, ভদ্র ঘরের মেয়ে। সে নিয়ে তোকে মাথা ঘামাতে হবে না। তোকে টাকা-পয়সা দেয়া হয়, পড়াশুনা করে ভাল রেজাল্ট করে একটা ভাল চাকরি করার জন্য। সে কাজ কর। খবরদার, আর কখনও যেন আমি ঐ মেয়ের কথা না শুনি।
রূপক মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।
বার
ভার্সিটিতে রূপক ২ দিন ধরে আসে না। তমা ওর খোঁজ করেও পায় না, ফোনও বন্ধ। ৩য় দিন ভার্সিটিতে আসতেই শান্ত ওকে বলল, কিরে? কোথায় ছিলি? তোর ফোনও বন্ধ! তমা এসে খুঁজে খুঁজে পাচ্ছে না। কি হয়েছে?
রূপক উদাসীনভাবে ‘ও’ বলে চলে গেল ক্লাশে।
বিকেলে রূপক শান্তকে ডেকে বলল, তোর সাথে অদিতির কথা হয়?
শান্ত বলল, হ্যা! হয় তো।
রূপক বলল, অদিতিকে এখন ফোন করে এখানে একটু ডাকতে পারবি? আর বলবি তমা যেন না জানে।
শান্ত বলল, আচ্ছে।
শান্ত ফোন করল। কিছুক্ষণ পরে অদিতি চলে এল। এরপর রূপক অদিতিকে একটি চিঠি দিয়ে বলল এটা তমাকে দিতে। তমা বাসায় ফিরে পড়তে লাগল-
তমা,
তুমি ভুলে যেও,
ভালবাসা মিশে যাক গোধুলীর আলোতে
তারপর অন্ধকার আসুক নিঃস্ব পৃথিবীতে।
তুমি ভাবছো এমন কেন কথা, এতদিন হয়নি কেন দেখা
কেন চোখমুখ হৃদয় রেখেছো না পাওয়ার যন্ত্রনায়?
জানি তুমি পেয়েছো ব্যাথা সেই শুধু ভয়।
তুমি পারবে না ভুলতে, আমিও পারবো না
তবু তাদের নীতি আমাদের মিলতে দেবে না।
যারা ক্ষমতা পেয়ে গড়ে সমাজের প্রথা,
মিথ্যে দম্ভের দাপটে এড়ায় হৃদয়ের কথা।
তবে আর কিভাবে হবে একসাথে পথ চলা?
যে পথ বেছে নেয় নিঃস্ব প্রেমিক প্রেমিকারা
সেই পথেই কি চলতে হবে আমাদের,
যে পথে মৃত্যু হয় এক সাথে জীবনের, স্বপ্নের?
আমি জানিনা, আমি বুঝিনা
কিভাবে একের স্বপ্ন অন্যের উপর চাপিয়ে সুখ পায় মানুষ!
আর কতকাল অন্যের স্বপ্নের বোঝা বয়ে বেরাবে ফানুশ?
সেই যন্ত্রনা স্বপ্ন ভাঙ্গার,
শত সহস্র মানুষের মত তোমার আমার।
তবে সেই হোক যদি স্বপ্ন যায় মরে
ভালবাসা হারায় রাতের আঁধারে
মানুষ ভালবাসে সবচেয়ে বেশি যারে
সেই দান করি দুজন দুজনারে।
যেখানে মৃত্যু ছাড়া মিলন সম্ভব নয়
যেখানে এ জীবন মিলনের অন্তরায়,
সেখানে তুমি যদি চাও আমারে তোমার
আসো যেখানে অধরা হাতছানি দেয় তোমায় আমায়।
যদি না পারো ক্ষমা কর আমারে তুমি
ভুলে যেও তোমার মনে ছিলাম আমি।
আর যদি পার মৃত্যু এসে নিয়ে যাক চরন চুমি।
একমাত্র মৃত্যুই করবে তোমারে আমার নিঃস্ব প্রেমী।
তমা অদিতিকে পরেরদিন চিঠির উত্তর পাঠাল। রূপক চিঠি খুলে পড়ল-
রূপক,
আকাশ ভরা জ্যোৎস্না আমায় দেখে হাসে যদিও বেদনায়
আমি বন্দী পায়রার মত ভাবতে পারি না কিছু, কি হবে
উত্তর? মনের গহীন থেকে গহীনে খুঁজতে থাকে চেতনায়।
চোখে ভাসে তোমার মুখ, আমারে পাবার চিন্তামগ্ন আকুলতা।
হোক না ধ্বংস জীবন, নিঃস্ব হয়ে দিয়েছি মন, যার শেষ
হবে না হীন প্রথায়, যা হৃদয়কে খুন করে ক্ষমতাকে হাসায়,
ক্ষমতার হুমকিতে চুরমার করে মনের দাবি অবহেলায়।
তাই ভালবাসাতেই পূর্ণ হোক হৃদয় যদি বা হই নিঃশেষ।
জীবন জীবনের কল্যানে হাসুক ভালবাসার জয়গানে,
দুজন দুজনারে জীবনের দানে ভাসুক ধরা প্রেমবাণে।
রূপক চিঠি পড়ে দৌড়ে তমার সাথে দেখা করতে ওর ডিপার্টমেন্টে চলে গেল। রূপক তমাকে বলল, আচ্ছা, এটা কি আসলে ঠিক হবে? আমাদের তো চেষ্টা করা উচিৎ!
তমাঃ অবশ্যই আমরা চেষ্টা করব। যতদিন পারব একসাথে বাঁচব! আর যখন বুঝব একসাথে আর বেঁচে থাকা যাচ্ছে না, তখন একসাথে পৃথিবীর বন্ধন ছেড়ে স্বর্গে পাড়ি জমাবো।
রুপকঃ তবে তাই হোক। সেখানেই হবে আমাদের স্বপ্নের ঠিকানা।
তের
১ সপ্তাহ পর রুপকের বড় ভাই ইতালি থেকে ফিরে এল। ২/৩ দিনের মধ্যেই ওর বড় ভাই খেয়াল করল রূপক কিছুটা আনমনা, আগের মত আর ভাইয়ের সাথে হাসি-ঠাট্টা করে না। সে তার মাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, মা রুপকের কি হয়েছে বলতে পার?
রুপকের মাঃ কই! নাতো! ও তো এমনই।
ভাইঃ নাহ। ছোটবেলায় তো ও আমাকে ছাড়া থাকতই না। আর এখন তো ওকে কাছে পায়ই না। কিছু হয়েছে?
রুপকের মাঃ কি জানি! বড় হয়েছে। এখন কি আর তেমন আছে?
ভাইঃ ঠিক আছে। দেখি, কথা বলে দেখি।
এসময় তমার বাড়িতে তমার বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা শুরু হল। তমা রূপককে বলল, আমার জন্য পাত্র দেখা চলছে। মনে হয় আমাদের সময় এসে গেছে।
রূপক বাড়ি এল। ঐদিন সবার সাথে হাসি-ঠাট্টা করল। বিকেলে ওর ভাই গিয়ে বাহির থেকে রুপকের জন্য একটি পেইন্টিং কিনে এনে রুপকের ঘরে ঢুকে দেখলেন রূপক নেই। ভাবলেন রূপক এসে পেইন্টিংটা দেয়ালে টানানো দেখলে আরও বেশি চমকাবে, খুশি হবে। দেয়ালে পেইন্টিংটা টানাতে গিয়ে ওয়ারড্রপের উপরের কাপড় সরাতে গিয়ে একটি কাগজ নিচে পড়ল। সে কাগজটা তুলে পড়ল। কাগজটা ছিল তমার চিঠি। সে সব বুঝতে পারল। সে তার মাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, মা রুপক কি কাউকে ভালবাসে?
রুপকের মাঃ কেন বাবা?
ভাইঃ বলই না।
রুপকের মাঃ কি বলি বাবা! তমা নামের একটা মেয়েকে পছন্দ করত। আমাকে এসে বলেছিল। আমি তোমার বাবাকে জানিয়েছিলাম। তো, তোমার বাবাই ইচ্ছা মতন বকেছিল। এখন মনে হয় ঐ মেয়ের সাথে আর যোগাযোগ নেই।
ভাইঃ বাবা কোথায়?
মাঃ বারান্দায়।
রুপকের ভাই বারান্দায় গিয়ে পাশের চেয়ারে বসলেন।
ভাইঃ বাবা কি করছ?
রুপকের বাবাঃ এই, দেশের খবর দেখছি। কি যে হবে এই দেশটার!
ভাইঃ ওহ! তা নিজের ঘরের খবর রাখছ?
বাবা অবাক হয়ে বলল, কেন? কি হয়েছে?
ভাইঃ শুনলাম রূপক নাকি একটি মেয়েকে পছন্দ করে।
বাবাঃ হ্যা! মাঝখানে একটু উচ্ছন্নেই গিয়েছিল। তুমি চিন্তা কর না। আমি ওকে শাসিয়ে দিয়েছি। ও মেয়ের সাথে আর সম্পর্ক নেই।
ভাইঃ তাই নাকি? তুমি সিউর?
বাবাঃ বলছ কি! পাজিটা আজ আসুক!
ভাইঃ আর আসবে না। ও আর আসবে না।
বাবাঃ কেন?
ভাই পকেট থেকে তমার চিঠিটা বের করে দেখিয়ে বলল, ওরা দুজনে যেকোন সময় আত্মহত্যা করবে।
রুপকের মা শুনে চিৎকার করে উঠল। রুপকের বাবার মুখ রক্তশুন্য দেখাল।
ভাইঃ তোমাদের জন্য আমি আজ এত বছর পর দেশে ফিরলাম। তোমরা ইতিকেও মেনে নাওনি। একই পরিণতি হতে পারত আমাদের! যদি না ইতি আমাকে ছেড়ে একাই চলে যেত। কি দোষ ছিল আমাদের? কি দোষ ছিল ইতির? শিক্ষিত, ভাল পরিবার, ভদ্র, গুনী- সবই তো ছিল ওর মধ্যে, এমনকি তোমরাও যেমনটি চাও। দোষ ছিল এই, যে- পছন্দটা ছিল আমার, তোমাদের থেকে নয়। কত আকুতি করেছিলাম- আমাদের উপর বিশ্বাস রাখ, আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে তোমাদের সাথে নিয়েই সংসার শুরু করব, শুধু আমাদের পছন্দটাকে একটু মুল্যায়ন কর। কিন্তু, তোমরা একটুও দয়া দেখালে না। প্রেম, ভালবাসা যেন এক পাপ। সত্যি কি তাই? রূপক আজ সব বোঝে। ও যদি সবকিছু ঠিক রেখে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে পারে, তাহলে তোমাদের সমস্যা কোথায়? ও তো তোমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে না। ও তো ওর আনন্দের মুহুর্তে তোমাদেরকেই পাশে পেতে চেয়েছে। তাই তো ছুটে তোমাদেরকেই সব জানিয়েছে। অথচ, তোমরা আজও এর মুল্য দিতে শেখোনি।
বাবাঃ রূপক এখন কোথায়?
ভাইঃ আমি জানি না। তবে, যেকোন দিন যেকোন সময়ে ওরা আত্মহত্যা করতে পারে। এমনকি আজও।
বাবাঃ তুমি এখন কি বল?
ভাইঃ আমি বলি- তমার বাড়িতে যোগাযোগ কর, ওর বাবা-মা’র কাছে ওদের কথা বলে প্রস্তাব নিয়ে যাও। যেন- ওদের দুজনের পড়ালেখা শেষ হয়ে নিজেরা established হলে তখন আমরা ওদের বিয়ে দেব। আমার মনে হয়, তোমরা গিয়ে বললে ওর বাবা-মা আপত্তি করবেন না।
বাবাঃ ঠিক আছে। রূপককে এখনই ফোন দেও।
চৌদ্দ
কিন্তু, ওদিকে রূপক আর তমা সকালে ঘর থেকে বের হয়ে একসাথে দেখা করে। রূপক বলে, তুমি কি প্রস্তুত?
তমা মৃদু হেসে বলল, চিরদিন। জীবনে ও মরণে।
রুপকঃ তাহলে চল আমরা একটা হোটেলে যাই।
হোটেলে গিয়ে ওরা কিছুক্ষণ হোটেলের বারান্দায় গিয়ে শেষ বারের মত চারপাশ তাকাল। রুমে ফিরে এলে তমা বলল, শোন, আমার ব্যাগে কীটসের একটি কাব্যগ্রন্থ আছে। ওখানে ‘অড টু নাইটিঙ্গেল’ কবিতাটা আমার খুব প্রিয়। চল আমরা ঐ কবিতাটা আবৃতি করে নেই।
আবৃতি শেষ হতেই হঠাৎ করে রুপকের পকেটে ওর মোবাইল বেজে উঠল। রূপক বের করে দেখল ওর বড় ভাই ফোন করেছে। রূপক তমাকে বলল, ভাইয়ার ফোন। ভাইয়ার সাথে আজকে কথা হয়নি। আমি কি ফোনটা ধরব?
তমাঃ আচ্ছা, ধর।
রূপক কল রিসিভ করতেই ওর ভাই বলল, তুই কোথায়?
রুপকঃ এই তো, এক বন্ধুর বাসায়।
ভাইঃ শোন, আমি তমার চিঠি পড়েছি। তুই আমাকে কেন বললি না? তুই বাসায় আয়। আমি সব দেখছি।
রুপকঃ কিন্তু, ভাইয়া, বাবা তো মেনে নেবে না।
ভাইঃ বাবার সাথে আমার কথা হয়েছে। তারা খুব শীঘ্রই তমাদের বাড়িতে যাবে ওর বাবা-মার সাথে দেখা করতে। তুই এখনই বাসায় চলে আয়।
এ কথা শুনেই রূপক ফোন কেটে দিয়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। তমা দেখল রুপকের গাল বেয়ে অশ্রু ঝরছে। তমা জিজ্ঞেস করল, কি হল?
রুপকঃ ভাইয়া সব জেনে গেছে।
তমাঃ তাহলে?
রুপকঃ ভাইয়া বাবাকে রাজি করিয়েছে। খুব শীঘ্রই তোমাদের বাসায় যাবে।
তমাঃ কি?
এ বলে তমার চোখেও অশ্রু ঝরতে লাগল। দুজনে কাঁদতে কাঁদতে হাসতে লাগল।
তমা বলল, আর আমরা কি করতে যাচ্ছিলাম?
[পাদটীকাঃ প্রতি বছর বহু যুবক-যুবতী আত্মহত্যা করে। যার বেশিরভাগই ভালবেসে পরিবারের সমর্থন না পেয়ে এ কাজ করে। এটা হয়ে থাকে মেয়ের পরিবার বা ছেলের পরিবার অথবা উভয় পরিবারের অসমর্থন বা বাঁধায়। আমাদের অভিভাবকবৃন্দ প্রেম শব্দ শোনা মাত্রই এক উচ্ছৃঙ্খল, অবাধ্য ছেলে-মেয়েকে কল্পনা করে বসে। তারা একটুও যাচাই করে দেখতে চায় না, তার সন্তানের পছন্দের পাত্র/পাত্রীটি কেমন। পরিণতি হয় কিছু মেধাবী, সম্ভাবনাময় জীবনের অসময়ের অপমৃত্যু কিংবা খুন।
আমরা পত্র-পত্রিকায় প্রায়ই দেখি প্রেমিক-প্রেমিকার লাশ পড়ে আছে বেডরুমে বা পুকুর পাড়ে বা গাছে ফাঁসিতে ঝুলে আছে। তাদের কেউ কেউ হয়ত রেখে যায় কোন সুইসাইড নোট। এর একটাই কারন- তারা আজীবন একসাথে থাকতে চায়। কিন্তু, পরিবার তা মেনে নেয় না। এজন্য তারা মৃত্যুর মাধ্যমে মিলনবদ্ধ হয়।
একই ঘটনা ঘটতে পারত রূপক ও তমার বেলায়। রুপক-তমার মত যদি পরিবার শেষমেশ সব বুঝতে পারত, তাহলে আর হারাতে হত না কিছু হৃদয়বান মানুষকে। যারা ভালবাসার জন্য মরে যেতে তারা বেঁচে থাকলে আমাদের পৃথিবীটা হতে পারত আরও সুন্দর। আমরা চাই ফিল্ম, নাটকের গল্পে যেমন পরিবারের দর্শকরা হাততালি দিয়ে ওঠেন, তেমনি নিজের সন্তানদের ক্ষেত্রেও যেন সেই মূল্যায়ন দিতে শেখেন, তাদের পাশেই থাকেন। আপনি যেমন সন্তানের অমঙ্গল চান না, আপনার সন্তানটিও তার সবচেয়ে আনন্দের মুহুর্তে আপনাকে ছাড়া থাকতে চায় না।]