ভাষা বিভ্রাটের খেসারত
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1453বার পড়া হয়েছে।
বহু বছর আগের কথা; বহরমপুর গ্রামে চান্দু ডাক্তার নামে এক প্রবীণ ডাক্তার ছিলেন। বয়েস অনুমান নব্বই তো পার হবেই। চান্দু ডাক্তার বহু গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে ডাক্তার, শিক্ষক ও পোষ্ট মাষ্টার। তৎকালীন সমাজে তিনি ছিলেন গ্রামের একমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তি। বস্তুতঃ তাঁর নাম ছিল অরূপ চান্দ সরকার, কিন্তু গ্রামের মানুষের নিকট তিনি চান্দু ডাক্তার নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন।
সে সময় গ্রামে কোন স্কুল কলেজ ছিলনা, স্থানীয় জমিদারের কাচারী ঘর সংলগ্ন নাট্যশালায় একটি পাঠশালা বসতো। তাতেই গ্রামের ছেলেমেয়েরা আদর্শ লিপি, চারূপাঠ, ধারাপাত ও সাধারণ যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগ শিখতো। প্রথম জীবনে চান্দু ডাক্তার সেই পাঠশালায় শিক্ষকতা করতেন। পরবর্তীতে বৃটিশ রাজ যখন ‘মাইনর স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন – চান্দু ডাক্তার সেই স্কুলে শিক্ষকতার দায়িত্ব পান।
জমিদারদের সঙ্গে বৃটিশরাজের যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়, অথচ যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই অনুন্নত। তাই বৃটিশরাজ গ্রামে একটি ডাকঘর স্থাপন করেন। জমিদারের কুঠিতেই সেই ডাকঘর, কালে-ভদ্রে জমিদারের দু’একটি চিঠি-পত্র, দলিল, ফরমানের পাশাপাশি গ্রামেরও দু’য়েক জনের চিঠি-পত্র আদান প্রদান হ’ত। গ্রামে আর কোন উপযুক্ত লোক না থাকায় সেই ডাকঘর পরিচালনার দায়িত্বও পান চান্দু ডাক্তারই। মাসে দুই চারটি চিঠি-পত্র আদান প্রদানের জন্য সেই ডাকঘরের জন্য স্থায়ী কোন ডাক-পিয়নও ছিল না।
তৎকালীন সময়ে দু’একজন সাহসী মানুষ স্টিমার বা রেল কোম্পানীতে চাকরী নিয়ে রেঙ্গুন বা কোলকাতায় যেতো। আশপাশের কয়েক গ্রাম মিলিয়ে এমনই দুই চারজন লোক প্রবাসে থাকত, তাদের বলা হতো ‘মুসাফির’। মাঝে-মধ্যে ‘মুসাফির’দের পাঠানো দু’একটি চিঠি বা টাকাও আসতো এই ডাকঘরের মাধ্যমে। তাই গ্রামের কারো কোন চিঠি এসেছে, কলিকাতা বা রেঙ্গুন প্রবাসী কেউ পরিবারের জন্য টাকা পাঠিয়েছে তা’ পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্বও ছিল চান্দু ডাক্তরের।
টাকা বা চিঠি শুধু পৌঁছিয়েই দিয়েই চান্দু ডাক্তরের দায়িত্ব শেষ ছিল না, কারো কারো চিঠি তাঁকেই পড়ে দিয়ে আসতে হ’ত এমন কি প্রয়োজনে সেই চিঠির উত্তরও লিখে দিতে হ’ত। এর জন্য তিনি কখনো কারো কাছ থেকে বাড়তি কোন সুবিধা নিতেন না। তিনি ছিলেন খুবই সজ্জন ব্যক্তি, একজন খাঁটি সমাজসেবক ও পরোপকারী মানুষ। তৎকালীন সমাজে আশপাশের দশ গ্রামেও একজন ডাক্তার ছিল না। গ্রামের মানুষের বিপদ-আপদ, অসুখ-বিসুখে তিন সবার খোঁজ-খবর রাখতেন।
স্বাস্থ্য-সচেনতার অভাবে গ্রামে প্রায়ই মারি-মড়ক লেগে থাকতো। বছরে দুই তিন বার মহামারীর আঘাতে গ্রামের শত শত মানুষের মৃত্যু হ’ত। চোখের সামনে বিনা চিকিৎসায় মানুষ মরছে, গ্রামে কোন ডাক্তার নেই, তাঁরও কিছু করার নেই! এসব ভেবে তিনি খুব অসহায় বোধ করতেন। তাই নিজেই তিনি ’হ্যানিম্যানের মেটেরিয়া মেডিকা’ পড়ে গ্রামের অসহায় মানুষদের মাঝে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শুর করলেন। এভাবে দীর্ঘদিনের সাধনা ও অভিজ্ঞতায় ডাক্তার হিসাবে তিনি খুব যশ ও খ্যাতি অর্জন করলেন সেই সাথে গ্রামের মানুষের অতি আপনজন হয়ে উঠলেন। অতএব সেই অনুন্নত গ্রামে চান্দু ডাক্তার একাধারে শিক্ষক, পোস্টমাস্টার ও ডাক্তার হিসাবে সবার বিপদ-আপদের একমাত্র ভরসা ছিলেন।
অশিক্ষা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন সেই অন্ধকার যুগে গ্রামে প্রধান তিনটা রোগ মহামারি রূপে আবির্ভূত হলে বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াত। তার মধ্যে সবচে’ জঘন্য রোগটির নাম ছিল – ’ওলাউঠা’। ’ওলাউঠা’য় আক্রান্ত হওয়ার এক থেকে দেড় দিনের মধ্যেই রোগী মারা যে’ত। সেই রোগটি এখনো আছে, বর্তমানে তা’ কলেরা বা ডায়রিয়া নামে পরিচিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নত এই আধুনিক যুগেও জীবনে কম করেও একবার কারো কলেরা বা ডায়রিয়া না হয়েছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তাই বলে এখন তো আর ওই রোগে কদাচিৎও একজন মানুষ মরেনা ! স্বাস্থ্য-সচেনতার অভাব, পঁচা-বাসি খাবার ও মশা মাছির যথেচ্ছ উপদ্রব ছাড়া তখন সুপেয় পানির সহজলভ্যতার অভাবে মানুষ নদী-নালা. খাল-বিল ও পুকুর-ডোবার পনির উপরই ছিল নির্ভরশীল। তাই রোগটির প্রাদুর্ভাব হওয়া মাত্রই পানি ও মশা-মাছির মাধ্যমে সে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ত।
অশিক্ষা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন মানুষগুলোর ধারণা ছিল – ‘ওলাদেবী’ রুষ্ঠ হয়ে যে গ্রামে চড়াও হয়, সে গ্রামের মানুষের আর রক্ষা নেই। সুতরাং, যতদিন ’ওলাদেবী’ আছে ততদিন আর সেই গ্রামের ধারে কাছেও যাওয়া যাবেনা। এমনকি ’ওলাদেবী’র ভয়েতে মানুষ নিজের বাড়িঘর ফেলে অন্য গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নি’ত। আবার সেই গ্রামের মানুষ যদি জানতে পারত যে তারা ’ওলাউঠা’ আক্রান্ত গ্রাম থেকে এসেছে তা হলে যত আপনজনই হোক না কেন তাদেরকে গ্রামে ঢুকতে দিত না। তাই ’ওলাদেবী’কে খুশী করতে তারা পূজা দি’ত, আক্রান্ত রোগীর প্রাণ বাঁচাতে ’জোড়-পাঁঠা’ মানত করত। মানুষজন সারা রাত জেগে দলবেঁধে মশাল হাতে করে ’ওলাদেবী’কে তাড়িয়ে বেড়াত আর সুর করে বিচিত্র সব গান গাইত।
দ্বিতীয় ভয়াবহ রোগটির নাম হ’লো ’শীতলা’ রোগ যা – বর্তমানে ’বসন্ত’ বা ’চিকেন পক্স’ নামে পরিচিত। এ রোগটির ব্যাপারে ও সে যুগের মানুষ জানত; এটা হ’ল – ’শীতলাদেবী’র আক্রোশ। তাই ’ওলাদেবী’র মতই ’শীতলাদেবী’র ও পূজা হ’ত, তেমনি মানুষ গান গেয়ে দল বেঁধে রাত জেগে পাহারা দি’ত। প্রতি বছর এখনো এই রোগটি বহু মানুষেরই হয়ে থাকে তাই বলে এই রোগে কারো মৃত্যু হয়েছে তেমন খবর পাওয়া যায়না। যাহোক, সেই ’ওলাউঠা’ বা ’শীতলা’ রোগ নিরাময়ের তেমন কোন কার্যকরী চিকিৎসা সে যুগে তো ছিলই না এখনও নেই তবে এখন প্রতিষেধক ঔষধ পাওয়া যায়। ’ওলাউঠা”য় আক্রান্ত রোগী তো এক-দেড় দিনের মধ্যে মারা যে’ত কিন্তু ’শীতলা’ রোগ হলে আর রক্ষা ছিলনা।
রোগীর সমস্ত শরীরে দগ্দগে ঘা হয়ে সেবা শশ্রূষাবিহীন অন্ধকার ঘরে পড়ে থেকে যন্ত্রণায় কাতরাতে হ’ত। নিজে ও আক্রান্ত হবার ভয়েতে কেউই রোগীর কাছে যে’ত না আর সেবা-যত্নের তো প্রশ্নই আসেনা। রোগের ব্যপকতা অনুসারে এক থেকে দেড় মাস এমন কি দুই মাস পর্যন্ত রোগ যন্ত্রণায় ভোগে বেশীর ভাগ রোগীরই মৃত্যু হ’ত। ভাগ্যক্রমে কেউ বেঁচে গেলে শরীরের ভিতরকার স্থায়ী ক্ষতি কি হ’ল তা দেখা না গেলে ও বাহ্যিক ক্ষতি যেমন; চোখ কান নষ্ট হয়ে কালা বা অন্ধ হয়েই বাকী জীবন তাকে মানুষের অনুগ্রহ কুড়িয়ে বেঁচে থাকতে হ’ত।
তৃতীয় জীবনঘাতী রোগটি ছিলো – ‘ম্যালেরিয়া’। এই রোগেও মানুষ দীর্ঘদিন ভোগে ভোগে দূর্বল হয়ে মৃত্যু বরণ করত। তবে এই রোগটি পূর্বোক্ত দু’টি অসুখের মত এত জঘন্য ছিলনা। অধুনা এই রোগের প্রতিষেধক ও চিকিৎসা আছে। আমাদের দেশ বর্তমানে ’ম্যালেরিয়া’ মুক্ত হলেও পৃথিবীর বেশকিছু দেশে এখনো এই রোগটি আছে। বিশেষ করে আফ্রিকা, ল্যাটিন্ আমেরিকা ও আমাদের পাশের দেশ মায়ানমারে এখনো প্রায়ই রোগটি ছড়িয়ে পড়তে শোনা যায়।
তখনকার দিনে এসব রোগের যেমন ছিলনা প্রতিষেধক বা চিকিৎসা ব্যবস্থা, তেমনি স্বাস্থ্য-সচেতনতার অভাব ও অনুন্নত জীবন ব্যবস্থার কারণে এসব রোগে মৃত্যুহার ছিল অনেক বেশি। এতদসত্ত্বেও ভাবতে অবাক লাগে যে – এত ’শত্রুর মুখে ছাই’ দিয়েও তখনকার যুগে কিছু কিছু মানুষ বেশ দীর্ঘ জীবন লাভ করত। গল্পে বর্ণিত চান্দু ডাক্তার ছিলেন তেমনি একজন। নবতিপর বৃদ্ধ একটি মানুষ; হোক না চৈত্রের কাঠফাঁটা রোদ কিংবা শ্রাবণের অঝোর বরিষণ – দিব্বি পায়ে হেঁটে তিনি গ্রাম থেকে গ্রমান্তরে ছুটে যেতেন মানুষের সেবা করতে। অথচ সেখানে তার বিন্দুমাত্রও ছিল না কোন আর্থিক লালসা। শতবর্ষি এমন একজন মানুষ যার আর্থিক কোন অনটনও ছিলনা অথচ এই বয়েসের আরাম আয়েস ত্যাগ করে বিনা স্বার্থে শুধু আর্তের সেবা কারার জন্য এভাবে ঝড়-জল উপেক্ষা করে গ্রামান্তরে ছুটে যাবেন তা’ আজকের অর্থনীতির এই প্রতিযোগীতার যুগে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না।
নবতিপর বৃদ্ধ এই মানুষটির স্বাস্থ্য সম্পদ অটুট থাকলেও শেষ বয়েসে দাঁত ছিলনা একটিও। তাই তাঁর অনেক কথা জড়িয়ে আস’ত, তাঁর একান্ত কাছের মানুষ ছাড়া অন্যেরা তাঁর অনেক কথাই বুঝতনা। এই দাঁত না থাকা ও কথা জড়িয়ে আসার কারণে ডাক্তার হিসাবে রোগীর প্রতি তাঁর নির্দেশনার ভুল ব্যাখ্যা করে একবার এক রোগীর মৃত্যু হ’ল কিন্তু কেউ তাঁকে একটু ভুলও বোঝেনি বা তাঁর প্রতি কেউ কোন অসন্তুষ্টও হয়নি। অথচ পরোপকারী ডাক্তার হয়েও সেটাই ছিল তাঁর জীবনের শেষ চিকিৎসা সেবা।
একবার এক রোগীর কলেরা হলে চান্দু ডাক্তারকে ডাকা হ’ল। যেহেতু তিনি সকলেরই নির্ভরতার প্রতীক সুতরাং চান্দু ডাক্তার এসে গেছেন তো আর কোন ভয় নেই। সুতরাং রোগীর আত্নীয়-স্বজন ভরসা পে’ল। তিনি এসে রোগীকে দেখে শুনে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেন – পথ্য বা চিকিৎসা হিসাবে শুধু বেশিবেশি ’গ্লুকোজে’-এর পানি পান করাতে বলে গেলেন অর্থাৎ ’গ্লুকোজ’ মিশ্রিত সরবত খাওয়াতে বললেন। দাঁত না থাকার দরুণ ’গ্লুকোজ’ এর উচ্চারণটা বোধহয় হ’য়ে ছিল অনেকটা ’গোলো গোছ’-এর মতো। রোগীর অভভাবকরা শব্দটাকে ’গরুর গোছ’ (গরুর মাংশ) বলেই ধরে নিয়েছিল।
সে যুগে হয়ত ’গ্লুকোজ’ শব্দটি বা ওই নামের কোন বস্তুর সাথেও গ্রামের মানুষের পরিচয় ছিলনা। তাই শব্দটা শুনতে যত বেখাপ্পাই মনে হোক না কেন – যেহেতু চান্দু ডাক্তার ’গরুর গোশতের’ পানি খাওয়াতে বলেছেন তা’ তো আর তিনি না জেনে বলেননি। ডাক্তার সাহেব বিরক্ত হবেন ভেবেই হয়তো অশিক্ষিত গরীব মানুষ বিষয়টি পরিস্কার হ’তে আর কোন বাড়তি প্রশ্ন করতে সাহস পায়নি।
তখনকার দিনে গ্রামে কোরবানীর ঈদ ছাড়া কদাচিৎ বছরে দু’একদিনই গরুর মাংশ পাওয়া যেতো। তাও কোন গৃহস্থের কোন গরুর অসুখ হলে বা গরুটি কোন দুর্ঘটনার শিকার হলে তা’ দাম ধরে জবাই করে গ্রামের মানুষ সামর্থ্য মতো টাকা দিয়ে আনুপাতিক হারে মাংশ ভাগ করে নিত। যে রোগীতে ’ওলাদেবী’ ভর করেছে তা’কে বাঁচাতে হ’লে যেখান থেকেই হোক ’গরুর গোশত’ যোগাড় করে তার পানি খাওয়াতেই হবে। সুতরাং একজন তখনই ছুটে গে’ল শহরে; যেমন করেই হোক গরুর মাংশ নিয়ে আসতেই হবে।
যথারীতি গরুর মাংশ নিয়ে লোক ফিরে এলে সেই মাংশ পানিতে ভিজিয়ে কলেরার রোগীকে খুব বেশিবেশিকরে খাওয়াতে লাগল। ফলে রোগীর বমি আগের চে’ আরো বেড়ে গে’ল। এই মাংশের পানি যতই রোগীর মুখের কাছে ধরছে; আর সেই পানি পান করবে ‘না না’ বলে রোগী ততই হাত পা ছুঁড়া-ছুঁড়ি করছে। রোগীর ভালোর কথা বিবেচনা করে আত্নীয়-স্বজন রোগীকে ধরে বেঁধে জোর করে সেই পানিই খাইয়ে চলেছে। এভাবে কিছুক্ষণ জোড়া-জুড়ি করতে করতে রাত দুপুরে রোগীটি মারা গে’ল। পরদিন চান্দু ডাক্তার খবর নিতে এসে শুনলেন রোগী মারা গেছে এবং কোন ‘গোলো গোছ’ এর পানি বেশিবেশিখেয়ে যে রোগী আরো দ্রুত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে তা’ বুঝতে তাঁর আর বাকী রইল না। চান্দু ডাক্তার নির্বাক হয়ে গেলেন। ভগ্ন মনে সেই যে বাড়ি গিয়ে ঢুকলেন আর কোনদিন বের হ’ননি।
সেই প্রতীতযশা জনদরদী মানুষটি – চান্দু ডাক্তার বাকি জীবনে যে ক’দিন বেঁচে ছিলেন আর কারো চিকিৎসা করেননি। সারাজীবন বাড়ি বাড়ি ঘুরে যে মানুষটি মানবসেবা করে গেছেন অবশেষে তিনি ঘরের কোণে ঠাঁই নিয়েছিলেন। বাকি জীবন তিনি আর কারো সামনে আসেননি, কেউ দেখা করতে এলেও ফিরিয়ে দিতেন। তারপর আর তাঁকে রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াতে দেখা যায়নি। তার নামের সাথে কেউ ’ডাক্তার’ শব্দটি যোগ করলেই তিনি ক্ষেপে উঠতেন। কিংবদন্তীর সেই চান্দু ডাক্তার অতীত হয়েছেন বহুকাল আগেই কিন্তু আজো তিনি গ্রামের মানুষের মুখেমুখে বেঁচে আছেন। আজ সেই মহতী ও মানবদরদী আত্নার প্রতি রইল আমাদের সশ্রদ্ধ সালাম ও কৃতজ্ঞতা।
১,৪১৯ বার পড়া হয়েছে
গ্রাম বাংলার জীবনের স্বতঃস্ফূর্ত একটি ছবি ফুটে উঠলো লেখায়, উচ্চারণ বিভ্রাটের ব্যাপারটি মজার হতে পারতো যদি না তাতে একজন মানুষের মৃত্যু হত, এটি কি নিজের সাক্ষাৎ অভিজ্ঞতা না লোকমুখে শোনা ঘটনা … ?
চান্দু ডাক্তার আমার এলাকার মানুষ – শিশুকালে ওই বয়োবৃদ্ধ মানুষটিকে কেবল পোস্ট মাস্টার হিসাবেই দেখেছি। কিন্তু তার জীবনের ঘটনাবলী সত্য। এই কিংবদন্তীর নায়কের প্রতি আমার পরম শ্রদ্ধাবোধ থেকেই তাঁকে গল্পে তুলে এনেছি। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ বন্ধু।