শিরোনামহীন
মিলন বনিক

হয়তো অনেক কিছুই
নয়তো কিছুই নয়,
শিরোনামহীন ভালোবাসায়
কবিতার প্রয়োজনে গড়ে তুলি
আবেগের প্রাসাদ।
এতকাল বলা হয়নি তো কী হয়েছে?
এই অবেলায় যদি
তপ্ত দুপুরে রৌদ্র¯œান করি,
রাত্রির সুপ্ত নীরবতায় যদি,
জোৎ¯œাজলে অবগাহন করে সূচী হই,
তবে এ পৃথিবীর কোথাও কী
বইবে না এতটুকু সুখের বাতাস?
আঁধারের বুক ছিড়ে
নিশ্চয় হাসবে এতটুকু

হাতের মুঠোয় চাঁদ
মিলন বনিক

বালুচরে দাড়িয়ে একাকী
ঠিক রুপালী চাঁদটাকে খুঁজছিলাম।
কত অপেক্ষার প্রহর গেলো
বেলা প’রে এলো বলে কত দীর্ঘ সময় কেটেছে।
শুধু চাঁদ দেখবো বলে
নীরবে দু’টো কথা বলবো বলে
নিবিড়ে একটু ছুঁয়ে দেখবো বলে।
আমি পারিনি,
আমার সাত বছরের ছেলেটা অবলীলায়
দু’হাত ফাঁক করে মাঝখানে চাঁদটাকে ধরে

অন্য রকম বসন্ত
মিলন বনিক

আমার দক্ষিনের জানালাটা
খোলা রেখেছি কত সুদীর্ঘ সময়,
শুধু বসন্তের দক্ষিণা বাতাসে
ঝড়া পাতার মর্মর ধ্বনি শুনবো বলে।
ন্যাড়া কৃষ্ণচুড়াটা ক’দিন পরই মেলবে নতুন কুড়ি
দিগন্তের সীমারেখা বরাবর আমার খোকার
লাল ঘুড়িটা সুতো ছিড়ে হেলে দুলে
চলে গেলো বহুদুর।
শুধু বসন্তের মাতাল হাওয়াটা দোলা দিয়ে

নীরব অবগাহন
মিলন বনিক

চাঁদ ডুবে গেলে যদি চন্দ্রমল্লিকা কষ্ট পায়
বৃষ্টি থেমে গেলে যদি কখনও
চাতকের আত্মা অতৃপ্ত থেকে যায়
তবে আমি কিভাবে তোমার অস্তিস্ব ভুলে
উদাস বনবাসী হই বলো।
জোৎ¯œারা আড়াল হলে যদি মনের কষ্টই বাড়ে
অন্ধকারে মনের দরজায় সে কে, যে কড়া নাড়ে।
অকাল বোধনের পাঠ

অঙ্গীকার
মিলন বনিক

এই আমি, আবার নতুন করে
সাজাবো আমার সংসার,
ফলে ফুলে ভরবে আঙ্গিনা,
আমার হাতে গড়া বাগান।
ফুল আর পাখির কলতানে
বইবে আনন্দ হিল্লোল।
আমি গড়তে চাই সমাজ
যেখানে সবাই মানুষ।
অবিচারের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে
মানুষ পাবে মানুষের মর্যাদা।
শিশুরা ফোটাবে নিষ্পাপ হাসি,
আমার বাগানের ফুল, সংসারের সুখ
সবি-ই নিষ্পাপ।
যেন সদ্য¯œাত একটি শিশুর

বৃষ্টি ভেজা চোখ
মিলন বনিক

এসো বৃষ্টিতে ভিজে সুচি হই দু’জনে
এসো সুখী হই তবে পাখির কুজনে।
ঠোঁঠে রেখে ঠোঁঠ, বৃষ্টি ভেজা চোখ
আনমনে কত কিছু পেতে চাই লোক।
হাতে রেখে হাত ভেজা পথ ঘাট
বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে মানুষের হাট।
আরো কাছে নয় দূরে নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে
মাতোয়ারা হই তবে

রূদ্ধ দ্বারের আড়ালে দাড়িয়ে
মিলন বনিক

রূদ্ধ দ্বারের আড়ালে দাড়িয়ে
আমি শুনি —————
অসহায় রমনীর অস্ফুট আর্তনাদ
অবুঝ শিশুটির প্রতি মৃদু তিরষ্কার।
ফুরিয়ে গেলো, ছিল যে কটা ভাত
ক্ষুধার্ত, তাই ফুরিয়ে গেছে
মাতৃস্তনের অমৃত আঁধার।
বড় অসহায় ————-
নির্মম পৃথিবীর বাস্তবতায় পিষ্ট
সে রমণী আজও কাঁদে
অবুঝ শিশুটির কান্না থামাতে
গলা ছেপে ধরে

জলোচছাস
মিলন বনিক

কাইড়া নিলি ঘরবাড়ি
মোর কাইড়া নিলি সব,
কাইড়া নিলি ছোট্ট নীড়ের
মধুর কলরব।

নদীর কূলে ভাসছে কেবল
হাজার শিশুর লাশ ,
ক্যান যে এত নিঠুর হলি
বলতো জলোচছাস।

ভিটে নিলি ফসল নিলি
নিলি লক্ষ প্রাণ ,
তবু কি তোর স্বাদ মিটেনি ,
এই কিগো তোর দান ?
—————

কনে দেখা রোদ্দুর
মিলন বনিক

অনেকদিন পর
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দু’জনে
পড়ন্ত বিকেলে দেখা হলো
আশ্বিনে রোদ্দুর।
কেন জানি মনে হলো এই তো শরৎ
তবে নিশ্চয় শিউলী ফোটা সবে শুরু,
তুমি বললে মল মাসের ঢেউ লেগে
এবার পুঁজো কার্তিকে,
সাঙ্গ

উর্মির অস্বস্তি
মিলন বনিক

উর্মির অস্বস্তি
হৃদয়ের জানালা গুলো একে একে খুলে যায়,
অতন্দ্র প্রহরী হয়ে জেগে থাকে
অন্তরের নির্মম স্মৃতি গুলি।
অবিনাশী প্রেমের দীর্ঘশ্বাস, এখন
নিত্য সহচরী হয়ে ঘুড়ে বেড়ায়
হৃদয়ের জানালায়।
বসন্তের মাতাল হাওয়া আঘাত হানে
একের একের পর এক প্রতিনিয়ত
ইন্দ্রিয়ানুভুতির সুখ গুলো ছুয়েঁ যায়
ঘন নিশ্বাসের উত্তপ্ত বাতাসে,
আম্রবোলের

আমার ঘুম ভাঙ্গাতে
মিলন বনিক

আমার ঘুম ভাঙ্গাতে তুমি এসো প্রিয়
আলোর বন্যা হয়ে মুক্তির মিছিলে,
প্রার্থনায় মোর ঘুম ভাঙ্গিও না
জাগিও না প্রিয় কোমল করূণা দিয়ে।
মুছে ফেলো তোমার সজল আখিঁ
নীড়ে ফেরো ওগো ঝড়ের পাখি,
আমি যে একা নীশিত শয়নে
নিজেরে খুঁজিতে, আমারে আজিকে
লওগো আচলে ঢাকি।
জানি,