এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্যে কেন?
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1538বার পড়া হয়েছে।
অবশেষে টনক নড়েছে মন্ত্রনালয়ের। মন্ত্রী এমপিদের সফরের সময় স্কুলের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় না করিয়ে রাখার নিদের্শ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ধন্যবাদ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। ধন্যবাদ আপনাকে।অতি দ্রুত একটি সময়োপযুগী সিদ্বান্ত নেয়ার জন্যে।মন্ত্রী এমপিদের সফরের সময় স্কুলের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় না করিয়ে রাখার নিদের্শ দিয়েছেন আপনি।মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে আপনি এ নির্দেশ দেন। সূত্র মতে, মন্ত্রীদের সফরের সময় স্কুলের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখার খবরে আপনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।বুজতে বাকি নেই জনগনের মনের ক্ষোভ আপনি নিজের করে নিয়েছেন।আর এটাই বা কম কিসের?
প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশের পর ইতিমধ্যে এই বিষয়ে একটি পরিপত্রও জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।সংবাদে প্রকাশ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘শিশুবান্ধব পরিবেশ’ নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ধরনের ‘অনৈতিক কার্যক্রম’ পরিহারে সব মহলের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে মন্ত্রনালয়ের এ প্রজ্ঞাপনে।
মন্ত্রনালয়ের পরিপত্রে শিক্ষার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এবং ভবিষ্যতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীকে এভাবে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও পরিপত্রে হুশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এই সিদ্বান্তের পরেও একটি বিষয়ে খটকা থেকেই থাকলো।আর সেটি হলো, মন্ত্রনালয়ের পরিপত্রের নির্দেশ নামায় এই সিদ্বান্ত বাস্তবায়নের জন্যে শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে।তাহলে কি আমরা ধরে নিবো মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ( অর্থাৎ দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা) এই নির্দেশের আওতায় পড়বে না?
কেন এমনটি হবে? জনপ্রতিনিধিদের সংবর্ধনার ক্ষেত্রে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ও ক্লাস বর্জন কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেন কেন?
যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এই সিদ্বান্তটি নিতে হয়েছে তা হলো জনপ্রতিনিধিদের সংবর্ধনা দেয়ার নামে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জনে বাধ্য করায় সুষ্ঠু শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং একই সাথে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে অনেক ছাত্রছাত্রী অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছে কিনবা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই প্রশ্ন উঠেছিল এমপি মন্ত্রীদের অভ্যর্থনার নামে এই দুটোর কর্মের কোনটাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো যাবে না।
স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন করিয়ে এই জাতীয় কর্ম কোনো সভ্য সমাজের সামাজিক রীতি বা প্রথা হতে পারে না।তাই দাবিটি যৌক্তিক বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।
এখন মনে হচ্ছে আলোচিত এই ইস্যুটি ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ হিসাবেই রয়ে গেল।কথায় বলে না, যেই লাউ সেই কদু।কারণ এই সিদ্বান্তের পর থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের জন্যে ওইসব সভা গুলোতে অংশ গ্রহনের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা রইলো না। ফলে মন্ত্রী এমপিদের সফরের দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করাতে গিয়ে ক্লাস বর্জনে বাধ্য করা হবে না এমন গ্যারান্টি কে দিবে? নাকি মন্ত্রনালয় এই পারমিশন দিয়েই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ওই বৈধ লাইসেন্সটি একবার পেয়ে গেলে মন্ত্রী এমপিদের সংবর্ধনা দেয়ার নামে ছাত্র ছাত্রীদের রাস্তায় দাঁড় করানোর কালচার আদৌ বন্দ্ব হবে কি? মোটেই না। আইনের শক্ত খুঁটি দিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা আরো বৃদ্বি পাবে বৈকি।
চলচাতুরী না করে অন্তত মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাস বর্জন সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ব করা হোক।
মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী বিষয়টি আপনি পুনরায় বিবেচনা করে দেখবেন কি ?
১,৫৮৭ বার পড়া হয়েছে
কোন শিক্ষার্থীই কোন মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রতির জন্য রোদের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে স্বাগতম জানাবে এটা কোন ক্রমেই শুভনীয় নয়।
আমির ভাই, কেমন আছেন? লেখালেখি কেমন চলছে? আপনার ব্লগ তৈরী এগিয়ে চলছে তো?ভালো থাকেন।
আসলে জোর করে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখার যে মানসিকতা, সেটা অগ্রহনযোগ্য । সর্বগ্রহনযোগ্য, সর্বজনশ্রদ্ধেয় মানুষ দেশে খুবই কম আছেন, অতি ভক্তিতে যাঁদের জন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে ।
অসুবিধাটা সেখানেই ।
‘জনপ্রতিনিধিদের সংবর্ধনা দেয়ার নামে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জনে বাধ্য করায় সুষ্ঠু শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে – স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে কেন ? মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এটা পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন ।’ -ধন্যবাদ আপনার সমালোচনামূলক কিম্বা বলা চলে গঠণমূলক ব্লগ এর জন্য ৷
ভাল লাগল লেখাটি।ধন্যবাদ এবং শুভকামনা থাকল।
আপনার যৌক্তিক লেখার সাথে আমি এক মত । আশাকরি আপনার লেখায় প্রশাসনেও টনক নড়বে । শুভ কামনা ।