কবি আল মাহমুদের ৭৮তম জন্মদিন আজ
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1567বার পড়া হয়েছে।
‘আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে
হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশ।’
কিংবা সোনালি কাবিন কবিতায়-
‘বধূবরণের নামে দাঁড়িয়েছে মহামাতৃকূল
গাঙের ঢেউয়ের মতো বলো কন্যা কবুল কবুল।’
আবার
‘আম্মু বলেন, পড়রে সোনা
আব্বু বলেন, মন দে
পাঠে আমার মন বসে না
কাঁঠালচাপার গন্ধে।’
এমন অসংখ্য কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা, দেশের প্রধান কবি আল মাহমুদের ৭৮তম জন্মদিন আজ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই তার জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাংলা ২৭ আষাঢ়। বাবা মীর আবদুর রব। মা রওশন আরা মীর। স্ত্রী মরহুমা সৈয়দা নাদিরা বেগম। পাঁচ ছেলে ও তিন কন্যার জনক তিনি।
১৯৩০-এর কবিদের হাতে বাংলা কবিতায় যে আধুনিকতার ঊণ্মেষ, তার সাফল্যের ঝাণ্ডা আল মাহমুদ বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে অদ্যাবধি তুলনারহিত কৃতিত্বের সঙ্গে বহন ক’রে চলেছেন। রবীন্দ্র-বিরোধী তিরিশের কবিরা বাংলা কবিতার মাস্তুল পশ্চিমের দিকে ঘুরিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন;– আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা কবিতাকে বাংলার ঐতিহ্যে প্রোথিত করেছেন মৌলিক কাব্যভাষার সহযোগে– তাঁর সহযাত্রী শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের তুলনায় এইখানে তিনি ব্যতিক্রমী ও প্রাগ্রসর। পশ্চিমের কবি শিব নারায়ন রায় বলেছিলেন, “বাংলা কবিতায় নতুন সম্ভাবনা এনেছেন আল মাহমুদ, পশ্চিম বাংলার কবিরা যা পারেনি তিনি সেই অসাধ্য সাধন করেছেন ”
বাংলাদেশ, স্বাধীনতা, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সমান্তরালে আল মাহমুদ নিজেকে নিয়ে আসতে পেরেছেন। রমজান হওয়ায় ঘরোয়া আয়োজনে পালিত হবে এবারের জন্মদিন। তবে আজ রাজধানীর ৮৮ বড় মগবাজারে আয়েশা গোমতী ভিলায় কবির ফ্ল্যাটে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে শুভেচ্ছা জানাবেন। আল মাহমুদের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা চল্লিশের বেশি। উপন্যাস বিশের অধিক এবং গল্পগ্রন্থ দশটির মতো। এছাড়া, তিনি শিশুসাহিত্য, সম্পাদনা ও প্রবন্ধের বই লিখেছেন। বার্ধক্য ও দৃষ্টিশক্তির সীমাবদ্ধতা নিয়েও তিনি ডিকটেশনের মাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। জন্মদিন উপলক্ষে তার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
২১ বছর পর্যন্ত তিতাসপাড়ে তার থাকা। এর পর কুমিল্লার কান্দিরপাড় হয়ে বাক্স পেটরা গুছিয়ে কবি হওয়ার জন্য ঢাকায় আগমন। ঢাকায় এসে হাজিরা দিলেন বাংলাবাজারের বিউটি বোর্ডিংয়ে।
বাংলা, বাঙালি-মানুষ, ভাষা ও সাহিত্য এবং আল মাহমুদ এক এবং অবিভাজ্য সত্তা। দুই বাংলার অপরাজেয় কবি পুরুষ ভাঙ্গা সুটকেস বগলদাবা করে ঢাকা শহরে এসেছিলেন। তারপর তিনি সেই সুটকেস খুলে একের পর এক দেখিয়েছেন বাংলাদেশের নদনদী, খালবিল, পাহাড়-অরণ্য, খড়ের গম্বুজ, নারী-নিসর্গ, মক্তবের চুলখোলা আয়েশা আক্তার, গাছের ডালের ফাঁকে আটকে যাওয়া আধখানা চাঁদ, এক কথায় সমগ্র বাংলাদেশ।
বাংলা কবিতা যাদের হাত ধরে আধুনিকতায় পৌঁছেছে আল মাহমুদ তাদের অগ্রগণ্য। আল মাহমুদের কলম বাংলা সাহিত্যের ফসলি জমিনকে করেছে উর্বর। প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘লোক লোকান্তর’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে। পরবর্তীতে প্রকাশ ‘কালের কলস’ ও ‘সোনালী কাবিন’। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো’, ‘দোয়েল ও দয়িতা’, ‘দ্বিতীয় ভাঙ্গন’, ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’ ও ‘তোমার রক্তে তোমার গন্ধে’। তার প্রবন্ধে রয়েছে নতুন এক গদ্যশৈলী। লিখেছেন ‘পানকৌড়ির রক্তে’র মতো গল্পগ্রন্থ। সেই হাত দিয়ে বেরিয়ে এসেছে ‘উপমহাদেশ’ ও ‘কাবিলের বোন’-এর মতো উপন্যাস। ‘যেভাবে বেড়ে উঠি’ ঘরানার ক্লাসিক জীবনীগ্রন্থ সব পাঠকের হৃদয় ছুঁয়েছে। তার লেখা কিশোর কবিতা বই বাংলা সাহিত্যে দুর্লভ। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আল মাহমুদের অনেক কবিতা পাঠ্য। পিএইচডি পর্যায়েও গবেষণা হয়েছে অনেক। আট খণ্ডের রচনাসমগ্র ছাড়াও প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক।
গ্রামীণ মানুষের সুখ-দুঃখ আর শহুরে মানুষের জীবন উঠে এসেছে তার কবিতায়। বাবার মারফতি গানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ছেলের শহুরে জীবন গ্রামের মানুষ থেকে আলাদা করার কথা বলেছেন সহজ করে। তার সাহিত্যে নারীর আছে শক্তিশালী অবস্থান। বর্ণনায় আছে শিল্প। শরীরের খোলামেলা উপস্থাপনা আছে। তবে এর নান্দনিকতা আর সামাজিক অবস্থানকে ভুলে গিয়ে বিচার করলে কবির প্রতি অবিচারই করা হবে।
কবি বলেছেন, ‘কবির কোনো বয়স নেই, বিনাশ নেই। তারা চিরদিনের, চিরকালের। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একজন কবি দৃশ্যত লোকান্তরিত হলেও তিনি বেঁচে থাকেন তার কর্মে ও কবিতায়।’
১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘লোক-লোকান্তর’। ১৯৭৩-এ প্রকাশিত আলোড়িত কাব্যগ্রন্থ ‘সোনালী কাবিন’। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৩০টি। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থের সংখ্যাও অনেক। বেরিয়েছে দুই কুড়ির মতো উপন্যাস। তার লেখা নিয়ে প্রকাশিত সঙ্কলনের সংখ্যাও কুড়িটির মতো। তার সমৃদ্ধ সব রচনাবলি প্রকাশ করছে ঐতিহ্য প্রকাশনী। এ পর্যন্ত পাঁচ খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে।
সাহিত্য সাধনার জন্য একুশে পদকসহ সম্মানজনক বেশ কিছু পদক অর্জন করেছেন আল মাহমুদ।
প্রিয় কবির জন্মদিনে চলন্তিকার পক্ষ থেকে সহস্র সালাম, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
১,৬৯৯ বার পড়া হয়েছে
কবি আল মাহমুদ আমার প্রিয় কবিদের মধ্যে একজন। তিনি আমার জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁর লেখা আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। তাই তাঁর জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা রইল।
কবির জন্য শ্রদ্ধা ও কবি পরিবারের প্রতি শুভ কামনা
কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী ও শুভ কামনা রইল।
এই জন্মবার্ষিকীতে কবির প্রতি শুভেচ্ছা রইল।
কবির জন্মদিনে আমরা কবিকে শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং শুভেচ্ছা জানাই।
কবির জন্মদিনে কবিকে শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং শুভেচ্ছা।
কবির জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
প্রিয় কবির জন্মদিনে কবিকে শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং শুভেচ্ছা।
ওনার কবিতা , ছড়া আমার মন কেড়ে নেয় ।