কবি শামসুর রাহমানের ৮৪তম জন্মদিন আজ
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1358বার পড়া হয়েছে।
বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত অধ্যায় ফিরে ফিরে এসেছে তাঁর কবিতায়। নাগরিক সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার কথা তার কবিতায় উঠে এসেছে বিশেষভাবে। গণমানুষের মুখের ভাষায় জীবনের সত্য-সুন্দরকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনন্য।
‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’, ‘স্বাধীনতা তুমি’, ‘আসাদের শার্ট’, ‘এ লাশ রাখবো কোথায়’, ‘অভিশাপ দিচ্ছি’, ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’, ‘বুক তার বাংলাদেশের হূদয়’-এর মতো বাংলা সাহিত্যের চিরস্মরণীয় বহু কবিতার স্রষ্টা তিনি। পাকিস্তানি দুঃশাসনের কাল থেকে শুরু করে গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে তাঁর লেখনী থেকে প্রতিবাদের ফল্গুধারার মতো বেরিয়ে এসেছিল দীপ্ত পঙক্তিমালা। তাঁর কবিতা আজও স্লোগান হয়ে ফেরে বাঙালির মুখে মুখে, হূদয়ে হূদয়ে। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি শামসুর রাহমান। কিংবদন্তীতুল্য এই কবির ৮৪তম জন্মদিন আজ বুধবার।
শামসুর রাহমানের জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলীর ৪৬ নম্বর বাড়িতে। পৈতৃক বাড়ি ঢাকা জেলার বর্তমান নরসিংদীর রায়পুরা থানার পাড়াতলী গ্রামে। ২০০৬-এর ১৭ আগস্ট ৭৭ বছর বয়সে চিকিত্সাধীন অবস্থায় কবির বর্ণাঢ্য জীবনের যবনিকাপাত ঘটে।
‘স্বাধীনতা তুমি’ শামসুর রাহমানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা হিসেবে স্বীকৃত। বাংলার আন্দোলন-সংগ্রাম, নিসর্গ-প্রকৃতি, কৃষক-মজুর প্রায় সবই এই কবিতার মধ্য দিয়ে ভাষা খুঁজে পায়। কবিতার শেষাংশে কবি বলেন, ‘স্বাধীনতা তুমি বাগানের ঘর, কোকিলের গান, বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা, যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।’
১৯ বছর বয়সে কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন শামসুর রাহমান। তাঁর জীবদ্দশায়ই প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ছিল ৭০টির মতো। পেশাগতভাবে ৪০ বছর ছিলেন সাংবাদিকতায়। প্রধানত কবি হলেও সাহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও তাঁর বিচরণ ছিল সাবলীল। কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ-গদ্য, অনুবাদ, স্মৃতিচারণা আর শিশু রচনা-সাহিত্যের প্রতিটি অঙ্গনে তিনি উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে গেছেন। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে উপন্যাস চারটি, প্রবন্ধগ্রন্থ একটি, ছড়ার বই সাতটি ও অনুবাদ ছয়টি। সব মিলিয়ে গ্রন্থ সংখ্যা প্রায় ১০০।
সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি প্রগতিশীলতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও মানবতার পক্ষে এবং সামপ্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, স্বৈরশাসন ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে কবির অবস্থান ছিল স্পষ্ট ও সুদৃঢ়। বাংলাদেশের প্রায় সব মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা পদকে ভূষিত করা হয়েছে কিংবদন্তিতুল্য কবি শামসুর রাহমানকে। পেয়েছেন আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), রাষ্ট্রীয় ‘একুশে পদক’ (১৯৭৭), মিত্সুবিশি পুরস্কার (১৯৮২) ও রাষ্ট্রীয় ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ (১৯৯২)। ১৯৯৪ সালে পেয়েছেন ভারতের আনন্দ পুরস্কার।
১,৪০৫ বার পড়া হয়েছে
ধন্যবাদ দিদারুল ভাই কবি শামসুর রহমান কে নিয়ে লিখার জন্য
কিছু জিনিস আমার অজানা ছিল এখন জানলাম
জন্মদিনে শুভেচ্ছা।
শ্রদ্ধা কবির প্রতি…
শুভেচ্ছা জন্মদিনের…
ধন্যবাদ লেখককে…