কানসাটের জমিদারবাড়ি
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1461বার পড়া হয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি প্রাচীন গ্রাম। কানসাটের মানুষ নিজেদের দাবি আদায়ে জীবন বিসর্জন দিতে পিছপা হন না। এখানকার মানুষ দাবি আদায়ে যেমন জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন তেমনি হালে অর্থাৎ ২০০৫ সালে বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করে ১৭টি তাজা প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দাবি আদায়ে ফলপ্রসূ হওয়ার গৌরব তাদের রয়েছে। অতীত ইতিহাস থেকে জানা যায়, তৎকালীন কানসাটের জমিদারদের আদিপুরুষ প্রথমত বগুড়া জেলার কড়ইঝাকৈর গ্রামে বসতি স্থাপন করে। দস্যু সরদার পণ্ডিতের অত্যাচারে তারা ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায় স্থানান্তরিত হন। পরে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে এসে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। শশীকান্ত, সূর্যকান্ত ও শীতাংশু কান্ত এই বংশের অধস্তন বংশক্রম। মুসলিমবিদ্বেষী জমিদার হিসেবে খ্যাতি লাভ করায় তারা প্রজাসাধারণের জন্য কিছু রেখে যেতে পারেননি। জমিদারি কার্য ছাড়াও তারা হাতি বেচাকেনা করতেন। জমিদার পরিবারে মুসলিমবিদ্বেষের অনেক দৃষ্টান্ত এই অঞ্চলে বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৪০ সালে স্থানীয় কাগজী (কাজী) পাড়ায় মুসলিম সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার কারণে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় শ্যামপুর চৌধুরী পরিবারের নেতৃত্বে বাজিতপুর গ্রামের আম্রকাননে প্রায় ১২টি ইউনিয়নের মুসলমান সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে জমিদারদের অত্যাচারী কার্যক্রমের তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং একটি মামলা দায়ের করে।
এই মামলায় জমিদার শীতাংশু হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়কে ডেকে তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিশ্চিত বিপদ হতে রক্ষা পান। বর্তমানে জমিদারি প্রথা না থাকলেও আজও অক্ষত রয়েছে জমিদারবাড়ি। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিভিন্ন লতাপাতা গজিয়ে উঠেছে বাড়ির চারপাশে। বিভিন্ন তথ্য-সূত্রে জানা যায়, প্রাচীনকালে এখানে কংসহাট্টা নামক রাজার বাড়ি ছিল। তার নামানুসারেই স্থানটির নাম হয় কানসাট। এই কানসাটেরাশর্্ববর্তী পুখুরিয়া গ্রামে বঙ্গ অধিকারী রানী স্বর্ণময়ীর রাজধানী ছিল। পুখুরিয়া বাগদীপাড়ায় এখনো তার ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। রানীর তোপকামানের শব্দে স্থানীয় লোকজনের কান বন্ধ করতে হতো। অনেকেই মনে করেন কান+সাট (বন্ধ)=কানসাট নামের উৎপত্তি হয়েছে। বর্তমানে কানসাটের পুখুরিয়া গ্রামে বিদ্যুৎ আন্দোলনের নেতা গোলাম রাব্বানীর বাসস্থান হওয়ায় অনেকেই সংগ্রাম-ঐতিহ্যের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করে থাকেন।
১,৫২৩ বার পড়া হয়েছে
Valo laglo Vaea, Onek kisu janlam. Ae rokom aro lekha deo.Thanks.
লিখে যান। সাথে থাকুন।
অনেক কিছু শিখলাম। লিখতে থাকুন অবিরত।
আপনার লেখার হাত ভাল চালিয়ে যান . . .
সুন্দর লিখেছেন , ইতিহাস সমন্ধে জানলাম ।
ভাল লাগা জানিয়ে দিলাম ।
ভাল লাগল কানসাট জমিদার বাড়ীর অজানা ইতিহাস।ধন্যবাদ লেখককে।অনেক শুকামনা।
কানসাটের বিখ্যাত সোনা মসজিদ নিয়ে কিছু লিখুন। অনুরোধ রইলো।
খুব ভাল লেখা