কুৱবানীৱ ঈদেৱ দিন মানুষ খুন
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1327বার পড়া হয়েছে।
ঈদের আনন্দ বলবেন নাকি সন্তান খুনের বেদনা বলবেন? এমন নিঃসঙ্গস একটি ঘটনা ঘটেছিল আজ থেকে চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১০ সালের কুরবানীর ঈদের দিন। ঘটনা টি ঘটেছিল বাংলাদেশ ভারত সিমান্তে কিন্তু তার প্রতক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব পড়েছিল আমাদের গ্রামের একটি সৎ ও নিষ্ঠাবান যুবকের উপর। ছেলেটির নাম ছিল রিপন। গায়ের রঙ শ্যামলা বর্নের। পেশায় ছিল দরিদ্র কৃষক। তার চাচাত ভাইয়ের নাম ছিল জালাল। ঘটনা সুত্রে মূলত জালাল কে খুনীর হাত থেকে রক্ষ করার জন্যাই নিজের তাঁজা প্রাণ বিসর্জন দিতে রাজী হয়েছিল রিপন নামের ছেলেটি।
ঘটনাঃ কুরবানীর আগের দিন কলিম্মা(আমাদের গরুর হাট,যেখান থেকে আমদের এলাকাবাসী গরু-ছাগল ক্রয় করেন) গুরুর হাট থেকে সিমানবর্তী এক বাসিন্দার কাছ থেকে গরু কিনেন জালাল। আর একই এলাকার লোক হিসেবে গরুর পুরো টাকা না দিয়ে কিছু টাকা বাকী রাখেন জালাল এবং কিছু টাকা বায়না দিয়ে দেন গরু বিক্রেতাকে। আর ওই গরু বিক্রেতার ভাগিনা(বোনের ছেলে) রিপনের চাচাত ভাইয়ের কাছে ব্ল্যাক বিস্নেছের(পেন্সি ব্যাবসা) টাকা পাইতেন। ঠিক যখন জালাল ঈদের দিন দুপুরে গরুর টাকা পরিশোধ করতে সিমান্তে যায় তার বাড়িতে তখন ঐ বিক্রেতার ভাগিনা জালালের কাছে পেন্সিডাইলের বকেয়া টাকা দাবী করে। একপর্যায়ে জালাল এবং তার মধ্যে ধাকাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। আর ধিরে ধিরে তা আরো গভীরে যেতে থাকে।
জালাল তার বাড়িতে ফোন করে চাচাত, জেটাত ভাইদের ঐ জায়গায় খবর দিয়ে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি আরো গভীরে এবং খারাপের দিকে চলে যায় ঐ সময়। জালাল পাওনাদার কে ঘুসি মারে এবং পাওনাদার তাতে আরো ক্ষিপ্ত হয়। উল্লেখ্যঃ পাওনাদার ছেলেটা/গরু বিক্রেতার ভাগিনার নিজ বাড়ি/বাসস্থান হল ইন্ডিয়া। সে মামার বাড়িতে বেড়াতে আসছিলো বাঙলাদেশে। আর ঠিক তখনী মারাত্মক ঘটনাটি ঘটে যায়। পাওনাদার জালালের ঘুসি খেয়ে সোজা মামার বাড়ির দিকে দৌড় দেয় আর মাংশ কাটার একট ছুরি নিয়ে বেড়িয়ে আসে। আগেই বলেছি ঘটনা টি কুরবানীর ঈদের দিন ঘটেছিল। আর হ্যাঁ, সে সাথে করে ছুরি নিয়ে এসে জালাল কে লক্ষ করে ছুরিকাঘাত করে কিন্তু তাতে জালাল রেহায় পেয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রায় পাঁচ সেকেন্ড পর ঐ ছেলে আবারো ছুরিকাঘাত করে। সৃষ্টকর্তার কি নির্মম পরিহাস! যা হবার নয় তাই হয়ে গেলো। ছুরিটা এসে লাগলো রিপনের পেটে। আর রিপন তখন মাটিতে ধসে পড়ে যায়। আসামী সঙ্গে সঙ্গেই দৌড়ে পালালো এবং একমিনিটের মধ্যেই ইন্ডিয়া সিমান্তে উঠে গেলো। সে খুব দ্রুত পালিয়েছিল কারন ঘটনার স্থান থেকে ভারত সিমান্ত মাত্র ২০-৩০ ফুট পূর্বে অবস্থিত।
তারপর সবাই রিপন কে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু ইমার্জেন্সি বিভাগের ডাক্তার রা কিছুই করতে পারেন নি কারন ততক্ষনে রিপনের শরীর থেকে অধিক রক্ত সরে গিয়েছিল। তা নিয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় একটি মামলা ও করা হয় কিন্তু আসামি এখনো ভারতে পলাতক।
রিপনের মা আজো সন্তান হারানোর বেদনায় অশ্রুসিক্ত চোখের পানি পেলে সন্তানের জন্য পথ চেয়ে বসে থাকে কখন যে তার রিপন এসে বলবে মাগো আমায় গোশত রুটি দাও। মাগো আমাইয় বেলে পিঠা আর কুরবানীর গোশত দাও আমি বেলে পিঠা খাবো। মায়ের মন হয়তো এভাবেই কেঁদে যাবে সন্তানের জন্য যতদিন তিনি বেঁচে থাকবে।
বিঃদ্রঃ ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ইন্টারনেট। এছারা ঐ ঘটনার কিছু অংশ আমার নিজ চোখে দেখা। লেখায় ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
১,২৯৫ বার পড়া হয়েছে
বেদনাদায়ক!
ঈদ মোবারক।
Mormantik
bhalo thakben
এভাবে করে অসংখ্য মানুষ ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বড়ই মর্মান্তিক ঘটনা। ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যিই দুঃখ জনক, এমন ভাবে মায়ের কোল খালি হোক এটা কাম্য নয়।
ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা
হুম ঠিকই দুঃখ জনক
মর্মান্তিক ঘটনা