Today 26 Mar 2023
banner
নোটিশ
ব্লগিং করুন আর জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের রিটার্ন বিমান টিকেট! প্রত্যেক প্রদায়কই এটি জিতে নিতে পারেন। আরও আছে সম্মানী ও ক্রেস্ট!
banner

তথ্য অধিকারবিষয়ক আমার অভিনীত প্রথম নাটিকা ”তথ্য পেলেন কাশেম চাচা”

লিখেছেন: শাহ্‌ আলম বাদশা | তারিখ: ০৭/০৮/২০১৪

এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1534বার পড়া হয়েছে।

তথ্য অধিকার আইন জারী হয় বা কার্যকর করা হয় ২০০৯ সালের পয়লা জুলাই। এমনকি একই দিনে গঠন করা হয় তিনসদস্যবিশিষ্ট তথ্য কমিশন। একজন প্রধান তথ্য কমিশনার এবং সচিব মর্যাদার দু’জন তথ্য কমিশনার এর মধ্যে একজন নারী কমিশনার নিয়ে মূলতঃ তথ্য কমিশন। এই আইনে বলা আছে, প্রতি স্বতন্ত্র অফিস এই আইন জারীর ৬০ দিনের মধ্যেই তাদের অফিসের একজন অফিসারকে তথ্য প্রদানকারী হিসেবে ”দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা” নামে নিয়োগ দেবে। নতুন সৃষ্ট অফিসের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম! তারা আবেদনকারীকে প্রার্থিত তথ্য ২০/৩০ কার্যদিবসে বা ক্ষেত্রমতে মৃত্যু বা কারাগারে আটকসংক্রান্ত বিষয় হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই লিখিতভাবে সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবেন।”দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা” তথ্য দিতে আইনত বাধ্য না থাকলে ১০ দিনের মধ্যেই লিখিতভাবে প্রার্থীকে জানাতেও বাধ্য বা অহেতুক তথ্য না দিলে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা অফিস প্রধানের কাছে আপীল করতে পারবেন সেই প্রার্থী। আপীল কর্তৃপক্ষ ১৫ দিনের মধ্যে হয় তথ্য দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেবেন বা আপীল খারীজ করতে পারবেন।এতে সংক্ষুব্ধ প্রার্থী তাদের বিরুদ্ধে তথ্য না দেয়ার অভিযোগে তথ্য কমিশনে অভিযোগ করতে পারবেন এবং কমিশন তা আমলে নিলে উভয়পক্ষকে সমন দেবেন নির্দিষ্ট দিনে তথ্য কমিশন আদালতে হাজির হতে।

এরপর শুনানীশেষে তথ্য কমিশন প্রার্থীকে তথ্য দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করতে পারবেন বা আইনতঃ তিনি সংশ্লিষ্ট তথ্য পাবার অধিকারী না হলে তার অভিযোগ খারীজ করে দেবেন। আর তথ্য দিতে গড়িমসি বা ইচ্ছেকৃত অবহেলা থাকলে অপরাধীকে তথ্য দিতে বিলম্বের দরুণ প্রতিদিনের জন্য ৫০টাকা হারে সরবোচ্চ ৫০০০/=টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবেন। প্রয়োজনে বিভাগীয় মামলা চালুর জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারবেন। তিরস্কারও করতে পারে তথ্য কমিশন। একজন সরকারি চাকরিজীবীর জন্য এধরণের শাস্তি কতোটা ক্ষতিকর, তা সহজেই অনুমেয়!

এখানে বলাবাহুল্য যে, তথ্য দেয়া বা না দেয়ার জন্য সরাসরি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাই প্রধানতঃ দায়ী এবং শাস্তি হলে সাধারনতঃ তারই হয়ে থাকে। অনেকে ভাবেন– তথ্য কেউ চাইলে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে চাইব এবং তিনি না দিলে বা দিতে বারণ করলে প্রার্থীকে তথ্য দেবোনা। এতে আমার কী? এটা মারাত্মক ভুলধারণা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে তথ্য গচ্ছিত থাকলে তা অবশ্যই লিখিতভাবে বা ফাইলের মাধ্যমেই তাকে চাইতে হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সে তথ্য সরবরাহ না করলে বা তা না পেলেই শুধু তিনি শাস্তি থেকে বাঁচতে পারবেন, অন্যথায় নয়। কারণ তথ্য দিতে তিনিই মূলতঃ বাধ্য, সরাসরি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নয়।

যদিও তথ্যপ্রার্থীকে তথ্যবঞ্চিত কিংবা হয়রানীকরণের ক্ষেত্রে দোষী প্রমাণিত হলে কমিশন দায়িত্বপ্রাপ্ত বা আপীল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক পদক্ষেপ নিতেই পারে; ক্ষেত্রবিশেষে  আইনের ধারা ২৪(৪) অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অনুরূপ শাস্তি আরোপ করতে পারবেন।

আবার আইনে ”তৃতীয় পক্ষ” বলে একটা বিষয় আছে তথ্যপ্রার্থীর প্রার্থিত  তথ্যযোগাড়ের ক্ষেত্রে মানে দায়িত্বপ্রাপ্ত বা আপীল কর্মকর্তার ফিসে কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য অফিসে সেই তথ্য থাকলে সেখানে লিখিতভাবে তা চাইতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেই এবং তথ্যপ্রাপ্তি কর্তৃক অনুরোধপ্রাপ্তির ৫ কার্যদিবসের মধ্যেই  তাকে লিখিত বা মৌখিক নোটিশের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে  তৃতীয় পক্ষ তথ্যসরবরাহ বা মতামত প্রদান না করলেই  দায়িত্বনির্ধারণের ক্ষেত্রে  তৃতীয় পক্ষও  দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে গণ্য হবেন এবং তিনিও সমান দায়ী হবেন। ফলে মুল দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রমাণসাপেক্ষে শাস্তি থেকে তথ্য কমিশনের আদালতে হাজির হয়ে তবেই তিনি প্রমানসাপেক্ষে বাঁচতে পারবেন মাত্র।

এ হলো সংক্ষেপ কথা–তবে যারা এখনো আইনানুযায়ী ৬০দিনের মধ্যে তাদের অফিসে ডিও/দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেননি, তারা কিন্তু শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে বসে আছেন! কমিশন যেকোনো মুহূর্তে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে করার কিছু থাকবেনা।

উল্লেখ্য যে, এই আইনে আরো বলা হয়েছে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ কার্যত ১৯২৩ সালের গোপনীয় বা সেক্রেসী আইনের ওপরে প্রাধান্য পাবে। তাই যারা তথ্য দিতে চান না তারা কতবড় বিপদে আছেন–ভাবুন তো?

ইতোমধ্যে দু’জন সরকারী অফিসারের ১০০০/= ও ৫০০/= টাকা জরিমানা হয়েছে তথ্য না দেয়ার অপরাধে। এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার একজন ডাক্তারের রীট করেও লাভ হয়নি। রীটের রায় কমিশনের অনুকুলে যাওয়ায় তিনি হেরে গিয়েছেন। আর এটা কতবড় অপমান এবং সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে কী ঝুঁকিপূর্ণ তাকি ভেবে দেখেছেন? এমনকি আইনে এও আছে যে, তথ্য কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে রীট ছাড়া কোনো আদালতে মামলা, আপীল বা রিভিউ পর্যন্ত করা যাবেনা। তথ্য কমিশনের রায়ই সংশ্লিষ্ট সবার জন্য চূড়ান্ত।

এখানে সেই ঘটনার ভিত্তিতে আমার রচিত ও অভিনীত তথ্য কমিশনের তথ্য অধিকারবিষয়ক প্রথম নাটিকা ”তথ্য পেলেন কাশেম চাচা” সম্প্রতি নির্মিত এবং তথ্য কমিশনের অডিটোরিয়ামে প্রদর্শিত হয়েছে।

সরকারের জারিকৃত তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর ওপর ভিত্তি করে রচিত নাটিকাটির ভিডিও লিঙ্কটি ইউটিউব থেকে আপনাদের জন্য এখানে দিয়ে দিলাম; দেখুন–তথ্য পেলেন কাশেম চাচা

উল্লেখ্য যে, আগামী ২৬ ও ২৭ আগস্ট যথাক্রমে ৮ ও ৭টি করে মোট ১৫ মামলার বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হবে তথ্য মিশন ট্রাইব্যুনালে। আপনারা আমন্ত্রিত।

১,৫১৩ বার পড়া হয়েছে

লেখক সম্পর্কে জানুন |
৮০ দশকের কবি, ছড়াকার, গীতিকার বিশেষত; শিশুসাহিত্যিক। ৬টি প্রবন্ধ সংকলন, ৩টি গল্প সংকলন, ১টি শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ, ৭টি অডিও-ভিডিও এলবাম প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি। ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রেডিও বাংলাদেশ রংপুর কর্তৃক ‘‘উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ ছড়াকার’’ হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। ১৯৮৬ সালে সিলেট ছড়া পরিষদ কর্তৃক ছড়ায় অবদান রাখার জন্য পুরস্কৃত। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় বিভিন্ন দৈনিকে সাংবাদিকতাছাড়াও বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা যেমন; লালমনিরহাট থেকে ত্রৈমাসিক চলমান, ত্রৈমাসিক ব্যতিক্রম, ত্রৈমাসিক দারুচিনি, ত্রৈমাসিক কিশোরকন্ঠ, ত্রৈমাসিক প্রজাপতিসহ (অধুনালুপ্ত) বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক এবং লালমনিরহাটের প্রথম প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক জানাজানি’র প্রতিষ্ঠাতা সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন। শাহ আলমা বাদশা’র প্রকাশিত অডিও-ভিডিও এলবাম এবং গ্রন্থসমূহঃ ১। ভোরের পাখিরা [অডিও-ভিডিও এলবাম-১৯৮৯] ২। শিহরণ ১ ও ২ [অডিও এলবাম-১৯৯৩] ৩। শিহরণ ২ [অডিও এলবাম-১৯৯৩] ৪। প্রত্যয় [অডিও এলবাম-১৯৯৪] ৫। প্যারোডি গান [অডিও এলবাম-১৯৯৫] ৬। তথ্য পেলেন কাশেম চাচা [নাটিকার ডিভিডি-২০০১৪] ৭। তথ্য কমিশনের বিচারিক কার্যক্রম [প্রামাণ্যচিত্রের ডিভিডি-২০১৪] ৮। কিশোকন্ঠ গল্প সমগ্র-১ [যৌথ গল্পগ্রন্থ-২০০১] ৯। মা ও শিশু [যৌথ প্রবন্ধগ্রন্থ [১খণ্ড)-২০০৬] ১০। মা ও শিশু [যৌথ প্রবন্ধগ্রন্থ [২খণ্ড-২০০৭] ১১। মা ও শিশু [যৌথ প্রবন্ধগ্রন্থ [৩খণ্ড-২০০৮] ১২। মা ও শিশু [যৌথ প্রবন্ধগ্রন্থ [৪খণ্ড-২০০৯] ১৩। স্বপ্ন দিয়ে বোনা [যৌথ গল্পগ্রন্থ-২০১৩] ১৪। মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য গল্প [যৌথ গল্পগ্রন্থ-২০১৫] ১৫। দুরছাই ধুত্তোরী ছাই [শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ-২০১৫] শাহ আলম বাদশা’র প্রকাশিতব্য গ্রন্থসমুহঃ ১। ইষ্টিপাখি মিষ্টিপাখি [শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ] ২। ষড়ঋতুর দেশে [শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ] ৩। লিন্তামনির চিন্তা [শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ] ৪। ফুল-পাখি-নদী [কিশোর কবিতাগ্রন্থ] ৫। ফুলবনে হই-চই [কিশোর উপন্যাস] ৬। সানিনে অভিযান [[কিশোর উপন্যাস] ৭। কালো মুরগি [শিশুতোষ গল্প] ৮। বেওয়ারিশ লাশ [শিশুতোষ গল্প] ৯। কবিকবি ভাব ছন্দের অভাব [ছন্দপ্রকরণ-প্রবন্ধগ্রন্থ] ১০। বাংলাবানান এবং শব্দগঠনঃ ভুল শুধু ভুল [প্রবন্ধগ্রন্থ] ১১। আমাদের মুসলমানিত্ব এবং কামড়াকামড়ির রকমফের তিনি বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সদস্য এবং এলএলবি'র ছাত্র। তথ্যমন্ত্রণালয়ে কর্মরত। ফোনঃ ০১৮১৭১১৭৯২৯/০১৫৫২৩৪২৪৪৯ Website: http://mediamaster1.blogspot.com/
সর্বমোট পোস্ট: ৪৪ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ২২৫ টি
নিবন্ধন করেছেন: ২০১৩-০৫-২৬ ১৫:০৭:৪২ মিনিটে
Visit শাহ্‌ আলম বাদশা Website.
banner

৮ টি মন্তব্য

  1. আহমেদ রব্বানী মন্তব্যে বলেছেন:

    দেখার ইচ্ছা রাখি প্রিয় …

  2. এই মেঘ এই রোদ্দুর মন্তব্যে বলেছেন:

    ভাল লাগল

  3. শাহ্‌ আলম বাদশা মন্তব্যে বলেছেন:

    আমার বোনতো অল্পভাষী-এককথায় শেষ–

  4. এস এম আব্দুর রহমান মন্তব্যে বলেছেন:

    ধন্যবাদ আপনাকে তথ্য অধিকার বিষয়ে অনেক কিছু জানানোর জন্য । শুভ কামনা ।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন.

go_top