তাজমহল The Symbol of Love ও কিছু অপ্রিয় সত্যি কথা
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 2421বার পড়া হয়েছে।
পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের আন্যতম আগ্রার তাজমহলকে বলা হয় SYMBOL OF LOVE কিন্তু আপনি কি নিচের বিষয় গুলো জানেন ?
১. মমতাজ ছিলেন শাহজাহান এর ৭ বউয়ের মাঝে ৪ নাম্বার !
২. শাহজাহান মমতাজকে বিয়ে করার জন্য মমতাজ এর আগের স্বামীকে খুন করে!
৩.মমতাজ এর মৃত্যুর পর শাহজাহান বিয়ে করে মমতাজ এর আপন বোনকে….!!
৪. মমতাজ মারা গিয়েছিল ১৪ নম্বর বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে !
৫. তাজ মহল বানাতে ২০০০০ লোকের দেড় যুগেরও বেশী সময় লেগেছিল । এই সুদীর্ঘ ২০-২২ বছর তাদের একটানা কাজ করতে হয়েছে । খাওয়া, ঘুমানো ও প্রাকৃতিক কাজ ছাড়া তাদের আর কোন ছুটি মেলেনি । এর মধ্যে নবিবাহিত যুবক ছিল যাকে বাসর ঘর থেকে তুলে আনা হয়েছিল ২২ বছর পর ফিরে গিয়ে সে আর তার বউকে ফিরে পায়নি । এমন করুন পরিণতি ঘটেছে বেশীর ভাগ নির্মাণ কর্মীর ভাগ্যেই ।
৬. তাজ মহল নির্মাণের শেষে এর মুল কারিগরদের হাত কেটে দেয়া হয় যাতে তারা আর এমন কোন স্থাপত্য নির্মাণ করতে না পারে ।
৭. তাজ মহলে অত্যাধিক অর্থ ব্যায়ের ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার উজাড় হয়ে গিয়ে প্রকট অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল ফলে জনজীবনে ভয়াবহ দুর্ভোগ নেমে এসেছিল ।
তাজমহলের সৌন্দর্য অপার যুগ যুগ ধরে মানুষকে মুগ্ধ করে আসছে কিন্তু এর ভিত্তিমূলে লেগে আছে কি নিদারুণ কালিমা ! কি বীভৎস অমানবিকতা ! যে অন্তঃসারশুন্য তথাকথিত ভোগবাদী ভালোবাসার ভিত্তির উপর দাড়িয়ে আছে তাজ মহল তা যত সুন্দরই হোক না কেন এটা সম্পদের দাপট আর ক্ষমতার জৌলুস দেখানো বৈ আর কিছু হতে পারে না ।
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট
২,৩০৭ বার পড়া হয়েছে
যাই হোক , জানা হলো , টাকা থাকলেই কি এমন সৌধ নির্মান করা যায় ?
সেটি অন্য এক বিবেচনা,এখন আর মোঘল আমল নেই, শাহজাহান তো খরচ করেছিলেন সরকারী কোষাগারের টাকা, ব্যাক্তিগত পর্যায়ে এই পরিমান সম্পত্তি বা খরচ করার ইচ্ছে আছে কিনা সেটা বিবেচ্য, স্থাপনা ও শৈলী আরেকটি বিবেচ্য । তাজমহলের সৌন্দর্যকে প্রশ্ন তুলে এ লেখা নয়, এটি এর পেছনের অপ্রিয় কথা নিয়ে, ধন্যবাদ ।
ইতিহাস বা ঐতিহাসিক কিছু নিয়ে লিখতে গেলে আরও একটু তথ্য নিরভর হতে হয় আর সূত্র উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় । এখানে অনেক তথ্য আপনি দিয়েছেন যা কিনা আরবান মিথ ।যেমন
২. শাহজাহান মমতাজকে বিয়ে করার জন্য মমতাজ এর আগের স্বামীকে খুন করে!
৬। “তাজ মহল নির্মাণের শেষে এর মুল কারিগরদের হাত কেটে দেয়া হয় যাতে তারা আর এমন কোন স্থাপত্য নির্মাণ করতে না পারে”
এই কথার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নাই এবং অধিকাংশ ইতিহাস বিদ দের মত অনুযায়ী এগুলা মিথ্যা যা আরবান মিথ নামে পরিচিত।
http://www.quora.com/Did-Shah-Jahan-cut-the-arms-off-of-his-workers-after-building-the-Taj-Mahal
http://www.answers.com/Q/Did_Shah_Jahan_kill_Mumtaz%27s_husband_to_marry_her
কেন?
এই বিষয়ে পরস্পর বিরোধী তথ্য রয়েছে, যেমন প্রথমত সম্রাট শাহজাহান ও মমতাজের প্রেম কাহিনীতে বলা হয়েছে সম্রাট শাহজাহান মমতাজকে বাজারে দেখতে পান এবং প্রথম দেখাতেই মমতাজকে পছন্দ করে ফেলেন। কিন্তু এও শোনা যায় শাহজাহানের সাথে বিয়ে হওয়ার আগেও মমতাজের বিয়ে হয়েছিল এবং সম্রাট শাহজাহান মমতাজের সেই স্বামীকে হত্যা করে তারপর মমতাজকে বিয়ে করেছিল। শুধু তাই নয় মমতাজের আগেও সম্রাট শাহজাহানের আরও ৩ জন স্ত্রী ছিলেন এবং মমতাজকে বিয়ে করার পরও সম্রাট শাহজাহান আরও তিনটি বিয়ে করেন। এমনকি মমতাজ মারা যাওয়ার পর শাহজাহান মমতাজের আপন ছোট বোনকে বিয়ে করেন। তাজমহলের ডিজাইনারের নাম ছিল- ঈশা মোহাম্মদ। তিনি তার স্ত্রীকে উপহার দেয়ার জন্য একটি ভাস্কর্য বানিয়েছিলেন। পরে সম্রাট শাহজাহানের পছন্দ হওয়াতে সেই ডিজাইনের আদলে বানানো হয় বিশ্ববিখ্যাত তাজমহল এবং সেই ব্যক্তিটির চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয় যাতে তিনি নতুন করে আর এই ডিজাইন তৈরি করতে না পারেন। ওপাবেন আরও কিছু নড়েচড়ে বসার মত কথা যেমন উপরে যা বললাম তা কমবেশি সবাই জানেন। কিন্তু এবার একটু নড়েচড়ে বসুন। কারন এখন যা বলতে যাচ্ছি তা হয়ত অনেকের কাছেই নতুন ও অন্যরকম মনে হতে পারে।
আমাদের চেনা-জানা তাজমহলের ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন প্রফেসর পি.এন. অক (Professor P.N. Oak– Taj Mahal: The True Story বই এর লেখক)। তিনি দাবী করেন যে তাজমহল বেগম মমতাজ মহলের সম্মানে নির্মিত প্রেমের সমাধিস্থল নয়; বরং এটা প্রাচীন দেবতা শিব (যাকে আগে বলা হত “তেজ মহালয়”) এর মন্দির যেখানে আগ্রার রাতপুতরা পূজা অর্চনা করত!! পরে শাহজাহান একে তাঁর মৃত স্ত্রীর স্মরণে স্মৃতিশালা হিসেবে গড়ে তোলেন।
ইতিহাস অনুসন্ধানে তিনি দেখতে পান যে শিব মন্দিরটি সম্রাট শাহজাহান অন্যায়ভাবে জয়পুরের মহারাজার (জয় সিং) কাছ থেকে দখল করেন। সম্রাট শাহজাহান তাঁর নিজস্ব দিনপঞ্জীতেও (বাদশাহনামা) উল্লেখ করেছেন যে, জয় সিং এর কাছ থেকে আগ্রার এক চমৎকার প্রাসাদোপম ভবন মমতাজ মহলের সমাধিস্থলের জন্য বেছে নেয়া হয়। এবং এর জন্য জয় সিংকে অনত্র জমিও দেয়া হয় সম্রাট শাহজাহানের পক্ষ থেকে।
“তাজমহল” নাম নিয়েও প্রফেসর অক সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মোগল আমল (এমনকি সম্রাট শাহজাহানের আমলেও) দলিলাদি ও কোর্টের নথিপত্রে কোথাও “তাজমহল” নাম উল্লেখ নাই! তাছাড়া ওই সময়ে কোন মুসলিম দেশে কোন প্রাসাদ/ভবনের নাম “মহল” রাখার প্রচলন ছিল না!
তাজমহল নাম এসেছে মমতাজ মহল থেকে—এটাও তাঁর কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি দুইটি কারনে। প্রথমতঃ তাঁর প্রকৃত নাম কখনই মমতাজ মহল ছিল না। দ্বিতীয়তঃ কেউ কারো নামে কোন প্রাসাদের নামকরন করতে চাইলে তার নামের প্রথম দুই অক্ষর বাদ দিয়ে (মমতাজ থেকে “মম” বাদ দিয়ে তাজ) নাম রাখবেন–এটাও সহজে মেনে নেয়া যায়না।
তিনি আরো বলেন, মমতাজ আর শাহজাহানের ভালবাসার গল্প মুলতঃ রূপকথা যা ওই সময়ের লোকদের মুখ থেকে সৃষ্ট; কারন ওই সময়কার কোন সরকারী নথিপত্রে বা গ্রন্থে মমতাজ-শাহজাহানের প্রেমের কথা উল্লেখ নাই।
পাশাপশি প্রফেসর অক কিছু ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন যা প্রমাণ করে তাজমহল শাহজাহান শাসনামলের নয়!-
১। নিউ ইয়র্কের আর্কিওলজিস্ট মারভিন মিলার (Marvin Miller) যমুনা নদীর তীর সংলগ্ন তাজমহলের দেয়ালের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে যে কার্বন পাওয়া যায় তা সম্রাট শাহজাহনের শাসনামলেরও ৩০০ বছরের পুরনো!
২। ইউরোপিয়ান পর্যটক যিনি ১৬৩৮ সালে আগ্রা ভ্রমন করেন (মমতাজ মারা যাওয়ার মাত্র সাত বছর পর) তিনি তার গ্রন্থে সেসময় তাজমহল তৈরির কোন সূত্র উল্লেক করেননি।
প্রফেসর অক তাজমহলের স্থাপত্যশৈলীর কিছু অসামঞ্জস্যতার কথা তুলে ধরে বলেন যে তাজমহল মুলতঃ হিন্দু মন্দির ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন তাজমহলের অনেক কামরাই শাহজাহানের আমল থেকেই তালবদ্ধ করে রাখা হয়েছে যা এখনও জনসাধারনের অজানা রয়ে গেছে। প্রফেসর অক দৃঢ়তার সাথে দাবী করেন যে ওই কামরাগুলোর একটাতেই আছে দেবতা শিবের মস্তকবিহীন মূর্তি যা সচরাচর হিন্দুদের মন্দিরে দেখা যায়।
ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সংঘাতের আশংকায় ইন্দিরা গান্ধির সরকার প্রফেসর অকের বই বাজার থেকে উঠিয়ে নেয় এবং ভারতে এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়।
তথ্য সুত্রঃ ধন্যবাদ আপনাকে @ মিলি ।
আপনার লেখার জন্য ধন্যবাদ। তবে এই ধরনের লেখার জন্য প্রাইমারি তথ্যসূত্র দেওয়া দরকার। তা না হলে লেখার গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক।
এই লেখার তথ্যসুত্র কোন একক কিছু নয়, মূলত ইন্টারনেট, পোষ্টের নীচে তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট লিখে আপডেট করে দিলাম, ধন্যবাদ @ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ।
আপনি কি কিছু জানতে চাইলেন @ মিলি ?
অসংখ্য ধন্যবাদ হাসান ইমতি ভাই ,এ ব্যাপারে ছোট্ট একটি লেখায় অনেক গুলো বিষয়ের মাঝে আমি তাজমহল এর মিথ সম্পর্কে একটু আলোচনা করেছি যার লিঙ্ক নিচে দিলাম ।
http://cholontik a.com/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%98%E0%A6%B2-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%A3%E0%A7%80/
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আর এলাহাবাদ হাইকোর্ট প্রফেসর অক এর দাবি নাকচ বা খারিজ করে দেয় । আবারও ধন্যবাদ মন্তব্যটি গুরুত্ব সহকারে নেয়ার জন্য ।ভাল থাকবেন।
আপনার লেখার লিঙ্কটি ওপেন হল না, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ইতিহাস হচ্ছে ক্ষমতাসীন বা শাসকদের হাতে লেখা সময়ের একপেশে ডায়েরী, এটা সেভাবেই রচিত হয় যেভাবে তারা চান, অন্যভাবে বলা যায় বিজয়ীর কলমে লেখা পরাজিতের জীবনী হচ্ছে ইতিহাস, অনেক কাটছাঁট ও আরোপের কাজ থাকে তা বলাই বাহুল্য, আমিও তাই বলি যা শুনে আসছি তা কি আসলেই সত্যি ?
The very ink with which history is written is merely fluid prejudice – Mark Twain
আমার এ লেখা সরাসরি ইতিহাস নয়, ইতিহাস তো অনেক আগেই লেখা হয়ে গেছে, এখন যারা ইতিহাস লেখেন তারা করেন কপি পেস্টের কাজ, এ প্রচলিত ইতিহাসের সত্যতা খোঁজার এক প্রয়াস, কথায় আছে যা রটে তা কিছুটা বটে, পরস্পর বিরোধী এসব কথা চালু হবার পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারন আছে, সেসবের যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ বা শেকড়ের সন্ধান থেকেই আমার এ লেখা, এটা ক্ষমতাসীন বা শাসকদের হাতে লেখা সময়ের ডায়েরী বা বিজয়ীর কলমে লেখা পরাজিতের জীবনী নয়, নিজের জিজ্ঞাসার উত্তর খোঁজা, নিজের মত করে সত্যের অনুসন্ধান । ধন্যবাদ @ মিলি