ফেরদৌসীর শাহনামা ও হিন্দুস্থান
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1680বার পড়া হয়েছে।
প্রায় হাজার বছর ধরে শাহনামা আমাদের বুকে ঠাঁই নিয়ে আছে। বিশেষত বাংলাদেশের ঘরে ঘরে সোহরাব-রুস্তমের কাহিনী পঠিত হয়। গল্পাকারে উপস্থাপনের নজিরও দেখা যায়। ইরানের জাতীয় মহাকাব্য শাহনামা। শাহনামার সঙ্গে ভারতবর্ষের সম্পর্ক রয়েছে কাহিনীসূত্রে। এই কাব্য নিয়ে কিছু কথা লেখা যেতে পারে।
শাহনামার লেখক ফেরদৌসী যার পুরো নাম হাকিম আবুল কাসেম ফেরদৌসী। ৯৪০ খ্রিস্টাব্দে জš§ তাঁর, শাহনামা লেখা শেষ হওয়ার দশ বছর তার মানে ১০২০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। প্রায় ৩০ বছর সময় নিয়ে তিনি এই মহাকাব্য রচনা করেন। প্রায় ষাট হাজার শ্লোক রয়েছে এই মহাকাব্যে। ইরানের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে আনা হয়েছে এই মহাকাব্যে। প্রচুর শাহ অথবা শাসক রয়েছে এই মহাকাব্যে। যারা এসেছেন আবার চলে গিয়েছেন কিন্তু তারা বৃহত্তর পার্সিয়ান সমাজ ও সংস্কৃতিকে তুলে এনেছেন। শাহনামাকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়; সেগুলি হলো, পৌরানিক, বীরোচিত এবং ঐতিহাসিক পর্ব।
ফেরদৌসী বিষয়ে তুর্কমেনেস্তানের একাদশ শতকের কবি আনভারী লিখেছেন, “ তিনি আমাদের ঈশ্বর আর আমরা তাঁর দাস।” শাহনামায় যে অসাধারণ প্রকৃতির বর্ণনা মিলে তা অসাধারণ। এখানে প্রাকৃতিক দৃশ্য অসাধারণ। পারস্যের উপত্যকায় হরিণেরা ঘুরে বেড়ায়। সম্রাটেরা যুদ্ধ শেষে শিকারে যায়। তবে নারী বিষয়ে ফেরদৌসী সচেতন ছিলেন। যাকে বর্তমান কালের বিচারে নিশ্চিতভাবে বলা চলে ‘জেন্ডার কনসাস’। তার রাজকন্যারা পবিত্র, কোনো পাপ তাদের মাঝে নেই। এমনকি কখনো কখনো রাজমহিষীরা সম্রাটদের রাষ্ট্রপরিচালনা ও যুদ্ধ বিষয়ে পরামর্শ দেয়। শাহনামা পাঠ থেকে বোঝা যায় হিন্দুস্থানের সঙ্গে ইরানের শত্র“তা ছিল না। হিন্দুস্থানের শাসকরা বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তারা শুধু জ্ঞানই নয় রাজ্য হারানো শাহজাদারাও ঠাঁই নিয়েছেন হিন্দুস্থানে।
‘শাহনামা’র যে মিথটি দীর্ঘকাল প্রচলিত তা নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক আবার লেখকের গর্বে প্রাণিত হবার স্মারক। শাহনামা রচিত হওয়ার ১০ বছর পর সুলতান মাহমুদ গজনীর সম্মুখে তার উজির যুদ্ধজয়ের আনন্দে এই কাব্যের একটি শ্লোক পাঠ করেছিলেন। সুলতান শ্লোক শুনে মোহিত হয়ে কবির নাম জানতে চান। তখন উজির তাকে জানান যে, রাজরোষে পতিত হয়ে কবি অভাবী জীবন-যাপন করছেন। উল্লেখ্য যে শাহনামা লেখার সময় সুলতান প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে এটি লেখা শেষ হলে ফেরদৌসীকে ষাট হাজার স্বর্ণমুদ্রা দেবেন। কিন্তু এই মহাকাব্য লেখা শেষ হলে সুলতান তাকে ষাট হাজার রৌপ্য মুদ্রা দিতে চাইলে তিনি প্রত্যাখান করেন। সুলতান সঙ্গে সঙ্গে ফেরদৌসীর জন্য ষাট হাজার স্বর্ণ মুদ্রা পাঠিয়ে দেন। ততক্ষণে পরপারে চলে গেছেন মহাকবি ফেরদৌসী। তার কন্যা প্রত্যাখান করেন এই উপহার।
১,৭৬২ বার পড়া হয়েছে
আপনাকে স্বাগতম ,
সুন্দর আলোচনা হয়েছে ।
স্বাগতম আপনাকে, আশা করছি চলন্তিকার সঙ্গেই থাকবেন
ভাল লাগল শাহনামার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। লেখককে ধন্যবাদ।
অনেক কিছুই অজানা ছিল।
ভাল লাগা +
ফেরদৌসীর শাহনামা ও নিয়ে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। ধন্যবাদ।
মহাকবি ফেরদৌসী এবং তার মহকাব্য শাহনামা সম্পর্কে পরিচিত ছিলাম কিন্তু ফেরদৌসীর ব্যক্তিগত জীবন এবং আর বাকী ঘটনা ছিল অজানা।অনেক অজানা জিনিস জানা হল।
সেখককে ধন্যবাদ এই মহৎ রচনাটির জন্য।
আগে পড়েছি।
যথেষ্ট তথ্য আছে। ফেরদৌসি আর শাহনামা সম্পর্কে আসলেই অনেক কম জানা ছিলো। তবে ঐতিহাসিক কিছু তথ্য দিয়ে লেখাটিকে আরো সমৃদ্ধ করা যেতে পারতো । আশা করছি আগামীতে এ বিষয়ে আরো বড় আর সমৃদ্ধশীল লেখা পাবো । ধন্যবাদ ।