বিলুপ্তির পথে কলুর ঘানি শিল্প
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1339বার পড়া হয়েছে।
গ্রাম বাংলার আহবমান ঐতিহ্য কলুর তেলের ঘানিশিল্প আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এতে করে কলুরা অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছে এবং অনেকেই বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ছে আবার অনেকেই বয়সের ভারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এক সময় ঘাণিশিল্পে সরিষা দিয়ে গরুর সাহায্যে তেলের ঘানিতে মাড়াই করে সরিষার তেল বের করা হতো। গৃহস্থরা খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে তরি-তরকারিসহ সব ধরণের রান্নার কাজে ব্যবহার করতো। এক কথায় ঘানির সরিষার তেল ছাড়া সে সময় রান্না-বান্নাতে যেন গৃহিনীরা আর অন্যকিছু চিন্তাই করতো না। অন্যদিকে ঘানির সরিষার খৈল গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতো যা গরুর স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে অনেকটাই সহায়ক। সে সময় ঘানির সরিষার তেলের বিকল্প যেন আর কিছুই ছিল না। কলুরা ঘানির সঙ্গে গরুকে বেঁধে দিলে সারারাত ধরে চরকীর মতো নিজমনে ঘুরতো, অপরদিকে ঘানির চোং দিয়ে টিপটিপ করে তেল বের হতে থাকতো গৃহস্থরা সেই তেল মাটির পাতিলে করে বাঁশের চোখ দিয়ে তেল মেপে বাজারে বিক্রি করতো এ যেন সত্যিই গ্রাম বাংলার ঐহিত্যের অহংকার।
কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘানিশিল্প আজ প্রায় বিলুপ্ত। হারিয়ে যেতে বসেছে আদিকালের ঘানিশিল্পের ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ।
আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশে তেলের ঘানি শিল্পের পরিবর্তে যন্ত্রচালিত তেলের কল চালু হওয়ায় এবং গৃহস্থরা খাঁটি সরিষার তেলের বিকল্প যেমন সয়াবিন, পামওয়েল ইত্যাদি তার সাথে কলের সরিষা তেল ব্যবহার করায় ঘানির সরিষা তেলের চাহিদা দিনে দিনে কামে যাওয়ার কারণে ঘানি শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। কলুর পরিবার এখন বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।
সরিষার আবাদ কমে যাওয়ায় এবং সরিষার দাম বেশি হওয়ায় ঘানির তেলের দামও বেশি হয়েছে। ৫ কেজি সরিষার দাম ২০০ থেকে ২২৫ টাকায় কিনতে হয়। ৫ কেজি সরিষা মাড়াই করে যতটুকু তেল পাওয়া যায়। তা বাজারে বিক্রি করে তেমন লাভ হয় না। লাভ শুধু খৈল বিক্রি করে। তেল বিক্রিতে লাভ হয় কম। ফলে কিছু সংখ্যক কলুর পরিবার এখনো এই পেশায় নিয়োজিত থাকলেও সেটিও প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ফলে অনেকেই বয়সের ভারে অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়তে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।আর এভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যটি।
১,৩১৫ বার পড়া হয়েছে
আসলে এসব ঐতিহ্য এক সময় বিলীন হয়ে যাবে।
শিরোনামে
তেলের ঘানি শিল্প লিখলে ভালো হতো।
কারণ আমার একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে, আর তা হল আমার চাকরি জনিত কারণে প্রায় চার বছর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জব করেছি, তাই জানি তেলের ঘানি ব্যবহার করে যা তেল তৈরি করে তাদেরকে যদি কলু/ বা কুলু বলা হতো তাহলে মনে খুব কষ্ট পেত, তাহলে কি বলতে হবে? উত্তর- বেপারী বলতে হবে।
সব এলাকায় যে এমন ভাবে এমন নাও হতে পারে, তবে আমি মনে করি এই পোষ্টটি তো ঐ এলাকার মানুষও হয়তো বা পড়বে, তাই ওরা কষ্ট পেতে পারে।
সুতরাং
আমি মনে করি__
তেলের ঘানি শিল্প লিখলে ভালো হতো।
আসলে আমাদের অনেক শিল্পই হারিয়ে যেতে বসেছে। কলুর তেলের ঘানিশিল্প যেখানে খাটি তেলে উৎপাদ হতে। এখন ভেজালের দুনিয়া খাটি জিনিস হারাবে এটাই স্বাভাবিক ।
ঠিক কথা
ছবি থাকলে ভাল হত ।
কালের বিবর্তনে সবই হারিয়ে যআবে।
ভাল লাগল পোস্ট
কালের বিবর্তনে সবই হারিয়ে যাবেনা তো
ভয় হয় ………….
দারুন ভাবনার প্রকাশ