“মধ্যম আয়ের দেশ” না “বেকার আর আয় বৈষম্যমুক্ত সমাজ” কোনটা প্রয়োজন ???
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1321বার পড়া হয়েছে।
কিছুদিন ধরেই যে বিষয়টা নিয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে… সেটা অবশ্যই বাংলাদেশের “মধ্যম আয়ের দেশ” হওয়া প্রসঙ্গ !
মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে- মাথাপিছু জাতীয় আয় কমপক্ষে ১ হাজার ১৯০ মার্কিন ডলার হতে হবে । এরপর আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- মানবসম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক ।
মানবসম্পদ সূচকে বিবেচনা করা হয় জনসমষ্টির কত শতাংশ পুষ্টিহীনতার শিকার, শিশুমৃত্যুর হার কত, মাধ্যমিক স্কুলে কতজন লেখাপড়ার সুযোগ পায় এবং বয়স্ক সাক্ষরতার হার কত ?
অর্থনৈতিক সূচকে যেসব দিক বিবেচনা করা হয়। তার মধ্যে আছে— মোট জনসংখ্যা, জনসমষ্টির বিচ্ছিন্নতা, রফতানি পণ্যের বহুমুখিতা, জাতীয় উৎপাদনের কৃষির অবদান, জনসংখ্যার কত অংশ দুর্যোগের শিকার এবং কৃষি উৎপাদনের স্থিতিশীলতা ।
এ সবকিছু বিবেচনা করে এর সঙ্গে মাথাপিছু আয়ের ধাপটি মিলিয়ে তারপর দেখা হয় কোন দেশ মধ্যম আয়ের দেশের ক্লাবে পড়ে কিনা । মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে হবে ৭ দশমিক ৫ থেকে ৮ শতাংশ (বাংলাদেশে বর্তমানে যা ৫ দশমিক ৬ শতাংশ) ।
এতো গেল, সার্টিফিকেট পাওয়ার হিসেব-নিকেশ ! কিন্তু সার্টিফিকেট পেলেই বা দেশের মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে এ থেকে ???
যে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর বিরাট একাংশ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, যাদের মৌলিক অধিকার এখনো রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারেনি, যে দেশের লাখ লাখ মানুষ দেশের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হয়েও বয়ে বেড়াতে হয় বেকারত্বের অভিশাপ, তারা মধ্যম আয়ের দেশের নাগরিক হলেই বা কী লাভ হবে ?
মাথাপিছু আয় হয়তো বাড়বে, কিন্তু বণ্টন হবে কারো ভাগে এক ডলার আর কারো ভাগে এক হাজার ডলার । কেউ ভিক্ষে করবে আর কেউ হয়তো দশটা বাড়ির মালিক থাকবে ! এমন আয় বৈষম্যের মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হলে তা সার্বিকভাবে দেশের জন্য কতটুকু সুফল সুফল বয়ে আনবে তা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ ! তাছাড়া, মধ্যম আয়ের দেশের সার্টিফিকেট ঋণ, অনুদান, ব্যবসায়িক বিভিন্ন ছাড় সুবিধাসহ বিদ্যমান অনেক সুবিধাই হয়তো বন্ধ করে দেবে কিংবা হ্রাস করে দেবে বাংলাদেশের জন্য !
যে পরিমাণ বেকার বাংলাদেশে আছে তাদের সকলের যদি উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভবপর হয় তবে দেশকে শুধু মধ্যম আয়ের নয়, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে দেখতে পাওয়া যে কেবলই সময়ের ব্যাপার- আমাদের বিজ্ঞ কর্তৃপক্ষের এই বোধদয় কবে হবে তা কেবল ভবিষ্যৎই হয়তো বলতে পারবে !
(তথ্য উৎসঃ “বণিক বার্তা” অনলাইন সংস্করণের রাশিদুল ইসলাম নাহিদ এর উপসম্পাদকিয় (২০১৪-০৭-১১ইং) থেকে কিছু তথ্য গৃহীত হয়েছে এবং কিছু নিজস্ব চিন্তাধারায় সংযোজন করা হয়েছে)
১,৩১৬ বার পড়া হয়েছে
nice
ভালো ভাবনার প্রয়াস আপনার
ধন্যবাদ সবুজ ভাই !
ভাল ভাবনার ঠিক কথা
অনেক ধন্যবাদ দাদা ।
বিশ্বব্যাংক বলছেন আমাদের মাথাপিছু আয় অনুসারে বাংলাদেশ এখন থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত হবে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক এই কললেন না কেন? মাথাপিছু ব্যায় অনুসারে বাংলাদেশ কি হিসেবে পরিচিত হবে!
চমৎকার বলেছেন ! বিশ্বব্যাংকেরও তো লাভ আছে ! মধ্যম আয়ের দেশ হলে ঋণ সুবিধা কম দিতে হবে যে ! 😛
ধন্যবাদ জানবেন ।
মধ্যম না নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এখন বাংলাদেশ ।এই আয় এর হিসাব তো হয় মুসা বিন শমশের আর আমাদের বুয়ার আয় এর গড় হিসাবে ,তাই যে ধনী সে তো অনেক ধনী কিন্তু নিম্নবিত্ত দের অবস্থার কি খুব একটা পরিবরতন হয়েছে ?
আমার জানামতে, মধ্যম আয়ের মধ্যে দুটো পার্ট আছে আপু !
একটা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ আর একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ !
সে হিসেবে মধ্যম আয় বলতে দুটোকেই বোঝানোর কথা ! 
সুন্দর ও গঠনমূলক মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু ।