Today 31 May 2023
banner
নোটিশ
ব্লগিং করুন আর জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের রিটার্ন বিমান টিকেট! প্রত্যেক প্রদায়কই এটি জিতে নিতে পারেন। আরও আছে সম্মানী ও ক্রেস্ট!
banner

মায়ের দুধের উপকারিতা

লিখেছেন: আমির ইশতিয়াক | তারিখ: ২১/০৬/২০১৩

এই লেখাটি ইতিমধ্যে 984বার পড়া হয়েছে।

মায়ের বুকের দুধ হচ্ছে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যুক্ত আদর্শ খাদ্য। এর কোন বিকল্প নেই। এ দুধ শিশু সহজে হজম করতে পারে। ফলে শিশুর শরীর সহজেই তাকে কাজে লাগিয়ে স্বাভাবিক দেহ বৃদ্ধি ঘটিয়ে থাকে।
মায়ের দুধের উপকারিতা নিয়ে চার যুগ পূর্ব পর্যন্ত কারো মনে কোন প্রশ্ন উঠেনি। কিন্তু হঠাৎ করে এখন দেখা যাচ্ছে, বাচ্চাকে তার মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে কোটার দুধ দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের মায়েরা, বিশেষ করে শহরের মায়েরা তার শিশু সন্তানকে টিন ভর্তি গুঁড়ো দুধ পান করাচ্ছে। শহরের মায়েদের দেখাদেখি গ্রামের মায়েরাও কোটার দুধের প্রতি ঝুকে পড়ছে। শহরের মায়েরা মনে করে বুকের দুধ বাচ্চাকে পান করালে স্তনের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। আসলে কিন্তু তা নয়। বরং এর উল্টোটা হয়। অর্থাৎ মায়ের বুকের দুধ বাচ্চাকে পান করালে মায়ের শারীরিক সৌন্দর্য লাভ করে এবং স্তনের গড়ন সুন্দর হয়। পক্ষান্তরে বাচ্চাকে বুকের দুধ পান না করালে মায়ের স্তন শক্ত হয়ে যায়। তখন নানা রকম ব্যথা ও যন্ত্রণা অনুভব হয়। এখন মায়ের দুধের উপকারি কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো।
১. মায়ের দুধে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান থাকে। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ এ পাঁচটি উপাদানই দুধে পাওয়া যায়।
২. বাচ্চাকে পুষ্টির জন্য এর চেয়ে ভালো জিনিস আর নেই।
৩. এই দুধ একেবারে জীবাণুমুক্ত থাকে। যদি মা অপরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে তার স্তন ও বোঁটায় জীবাণু আক্রমন করতে পারে। তবে বাচ্চা যেহেতু দুধ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পান করে ফেলে বলে জীবাণু যদি এতে এসেও পড়ে তা বংশ বিস্তারের সুযোগ পায় না। তাই মায়ের দুধ প্রকৃত পক্ষেই জীবাণু মুক্ত।
৪. শিশু চাইলে সঙ্গে সঙ্গেই এ দুধ পেতে পারে। শিশুর প্রয়োজন মাফিক তা গ্রহণ করে।
৫. যে তাপমাত্রায় মায়ের দুধ আসে তা-ই বাচ্চার জন্য উপযুক্ত।
৬. সন্তান প্রসবের পর গাঢ় এবং হলুদ রঙের যে দুধ মায়ের স্তন থেকে বের হয়ে আসে তাতে বেশীর ভাগই থাকে আমিষ। এ দুধকে সাধারণত: শাল দুধ বলা হয়। এতে থাকে রোগ প্রতিরোধক নানান উপাদান। গ্রামাঞ্চলের মায়েরা এ দুধকে পুঁজ মনে করে টিপে ফেলে দেয়। আসলে এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। শাল দুধের যে কত উপকারিতা তা লিখে শেষ করা যাবে না। তাই আমাদের সকল মায়েদের উচিত শিশু জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুধ খাওয়ানো।
৭. মায়ের দুধের মধ্যে দিয়ে বাচ্চার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।
৮. যে কোন খাবারই কিনে খেতে হয়ত, কিন্তু মায়ের দুধ এর ব্যতিক্রম। মায়ের দুধের জন্য কোন পয়সা খরচ হয় না। তবে মাকে একটু ভাল খাবার দিলেই যথেষ্ট। যদি মায়ের বুকের দুধ না খাওয়ায়ে গুঁড়ো দুধ খাওয়ানো হয় তাহলে খরচ কত পরে তা হিসেব করে দেখুন। গুঁড়ো দুধ খাওয়াতে হলে বোতল, নিপল কিনতে হয়। দুধ ফোটানোর জন্য জ্বালানীর প্রয়োজন হয়। জ্বালানীর জন্য গ্যাস, কেরোসিন, বিদ্যুৎ বা লাকড়ীর প্রয়োজন হয়। দুধের পাত্রকে জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য আবার জ্বালানীর প্রয়োজন হয়। ফ্রিজে দুধ রাখাও একটা খরচ আছে। তাছাড়া বোতলের দুধ পান করানোর ফলে বিভিন্ন রোগ হয়। এ রোগের চিকিৎসা খরচ হয়। সর্বোপরি কত ঝামেলা। তাই বুকের দুধ খাওয়ালে এসব ঝামেলা থেকে রেহায় পাওয়া যায়।
৯. মায়ের বুকের দুধ খেলে বাচ্চা বিকলাঙ্গ হবে না। হলেও তা মারাত্মক হবে না।
১০. মায়ের দুধ শিশু স্তনবৃন্ত থেকে সরাসরি পান করলে পিটিউটারি গ্রন্থি থেকে অকিএসটামিন হরমোন নি:সৃত হয়। এই হরমোনের প্রভাবে জরায়ু আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
১১. মায়ের দুধ শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খুব সহায়ক। প্রকৃতিতে যত খাদ্য আছে তাতে শর্করা হিসেবে ল্যাকটোজ আছে একমাত্র দুধে। দুধে ল্যাকটোজ না থাকলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ সম্ভব হতো না।
১২. মায়ের দুধ বাচ্চাদের বেধড়ক মোটা হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
১৩. মায়ের দুধ পানের ফলে মা ও শিশুর মধ্যে মানসিক বন্ধনের সৃষ্টি করে।
১৪. মায়ের দুধ পানে শিশুর স্বাভাবিক চেহারা লাভে সাহায্য করে।
১৫. মায়ের দুধ পানে শিশুর দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়।
১৬. মায়ের দুধ পানে শিশুর কথা বলার ক্ষমতা অর্জনে সাহায্য করে।
১৭. বাচ্চার খিঁচুনি হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।
১৮. শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বৃত্তিক বিকাশে সাহায্য করে।
১৯. যে মায়েরা দীর্ঘদিন যাবত বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করান তাদের স্তন ক্যান্সারের হার তুলনামূলকভাবে কম।
২০. শিশুকে বুকের দুধ পানে দুটি সন্তানের মধ্যে জন্মের ব্যবধান বৃদ্ধি করে। কেননা দীর্ঘদিন শিশুর মায়ের দুধ খেলে মায়ের গর্ভসঞ্চার সম্ভবনা কম থাকে।
উপরোক্ত উপকারিতার জন্য শিশুকে যতদিন সম্ভব মায়ের দুধ পান করানো যায় ততই ভাল। তবে দুই বছরের বেশি না খাওয়ানো উত্তম। কেননা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন- ‘‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু’বছর দুধ পান করাবে।’’
(সূরা বাকারা-২৩৩)

১,০৬৮ বার পড়া হয়েছে

লেখক সম্পর্কে জানুন |
আমির ইশতিয়াক ১৯৮০ সালের ৩১ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ধরাভাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শরীফ হোসেন এবং মা আনোয়ারা বেগম এর বড় সন্তান তিনি। স্ত্রী ইয়াছমিন আমির। এক সন্তান আফরিন সুলতানা আনিকা। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন মায়ের কাছ থেকে। মা-ই তার প্রথম পাঠশালা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করেন মাদ্রাসা থেকে আর শেষ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তিনি লেখালেখির প্রেরণা পেয়েছেন বই পড়ে। তিনি গল্প লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও সাহিত্যের সবগুলো শাখায় তাঁর বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। তাঁর বেশ কয়েকটি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো- এ জীবন শুধু তোমার জন্য ও প্রাণের প্রিয়তমা। তাছাড়া বেশ কিছু সম্মিলিত সংকলনেও তাঁর গল্প ছাপা হয়েছে। তিনি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় গল্প, কবিতা, ছড়া ও কলাম লিখে যাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্লগে নিজের লেখা শেয়ার করছেন। তিনি লেখালেখি করে বেশ কয়েটি পুরস্কারও পেয়েছেন। তিনি প্রথমে আমির হোসেন নামে লিখতেন। বর্তমানে আমির ইশতিয়াক নামে লিখছেন। বর্তমানে তিনি নরসিংদীতে ব্যবসা করছেন। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা একজন সফল লেখক হওয়া।
সর্বমোট পোস্ট: ২৪১ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ৪৭০৯ টি
নিবন্ধন করেছেন: ২০১৩-০৬-০৫ ০৭:৪৪:৩৯ মিনিটে
Visit আমির ইশতিয়াক Website.
banner

২ টি মন্তব্য

  1. আজিম হোসেন আকাশ মন্তব্যে বলেছেন:

    Good

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন.

go_top