মেঘের কোলে রোদ-৫
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1344বার পড়া হয়েছে।
অতসী এক সময় অবাক হয়ে দেখল, বাগানের ওপাশে উঁকি মেরে কেউ তাদের
দেখছে। হাসল সে। বলল, অত লজ্জা করার কিছু নাই, আমার বন্ধুকে দেখবি
যদি এখানে আয়।
গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল গনেশ। বিব্রত মুখে দাঁড়াল অতসীর সামনে।
অতসী হাসতে-হাসতে বলল, কি-রে আমার বন্ধুকে পছন্দ হয়েছে?
— ধেৎ, কি যে তুমি বল না দিদি!
—পছন্দ হয়েছে কিনা বল, তোর ওই গানের মেয়ের চেয়ে তো ঢের সুন্দর কি
বলিস?
ধপাস করে ঘাসের উপর বসে পড়ল গনেশ। বলল, আমি কিন্তু পালাব এবার।
—কোথায় যাবি, তোর সেই গান-সুন্দরীর কাছে?
— ওর কাছে তো হায়দারদা গেছে।
বুকের মধ্যে তীর বিঁধলে হরিণী যেমন তাকায় তেমন দৃষ্টিতে গনেশের দিকে
তাকাল তপতী।বলল, কি বললি?
যা জানি তাই বললাম। স্কুলের ফান্ডের জন্য আবার যাত্রাপালা হবে।নাটকের
নাম ‘পলাশীর যুদ্ধ’।তাই হায়দারদা বায়না করতে শহরে গেছে।
— পলাশীর যুদ্ধ হোক, আর বক্সারের যুদ্ধ হোক, তুই যেন আবার ওই
মেয়েটার খপ্পরে পড়িস না, নইলে বাবা কিন্তু আবার কুরুক্ষেত্র বাঁধাবে।
—দিদি, তুমি না, আমাকে শুধু লজ্জা দাও, কতবার বলেছি শিউলীকে
আমি ভুলে গেছি। তাছাড়া হায়দারদা তো বলেছে, অন্য কোন মেয়েকে
আনবে এবার।
— তোদের দাদা এবার কি রোল করবে?
— সিরাজের রোলে দাদা ছাড়া কাউকে মানায় নাকি।
—বাপরে আমার দাদা-ভক্ত হনুমান,পলাশডাঙার শচীন রায় কি খারাপ
অভিনয় করে নাকি, কত জায়গায় সোনার মেডেল পেয়েছে, তাকে
আনলে কি ক্ষতি হত শুনি?
—দাদা তো তাই বলছে, শচীনবাবুকে আনবো, লোকে ভিড় করবে, ভিন
গ্রাম থেকে চাঁদা পাব বেশী।কিন্তু আমাদের ইয়াং স্টার ক্লাবের ছেলেরা
শুনছে না। বলছে, সে পালার আসরে যা হয় হবে, তুমি এখন রিহ্যাসাল
চালাও।
— আর তোদের দাদা রিহ্যাসেল করছে রেগুলার?
— করছেই তো, দাদা না থাকলে রিহ্যাসালই হয় না, এই তো তিনদিন হল
শহরে গেছে, রিহ্যাসালও বন্ধ।
কথা বলতে বলতেই বাগানের ওপাশ থেকে কেউ একজন হাঁক দিল,গনেশ,
ও গনশা।
—হ্যাঁ, বল।
—শুনেছিস, দাদা ফিরেছে?
—তাই নাকি, তুই দাঁড়া আমি এক্ষুণি যাচ্ছি।
বলে উঠে দাঁড়াল গনেশ। তারপর ছুটে গেল যেন বাগান পেরিয়ে রাস্তার দিকে। তার
চলে যাওয়া দেখতে দেখতে তপতী বলল, দাদা ভক্ত গোবর গনেশ!
তখনই সে দেখল তার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রোমিলা। বলল, কি-রে
তোর ঘুম ভেঙে গেল?
— হুঁ, ভাঙল। ভাঙল বলেই তো জানতে পারলাম, দাদার প্রতি ভাইয়ের যা ভক্তি,
তারচেয়ে বেশী ভক্তি ভাইয়ের দিদির।
— এই, কি যে তুই বলিস না,চল ভেতরে গিয়ে দেখি মা রান্নার কি কতদূর করল।
—রান্না আমি আধসেদ্ধ হলেও খেতে পারি, কিন্তু কৌতুহল হলে সেটাকে চেপে রাখতে
পারিনা। ঘটনা কি সত্যি করে বল।
তপতী ম্লানমুখে বলল, ঘটনা কিছুই নয় রে, সবই মনের কল্পনা,ছেলেটার আজ অব্দি
আমাদের বাড়ির চৌকাঠ মাড়ায়নি।
— কেন বল তো?
— রাতদিন লোকের উপকার করে বেড়ায়, তাই এদিকে তাকানোর ফুরসৎ নাই।
— আমি কি কাকুকে কথাটা জানাবো?
—কোন লাভ হবে না।
—কেন?
—ছেলেটা মুসলমান।
(পরের কথা জানতে আগামী পর্ব পড়ুন)
*
১,৪২৫ বার পড়া হয়েছে
ভালো লাগছে।সাথে আছি।
অশেষ ধন্যবাদ ভাই
ভাল থাকবেন।
পড়লাম ভাল লাগল । চালিয়ে যান ।
অশেষ ধন্যবাদ ভাই
ভাল থাকবেন।
আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম, তুষার ভাই
অশেষ ধন্যবাদ ভাই
ভাল থাকবেন।
পর্বটি পড়লাম।