Today 31 May 2023
banner
নোটিশ
ব্লগিং করুন আর জিতে নিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের রিটার্ন বিমান টিকেট! প্রত্যেক প্রদায়কই এটি জিতে নিতে পারেন। আরও আছে সম্মানী ও ক্রেস্ট!
banner

‘ মেঘের কোলে রোদ ‘ I

লিখেছেন: আহমেদ রুহুল আমিন | তারিখ: ০৪/০৮/২০১৪

এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1153বার পড়া হয়েছে।

( কিছু কথা : বাংলাদেশে মিডিয়া জগতে এরকম হৃদয় বিদারক, অমানবিক কিম্বা বলা চলে অব্যবস্থাপনা-অকর্মন্য ‘জাতীয় ব্যর্থতা’ ইতিপূর্বে কখনো ঘটেছে কিনা ? তা হলো ‘ সাগর-রুণি’ হত্যাকান্ড এবং এর রহস্য উদঘাটন । এই রহস্য উদঘাটনে সরকারের পাশাপাশি মিডিয়া জগতের ব্যর্থতা একাকার হয়ে আমরা এখন আশাহত ‘সাগর-রুণির’ হত্যারহস্য কোন দিন বাংলার জমিনে প্রকাশ হবে কিনা ! যে মিডিয়া জগৎ কেঁচোর সন্ধানে সাপ বের করে ফেলে সেই মিডিয়াও নিরুপায় । সবচেয়ে খারাপ লাগে তখন , যখন সাগর-রুণির একমাত্র শিশুসন্তান ‘মেঘ’ যে চোখের সামনে খুনিদের রঞ্জিত হাত-মূখ চর্মচোখে প্রত্যক্ষ করেছে , তার মানসিক অবস্থা আমরা কল্পনাও করতে পারবনা ! মেঘ এখন কিছুটা বড় হয়েছে বা কিছুটা বুঝতে শিখেছে । দোয়া করি, মহান রাব্বুল আলামিন যেন তাকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখেন ! গল্পটি তার নামে উৎসর্গ করলাম । ‘গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক ‘। একটু কৈফিয়ত : একবার মনে হলো `মেঘ’ এর নানুবাড়ি এই এলাকায় হওয়ায় গল্পের নাম রাখি `মেঘ’ এর নানুবাড়ি । কিন্তু তার নানুবাড়ি বা ফ্যামিলীগত কোন গল্প থাকবেনা এখানে । তাই গল্পের নাম দিলাম ‘মেঘের কোলে রোদ ‘ – যে নামটি কবিগুরুর বহুল প্রচারিত একটি `ছড়া’ থেকে ধার নেয়া ।)

কিসমত … । পঞ্চগড় জেলার দক্ষিণাঞ্চলে মফস্বলের একটি ছোট্ট রেল স্টেশন । এখানে মেল ট্রেন থামেনা – লোকাল গুলো অধিকাংশ সময় থামার ভান করে , কিম্বা বলা চলে – চলতে চলতে থামে অথবা থামতে থামতে চলে যায় । সব লোকাল পেসেঞ্জার বলে এই অবহেলা ! এই স্টেশনে নেমে সোজা পশ্চিম-উত্তর দিকে বাঁক নিয়ে আঁকা বাঁকা রাস্তা দিয়ে কিলো খানেক গেলে বাংলার কিংবদন্তি নায়ক অভিনেতা ষাট- সত্তর দশকের বাংলার উত্তম কুমার খ্যাত নায়ক রহমানের সমাধীস্থল যে গ্রামের নাম রসেয়া । রঙ্গ- রসের মানূষ নিয়ে এই জনপদের উত্থান কিনা কে জানে ? যার কারণে গ্রামের নাম রসেয়া । এই রসেয়া থেকে আরো কিলোতিনেক উত্তরে গেলে ‘ঢাংগা-ঢাংগি’ জোড়া দিঘী । মাঝখানে রাস্তা, দুই ধারে দিঘী । কাকচক্ষুর ন্যায় কালো এর জল দেখলে যে কেউ মুগ্ধ না হয়ে পারেনা । এর একটু পূর্ব দিকেই টাংগন শুকনো নদী যাতে এখন অনেক ধরনের ফসলের আবাদে ভরিয়ে তুলেছে স্থানীয় কৃষকেরা । এই মরা নদীর কিছুটা ভাটিতে রয়েছে রাণীগঞ্জ এস্টেটের শেষ উত্তরসুরী মহারাণী দেবিকারাণী রায় ওরফে বুড়িরাণীর নামে খ্যাত বুড়িরবান যে জলমহালে এলাকার মানূষের সারা বছরের মৎস্য চাহিদা পূরণ হয় । প্রতিবছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে এখানে গণমৎস্য শিকারের ( স্থানীয় ভাষায় যাকে ‘বাহো’ বলে যা প্রতিটি হাটবাজারে ঢোলশহরত করে মানূষকে দিনতারিখ নির্ধারন করে জানানো হয় ) আয়োজন করা হয় । যেখানে দে্শী প্রজাতীর অনেক মাছ বিশেষ করে, শোল, বোয়াল , শিং,মাগুড়, কানাশসহ সব প্রজাতীর মাছ পাওয়া যেতো । এখন সময়ের বিবর্তনে কিম্বা সরকারী কর্তা ব্যাক্তিদের আন্ডারে যাওয়ার কারণেই হোক আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায়না । এই নিয়ে এলাকাবাসীর আক্ষেপের শেষ নেই । তবে, চোখ জুড়ানো নয়ানাভিরাম এই এলাকাটি যে প্রাকৃতিক শোভা বর্দ্ধন করেছে এ ব্যাপারে কারো সন্দেহ নেই । ‘ঢাংগা-ঢাংগি’ জোড়া দিঘী থেকে পশ্চিমে গেলে মির্জাপুর গ্রাম । উত্তরে পানবাড়া ও দক্ষিণে পাটশিড়ি গ্রাম ( জীবনানন্দের ধানশিড়ি নয় !) ‘মেঘের নানুবাড়ি’ । মাঝখানে রয়েছে বিশাল এলাকা জুড়ে বারআউিলিয়া মাজার শরীফ । পুরো এলাকা জুড়ে যে মৌজার নাম বারআউলিয়া । আচ্ছা,মেঘ কি এতো সুন্দর গ্রাম কখনো দেখেছে ? হয়তো দেখেছে , হয়তো দেখেনি ! এই মির্জাপুর ( মির্জাগোষ্ঠীর নামে ) গ্রামের নামের সেই চমকপ্রদ কাহিনী কি মেঘ কখনো শুনেছে ? সেই অনেক অনেক দিন মির্জাদের আগমনের আগে এই এলাকায় বসবাস করতো এক ব্রাক্ষ্মণ জমিদার । জমিদারও বুঝি ব্রাক্ষ্মণ হয় ? তখনকার যুগে তার ছিল তের তের জন পত্নী । কারো বয়স চল্লিশ/পঁয়তাল্লিশ তো কারো বয়স বার/তের । আর জমিদার ছিল খুব ভাগ্যবান অন্তত: আয়ুর দিক থেকে । কেননা, প্রজাবৎসল এই ব্রাক্ষ্মণ জমিদার বেঁচেছিল প্রায় পঁচান্নব্বই বছর । কিন্তু পত্নীরা ছিল একেবারে ক্ষণজন্মা । কেউ পঁয়তাল্লিশ বছর আয়ু পার করেছে বলে কারো জানা নেই । একমাত্র শেষ বউ এর বয়স যখন আঠারো পেড়িয়েছে তখন ব্রাক্ষ্মণ জমিদারের ইহলিলা সাঙ্গ হয় । কিন্তু বউটি ছিল সতিস্বাদ্ধি – ব্রাক্ষ্মণ জমিদার স্বামীর অত্যন্ত প্রিয়তমা । সে আগে থেকেই অনুভব করেছিল যে তার প্রাণপ্রিয় স্বামীধন যে কোনদিন টুপ করে মরে যাবে ।বলে রাখা ভাল যে, এই বউটি ছিল এলাকার প্রজাবৎসদের কাছেও খুব জনপ্রিয় ও শ্রদ্ধার পাত্র । তাই ব্রাক্ষ্মণ পরিবারের বউ হিসেবে তাদের কাছ থেকে পেত অনেক উপঢৌকণ এই ধরো সোনাদানা , মনি মানিক্যসহ আরো কতো কী ! আর ব্রাক্ষ্মণ জমিদারের দেয়া সম্পদ যেমন হিরা মুক্তা মানিক্যতো আছেই । তখনকার আদিযুগে সহমরনের যে প্রথা ( যাকে সতিদাহ প্রথা বলে ) তা খুব কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হতো । তাই ব্রাক্ষ্মণী বউটি এই সব সোনাদানা -হিরামানিক্যর লোভ সংবরণ করতে না পেরে একটি শক্তমতো নকশীকাঁথা ( স্থানীয় ভাসায় যাকে বলে ‘গোদুলী’) সিলাই করে সেগুলো এর মধ্যে ভরে ফেলে বিছানায় আকড়ে ধরে থাকতো আর অপেক্ষা করতো বুড়ো ব্রাক্ষ্মণের সাথে চিতায় ঝাপ দিয়ে স্বর্গবাসী হওয়ার !! (চলবে ) ……

১,১২৫ বার পড়া হয়েছে

লেখক সম্পর্কে জানুন |
#কায়েতপাড়া, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড় । #চল্লিশ দশকে অকাল প্রয়াত ছোট মামার কলকাতার সংগ্রহকৃত কিশোর ক্লাসিক " শুকতারা " ম্যাগাজিনে প্রকাশিত রবীন্দ্র সম-সাময়িক ( যেখানে তাঁর লেখা ছবিসহ সরাসরি প্রকাশ হতো) বিভিন্ন ছড়া/কবিতা সত্তর আশির দশকে পাঠে শিশু মনে কল্পনার দোল খেত । সেই থেকে শুরু । লেখা-লিখি টুকটাক । ভাল লাগে কবিগুরু , বিদ্রোহী,সুকান্ত -জীবনানন্দ, সত্তর-আশির দশকের আবুলহাসান, দাউদ হায়দার,খোন্দকার আশরাফসহ অনেক কবির লেখা । সমরেশ মুজুমদার,সব্যসাচি সৈয়দ হক,আনিসুল হক, সদ্যপ্রয়াত হুমায়ুন আহমেদ,ইমদাদুল হক মিলন প্রিয় গল্পকার/লেখকের তালিকায় । # প্রিয় ব্যাক্তিত্ত্ব : হযরত মোহাম্মদ (সা.) । # প্রিয় ব্যক্তি : মা-বাবা । # যা আশ্চয্য করে : পবিত্র কোরআন, বিশ্ব- প্রকৃতি, কম্পিউটার-তথ্য প্রযুক্তি । #দু'সন্তানের জনক ।
সর্বমোট পোস্ট: ৭৯ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১৬২ টি
নিবন্ধন করেছেন: ২০১৩-১১-১৫ ১৭:১৮:৩৫ মিনিটে
banner

২ টি মন্তব্য

  1. ঘাস ফড়িং মন্তব্যে বলেছেন:

    সাংবাদিক শিক্ষক যদি হত্যা কৱা কিংবা ঘুম কৱা হয় তাহলে তাদেৱ এ ঘুমেৱ ৱহস্য উগঘাটন কৱতে কেউ এগিয়ে আসেনা কিন্তু যদি ঐ সাংবাদিক আৱ শিক্ষকেৱ যায়গায় কোন ৱাজনীতিবিদ হয় তাহলে তাকে নিয়ে আমলা থেকে শুৱু কৱে বস্তিৱ টেংৱা মাছ (মাস্তান) ও এ নিয়ে লাফালাফি কৱে বেড়ায়

  2. ঘাস ফড়িং মন্তব্যে বলেছেন:

    অনেক ভাল লাগল। সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন.

go_top