শেক্সপিয়রের রচনায় শ্রেণী চেতনা ও সংগ্রাম
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1113বার পড়া হয়েছে।
“Good friend for Jesus’sake for bear
To dig the dust enclosed here!
Blest be the man that
spares these store
And curst be the man
that move my bones’’
ইংল্যান্ডের অ্যাভন নদীর তীরবর্তী স্ট্র্যাটফোর্ড় শহরে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ একজন কবি ও নাট্যকারের কবর। তার স্মৃতিফলকের উপরে লেখা এ বাণী। কালজয়ী পুরুষ। নির্দিষ্ট কোন কাল বা যুগের সীমার বাইরে তিনি। ‘ফাস্ট ফোলিও’তে বেন জনসনের শ্রদ্ধাঞ্জলীতে তিনি লিখেছেন সেই কালজয়ীর উদ্দেশ্যে He wasn’t of an age,but for all time’ কেন কালজয়ী তিনি ? এ বিষয় আলোচনা করা দূরুহ ব্যাপার। কেননা প্রতিভার পথ বিচিত্র। ধারা বিভিন্ন। বিস্তারিত আলোচনা তাই অসম্ভব। আজ থেকে প্রায় পাঁচশো বছর আগে অর্থাৎ ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে তার জন্ম। তিনি হচ্ছেন উইলিয়াম শেক্সপিয়র (১৫৬৪-১৬১৬)। বই পুস্তকে তার পিতার নাম পাওয়া যায় জন শেক্সপিয়র ও মাতা মেরী আর্ডেন। জন্ম তারিখ নিয়ে আজো বির্তক বহমান। কারো কারো ধারণা- ২২ এপ্রিল কারো মতে ২৩ এপ্রিল। আবার তার মৃত্যু তারিখও ২৩ এপ্রিল। সম্ভবত জন্ম আর মৃত্যু তারিখ একইদিনে হওয়ায় তার জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। তবে তার জন্মদিন যে ২৩ এপ্রিলের পরে কখনো নয় সে সম্পর্কে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। বির্তক শুধু তার জন্মদিন নিয়ে থেমে থাকেন নি। বির্তক স্বয়ং শেক্সপিয়রকে নিয়েও। শেক্সপিয়রের রচনা ও তার নিজের অস্তিত্ব নিয়েও। শেক্সপিয়র নামে কোন ব্যক্তি ছিলেন কিনা তাই নিয়ে আজো সন্দেহ বহমান। শেক্সপিয়র কি ইংল্যাণ্ডীয়? অনেকেই মার্লোকে শেক্সপিয়র মনে করেন। আবার এও বলে যে, শেক্সপিয়র আর মার্লো কী একই ব্যক্তির দুটো রূপ? অনেকের মতে তাই। কেননা শব্দ চয়ন এবং প্রয়োগের দিক থেকে মার্লো এবঙ শেক্সপিয়রের মাঝে সাদৃশ্য লক্ষণীয় বলে বিভিন্ন গবেষকগণ দাবি করেন। আবার কেউ কেউ এ ধরণের মতও প্রকাশ করেন যে, মার্লো রাজনৈতিক মতবাদ ও ধর্মবিশ্বাসের জন্য ফ্রান্সে ও পরে ইতালীতে পালিয়ে বেড়াতেন এবঙ সেখানে শেক্সপিয়র ছদ্মনামে লিখে বন্ধু ওয়ালশিংহামের নিকট পাঠাতেন। ওয়ালশিংহাম সেই লেখাগুলো বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের ব্যাপারে সহযোগিতা করতেন। কিন্তু ইতিহাস বলে ১৫৯৪ সালের শেষ দিকে শেক্সপিয়র যখন তদানীন্তন লণ্ডনের বিখ্যাত লর্ড চ্যাম্বারলেনের কোম্পানি নামক নাট্যগোষ্ঠীর একজন সক্রিয় সদস্য ততদিনে ঐ মার্লো লোকান্তরিত। লোকান্তরিত ব্যক্তি কিভাবে শেক্সপিয়র হতে পারে!
শেক্সপিয়র বির্তক নিয়ে যে রহস্যের বেড়াজাল, তা আরো ঘণীভূত হয় যখন তার জীবদ্দশায় রচিত রচনার কোন পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি । অথবা পরবর্তী সময়ে কোথাও কোন পাণ্ডুলিপি রক্ষিত হয়নি। অনেকে আবার ফ্রান্সিস বেকনকে শেক্সপিয়র বলে মনে করেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ও মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু সম্পাদিত ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিকী (১৯৭৬)’ সংকলনের বিকাশ চৌধুরীর ‘শেক্সপিয়র’ নামক প্রবন্ধের দ্বারস্থ হতে হয়- ‘স্যার ই, ডারনিং লরেন্স ১৯১০ খৃ. তার ‘বেকন ইজ শেক্সপিয়র’ গ্রন্থে এ আবিস্কারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি ‘ লাভ লেবার্স লষ্ট’ গ্রন্থে Honorificabilitudinitatibus নামে এক নতুন শব্দ আবিষ্কার করেন যার প্রকৃত অর্থ হলো ‘ এই নাটকগুলি ফ্রান্সিস বেকনের সৃষ্টি এবং বিশ্বের জনসাধারণের জন্য এগুলো সংরক্ষিত হলো।’’
এর পরে ধারণা করা হলো আসল শেক্সপিয়র হলেন এডওয়ার্ড দ্য ভেরা অব অক্সফোর্ড এর সপ্তদশ আর্ল। শেক্সপিয়রেরসঙ্গে এড়ওয়ার্ড দ্য ভেরার কবিতার অনেকাংশে মিল আছে বলে মিঃ লুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। মিঃ আর সি চার্চিল শেক্সপিয়রকে রুশ দেশীয় ব্লাডিমির সিকোসপুবর বলে উল্লেখ করেছেন। পর্যটক ব্লাডিমির স্বনামের পরিবর্তে উইলিয়াম শেক্সপিয়র নামে লিখতে শুরু করেন এবঙ ইংল্যান্ডেই বসবাস করেন। মৃত্যুর কয়েক বৎসর পূর্বে একটি ডায়রী তিনি জাহাজের হাতে দেন। এ ডায়রীতে মার্চেন্ট অব ভেনিস; রোমিও জুলিয়েট, ওথেলো প্রভৃৃতি নাটক আবি®কৃত হয়।’( দ্র: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিকী, মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু সম্পাদিত, ১৯৭৬, পৃ-৫৫)
তার সমালোচনা ও অস্তিত্ব নিয়ে আলোচনা কখন শেষ হবে তার কোন ইয়াত্তা নেই। কারণ তিনি বেঁেচ নেই। যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে প্রমাণ পাওয়া যেত তিনি কে? তবে যে দিন প্রমাণ হবে আসল শেক্সপিয়র তিনি নন- তাহলে বিশ্ব নাট্য সাহিত্যের ইতিহাস আবার নতুনভাবে লিখতে হবে।
শেক্সপিয়র প্রথম জীবনে কবিতা লিখলেও পরবর্তী জীবনে তিনি নাটক রচনায় হাত দেন। তার নাটকের শ্রেষ্ঠ অংশগুলিতে অনুপম কবিত্বের বহি:প্রকাশ ঘটে। এত কিছুর পরও মূলত নাট্যকার হিসেবে পরিচিত। নাটক নিয়ে তিনি ইতিহাসে অবস্মরণীয় হয়ে আছেন এবঙ থাকবেন। নাটকের জন্য তার কাব্য সংযেজনা। মানব মনের মৌলিক অনুভূতিকে কেন্দ্র করেই তার নাটকের শরীর নির্মিত। শেক্সপিয়রের নাটকের চরিত্র কোন বিশেষ কোন গোষ্ঠীর মানুষ নয়। আবার তারা কোন শয়তান বা দেবতা নয়। তারা আমাদের মতোই রক্তে মাংসে গড়া সাধারণ মানুষ। তাদের দোষগুণ সাধারণ মানুষের মধ্যে নিহিত। তার বিভিন্ন নাটকে আমরা দেখতে পাই চিরন্তন মানবিক প্রবৃত্তির অবারিত লীলা। মানব মনের দু’জগৎ- অন্তর্গত ও বর্হিগত। এ দু’জগতের যে বিচিত্ররূপ তা শেক্সপিয়রের বিভিন্ন নাটকে লক্ষণীয়।
শেক্সপিয়রের নাটকের সাথে থিয়েটার শব্দতার একটা নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। কেননা এ থিয়েটার দলে যোগ দিতে গিয়েই তার নাটকের হাতেখড়ি। প্রথমে তিািন থিয়েটারে দুরাগত দর্শকদের ঘোড়া দেখাশুনা করতেন। পরে প্রস্পটারের সহকারী হিসেবে যোগ দেয়। সেখান থেকে শিখে নেয় নাটক লেখার কৌশল। পরে থিয়েটারে পাকাপোক্ত হয়ে তার নাটকের সম্পাদনায় হাত দিতেন। তিনি সম্পাদনা করতে গিয়ে নাটককে প্রাণবন্ত করে তোলার জন্য প্রয়োজনবোধে দৃশ্য পরিবর্তন বা সংযোজন করতেন। তারপর হাত দিলেন নিজে নাটক রচনায়। যাক এ বিষয় আলোচনা করা আমার বিষয় নয়-আমার বিষয় প্রলেতারিয়েত ও শেক্সপিয়র। এ বিষয়ে যাবার আগে প্রলেতারিয়েত কী তা জানতে ইচ্ছে হয়- মানবজাতির সমগ্র ইতিহাস,শোষক এবং শোষিত, শাসক এবং নিপীড়িত মানুষের ইতিহাস। প্রলেতারিয়েত সাধারণত তাদেরকে বোঝায়- যারা শক্তি সাহস থাকার সত্বেও টাকা পয়সার অভাবে মজুরি শ্রম বিক্রি করে বেঁচে থাকে। মার্কস-এঙ্গেলসের ভাষায় বলা যায়- প্রলেতারিয়েত হল আজকালকার মজুরি-শ্রমিকেরা, উৎপাদনের উপায় নিজেদের হাতে না থাকার দরুন যারা বেঁচে থাকার জন্য স্বীয়-শ্রমশক্তি বেঁচতে বাধ্য হয়। শেক্সপিয়রের নাটকে বেশির ভাগ চরিত্র সাধারণ মানুষ তথা শ্রমবিক্রি করা মানুষ। তাই আলোচ্য বিষয়ে শেক্সপিয়ের জনগণ তথা প্রলেতারিয়েত ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার প্রয়াসী হচ্ছি।
শেক্সপিয়রের আর্বিভাবকালে ইংল্যাণ্ডের রঙ্গমঞ্চে দাসত্ব-প্রভূত্বের প্রস্থান এবঙ ধর্মতান্ত্রিক প্রভূত্বের প্রবেশ মাত্র আরম্ভ। বিভিন্ন দেশে ব্যবসা বিস্তার ও উপনিবেশ বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে এ শ্রেণী। তাদের আদর্শের পুর্ব বিকাশের জন্য প্রয়োজন সমগ্র দেশব্যাপী এক জাতীয়তাবাদের ধারণা বদ্দমূল করা। শক্তিশালী রাজতন্ত্রের অধীনেই তা সম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়। তবে ইংল্যান্ডের স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের Tiutor & Sturt প্রতিষ্ঠায় এই নবজাগ্রত বণিক সমাজ যথেষ্ঠ সহায়তা করে। শাসক ও বনিকদের এই মিলনের ফলে দেশের সামন্ত শ্রেণী ক্রমেই নখদন্তহীন ‘ক্যা’(বাঘ্রে)য় পরিণত হয়। অবশ্য বিনা দ্বন্ধে তারা তাদের যুগ পরম্পরাগত অধিকার বিসর্জন দেয়নি। বহু সংঘাত ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সামন্ত শ্রেণী ক্রমে ধনিক প্রভূত্ব মেনে নেয়। নিজেরাও নতুন নিয়ম-নীতি গ্রহণ করে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চেষ্টা করে। এমনকি বর্তমান পর্যন্তও ইংল্যান্ডের রাজনীতির ক্ষেত্রে এই আধা-সামন্ততান্ত্রিক ও আধা-ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিদ্যমান। ইংল্যাণ্ডের ইতিহাসে এ যুগসন্ধিক্ষণেই বিরাট শিল্প প্রতিভার অধিকারী হয়ে শেক্সপিয়রের আর্বিভাব। পতনশীল সামন্ত-সমাজের অবক্ষয়ের দিক তার তীক্ষè-দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। তাই নতুন আশা ও উদ্দীপনা যোগে তাকালেন নবজাগৃতির দিকে। এই নতুন ব্যবস্থার তিনি দেখতে পেলেন তার মানস স্বপ্নের রুপায়ন সম্ভবনা, পোপ- ধর্ম- স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদী প্রটেষ্ট্যান্ট মতের প্রচার; সমগ্র দেশে বা বিশ্বে অর্ন্তন্দ্বহীন এক জাতীয়তার প্রতিষ্ঠা, বিদেশী ল্যাটিন ও ফাসি ভাষার পরিবর্তে মাতৃভাষা ইংরেজির দৃঢ় পদক্ষেপ। নবজাগৃতির অবশ্যম্ভাবী ফলের মধ্যে তিনি খুজে নেন ফেলেন তারই আদর্শের প্রতিফলন। তীক্ষè বিদ্রুপ এবং শোচনীয় পরাজয়ের মধ্যে তিনি উদঘাটিত করলেন তথাকথিত আভিজাত্যের স্বরুপ। তদানিন্তন প্রগতিশীল সমাজের আশা-আকাঙক্ষার রুপায়নেই শেক্সপিয়র আত্মনিয়োগ করেছিলেন। সামন্ত প্রভূদের হাতে ভূমিদান ও ভূমিহীন কৃষাণদের অবর্ণনীয় দুরবস্থা তার অপরিজ্ঞাত ছিল না। তদুপরি, সামন্ত শ্রেণীর মিথ্যা আত্মসারিতা ও অন্তর্দ্বন্ধ তার কাছে অমার্জনীয় হয়ে উঠেছিল। মানব প্রেমিক শিল্পী তার সমাধান দেখেছিলেন নতুন সমাজ ব্যবস্থায় সর্বপ্রথম যেখানে সকল মানুষের স্বতন্ত্র ব্যক্তিসত্তা স্বীকৃত। আরো কারণ, শোষণ তখনো সমাজের সব রস নিংড়াতে শুরু করেননি। তখনও তেমন দুস্তর ব্যবধান সূচিত হয়নি শ্রমিক শ্রেণী এবং বণিক শ্রেণীর মধ্যে। নতুন সমাজের পরিপূর্ণতা লাভের মধ্যেই মানব-সভ্যতা পরিণতি লাভ করবে, এমন একটি ধারণা শেক্সপিয়রের মধ্যে থাকাই ছিল স্বাভাবিক। কারণ, তদানিন্তন মানবতার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করা তার পক্ষে সম্ভব ছিলনা। কোন শিল্পীর পক্ষেই সম্ভব নয় তার স্থান-কাল-পাত্র অতিক্রমণ করা। একজন দক্ষ শিল্পী হিসেবে শেক্সপিয়র তার সমকালিন সমাজকেই রূপায়িত করেছেন তুলির আঁচড়ে। তার যুগ চিন্তাকে নায়ক-নায়িকার মুখে অমর করে গেছেন কালের গহ্বরে। বর্তমানে এক শ্রেণীর সমালোচক শেক্সপিয়রকে জনসাধারণের প্রতি বিরূপভাবাপন্ন বলে প্রমাণ করতে বদ্ধ পরিকর। প্রমাণ তারা শেক্সপিয়রের সৃষ্টি ‘ ষষ্ঠ হেনরি’ নাটকের কৃষাণ বিপ্লবী জ্যাক কেনের হাস্যকর চরিত্র ‘ দি টেমিং অব দি’ নাটকের সৃস্ট মাতাল ভবঘুরে শ্রমিক কৃষ্টফার স্লহি-এর চরিত্র এবঙ ‘করিওলেনাস’ নাটকের ও জনসাধারণের চরিত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। তাদের সুযোগ সন্ধানী স্বার্থপর দৃষ্টি শেক্সপিয়রের সৃষ্ট পরমজ্ঞানী ‘ ফুল’র চরিত্র।। হ্যামলেট নাটকের মালির চরিত্র এবঙ তার সর্বশেষ নাটকে ‘ পৌরক্লিম’ স্বার্থের খাতিরে তারা ‘ করিও লেনাস’ নাটকের জনসাধারণের চরিত্রের বিকৃত ব্যাখ্যা করেছেন। এ সম্পর্কে ড.আবুল হাসান শামসুদ্দিন বলেন-‘তাদের মতে করিও লেনাস’ ট্রাজেড়ীর অবতারণা করেছেন। কিন্তু তৃতীয় চোখে দেখলে এই অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া দুস্কর।’(দ্র: প্রেক্ষণ,২০০১, পৃ-১০০)
জনসাধারণকে এ নাটকে পুরোপুরি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জ্ঞান সস্পন্ন বলেই লক্ষ্য করা যায়। ধনীর ঐশ্বর্য ও দরিদ্রের নিঃস্বতা যে একই ব্যবস্থার এপিট-ওপিট মাত্র তা তাদের কাছে অপরিজ্ঞাত নয়-‘The leaness that afflicts us.The object of your misery is an inventory to particulerise their abundance.Our sufferance is a gain to them.
এই অবস্থা থেকে জনগণের মুক্তির উপায় তাদের নিজেদেরই হাতে: Let us revenge this with our pikes, we become rakes for the gods know,Ispeak this in hunger for bread not in thirst for revenge (প্রথম অংক,প্রথম দ্রশ্য প্রথম নাগরিকের উক্তি) জনসাধরণের প্রতি প্রভূদের দৃষ্টিভঙ্গী সে সুষ্পষ্ট ভাষায় ব্যাখ্যা করে বলে-The never cared for us yet.Suffer us to fanish and their store houses crammed with grain. Make edicts for usury, to support us urers,repal daily any wholesome act estabished against the rich and provide more piering status daily to chains up and restrain the poor.If war eat us not up,they will and there’s all the love they bear.’’
বণিক সমাজের প্রতি এ তিক্ত শ্লেষোক্তি জনসাধারণের সুতীব্র আত্ম-সচেতনতারই পরিচয়। ‘করিওলেনাসের আত্মশক্তির অহং ও জনগণের প্রতি অবজ্ঞায় করিওলেনাস ট্রাজেড়ীর মূল কারণ। তার চরিত্রই তার পতনের জন্য দায়ী। জনসাধারণের অজ্ঞতা কিম্বা মূঢ়তা নয়। প্রথম নম্বর রাজকর্মচারীর মুখে শেক্সপিয়র করিওলেনাস চরিত্রের একটি সুন্দর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছিলেন-‘ÔÔthat is a brave fellow,but is venaeance proud,and loves not the common people.’’
জনসাধারণও করিওলেনাস চরিত্র সম্পর্কে পূর্ণমাত্রায় সচেতন। তাদের একজন বলেন-
to my poor unwiorthy noices
He mocked us,when he begged our voics
অপর একজন বলে-
He hooted our voices certainly
এভাবে শেক্সপিয়রের ‘ জুলিয়াস সিজার’ নাটকেও দেখা যায় রিপাবলিকান নেতা ব্র“টসাই তার আদর্শ চরিত্র ‘দ্বিতীয় রিচার্ড়’ নাটকেও জনসাধারণের প্রিয় বলিংব্রোক (পরে রাজা চতুর্থ হেনরী) তার আদর্শ নায়ক। স্বৈরাচারী দ্বিতীয় রিচার্ড়কে পরাজিত করে বিজয়ী বলিংব্রোক লণ্ডন নগরীতে প্রবেশ করেন। আর জনসাধারণ তাদের মুক্তিদাতা প্রিয় নেতার প্রতি আর্শিবাদ জানাবে এভাবে- God save the Bolingbroke :ডিইক অব ইয়ক এই অভিনন্দন দৃশ্য বর্ণনা করেন- ÔÔYou would have thought the very windows speake, so many greedy looks of young and old through casements dated their desiring eyes upon,his village and that all the walls,with pointed imagery had at once, Jesus preserve the wellcome Bolong broke!(Richard II Act –v,Scen II)
আর জনসাধারণ বিরাগভাজ, পরাজিত হতভাগ্য রিচার্ড? ডিউক অব ইয়র্কের বর্ণনাতেই তার তখনকার অবস্থা পরিষ্ফুট হয়ে ওঠে:
…Men’s eyes
Did scowl on Richard, no man cried.God save him.No joyful tongue gave him his welcome home.But dust was thrown upon his sared head.(Richard II Act –v, Scen II)
এখানে হতভাগ্য রিচার্ডের প্রতি শেক্সপিয়রের যথেষ্ট সহানুভূতি ও সমবেদনা প্রকাশ রয়েছে কিন্তু জনগণের জনপ্রিয় বলিংব্রোক তার কাছে মহিমান্বিত পুরুষ। শেক্সপিয়রের যুগে সমাজের প্রভূত্ব বা জমিদারেরা দরিদ্রের যথাসর্বস্ব কিভাবে আত্মসাৎ করবে সে চিন্তায় মগ্ন থাকত। গরীবদের ঠকাইতে পারলে মনে করত যে,সে মহাপুরুষ। আর শেক্সপিয়র এ সব বিষয় অপরূপ বর্ণনা দিয়েছেন সাধারণ মৎস্যজীবীদের মুখে। ‘পেরিফ্লিম’ নাটকের দ্বিতীয় অঙ্ক, প্রথম দৃশ্যে তৃতীয় ধীবর বিস্মিত করে বলে .Master , I marvel how the fishes live in the sea.’
আর প্রথম ধীবর সকৌতুকে জবাব দেয়-‘ÔWhy,as men do on land:the great ones eat up the little ones. I can compare on rich to nothing,so fitly as a whale, a plays tumbles, driving the poor fry before him, and at last devour then all at a mouthful.Such whales have I head on the land who never goping, tell they have swallowed the parich, Church… and all.
সমাজের নিষ্ঠুর অমানবিকতার পরিচয় ফুটে উঠেছে এ মন্তব্যগুলোর মধ্য দিয়ে।
হ্যামলেট নাটকে এই নাট্যকার সাধারণ কবর খোড়া শ্রমিকের জবানীতে জ্ঞান-গর্ভ যে বাণী প্রচার করেন, প্রলেতারিয়েত বা শ্রমিক শ্রেণীর প্রতি তার যে গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষকে যে এত বড় সম্মান প্রদর্শন করায় এবং ধনিক শ্রেণীর প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করায় রাজা ফ্রেড়রিক ‘ দি গ্রেট হ্যামলেট’ নাটকের অভিনয় নিষিদ্ধ করেন। এত সব জাজ্বল্যমান প্রমাণ সত্ত্বেও ফ্রাংক হ্যারিস,আর্ণেস ক্রমবি, লিভ টলস্টয় প্রমুখ সমালোচকদের কাছে শেক্সপিয়র আখ্যা পেয়েছেন- Anti democartic, Repulsive প্রভৃতি উপাধি। টলষ্টয় তো তার ‘Shakespeare and drama’ গ্রন্থে একদম খোলাসাভাবে বলেই ফেলেছেন – Shakespeare may be anything you like-only no an artist.
কিন্তু এ জামানার শ্রেষ্ট নাট্যকার জর্জ বাণর্ডশ শেক্সপিয়রের সকল বিরুদ্ধবাদীর মত-যুক্তি প্রমাণসহ খণ্ডন করেছেন,তার ভাষায়- ÔÔFrom the nature Shakespeares we get no such scenes of village snobbery as that between the stage country gentlemen Alexander Iden and the stage radical jack cad, we get the shepherd in `As you like it and many honest brave human and loyal servants besie the inevitable comic ones.Even in the singo play `Henry V, we get bates and williams draun with all respect and honour as normal rank an filemen.In `Julius Caeser’ Shakespeare went to work with a will when he took elude from piletrach in gloryfying rigiscide and transfing urgen the republicans.
শেক্সপিয়র যে জনগণের শিল্পী ছিলেন তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ, তার জীবনকালে তিনি জনপ্রিয় শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেছিলেন। তার নাটকের অধিকাংশ দর্শক ছিল এক পেনী টিকেটের সাধারণ মানুষ। সমসায়িককালে তিনি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক হিসাবে নাম করতে পারেননি যেমন পেরেছিলেন বেন জনসন ফ্রেচর কিংবা বিভমণ্ড। কারণ শেক্সপিয়রের লেখায় তাদের লেখার মত সাহিত্যের ম্যারপ্যাচ ছিল না। কিন্তু জনসাধারণের হৃদয়ের কথা তিনি ব্যক্ত করতে পেরেছিলেন সহজ-সরল-মনোরম ভঙ্গিতে। তাই সাধারণ জনগন তাকে বরণ করেছিলেন প্রিয় শিল্পীরুপে।
১,১৭৯ বার পড়া হয়েছে
সেক্সপিয়ার সম্বন্ধে অনেক কিছু তোলে ধরেছেন আপনারে লখার মাধ্যমে, অনেক কিছু জানতে পারলাম, ধন্যবাদ।
সমৃদ্ধ একটি লেখা উপহার দেবার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক কিছু শিখার আছে এখানে।
ধন্যবাদ।
তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট ভাল লাগল