সাদ্দামের বিচারক আর পলাশীর খলনায়কেরা
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1347বার পড়া হয়েছে।
পবিত্র ঈদ উল আযহার দিনে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে প্রহসনের রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদানকারী বিচারক রউফ আবদুর রহমানকে ফাঁসি দিয়েছে সুন্নী যোদ্ধারা। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আমেরিকান মদদপুষ্ট দাপুটে প্রভাবশালী এই বিচারক শেষ পরজুন্ত নর্তকীর পোশাক পরে বাগদাদ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন আর তখনই ধরা পড়েন।
আসুন দেখে নিই পলাশীর চক্রান্তের সেই সব দুষ্কৃতিকারীদের শেষ পরিনতি কি হয়েছিল-
মীর জাফরঃ দুরারোগ্য কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমে ক্রমে মৃত্যু।
মীরনঃ ক্লাইভের চক্রান্তে করুণ মৃত্যু।
মুহম্মদী বেগঃ মাথায় গড়বড় অবস্থায় বিনা কারণে কূপে ঝাঁপিয়ে পড়ে মৃত্যু
মহারাজা নন্দকুমারঃ তহবিল তসরুফ ও অন্যান্য অভিযোগের বিচারে ফাঁসিকাষ্ঠে মৃত্যু।
জগতশেঠ মহাতপচাঁদ এবং তারই পৃতিব্য-পুত্র মহারাজা স্বরূপ চাদঃ নবাব মীর কাশের আদেশে নব নব বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তিস্বরূপ মুঙ্গের দুর্গ থেকে গঙ্গাবক্ষে নিক্ষেপের ফলে ডুবন্ত অবস্থায় মৃত্যু।
ইয়ার লুত্ফ্ খানঃ অকস্মাৎ নিরুদ্দিষ্ট , গোপনে মৃত্যু।
রায় দুর্লভঃ কারাগারে ভগ্নস্বাস্থ্য হয়ে মৃত্যু।
দানিশ শাহঃ বিষাক্ত সর্প দংশনে মৃত্যু।
রাজা রাজবল্লভঃ রাজা রাজবল্লভের কীর্তি নাশ করেই পদ্মা হয়েছে কীর্তিনাশা।
উমিচাদঃ ষড়যন্ত্র বাবদ অর্থ প্রাপ্তির ব্যাপারে প্রতারিত হয়ে স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে উন্মাদ অবস্থায় পথে পথেভ্রমণ ও মৃত্যু।
রবার্ট ক্লাইভঃ বিনা কারণে বাথরুমে ঢুকে নিজের গলায় নিজেই ক্ষুর চালিয়ে আত্মঘাতী মৃত্যু।
ওয়াট্সঃ কোম্পানির কাজ থেকে বরখাস্ত হয়ে মনের দুঃখে ও অনুশোচনায় বিলেতে মৃত্যু।
স্ক্রাফটনঃ বাংলায় যা লুট করবার তা করে বিলেতে যাওয়ার পথে জাহাজডুবিতে মৃত্যু।
ওয়াটসনঃ ক্রমাগত শরীর খারাপ হয়ে কোন ওষুধে প্রতিকার না হয়ে কলকাতায় করুণ মৃত্যু।
মীর কাশেমঃ নবাব মীর জাফরের ভাই রাজমহলের ফৌজদার মীর দাউদের নির্দেশে মীর কাশেম নবাব সিরাজকে দানিশ শা’র আস্তানা থেকে বেঁধে এনেছিলেন মুর্শিদাবাদ। তারপর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নবাব হয়ে প্রকৃত নবাব হওয়ার চেষ্টা, দেশ থেকে বিদেশী প্রভাব বিদূরিত করার প্রাণপণ চেষ্টা এবং তাতে ব্যর্থ হয়ে কপর্দকহীন ভাবেনানাস্থানে ঘুড়ে বেড়ান। অবশেষে অজ্ঞাতনামা হয়ে দিল্লীর পথে করুণ মৃত্যুবরণ।
এই জন্যই অভিজ্ঞ লোকেরা বলেন, “ক্ষমতার বড়াই আর দাপট দেখিও না। শোচনীয় পতন তোমার হবেই। দিনে দিনে বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ।” প্রকৃতি বড়ই নিষ্ঠুর, কাউকেই ক্ষমা করে না … আফসোস আমরা কেউ সেটা বুঝি না কিংবা ক্ষমতার মোহে এতটা অন্ধ থাকি যে বুঝেও না বুঝার ভান করি।
(নীল সুপ্ত এর ব্লগ এবং চলন্তিকার সম্পাদকের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংকলিত)১,৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
যথার্থ হাকিম ভাই !!
আপনার সুন্দর পোস্টের মাধ্যমে অনেক তথ্য ই আজ জানলাম। সেই সাথে পরিচয় হলো বাস্তবতা র সাথে।