স্বর্নার একোরিয়াম এর মাছটি
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1450বার পড়া হয়েছে।
কালকে থেকে স্বর্ণা অনেক খুশি। বাবা তাকে একোরিয়াম এনে দিয়েছে। সাথে গোল্ডেন ফিস। সকাল থেকে সারাদিন সে একোরিয়াম এর সামনে দাড়িয়ে আছে । একোরিয়াম টির গায়ে টোকা দেয় সে মাঝে মাঝে। মাছটি সারা জার্ জুড়ে সাতার কাটতে থাকে। সে হাত তালি দিতে থাকে।
স্বর্ণা মা নাস্তা খেতে আস। মা কিচেন থেকে ডেকে বলে।
মা আমার মাছ এর ক্ষিদে পেয়েছে । ওর খাওয়ার আগে চাই।
ওকে খাওয়ার দেওয়া হয়েছে মা। বেশী দিতে হয়না। শোন নি তুমি দোকানি কি বলেছে বেশী খাওয়ার দিলে সে বাচবেনা।
তবু ও সে দাড়িয়ে আছে একোরিয়াম এর পাশে উত্তেজনায়। আবার সে খাওয়াতে চায় মাছটিকে।
স্বর্ণা এবার ক্লাস ওয়ান থেকে টু তে উঠেছে। সে হলিক্রস স্কুল এ পড়ে। এবার সে ক্লাস এ প্রথম হয়েছে। মা বলেছে প্রথম হলে তাকে পুরস্কার দিবে।
তখন তার মাথায় একোরিয়াম এর কেনার চিন্তা এসেছে। তাদের স্কুল এ প্রিন্সিপাল এর রুম এ ছোট একোরিয়াম আছে যা সে খুব ভালবাসে।
স্বর্নার সাথে মায়ের খুব শখ একোরিয়াম এর।
বাবা প্রথমে রাজি ছিলনা। এসব খুব যত্ন করতে হয়। ঝামেলা আছে। বারবার পানি বদলাতে হয়। ঘরের ছোট জারে শুনেছি মাছগুলি বাচেনা। বাবা বার বার নিরাশ করার চেষ্টা করছিল তাদের।
কিন্তু মায়ের ও জেদ। গোল্ডেন ফিস গুলি ঘরে সুখ সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। মায়ের যুক্তির কাছে বাবাকে হার মানতে হল।
অবশেষে দুটি একোরিয়াম আনা হল ছোট একটি স্বর্নার জন্য ছোট গোল্ডেন ফিস সহ যা স্বর্ণা তার পড়ার টেবিল এ রাখল আর যেটি বড় অনেক ফিস সহ ড্রয়িং রুম এর শোভা বর্ধন এর জন্য রাখা হল।
সেই থেকে কিছুক্ষণ পর পর একবার গিয়ে স্বর্ণা তার মাছের সাথে কথা বলে আবার পরক্ষণে ড্রয়িং রুম এর মাছের সঙ্গে আর ও কিছুক্ষণ।
মা হাসেন মনে মনে। একটি মেয়ে তার।
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ এর পরে ঘুমাতে যাবে স্বর্ণা তার মাছটি সহ বিছানায় উঠে এল।
মা কি করছ মৃদু বকুনি দেয় মা। বিছানায় পড়ে পানিতে ভেসে যাবে। যাও আগের জায়গায় রেখে আস।
সে রাজি হয়না।
ওর মা নাই দেখো একা ও। আমার ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে খাওয়াতে হবে। অনেকটা মায়ের বাচ্চা কোলে দুলানোর মত করে সে তার ছোট জার টি দোলাতে থাকে আর আবেগে বলতে থাকে।
মা অসহায় হয়ে মাথা নাড়ে।
বাবা বুঝিয়ে সুঝিয়ে অবশেষে হাত থেকে মাছ টি নেয় আগের জায়গায় রেখে আসে।
একসময়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে মাছটির জন্য বুকভরা দুশ্চিন্তা নিয়ে।
সকাল এ ঘুম থেকে উঠে সবার আগে মাছের কাছে গিয়ে দাড়ায় ।
কেমন আছ। ..বলে আস্তে আস্তে।
এরপর সে তার প্রিয় খেলা খেলতে থাকে। জারে টোকা দেয় যাতে মাছটি সাতার কাটতে থাকে আনন্দে।
মাছটির কোন ও সাড়া শব্দ পায়না অনেকক্ষণ ধরে।
মাম্মি আমার মাছ ক্ষিধে লেগেছে কিছু খেতে দাও জোরে ,বলে উঠে।
সকাল দশটা দেখা গেল মাছটি মরে আছে জারের ভিতরে। তার কান্নায় মাও কানতে শুরু করে।
বাবা অসহায়ের মতন মাথা নাড়ে।
আমি বলেছি একোরিয়াম এর মাছ গুলি ঘরে বেশিদিন বাচেনা। যার যেখানে থাকার কথা সঠিক জায়গা আমাদের তার ব্যবস্থা করা উচিত স্বর্নার মা।
অবশেষে বাবা মেয়েকে বুঝলেন এইভাবে মা তোমার যখন দেখতে ইচ্ছে হবে আমরা গিয়ে একোরিয়াম দেখে আসব, নদীতে মাছ ধরব , পানির মাছ দেখব। শুধু ঘরের শোভা আর তোমার আনন্দের জন্য এখানে এনে ওদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে মা। তোমার আনন্দে ওদের জীবন সংশয় হচ্ছে।
চোখ মুছে অতঃপর সে রাজি হল বাকি মাছগুলি তারা ফেরত ফিয়ে আসবে দোকানে কেননা তারা ঠিক যত্ন করতে পারছেনা।
মাছ দিয়ে আসল দোকানে। সেদিন ই বাবা তাকে বড় মাছের পোনা যেখানে চাষ হয় নিয়ে গেল। মাছদের প্রাণ দেখতে দেখতে খোলা হওয়ায় তাদের সাতার দেখে ভুলে গেল তার একোরিয়াম এর কথা।
১,৪১৬ বার পড়া হয়েছে
_+_+_+_+_+_+_+_+_+_+_
+_+_+_+_+_+_+_+_+_+মাইনাস এ.ভয়.পেয়ে.গেলাম
ছোট্ট সুন্দর গল্প আর গল্পের ছলে বেশ শিক্ষণীয় একটি দিক তুলে ধরেছেন। আমরা নিজেদের শখের জন্য মাছ, পশু-পাখি পুষি কিন্তু ওদের কষ্ট আমাদের চোখে পড়েনা।
ধন্যবাদ রোদের ছায়া .শুভকামনা ।ভালো থাকবেন।
শিক্ষনীয় লেখা লিখেছেন, অনেক সুন্দৱ হয়েছে. carry on
ধন্যবাদ.।
আপনাকে স্বাগতম চলন্তিকায় ঘাস ফড়িং
শুভকামনা ।ভালো থাকবেন।
সকাল দশটা দেখা গেল মাছটি মরে আছে জারের ভিতরে। তার কান্নায় মাও কানতে শুরু করে।
বাবা অসহায়ের মতন মাথা নাড়ে।——— সুন্দর কাহিনীর সাথে সাবলীল শব্দ চয়নে মুগ্ধ করে দিয়েছ!
গল্প লেখার সহজাত ক্ষমতা আছে তোমার তা যে কাউকেই মানতে হবে। অভিনন্দন।
গল্প/কবিতা লেখার সহজাত ক্ষমতা আছে তোমার তা যে কাউকেই মানতে হবে। অভিনন্দন।
গত ২০ তারিখে তোমার ভাবী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে । তুমি আন্টি হয়েছ । এখনও নাম ঠিক করিনি।
একটা ভাল নাম দিও ।
জান্নাতুন.আইরিন.শীলম.রাখতে.পার.
আমার.গল্পের.নায়িকার.নাম
তোমার ফেসবুক ইমেল নাম্বার দিও ।
সেসবুকে আমার নাম- Jasim uddin
আইডি.কি?একই.?
..♥♥
মূনজারিন.আমার নাম
ভালো লাগলো গল্পটি…….
ধন্যবাদ.কল্পদেহী
শুভকামনা ।ভালো থাকবেন।
এ রকম গল্প পড়েই ফ্রেশ হয়ে যায় ।
খুব খুব ভাল ।
এ রকম কমেন্টস পড়ে মন.ভাল হয়ে যায় ।
খুব খুব ভাল ।..♥♥
গল্পটি পুরো পড়ে মন্তব্য লিখতে যাবো হঠাৎ খেয়াল হলো লেখক কে দেখা হয় নাই।
পরে দেখলাম এটা আমার প্রিয় লেখক কবি ও গল্পকার আরজু মূন জারিন।
এখানে মুনটি মূন হয়েছে কেনো ?
শিক্ষনীয় অনুসরনীয় সুন্দর ছিমছাম লেখনী।
অনেক অনেক ভালো লাগা রইল।
শরীর মন খারাপ।
আপনার কমেন্টসে
মন অনেক ভালো হয়ে গেল।
অনেক অনেক ভালো লাগা রইল।
কিন্তু মায়ের ও জেদ। গোল্ডেন ফিস গুলি ঘরে সুখ সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। মায়ের যুক্তির কাছে বাবাকে হার মানতে হল।
মায়েরা বুঝেনা কেন ?
বাবারা বুঝালে হয়
ধন্যবাদ প্রিয় ছাইফুল ভাই কমেন্টসের জন্য।
সুন্দর লাগল । আমি মিস করে গেছিলাম। কোন ফিছলামো নয় , সুন্দর হয়েছে
ছেলের জন্মদিনে বোন দিয়েছিল একোরিয়াম। বাঁচাতে পারিনি
গল্পটা পড়ে সেটা মনে পিড়ে গেল আপি। ভাল লাগল গল্প
একবাৱ পড়লে বাৱবাৱ পড়তে ইচ্ছে কৱে বচন ভঙিমা এক কথায় বলতে গেলে অসাধাৱন আৱজু আপা