হঠাৎ একদিন (গোয়েন্দা কাহিনী)
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1152বার পড়া হয়েছে।
পর্ব -ছয়
অনেকক্ষণ ধরে আলিম হাটছে আজিমপুরের কবরস্থান সংলগ্ন দক্ষিনের রাস্তাটায়। হাটতে হাটতে তার ইন্দ্রিয় সজাগ হয়ে উঠল। মনে হচ্ছে কেও একজন কাছে পিঠে থেকে লক্ষ্য করছে। মাথা ঘুরিয়ে পিছন দিকে তাকিয়ে সন্দেহ জনক কাওকে দেখতে পেলনা। পিছনের দোকানে দুইজন অফিস ফেরত লোক ই হবে সম্ভবত চা খাচ্ছে পিরিচে ঢেলে। এই দুইজনকে মনে হচ্ছে না তাকে নজর করছে। তাহলে কে? এদিক ওদিক মাথা ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে একজনের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল। কম্মিনকালে লোকটিকে দেখেছে বলে মনে করতে পারলনা। কিছুটা দুরের এক বাড়ির বারান্দা থেকে লোকটি তাকে দেখে যাচ্ছে। লোকটি বুঝতে পারেনি সে তাকে দেখেছে। সে অন্যদিকে তাকানোর ভান করে দেখছে লোকটির গতিবিধি। যদিও লোকটির অবয়ব সম্পূর্ণ পরিস্কার নয়। কিন্তু বুঝতে অসুবিধা হচ্ছেনা যে সে তার নজরদারিতে আছে।
আনোয়ার এর আসার কথা কিছুক্ষণের মধ্যে। তারপর আবার ও তারা আজ যাবে আহসান মঞ্জিলে। আসাদ সম্পর্কে কিছু খোজ খবর নেওয়ার জন্য। কি যে শখের গোয়েন্দাগিরি শুরু করলো বন্ধু কবে যে জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু হয় আবার। প্রায় ঘন্টা খানিক হয়ে গেল এখন ও আনোয়ার এর খবর নেই দেখে সে হাটতে হাটতে পাশে ছোট চায়ের দোকানে ঢুকল। চা সিঙ্গারা অর্ডার করে , বন্ধুকে ফোন দিল। এখন ও ফোন বন্ধ।
আনোয়ার তাড়া করছে এক চোর কে। বাস থেকে নামতে তার পাশের পকেট মার একফাকে ওয়ালেট হাতিয়ে দৌড়। ওয়ালেট এর মায়া সে ত্যাগ করত যদি না গুরুত্বপূর্ণ দুইটা টিকিট সেখানে না থাকত। এই টিকিট এর নাম্বার মিলাতে সে কষ্ট করে গুলিস্থানের সিনেমা হল টিতে এসেছে। অনেকক্ষণ পকেটমারের পিছনে দৌড়াল। চোর পকেট মার লাপ দিয়ে সামনের বাস টিতে উঠে গেল।
যাহ !! দুইদিনের পরিশ্রম টা মাটি হল। আসাদের সঙ্গে সিনেমা হলের ব্ল্যাকার এর কি সম্পর্ক জানতে আসা। শেষ ক্লু টা মিস হল। আসাদ কে কারা অনুসরণ করে? সবসময় কেন ই বা করে। সব জানা দরকার। না হলে পুরা ঘটনা ই অন্ধকারে ই থেকে যাচ্ছে। দুইদিন হল আসাদ কে দেখতে যাওয়া হয়নি। বোকামি হয়ে গেল মনে হয়। আসাদের কাছে সার্বক্ষনিক পাহারার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। যারা একবার মারার চেষ্টা করেছে তারা আবার ও চেষ্টা করতে পারে। এই চিন্তা মাথায় আসা মাত্র দৌড় দিয়ে সামনে যে বাস পেল তাতে লাফিয়ে উঠে গেল। ভুলে গেল আলিম তার জন্য অপেক্ষা করে আছে আহসান মঞ্জিলে যাওয়ার জন্য। ক্লিনিক এর সামনে নামতে নামতে প্রার্থনা করতে থাকল
আল্লাহ আসাদ যেন সুস্থ থাকে। আসাদ এর কেবিন সাত তালা আট নম্বর । এলিভেটর এর জন্য দাড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে। টিপাটিপির পর আসছেনা দেখে পাশে একজন কে জিজ্ঞাসা করাতে বলল দুপুর থেকে এলিভেটর নেই। জেনেরেটর এ ইমার্জেন্সি কাজ চলছে। ওয়ার্ড বয় ধরনের একজন বলল স্যার সিড়ি দিয়া চলে যান। আজকে মনে হয় এলিভেটর পাবেন না। চারতলা পর্যন্ত উঠতে হাপিয়ে উঠল। শরীর এত দুর্বল কেনরে ? মনে মনে নিজেকে বকা দিল। ডায়বেটিস হয়ে গেল নাকি অল্প বয়সে। তার পাশে দিয়ে দুরদার করে এক সিড়ি র জায়গায় তিন সিড়ি লাফিয়ে একজন নেমে যাচ্ছে।
এই কে কে বলে আনোয়ার চিত্কার দিয়ে উঠল। তার বুক ধক করে উঠল। আসাদ ঠিক আছে তো। লোকটার সার্ট ধরতে গিয়ে ধরলনা যেহেতু লোকটা কে সে জানেনা , তার উদ্দেশ্য ও জানেনা। পড়ি মড়ি করে দৌড়ে এসে আসাদের কেবিন এ ঢুকতে গেল। ঢুকার মুখে বাধা পেল।
নার্স ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল। ওনার অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক। ওনাকে আবার ও স্ট্যাব করা হয়েছে। আমরা ইমার্জেন্সি তে নিয়ে যাচ্ছি।
হতাশ হয়ে মাটিতে বসে পড়ল আনোয়ার। আর একটু আগে পৌছলে এই ঘটনা টা হতনা। তখন ই আলিম এর ফোন আসল।
আলিমকে প্রয়োজনীয় কথা বলে সে দরজার পাশে বসে রইল। তার খুব মন খারাপ লাগতে লাগল আসাদের জন্য।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল অবশ্যই দ্রুত এই কেসের সমাধান করব আমি।
এদিকে আলিম হাটতে হাটতে আহসান মঞ্জিলের পিছনের দরজাতে এসে দাড়ায়। কে যেন একজন তার পিছনে এসে দাড়াল। তাকানোর কোন সুযোগ পেলনা সে। পিছনের অজ্ঞাত লোকটি তার মাথায় কিছু দিয়ে বাড়ি দেওয়ায় জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ল মাটিতে।
লোকটি অনেক ক্ষণ পকেট হাতড়িয়ে কি দেখল। তার পর ওই স্থান ত্যাগ করল।
দুইঘন্টা পরে আলিমের জ্ঞান ফিরে আসল। যা ভেবেছে হাসপাতাল এর ভিসিটার লিস্ট টা উধাও। যা অনেক কষ্ট করে টাকা দিয়ে রিসেপশনিস্ট এর থেকে আদায় করেছিল।
নাহ আনোয়ার তাহলে ঠিক। এরা বেশ বিপদজনক মনে হচ্ছে। আমাকে আর ও সাবধান হতে হবে এখন থেকে।
(পরবর্তীতে)
১,২১৫ বার পড়া হয়েছে
choluk shathe achi ….
বেনু ভাই কি খবর ? কেমন আছেন ? অনেক ধন্যবাদ কমেন্টসের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আমি নতুন এসেছি তাই আগের পর্ব গুলো পড়তে পারিনি। তবে এই পর্ব পড়ে যা বুঝলাম -তাতে অবশ্যই আগের পর্ব গুলো পড়া দরকার। কেননা চমৎকার রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি। ধন্যবাদ।
বেনু ভাই কি খবর ? কেমন আছেন ? অনেক ধন্যবাদ কমেন্টসের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।