হঠাৎ একদিন
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 2334বার পড়া হয়েছে।
পর্ব =আট
এমন ঘনঘোর বর্ষায় কি বলি তারে
এর পরের লাইন কিরে
আলিম জিজ্ঞাসা করে উঠে হটাৎ। বন্ধুর কোন সাড়া শব্দ নাই। কপালে দুইহাত ভাজে ফেলে আনোয়ার বিছানায় শোয়া। এ এত বিচিত্র তার জন্য। আনোয়ারকে সাধারনত কখন ই দেখেনি আলিম কাজ ছাড়া অসময়ে বিছানায় মাথা ফেলে শুয়ে থাকতে।
মাথায় হাত দিয়ে শরীর বেশ গরম। কিরে জ্বর দেখি তোর ?
এতে অবাক হওয়ার কি আছে ? এতক্ষণে আনোয়ার কথা বলে উঠে। অসুখ বিসুখ হবেনা মাঝে মাঝে কি বলিস তখন মনে হবে মানুষ আমরা হাসল এতক্ষণে বন্ধু।
কিরে কেমন লাগছে ?আলিম জিজ্ঞাসা করে।
মেজাজ খারাপ লাগছে কতগুলি কাজ বৃষ্টি টা আটকে দিল। চারটা জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল। বৃষ্টির জন্য ওই জায়গাগুলি বন্ধ থাকার সম্ভাবনা।
এবং আপনার শরীর ও খারাপ বন্ধু আলিম বলে কৌতুকে। আল্লাহ বুঝেছে আপনার বিশ্রাম দরকার তাই এই প্রাকৃতিক সঙ্গীতে ঘুম পাড়ানোর ব্যবস্থা।
আহা কি সুন্দর সঙ্গীত। এমন মেঘ মধুর দিনে কি বলি তারে।
এই যাহ ভুল কবিতা বলিস কেন।
ভুল বললি কেন এ আমার কবিতা মাত্র ই রচনা করলাম তোর জন্য বলে আলিম হেসে।
যাহ ভাগ এখান থেকে। পারলে আমার জন্য চা বানিয়ে আন আদা দিয়ে। গলা ব্যথা করছে।
আজ সারাদিন ধরে চলছে তুমুল বৃষ্টি। আনোয়ার এর মেজাজ এইজন্য তিরিক্ষি হয়ে আছে। বৃষ্টি ভাল লাগে আনোয়ার এর যখন কোন কাজ থাকেনা। এরকম খুব কম হয়েছে অবশ্য। কোন না কোন কাজ তার সবসময় ই থাকে। তখন বৃষ্টির মধ্যে ঘর থেকে বের হওয়া অর্থ ঝক্কি। সে যেই জায়গায় থাকে সেখানে একটু বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। তার হাটার অভ্যাস। বৃষ্টির জন্য নিতে হয় রিকশা। টাকার শ্রাদ্ধ।
কোনমানে হয় এইভাবে ঘরে বন্ধী হয়ে থাকা।
আলিম তার বন্ধুটা কাজের। এতক্ষণে খুশি হয়ে গেল। বন্ধুটা ঝাঝাল পেয়াজ কাচামরিচ আদাকুচি সরিষার তেলে চমত্কার মুড়ি গরম চা সহ নিয়ে আসছে।
খুশি হয়ে আনোয়ার মুড়ির বাটিতে হাত বাড়াল।
ওমা জ্বর দেখি সরিষা তেলের গন্ধে ভাল হয়ে গেল মনে হয়।
শোন আলিম আমি ভাবছি তোকে বিয়ে করব , কোন মেয়েকে না।
তওবা তওবা নাউজুবিল্লাহ কি বললি তুই ? আতকে উঠে আলিম।
আনোয়ার ও হাসে এতক্ষণে।
দুজনে মুড়ি চা খেতে খেতে রহমান সাহেব এর খুনে বাড়ির প্রসঙ্গ নিয়ে কথা শুরু করে।
একদিকে ভাল হয়েছে বৃষ্টি হওয়াতে ,একটা কাজ কর। কাগজ কলম নে। কাজ শুরু কর। আজ প্রকৃত গোয়েন্দার সহকারী হও ডক্টর ওয়াটসন হও।
কুইক কুইক আনোয়ার তাড়া দেয়।
হতাশায় মাথা নাড়ে আলিম ,চা খেতে দে রে বন্ধু।
একটা কাগজ কলম দিয়ে এখানে লিখে ফেল ওই বাড়ীর সব বাসিন্দাদের নাম পরিচয় কি করে , কি করে তারা। এর মধ্যে তোর কি কাওকে খুনের ব্যাপারে সন্দেহ হয় ? আমি ও লিখছি আরেক কাগজে। তারপর তোর আর আমার কাগজ মিলিয়ে নিব।
আমার তো সবার নাম ই মনে নাইরে বলে উঠে হতাশায় আলিম।
যা যা ওই নর্দমায় ডুইবা মর, তোরে দিয়ে কোন কাজ হবেনা কৃত্রিম বিরক্তিতে বলে উঠে আনোয়ার।
আচ্ছা যা আমি সব নাম লিখে দিলাম তুই শুধু ওদের সম্পর্কে কি ভাবিস তা লিখ।
প্রথম সবচেয়ে বয়োজেষ্ঠ :
আনিসুল হক
তার স্ত্রী রাহেলা বেগম
দ্বিতীয় তলা ব্যাংকার আরিফুর রহমান
তার দুই ছেলে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ে, আরেকজন পরে জগন্নাথ কলেজে।
পাশের ভদ্রলোক এর গাউছিয়ায় সোনার দোকান এ কাজ করে। তাদের দুইমেয়ে ছোট।
বাকি চার বাসার বাসিন্দাদের পরিচয় এখন পায়নি। নিচের তলায় দুই ইউনিট এ ছয়জন করে বারজন ছাত্র থাকে। তারা বাড়িওয়ালার গরীব আত্মীয় বলে পরিচিত যা কেয়ার টেকারের মুখে শোনা।
এখন আস্তে আস্তে লিখতে শুরু কর। আনোয়ার কাগজ বাড়িয়ে দেয়।
সে নিজে ও নকশা কেটে কি যেন লিখছে আলিম উকি মেরে দেখার চেষ্টা করে।
লিখতে লিখতে বারান্দা দিয়ে নিচে দৃষ্টি চলে যায় আনোয়ারের। প্রবল বৃষ্টিতে জনমানব শূন্য রাস্তায় একজন বৃষ্টিতে ভিজছে , গেটের কাছে দাড়িয়ে আনোয়ারদের দারোয়ানের সঙ্গে কথা বলছে। তার গতিবিধি হাবভাব বেশ সন্দেহজনক । দারোয়ান লোকটি ইশারা করে যেদিকে দেখাল তাদের বাসা মনে হল।
আনোয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারকম এ ফোন করল।
দারোয়ান টির নাম জলিল।
কি জলিল কোন সমস্যা। উপর থেকে দেখছি।
ওহ স্যার আপনি কত নম্বর এপার্টমেন্ট এ থাকেন জিজ্ঞাসা করছে লোকটি আমি বলিনি। লোকটি এই কথা শুনে ঝপ করে মুখ লুকিয়ে দৌড় দিল।
আনোয়ার বলে উঠল ধর ধর।
ততক্ষণে লোকটি দৃষ্টিসীমার আড়ালে চলে গেল।
আনোয়ার লিখছে কাগজে ব্যাংকার আরিফুর রহমান কে নিয়ে। এই লোকের সাথে এখন সামনাসামনি দেখা হয়নি। একদিন শুধু কাজের যাওয়ার পথে দেখা হয়েছে।
কত পার্সেম্ট সন্দেহ করা যায় = আপাতত ৯০% যেহেতু এখন ও তার সম্পর্কে কিছু জানিনা। প্রথম কাজ হবে কোন ব্যাংক এ কাজ করে , তার কাজ কি সব বের করা।
কালকে এই খবর জোগাড় করতে হবে।
রাত বারটা। বিছানা ঠিক করে ঘুমাতে যাবে। মনে হল বারান্দার দরজা আটকানো হয়নি। তখন ই দেখল কেও একজন দেওয়াল টপকে লাফিয়ে ভিতরে ঢুকল। মুখটা রুমালে বাধা।
এই চিৎকার দিয়ে উঠতে যাবে কি মনে করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বসে রইল। অপেক্ষা করে রইল অজ্ঞাত আগন্তকের।
সে নিশ্চিত এ তার ঘরের দিকে আসছে এবং হাতে নিশ্চয় আছে ছোরা জাতীয় অস্র।
সে নিশ্চয় লক খোলাতে ও পারদর্শী।
আলিম কে না ডেকে দরজার আড়ালে লুকিয়ে রইল নিঃশব্দে। হাতে তার খাটের একটি পায়া।
(পরবর্তীতে)
২,২৯৭ বার পড়া হয়েছে
চমৎকার লিখেছেন আপু।চলতে থাকুক।।
ধন্যবাদ রব্বানী ভাই কমেন্টসের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
চলতে থাকুক।।
+++++
**********************
শোন আলিম আমি ভাবছি তোকে বিয়ে করব , কোন মেয়েকে না।
তওবা তওবা নাউজুবিল্লাহ কি বললি তুই ? আতকে উঠে আলিম।——– গল্পের ভিতর গল্প! ভিন্ন আমেজ
মাখা!
গল্পের ভিতর গল্প! ভিন্ন আমেজ ..জসিম ভাই। .ও। কোথায় ছিলে এতক্ষণ ? আজকে ব্লগ টা ঝিম ধরা মনে হচ্ছে।
গল্পের আদিগন্ত পড়লাম—-। খুব ভাল লেগেছে । আর ছোট থেকেই আমি গোয়েন্দা কাহিনীর ভক্ত –।
আমি ও তো গোয়েন্দা কাহিনীর ভক্ত –।
খুশি হলাম। তুমি মনে হয় সব লেখা পড় তারপর কমেন্টস কর , আর পড়ে রাজীব, মোস্তফা ভাই ছাইফুল ভাই ,রহমান ভাই। .
অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে। শুভেচ্ছা রইল।
আর আমরা বুঝি কেউ পড়ি না আপু!!!!!!!!!!!!!!!
না তাই বললাম নাকি ? আপনি খুব শর্ট কমেন্টস করেন তো। ঠিক বুঝিনা পড়েন কিনা। ..লেখা সংক্রান্ত কিছু থাকেনা তো। অসুবিধা নাই। অনেক বিজি নিশ্চয় আপনি।
উপস্থিতি টা ও কম না বা নিয়মিত কমেন্টস করছেন তা কম কিছু নয়।
ধন্যবাদ রব্বানী ভাই কমেন্টসের জন্য। পুনঃ শুভেচ্ছা রইল।
অনেক ব্যস্ত রব্বানী ভাই।এখন ই বাহিরে যেতে হবে জরুরী কাজে। বিকাল এ এসে সব লেখায় কমেন্টস করব। পোস্ট দিতে চেষ্টা করব।
আপনি যেভাবে প্রেরণা দেন তা অনেক বড়। আমি খুশি হই আপনার মন্তব্যে। শুভেচ্ছা রইল আবার ও।
গল্পের শুরুটা ভাল লাগল ।শেষ হলে মান বিচারে মন্তব্য করা যাবে । শুভ কামনা ।
ধন্যবাদ রহমান ভাই মন্তব্যের জন্য। শ্রদ্ধা জানবেন ।
অনেক ভাল লাগা রইল, চমৎকার লিখেছেন
তাই আপু। অনেক খুশি হয়েছি কমেন্টসে।
এখন থেকে বাকি পর্বগুলো পড়ব ইনশা আল্লাহ
ইনশা আল্লাহ ……….
শুভেচ্ছা রইল। ভাল থেক।
দুজনে মুড়ি চা খেতে খেতে রহমান সাহেব এর খুনে বাড়ির প্রসঙ্গ নিয়ে কথা শুরু করে।
দক্ষ গোয়েন্দা খেতে খেতে কাজের আলোচনা।
দক্ষ গোয়েন্দা খেতে খেতে কাজের আলোচনা।*
“এমন দিনে তারে বলা যায়
এমন ঘনঘোর বরিষায়।
এমন দিনে মন খোলা যায়–
এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরোঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়।।
সে কথা শুনিবে না কেহ আর,
নিভৃত নির্জন চারি ধার।”
সে কথা শুনিবে না কেহ আর,
নিভৃত নির্জন চারি ধার।”