হঠাৎ একদিন
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1639বার পড়া হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্ব
সুন্দর মার্বেল পাথরে বানানো এই বিল্ডিংটি।বাড়ীর চারপাশ ঘুরে ঘুরে দেখছে তারা দুজন।
আলিম এখনও বিষন্ন হয়ে আছে দরোয়ানের জন্য। আনোয়ার গভীর মনোযোগ দিয়ে দেওয়ালের পাথরে কি যেন দেখছে।
এখন সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে আছে এই কেসটির সমাধান করার জন্য।অন্তত দারোয়ান বেচারাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য সে এই কাজ করতে চায়।
আনোয়ার চল আমরা খুনীকে খুজে বের করি।দারোয়ানটার জন্য ভীষন মায়া লাগছেরে।আলিম সমবেদনায় ভেঙ্গে পড়ে।
আনোয়ার বন্ধুর পিঠ চাপড়ে দেয় খুশীতে।
চল বন্ধু এখনই কাজে লেগে পড়ি।
খুব নির্দোষ না ও হতে পারে দারোয়ান আনোয়ারের সোজা কথা।
কেন এটা মনে হচ্ছে আলিমের জিজ্ঞাসা।
আমার ধারনা দারোয়ানের কাছে লগবুক থাকার কথা।সবাই কখন কোনসময়ে কালকে এই বিল্ডিং এর ভিতরে গিয়েছিল সেটার জবাব জানতে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে।দারোয়ান খুন করেনি তবে তার কাছে কোন গোপন খবর পাওয়া যেতে পারে।
এটা হবে আমাদের প্রথম কেস।এখানে তোমার যোগ্যতা প্রমান হবে বন্ধু সহকারী হিসাবে।তোমাকে সাহসী হতে হবে ডক্টর ওয়াটসনের মত পর্যবেক্ষন করতে হবে আরও নিখুঁতভাবে ।সর্বক্ষন আমার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকবে।ওকে?
হাত বাড়িয়ে দিল আনোয়ার আলিমের দিকে।ডান?
ডান?শার্লক হোমস বন্ধু আনোয়ার হেসে জবাব আলিমের।
ওকে বন্ধু আমরা কিছু জিনিস পর্যবেক্ষন করা শুরু করি যে যার মত।প্রথমে ভেবে দেখি বাড়ীটা সম্পর্কে এইবাড়ী টায় কারা থাকে এবং মালিক এর ন্যাচার সম্পর্কে।
বাড়ীর মালিক কেয়ারলেস ভালমানুষনা।আমার ধারনা আলিম এর ত্বড়িৎ জবাব।দারোয়ানটাকে পিটাই পুলিশ নিয়া গেল বাধা দিতে আসলনা।রেগে বলতে থাকে।
না বন্ধু ।তোমাকে আরও ভাবতে হবে ধীরস্থিরভাবে।আনোয়ার এর চিন্বান্তিত কপালে বলে।
যেমন আলিম জিজ্ঞাসা করে।
প্রথমত বাড়ীর মালিককে তুমি দেখনি এতবড় ঘটনার পরেও সম্ভবত সে দেশের বাহিরে থাকে।আমার পর্যবেক্ষনশক্তি তাই বলে।সে সম্ভবত দয়ালু মানুষ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী বাড়ির ভাড়াটিয়াদের খেয়াল করলেই বুঝবে।খুবই আরিষ্টোক্র্যাট বাড়ী ভাড়াটেরা দেখে মনে হচ্ছে সাধারন আয়ের।সম্ভবত ভাড়াটেরা বাড়ীয়ালার পরিচিত বা আত্নীয়স্বজন হবে।সম্ভবত এদের কাছে নামমাত্র ভাড়া নেওয়া হয়।এসব ই আমার অনুমান।আনোয়ারের গম্ভীর জবাব।
কি যেন সে দেখছে গভীর মনোযোগে।বিল্ডিং দেওয়ালে একটা হাতের ছাপ দেখে পরীক্ষা করছে।
পুলিশ চলে গিয়েছে বেশ কিছুক্ষন হল।
চল বন্ধু নেমে পড় কাজে কতৃত্বের স্বর আনোয়ারের গলায়।
প্রথমে হেসে বন্ধুর দিকে তাকিয়ে দেখল ফাজলামী করছেনা তো বন্ধু।না আনোয়ার বেশ সিরিয়াস।পকেটের ভিতর থেকে ম্যাগনিফাইং গ্লাসটা বের করে দেওয়ালের সঙ্গে মাটিতে কি পরীক্ষা করছে।
পরীক্ষা শেষে সেখানের কিছু মাটি নিয়ে নিল ছোট পলিথিনে।
আলিম অভিভূতের মত বন্ধুর কান্ডকারখানা দেখছে।
এই বন্ধু তোকে সত্যি শার্লক হোমসের মত লাগতেছে।শুধু একটা কাউবয় হ্যাট দরকার মাথায় বন্ধুর সাথে মজা করে।দাড়া কালকে বঙ্গবাজার থেকে কিনে আনতেছি ।
আনোয়ার কাজে গভীরভাবে ডুবে গিয়েছে।আলিমের কথা শুনছে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছেনা।
কিছুক্ষন পরে বলল চল বাড়ীর বাসিন্দাদের সাথে পরিচিত হওয়া যাক।
কতক্ষন গেটে ধাক্কা দেওয়ার পর একজন মধ্যবয়্স্ক লোক এসে জিজ্ঞাসা করল কারে চান?
এই বাড়ীর মালিক আছেন? আলিম জিজ্ঞাসা করে
না উনি তো দেশের বাইরে থাকে স্যার।
আনোয়ার এমনভাবে আলিমের দিকে তাকায় বলেছি না?
আপনি কি কেয়ারটেকার? আনোয়ার জিজ্ঞাসা করে।
জি স্যার।
আলিম আবার চমৎকৃত হয়ে যায় আনোয়ার এর বুদ্ধিতে।
এইসময় বাড়ীর ভিতরে কোন তলা থেকে চিৎকারের মত ভেসে এল।কেয়ারটেকার সহ তারা সবাই দৌড়ে ঢুকল ।চিৎকার অনুসরন করে পৌছল দোতলার একটি অ্যাপার্টমেন্টে।
ভাড়াটিয়া দুইজনে মধ্যবয়সী অপ্রস্তুত অবস্থায় আছে।
কিছু মনে করবেন না আমার স্ত্রী জানালা দিয়ে বিড়াল দেখে ভয় পেয়েছে।ভদ্রলোক লজ্জা পেয়ে কৈফিয়তের ভঙ্গিতে বলে উঠল।
কি যে সৃষ্টিছাড়া অলুক্ষূনে কান্ড ।আরেক ভাড়টিয়া ফুচকি মেরে সবাইর দিকে তাকিয়ে বলে।বিড়াল দেখে কেও ভয় পায় নাকি?
সবগুলার পেটে জিলিপির প্যাচ।এগুলি মনে হয় মামারে খুন করছে দম করে কথা বলে ঠাস করে লোকটি দরজা বন্ধ করে দিল।
এই ফাজিল মুখ সামলাই কথা বল পাশের বাসার লোকটি মুখ খিচিয়ে বলে।
সবগুলি রাবিশ মদখোর ।সব স্যারের গ্রামের আত্নীয়স্বজন।কিছু মনে কইরেন না স্যার। শুধু তিনতলায় আছে দুইজন ভাড়াটিয়া ।ভালমানুষ।এক আপা স্কুলে পড়ায়।আর আনিস স্যার সরকারী অফিসে কাজ করে।
ওনাদের সাথে কি এখন পরিচিত হওয়া যাবে ? আনোয়ার জিজ্ঞাসা করে।
ওনারা সকালে কাজে চইলা গেছেন।বিকালে আসেন তাইলে।
নীচের তলা? আলিম জিজ্ঞাসা করে।
ছাত্র কলেজে পড়ে।চারজন চারজন করে আটজন।দুইবাসা মিলা থাকে।একেবারে বদের দল।সারারাত তাস খেলে।বলে কেয়ারটেকার অপছন্দের ভঙ্গিতে।
আচ্ছা কেয়ারটেকার সাহেব আপনার কাছে কি লগবুক জাতীয় কিছু আছে।এই বাড়ীতে বাহিরের লোকের আসা যাওয়া সময় লিখা আছে? এরকম কিছু।আনোয়ার জানতে চায়।
দাড়ান স্যার খুইজা দেখতাছি।বলে সে ভিতরে গিয়ে একটা বাইন্ড করা খাতা এনে দিল আলিমের হাতে।
ওকে আমরা বিকালে আসব তোমার এখানে বলে দুইজনে বেরিয়ে আসল বিল্ডিং থেকে।
বন্ধু তোমার এলেম আছে ।আমারে বল কিভাবে তুমি বুঝছ বাড়ীওয়ালা বাহিরে থাকে।দয়ালু ঝেড়ে কাশ বন্ধু।
বলছি বলছি আনোয়ারের চোখে মুখে রহস্যময় হাসি দেখা গেল অনেকটা শার্লক হোমসের মতই।
(চলবে)
১,৭৩৩ বার পড়া হয়েছে
অবশেষে শার্লক হোমসকে হার মানাবে নাকি?
অনেক ভাল লাগলো ।
দোয়া করবেন কাশেম ভাই।শার্লক হোমস কিরিটি সত্যজিৎ এর ফেলুদা বাংলাদেশে কিশোর ক্লাসিক আছে।স্পাই থ্রিলার গুপ্তচর মাসুদ রানা আছে ।কিন্তু গোয়েন্দা নাই বা প্রাইভেট ডিটেকটিভ তো নাই।তো দেখছি চেষ্টা করে।অনুপ্রেরনা দিবেন সবসময়।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।শুভকামনা থাকল।
অবশেষে শার্লক হোমসকে হার মানাবে নাকি ?
অনেক ভাল লাগলো ।
ভালোলাগা অনেকটুকু । সুন্দর হচ্ছে । ধণ্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য ।
ধন্যবাদ সাঈদ ভাই মন্তব্যের জন্য।ভাল থাকবেন।
ভাল লাগছে আপু । প্রথমটার চেয়ে দ্বিতীয় পর্ব টান্টান বেশি । চলুক পুরোদমে……
হেই মৌনী তোমার কমেন্টস খুব প্রেরনা দেয় সবসময় আমাকে।মনে হয় তুমি মনযোগ দিয়ে লেখা পড়েছ।ধন্যবাদ আপু।শুভকামনা থাকল।
আমি বরাবরই গোয়েন্দা কাহিনীর খুব ভক্ত ! তিন গোয়েন্দা থেকে স্যার কোনান ডয়েল বা আগাথা ক্রিস্টি – একবার হাতে পেলেই হলো ।
খুব ভাল হচ্ছে ! পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।
আমি ও গোয়েন্দা কাহিনীর ভক্ত।তিন গোয়েন্দা শার্লক হোমস আগাথা ক্রিস্টির মধুচন্দ্রমা তাহলে কে এবইগুলি খুব প্রিয় ছিল।টিভিতে একটা সিরিয়াল মার্ডার শী রোট সবসময় দেখতাম।নীহাররন্জনের গোয়েন্দা উপন্যাস কিরিটি সেবার সব রহস্য রোমান্টিক পড়া।ধন্যবাদ সুমন মন্তব্যের জন্য।
ভাল লাগল আপি এই পর্বও