হবিগঞ্জ জেলার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি :………
এই লেখাটি ইতিমধ্যে 1214বার পড়া হয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি :
————————–
প্রশাসনিক বিভাগ : সিলেট
————————–
হবিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত উপজেলাসমূহ:
আজমিরিগঞ্জ
বানিয়াচং
বাহুবল
চুনারুঘাট
হবিগঞ্জ সদর
লাখাই
মাধবপুর
নবীগঞ্জ
—————————–
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ :
————————-
হবিগঞ্জ জেলায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৮টি উপজেলা, ৪টি মিউনিসিপ্যালিটি, ৩৬টি ওয়ার্ড, ১২৪টি মহল্লা, ৭৭টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১২৪১টি মৌজা এবং ২০৯৩টি গ্রাম।
ভৌগোলিক সীমানা :
২৪.৩৭৫০° N ৯১.৪১৬৭° E এ হবিগঞ্জ অবস্থিত। এর আয়তন ২,৬৩৬.৫৮ বর্গ কিলোমিটার। হবিগঞ্জ জেলার উত্তরে সুনামগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পুর্বে সিলেট জেলা ও মৌলভীবাজার জেলা এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলা।
আয়তন :
—————————
আয়তন (বর্গ কিমি) – ২,৬৩৬
জনসংখ্যা মোট: -১৮,৩০,৫৫৪ জন
পুরুষ: -৯,২৬,৫৩১ জন
মহিলা: -৯,০৪,০২২ জন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: – কলেজ : ১৬
মাধ্যমিক বিদ্যালয়:- ১০৫
মাদ্রাসা : -৯৬
শিক্ষার হার – ২২.৫১ %
প্রধান শস্য ধান, গম
রপ্তানী পণ্য ধান, চা, পান
——————————
কৃতী ব্যক্তিত্ব:
———-
* দেওয়ান ফরিদ গাজী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য। জন্মস্থান : নবীগঞ্জ।
* মেজর জেনারেল এম এ রব, মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড, বাংলাদেশের প্রথম সেনাবাহিনী প্রধান ও সাবেক সংসদ সদস্য। জন্মস্থান : বানিয়াচং
* স্যার ফজলে হাসান আবেদ, ব্রাক-এর প্রতিষ্টাতা। জন্মস্থান : বানিয়াচং
*বিপিন চন্দ্র পাল,জন্মস্থান: পৈল, হবিগঞ্জ।
* শহীদ জগৎ জ্যোতি দাস ( বীরবিক্রম ), জন্মস্থান : জলসুখা, আজমিরীগঞ্জ।
* মেজর জেনারেল (অবঃ) সি আর দত্ত (১৯২৭-) জন্মস্থান- মিরাশী, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।
* সিরাজুল হোসেন খান, সাবেক তথ্য মন্ত্রী, সাবেক শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রী, সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী এবং সাবেক সংসদ সদস্য। জন্মস্থান : বানিয়াচং
* শাহ এ এম এস কিবরিয়া, সাবেক অর্থমন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক পররাস্ট্র সচিব এবং এসকাপের সাবেক নির্বাহী সচিব।
জন্মস্থান : নবীগঞ্জ।
• কবি দেওয়ান গোলাম মোর্তাজা, জন্মস্থান : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানার স্নানঘাট
* এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক সমাজকল্যান মন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য।
জন্মস্থান : চুনারুঘাট
* সৈয়দ এবি মাহমুদ হোসেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি। জন্মস্থান : চুনারুঘাট
* সৈয়দ মোদাসসের হোসেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি।জন্মস্থান : হবিগঞ্জ
* ড. মোঃ ফরাশ উদ্দিন, সাবেক গভর্ণর, জন্মস্থান : মাধবপুর
* ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, জন্মস্থান : বানিয়াচং।
* বিচারপতি সৈয়দ দস্তগীর হোসেন, জন্মস্থান- হবিগঞ্জ।
* চাটার্ড ইঞ্জিঃ হাজী এম এ মতিন (১৯৪২-) জন্মস্থান- মিরাশী, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।
হবিগঞ্জের ইতিহাস
—————
চাকলাপুঞ্জী :
প্রাগৈতিহাসিক প্রতিবেদন সমুহ হতে জানা যায় বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার সাথে লালমাই পাহাড় এবং সিলেট, হবিগঞ্জ,চট্টগ্রাম এবং মধুপুরের উচ্চতর এলাকাসমূহের সাথে যুক্ত ছিল। চাকলাপুঞ্জী চা বাগানের কাছে চান্দির মাজার নামক এলাকায় বালু নদী নামে পরিচিত একটি নদী পাড়ে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক সরঞ্জাম যেমন জীবাশ্ম কাঠ, হস্তনির্মিত যুদ্ধাস্ত্র ইত্যাদি দৃষ্টে এখানে প্রাচিন মানবের বসবাস ছিল প্রমানিত হয়।
মুগলদের সাথে বারোভূইয়াদের যুদ্ধ:
১৫ শতকে সিলেটের জমিদার আনোয়ার খান এবং বানিয়াচংয়ের জমিদার হোসেন খান (বারো ভূইয়াদের দলভূক্ত) এর সাথে যুদ্ধ হয় মুঘল সেনাবাহিনীর, যা বাহরাস্থান-ই-গায়েবী গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়।
পুটিজুরী দুর্গ:
খাজা ওসমান (আফগান রাজা) বাকাই নগর দুর্গ ছেড়ে এসে গিরিপালের কাছে পুটিজুরী নামক আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি গড়ে তোলেন একটি দুর্গ। যে প্রতিরক্ষার দৃষ্টিকোন থেকে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাজা ওসমানের ভাই দুর্গ ত্যাগ করলে মুগল সেনারা সে সুযোগ গ্রহন করে খাজা ওসমানের সেনাদলকে বর্তমান মৌলভীবাজার জেলার দালাম্বপুর নামক স্থানে পরাজিত করে।
তেলিয়াপাড়ার যুদ্ধ:
৪ এপ্রিল, ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তেলিয়াপাড়ায় ২য় ইষ্ট বেঙ্গলের সদরদপ্তরে সমবেত হন। চা বাগান পরিবেষ্টিত পাহাড়ী এ অঞ্চলে জেনারেল এম এ জি ওসমানী, লে: কর্ণেল আব্দুর রব, লে: কর্ণেল সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর নুরুল ইসলাম, মেজর শাফায়াত জামিল, মেজর মইনুল হোসাইন চৌধুরী সহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেদিন। সেদিনের সভায় চারজন সিনিয়র অফিসারকে যুদ্ধকালীন কর্মক্ষেত্র ভাগ করে দেয়া হয়। সিলেট-বাহ্মণবাড়ীয়া এলাকায় মেজর শফিউল্লা, কুমিল্লা-নোয়াখালী এলাকায় মেজর খালেদ মোশাররফ, চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় মেজর জিয়াউর রহমান এবং কুষ্টিয়া-যশোর এলাকায় মেজর আবু ওসমান চৌধুরীকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই সভাতেই মুক্তিবাহিনী সাংগঠনিক ভাবে পরিপুষ্ট হয়ে উঠে এবং জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্ব গ্রহন করা হয়।
————————————————————-
শিক্ষা ব্যবস্থা :
————
হবিগঞ্জ এর সাক্ষরতার গড় হার ৪৫%। মোট কলেজ আছে ১৬টি, যার ১ টি অনার্স কলেজ, ৩ সরকারি কলেজ, ১ টি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান; ১১ টি বেসরকারী কলেজ। ৬টি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৯৯ টি বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় আছে; আছে ১৪ টি জুনিয়র বিদ্যালয়; এছাড়া ৭৩২ টি সরকারী এবং ৭১১ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯৬ টি মাদ্রাসা এবং ৬টি অস্থায়ী বিদ্যালয় আছে।
অর্থনীতি :
কৃষি ৪২.২৬%, কৃষি শ্রমিক ২০.৫৫%, অকৃষি শ্রমিক ৬.৪৫%, ব্যবসা ৮.২%, চাকরি ৪.৬৯%, শিল্প ১.৭%, মত্সজীবী ২.৭৩%, অন্যান্য ১৩.৪২%।
অর্থনৈতিক সম্পদ:
————–
প্রধান ফসল: ধান, চা, গম, আলু, পাট, চীনাবাদাম , তাম্বুল এবং তৈল বীজ।
চা বাগান: ২৪টি চা বাগান, মোট আয়তন ১৫,৭০৩.২৪ হেক্টর।
রবার বাগান: ৩ রুপাইছড়া-বাহুবল (১৯৮১)। এই বাগানের অর্ধেক হবিগঞ্জ জেলায় ও অবশিষ্ট অংশ পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমংগল উপজেলায় অবস্থিত। মোট আয়তন ২,০০০ একর (৮.১ বর্গমাইল). শাহজীবাজার-চুনারুঘাট এলাকা (১৯৭৮), মোট আয়তন ২,০০৪ একর (৮.১১ বর্গ কিলোমিটার), সাতগাঁও রবার বাগান (১৯৭১), মোট আয়তন ২০০ একর (০.৮১ বর্গমিটার)।
প্রধান ফল: আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, নারকেল, পাতি লেবু, আনারস এবং কালোজাম ইত্যাদি।
মৎস্যচাষ এবং খামার: গরুর খামার ১৪৮ টি, পোল্ট্রি ৭৩৯ টি এবং ফিশারি ৬৩৮ টি.
যোগাযোগ ব্যবস্থা: পাকা রাস্তা (৩২১ কিলোমিটার), আধা-পাকা ২০৫ কিমি এবং ১৫৯২ কিমি কাঁচা রাস্তা); রেলওয়ে ১৭০ কিমি.
ঐতিহ্যবাহী পরিবহন: পালকি, গয়না নৌকা এবং গরুর গাড়ী.
শিল্পকারখানা: টেক্সটাইল মিল, সিরামিক কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করন কারখানা, ছাতা কারখানা, আটা কল, চাল কল, আইস ফ্যাক্টরী, সাবান কারখানা, শুকনো মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, বিস্কুট ফ্যাক্টরী.
কুটির শিল্প: ওয়েভিং, বাঁশের কাজ, স্বর্ণকার, কর্মকার, কুমার, সেলাই এবং ওয়েল্ডিং.
খনিজ সম্পদ: প্রাকৃতিক গ্যাস, সিলিকা বালি, খনিজ বালি, 3 গ্যাস ক্ষেত্রগুলি:
গ্যাস ক্ষেত্র: রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্র (১৯৬০), বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র (১৯৯৮) এবং হবিগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্র (১৯৬৩). এই গ্যাস ক্ষেত্র গুলির আনুমানিক মজুদ ৫.৫ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট। হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড মাধবপুর উপজেলা অবস্থিত। এই ক্ষেত্রটি পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানী দ্বারা ১৯৬৩ সালে আবিষ্কৃত হয়।
হাট, বাজার এবং মেলা: ১২৬ টি (হাট এবং বাজার) এবং ২৩টি (মেলা)।
রপ্তানী পন্য:
প্রধান রপ্তানি পন্য গুলি হল ধান, মাছ, চিংড়ি, ব্যাঙ এর পা, শুকনো মাছ, চা, পান পাতা, গুড়, রবার, বাঁশ, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং টেক্সটাইল।
১৯৮৪ সালে হবিগঞ্জকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। এর আগে ১৮৭৪ সাল থেকে হবিগঞ্জ মহকুমা সিলেট জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।
চিত্তাকর্ষক আকর্ষণীয় স্থান :
————————-
* সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
* বিতঙ্গল আখড়া বৈষ্ণব্ধর্মালম্বীদের জন্য অন্যতম তীর্থস্থান
* শ্রীবাড়ি চা বাগান
* বানিয়াচং সাগরদিঘী।
• উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে।
সংগৃহীত লিংক https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=465984380218005&id=461438480672595&substory_index=0
১,২০১ বার পড়া হয়েছে
জানলাম
ধন্যবাদ দাদা
হ ম……অনেক কিছুই জানলাম।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ..
বাপ্রে ! আপনিও দেখি সুরাইয়া নাজনীন আপুর মতো জেলা-উপজেলা পরিচায়ক হয়ে গেলেন ! 😛
নতুন ভুমিকায় দেখে ভালো লাগলো আপু । পাশাপাশি জানা হয়ে গেল অনেককিছু !
সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন আপু ।
থ্যাংক্স এ লট ভাইয়া