হারানো আটলান্টিস
আটলান্টিসের গল্প শুরু হয় প্লেটোর একটি লেখায়। এই লেখায় প্রথম উঠে আসে আটলান্টিসের হারিয়ে যাওয়া জনপদের কথা। অনেকেই ভাবে, আটলান্টিস আর কিছুই ছিল নামপ্লেটোর কল্পনামাত্র। আবার অনেকেই খুঁজে যাচ্ছেন আটলান্টিসের জনপদ। আজ পর্যন্ত অনেক প্রতœতাত্ত্বিক নির্দশন আবিষ্কার হয়েছে তবে এগুলো যে হারানো আটলান্টিস, এর কোনো জোরালো প্রমাণ নেই।
প্রায় এগারো হাজার বছর আগে আটলান্টিক মহাসাগরের কোনো এক দ্বীপনগরী ছিল আটলান্টিস। আটলান্টিসের কথা প্রথম জানা যায় প্লেটোর ডায়লগ এ। এখানে তিনি বলেন, আটলান্টিস প্রায় নয় হাজার বছর আগে কোনো ভূমিকম্প বা সুনামিতে ধ্বংস হয়ে যায়। তিনি বলেন, আটলান্টিসের অবস্থান ছিল পিলার অব হারকিউলিসের আশপাশে। আর প্লেটো এ কাহিনী শোনেন মিসরীয় পুরোহিতদের কাছ থেকে। আটলান্টিসের খোঁজে অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণা আর অনুসন্ধান চলেছে। হারানো আটলান্টিসের হাজারো অবস্থান চিহ্নিত করেছেন অনেক প্রতœতত্ত্ববিদ। কিন্তু কেউই জোর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ১৯৬৮ সালে এগার ক্যাচি তার বই এ দাবি করেন, তিনি মিসরের নীলনদ এবং স্ফিংসের মূর্তির মাঝে আবিষ্কার করেন। তিনি দাবি করেন এসব আটলান্টিসের ধ্বংসাবশেষ।
ম্যাক্রাইন এসার ১৯৭৩ গ্রীষ্মকালে ইপিআই এবং আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সংবাদ সংস্থাকে জানান তার অনুসন্ধান দলের স্কুবা ডাইভাররা সমুদ্রের তলদেশ থেকে আটলান্টিসের নিদর্শন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। এসব নিদর্শনের মধ্যে ছিল স্তম্ভ আর প্লেটোর বর্ণনা করা সর্পিল রাস্তা। এছাড়া বাহামাস আর ইউরোপ-আফ্রিকার মধ্যে কিছু পিরামিড, রাস্তা, দালানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এতে অনেক ইতিহাসবিদ আর প্রতœতত্ত্ববিদ বিশ্বাস করতে শুরু করেন আটলান্টিসের অস্তিত্ব; কারণ মায়া পুরাণেও আছেÑতারা এক প্রলয়ের পর তাদের সমুদ্রের মাঝখানের দেশ থেকে এখানে আসে। ১৯৭০ সালে ডক্টর রে ব্রাউন বাহামাসের কাছ থেকে কিছু ধাতব বস্তু এবং ক্রিস্টাল। এর মধ্য দিয়ে শক্তি প্রবেশ করলে তা বহুগুণে বর্ধিত হয়। ১৯৬০ সালে ডক্টর ভ্যালেনটাইন বাহামাসের সমুদ্রের নিচে প্রাচীন দালান, রাস্তার ছবি তোলেন।
বিভিন্ন পুরাণে যেসব ম্যাপ আছে, সেখানেও আটলান্টিস নামের ভূখণ্ড দেখানো হয়েছে। এমনকি কলম্বাস আমেরিকা যাওয়ার পথ অনুসন্ধান করার জন্য যে প্রাচীন গ্রিক ম্যাপ ব্যবহার করেছিলেন, তাতেও আটলান্টিস নামের ভূখণ্ড ছিল। মায়া, ভারত, মিসর, আটলান্টিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপের প্রাচীন পুথি আর পুরাণে সমুদ্রের মাঝের ভূখণ্ড এবং এর সঙ্গে ব্যাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা আছে।