Today 10 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

আমাদের দুখু মিয়া …

: | : ২৫/০৫/২০১৩

ca43660c85bbf7f5fae91cd715753a31

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। আর বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তোলার চিরবিপ্লবী, চিরবিদ্রোহী কবিতা ‘বল বীর-বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারি নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির! বল বীর কবিতার ৯০তম বর্ষপূর্তির বছরও এটি।

 

কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সনের ১১ জ্যৈষ্ঠ, ২৪ মে ১৮৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। শৈশব থেকে অর্থনৈতিক অনটনের মধ্য দিয়ে তিনি বেড়ে ওঠেন। দারিদ্র্যের কারণে বারবার তার লেখাপড়া বিঘি্নত হয়েছে। বাল্যকালে তিনি ছিলেন লেটোর দলের গায়েন। স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষা না দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এ সময় তার ঐতিহাসিক কবিতা ‘বিদ্রোহী’ প্রকাশিত হয়। ‘শির নেহারি আমারি নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির!’_ বিদ্রোহের এই দৃপ্ত ঘোষণা কেবল ব্রিটিশ শাসকদেরই কাঁপিয়ে দেয়নি, পালাবদল ঘটিয়ে দিয়েছিল বাংলা কবিতারও। সেনাবাহিনী থেকে ফিরে তিনি সাংবাদিকতাকে বেছে নেন। কিন্তু টিকতে পারেননি। শাসকের কোপানলে পড়েছেন, কারারুদ্ধ হয়েছেন। তবে নত হয়নি নজরুলের উচ্চ শির।

 

এরপর সংগীত ও সাহিত্য সাধনায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। থিয়েটার কোম্পানি, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি ও কলকাতা বেতারে কাজ করেছেন কবি। আমাদের রণসংগীত ‘চল্ চল্ চল্’-এর রচয়িতাও তিনি। অসংখ্য কবিতা ও গান রচনার পাশাপাশি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছেন। কবিতায় নজরুল এমন এক যুগের সূচনা করেছিলেন, যা আধুনিক কবিতার পথকে সহজ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ বিশ্বের সব বাংলা ভাষাভাষীর কাছে তার কবিতা ও গান সমাদৃত। তার ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।

 

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি ও সংগীতজ্ঞ হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনিই প্রথম বাংলা গজলের প্রবর্তন করেন এবং উত্তর ভারতীয় রাগসংগীতের দৃঢ়ভিত্তির ওপর তা স্থাপন করেন। তিনি অনেক জনপ্রিয় শ্যামাসংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন।

 

নজরুল প্রায় তিন হাজার গান রচনা করেছেন, যার সুরারোপও নিজেই করেছেন। নজরুল সংগীত বা নজরুল গীতি হিসেবে বাংলার সংগীতভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বজনীন মুক্তি ও মানবতার মূর্তপ্রতীক এই কবি মধ্যবয়সে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। তাই আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। এমনি এক অবস্থায় ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে সপরিবারে ঢাকায় নিয়ে আসে। এরপর তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা ও ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

 

জাতীয় জাগরণের এই কবি ঢাকাতেই ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top