অপূর্ব সৌন্দর্যের বোয়ালিয়াকুল সমুদ্র সৈকত
চট্টগ্রাম থেকে ২৮কিঃমিঃ উত্তরে বাঁশবাড়িয়া নামক বাজারের পশ্চিম দিকে গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত আঁকা-বাঁকা পিচঢালা এক কিঃ মিঃ পথ অতিক্রম করলেই ধরা দিবে এই বোয়ালিয়াকুল সমুদ্র সৈকত। সমুদ্র তীরে বিশাল ঝাউ বনের পাশে এখানে আছে বিস্তীর্ণ বেলাভূমি। এ সৈকতটির সৌন্দর্যও সহজেই দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম পর্যটকদের। চট্টগ্রাম শহর থেকে বেবি টেক্সি কিংবা বাসে সহজেই আসা যায় জায়গাটিতে। শহরের অলঙ্কার মোড় থেকে সীতাকুণ্ডগামী যেকোনো বাসে উঠে আসতে পারেন।
এখানে এসে নির্বিঘে ঘুরে বেড়ানো যাবে, আহরন করা যাবে প্রকৃতির শোভা। উত্তরে কেওড়া ও ঝাইগাছের বনাঞ্চল, দক্ষিণে ঝাউ বাগান ও নতুন জেগে উঠা বিশাল বালির মাঠ। ২০০৪ সালে ২৮ফুট প্রশস্ত দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে উপকুলীয় বন বিভাগ ঝাউগাছ লাগায়। আর্কিটেকচারার পদ্ধতিতে লাগানো এ ঝাউবাগান দর্শনার্থীদের দারুণ বিমোহিত করে। সমুদ্রের তীর ঘেঁষে এ মাঠে দাঁড়িয়ে পশ্চিমে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে সমুদ্রের পানির হৃদয় ছোঁয়া ঝিকিমিকি, সন্দ্বীপ থেকে আসা লঞ্চ-ষ্টিমার কিংবা জেলেদের ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। ঝাউ বাগানের সারি সারি ঝাউ গাছ সব মিলিয়ে এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য।
তবে সৌন্দর্য্য পিয়াসুরা মনে করেন, এখানে কিছু শোভা বর্ধনকারী বৃক্ষরোপন, প্রয়োজনীয় স্থানে ফুলের বাগান, শৌচাগার নির্মাণ, নিরাপত্তা ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হলে এই স্থানটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে ছাড়িয়ে যাবে। এবিষয়ে প্রয়োজন শুধু সরকারী উদ্যোগ, সরকারের একটু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে পাবে বোয়ালিয়াকুল সমুদ্র সৈকতের দৃশ্যপট।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে যেতে পারেন চট্টগ্রাম শহরে। ঢাকার বাসগুলো সাধারণত শহরে প্রবেশ করে ফয়’স লেকের সামনের সড়ক থেকেই। শহরের যেকোনো জায়গা থেকে খুব সহজেই ফয়’স লেক আসা যায়। ঢাকা থেকে সড়কপথে গ্রিনলাইন (০২-৭১০০৩০১), সোহাগ (০২-৯৩৩৪১৫২), সৌদিয়া (০১১৯৭০১৫৬১০), টি আর (০২-৮০৩১১৮৯), হানিফ (০১৭১৩৪০২৬৭১) ইত্যাদি পরিবহনের এসি বিলাসবহুল বাস যায় চট্টগ্রামে। ভাড়া ৭৫০-১০৫০ টাকা। আর এস আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, শ্যামলী, হানিফ, ঈগল প্রভৃতি পরিবহনের সাধারণ মানের বাসে ভাড়া ৩৫০-৪৫০ টাকা। রেল পথে ঢাকা-চট্টগ্রামের পথে মহানগর প্রভাতী ঢাকা ছাড়ে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে, চট্টলা এক্সপ্রেস সকাল ৯টা বিশ মিনিটে, মহানগর গোধূলী ঢাকা ছাড়ে বিকেল ৩টায়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ঢাকা ছাড়ে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে, তূর্ণা ঢাকা ছাড়ে রাত এগারোটায়। ভাড়া এসি বার্থ ৭৫৬ টাকা, এসি সিট ৪৫৫ টাকা, প্রথম শ্রেণী বার্থ ৪৫৫, প্রথম শ্রেণী চেয়ার ২৯০ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণী ৩৮০ টাকা, শোভন চেয়ার ১৫০ টাকা, শোভন ১২৫ টাকা, সুলভ ১০০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান (০২-৯৫৬০১৫১-১০), জিএমজি এয়ারলাইন্স (০২-৮৯২২২৪৮) ও ইউনাইটেড এয়ার (০২-৮৯৫৭৬৪০), রিজেন্ট এয়ার (০২-৮৯৫৩০০৩)-এর বিমানে সরাসরি যেতে পারেন চট্টগ্রাম শহরে।
কোথায় থাকবেন
চট্টগ্রাম শহরে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের প্রচুর হোটেল আছে। এখানে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হোটেলের যোগাযোগের ঠিকানা দেয়া হলো। শহরের আগ্রাবাদ এলাকায় হোটেল আগ্রাবাদ (০৩১-৭১৩৩১১-৮), হোটেল পেনিনসুলা (০৩১-৬১৬৭২২, ৬১৯৮৫০)। স্টেশন রোডে হোটেল এশিয়ান (০৩১-২৮৫০৩৪৬-৮, ৮০০-২০০০ টাকায় কক্ষ আছে)। স্টেশন রোডে হোটেল সুপার (০৩১-৮৪১৪৫১-২, ৬০০-১৫০০ টাকায় কক্ষ আছে)। খুলশী এলাকায় হোটেল লর্ডস (০৩১-২৫৫২৬৭১-৪)। পাঁচলাইশ এলাকায় রওশন বোর্ডিং (০৩১-৬৫১৪১৬)। জুবিলী রোডে হোটেল টাওয়ার ইন (০৩১-৮৪২৬৯১-২)। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরের প্রতিটি এলাকাতেই আছে বিভিন্ন মানের হোটেল।