কলাগাছ !!…
আপনাকে যদি বলা হয়, কখনও কি কলাগাছ কিংবা কলা চাষ দেখেছেন? নিশ্চয়ই হ্যাঁ সূচক জবাব দেবেন। সাধারণত কলা ধরে গাছটির ওপরের অংশে। কিন্তু কলাগাছকে যতই গাছ হিসেবে অভিহিত করা হোক না কেন, ত্রিশ ফুট উচ্চতার দৈত্যাকৃতি গাছ কিংবা আমরা যতই ঔষধি উদ্ভিদ বলে মনে করি না কেন, এটি মোটেও কোনো গাছ নয়। বড় জোর এটিকে শক্ত ডাঁটাহীন লতা বলে অভিহিত করা যায়। বস্তুত কলাগাছ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাণ্ড ছাড়া উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদের পাতা খুব পুরু হয়।
উদ্ভিদবিজ্ঞানী মালানের মতে, ভারতবর্ষ ও চীন হচ্ছে কলার আদিভূমি। কিন্তু আরেক বিজ্ঞানী হিল পাক-ভারত ও মালয়কে কলার উৎপত্তিস্থল বিবেচনা করেছেন। এটি একটি বীরুৎ শ্রেণীর উদ্ভিদ। আবার একবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে অভিহিত করা যায়। অধিকাংশ জাতের গাছই বহুবর্ষজীবী । মাটির নিচে রাইজোম বা কন্দ এবং মাটির ওপরে একটি ছদ্মকাণ্ড বা সিউডোস্টেম নিয়ে এ গাছ গঠিত। কাণ্ড ও পাতা উভয়ই সবুজ হয়। কাঁচা কলার রঙ হয় সবুজ। তবে পেকে গেলে হলুদ রঙ ধারণ করে।
কলাচাষিরা ফলের জন্যই মূলত কলার চাষ করে। গাছের জন্য নয়। এ জন্য আমরা কলাগাছকে গাছ বলতে পারি না। কলাগাছে কলা ধরে গুচ্ছ গুচ্ছ করে। সাধারণত একটি কলার তোড়ায় দশটি গুচ্ছ থাকে। পুরো তোড়ায় কমপে ১৫০টি পুষ্ট কলা পাওয়া যায়। কলাগাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের তথ্যানুযায়ী, প্রতি রাতে কমপে এক ইঞ্চি করে বৃদ্ধি পায়। তবে কলাগাছকে গাছ বলি আর না বলি, কলা কিন্তু অসম্ভব উপকারী। কলা খেলে শরীরের কান্তি দূর হয়, হজমে সহায়তা করে, পরিপাকতন্ত্রের অতিরিক্ত অম্লত্ব নিরসন করে। শুধু তাই নয়, পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালের আস্তরণের ওপর একটি আবরণ সৃষ্টি করে আলসারের উত্তেজনাকে প্রশমন করে। কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়ার হাত থেকেও রা করে। পেটের তিকর জীবাণুকে উপকারী ব্যাকটেরিয়ায় রূপান্তরিত করে। বাতের চিকিৎসায় কলা এক মহৌষধ। উচ্চ পরিমাণ আয়রন থাকায় অ্যানিমিয়া চিকিৎসার জন্যও উপকারী। কারণ, কলা হিমোগ্গ্নোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।