একটি চিঠি
দোহাই তোমরা কেউ লিখনা আর। বন্ধ কর কলম। না না বন্ধ নয়। তাহলে আবার লেখার বাসনা জাগতে পারে। এ এক তীব্র নেশার জগৎ। যে নেশা শুধু রাত জাগায়। শুধুই ভাবায়। কখনো বিষন্নতা, কখনো দুঃখবোধ, কখনো তিক্ত অভিজ্ঞতা। আরো কতকিছু। কান্ধে ঝোলা ব্যাগ। তার মধ্যে কিছু বই, কিছু পত্রিকা, কিছু তথ্যের কাগজ-দলিল-দস্তাবেজ। কেজি পাঁচেকের বেশি বৈকি কম নয়। এই ওজন টেনে টেনে শরীলটায় আর্থারাইটিজ ক্ষয় ধরিয়েছে। তাও নিরূপায় বেচারা না খেয়ে পত্রিকা খরিদ করতে হচ্ছে- যার মধ্যে নেই জীবন বোধের উপজীব্য, রসবোধের সহজ চিন্তার খোরাক। আসা জাগানিয়া কোন খবর। আছে শুধুই মানবতা-মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিষ্ঠুর-নৃশংস ভীবৎস অসংখ্য মনোবৈকল্য জিঘাংসা চরিতার্থের ঠাঁসা ঠাঁসা খবর। আছে বস্তাপঁচা দূরগন্ধময় হিংসা-বিদ্বেষ হানাহানি গু-া ষ-া পা-া রাজনীতির খবর। আছে দুর্নীতি, লুণ্ঠন, চুরি-চামারি কিংবা ডজন ডজন খুনের খবর। আছে বন্য কুত্তার খেচাখেচি। তেলবাজি মতলববাজি ধান্ধাবাজি সম্পাদকীয় নীতির যতসব উপাদান। বইয়ের কথা আর নাই বললাম। লিখতে হলে লাইব্রেরিতে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে দেখতে হবে আপনি কাল যে বইটি পড়েছিলেন তা আর আজ নেই। ভাগ্য ভালো হলে পুরানা পল্টন মোড় কিংবা নিলখেত মার্কেটে পেতেও পারেন। হয়তো মলাট ছেড়া। তাই বলছিলাম এতোসব করে লেখার দরকারকি? কলমটি আন্তে করে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিলে আর তুলতে হবে না। কারণ আজকে আপনি ফেলে চলে আসবেন যদি কাল মনের নেশায় তুলতে যানও সেই জায়গাটা আর খঁজে পওয়া যাবে না। যদি মেধাশক্তি দারুণ প্রখর হয় তা হলে দেখবেন সেখানে বিল্ডিং উঠে গেছে। অতএব কলম খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর কলম না থাকলে লিখতেও হবে না। রাত জাগতে হবে না। চিন্তা করে করে মগজের সেরিব্রিয়াল কর্টেক্স শুকাতে হবে না। বিবেকবন্দি থাকতে হবে না। এই নীতিবোধের বন্দিদশা থেকে বেড়িয়ে আসা যাবে। তখন যা ইচ্ছা তাই করা সম্ভব হবে। ফিরে আসবে সুখ-সাচ্ছন্দ। আনন্দ প্রমোদপূর্ণ বৈচিত্রময় রসরঙ্ েভরা হরষিত প্রফুল্ল জীবন। (চলবে)