বেত্তান্ত
– পোলাটার বাপ নাই।
– না-না, মরে নাই তার বাপ; মোর তো বিয়াই অয় নাই।
– একদিন বিয়ানে পুকুরে মুখ ধুইতে যাই; দেখি গাছের গুঁড়ির লাহান এক জোয়ান মরদ, বুকভরা কালো কালো লোমে সুরুজ ঠিকরায়, দুই চক্ষের আগুনে বশীকরণ তেজ; আমার অবলা মন ছুইট্টা লুটায়া পড়ে, মন-পরাণ সব দিয়া ভালোবাসার স্বপ্ন উড়ায়া দিলাম ঘুড়ির লাহান।
– লাটাই হাতে জোয়ান হেই মরদটা কত কিছু হুনাইছে মোরে; আকাশের তারার মতন মিট্ মিট্ চক্ষে চাইয়া রইছি ঠায় তার কালাপনা মুখের পানে আর হুনছি বেবাক আশা আর পিরীতের কথা. . . . . ।
– নিদ্ নাই রাতে – খোয়াব আর খোয়াব ভাসে দিঘীর জলের ওই শালুকের লাহান।
……….
…………
– একদিন দেখি আর মরদটা নাই।
– হালের বলদ হারায়া চাষী যেমনে খুঁজে, তেমন কইরা সারা গেরামটা আঁতি পাঁতি খুঁইজ্যা হাঞ্জার বেলায় হক্কল আশারে মাঠের ঘাসের মইদ্যে ছিটাইয়, ছিতরায়া ফিরি।
– যেই চক্ষে রাত ভইরা দেখছি খোয়াব – নিদহারা সেই চক্ষে দরদর ঝইরা পড়ে জল অনর্গল।
– কানতে কানতেই বুঝি এই পোলা সব্বোনাশ অইয়া আইছে আমার পেডে ।