Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

দুঃসাহসী শাহীন (পর্ব-১০)

: | : ১৯/০৭/২০১৩

॥ বানানো স্বপ্ন ॥

ঐদিন নাস্তার পর থেকেই শাহীন পরিকল্পনা মতো তার সাথীদের সাথে আলোচনা করে, রাতের জানা সব কিছু। প্রথমে এক জনের সাথে সে এভাবে বলে, “আমি গত রাতে এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন দেখেছি। এ স্বপ্নের মাধ্যমে আমি বুঝতে পারছি আমাদেরকে অপহরণের আসল উদ্দেশ্য কি। কী হতে যাচ্ছে আমাদের জীবনের পরিণতি। তুমি যদি শুনতে চাও এবং খুব বেশি ভয় না পাও, তাহলে আমি পুরো স্বপ্নই তোমাকে বলি।”

এভাবে সাথীর মনোযোগ আকর্ষণ করার পর শাহীন আবারও বলে, “আমি দেখি, খুব সকাল সকাল শ্যামলী খালা আমাদের সবাইকে ঘুম থেকে জাগিয়ে গোসল করান। এরপর নাস্তা খেতে দেন। নাস্তা খেতে খেতেই একটি মাইক্রো এসে পড়ে বাড়ির ভিতর। আমাদের সবাইকে ওরা বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার নাম করে, ঐ মাইক্রোতে ওঠায়। এরপর চলতে থাকে মাইক্রো। আমাদের মাইক্রোটি বাড়ির বাইরে যাবার পর দেখি আরেকটি প্রাইভেট কারে পিছনে পিছনে আসে ঐ গুণ্ডামার্কা লোক দু’জন। আমি মনে করেছিলাম, সত্যি সত্যি বাড়িতেই যাচ্ছি। তাই মাইক্রোতে বসে বাড়ির এবং মা-বাবা, ভাই-বোনের কল্পনা করতে থাকি। সুন্দর কল্পনা করতে করতে একসময় আমি ঘুমিয়ে পড়ি। দীর্ঘ সময় ঘুমানোর পর হঠাৎ জেগে দেখি, আমরা আবারো এক অজ্ঞাত জায়গায় অচেনা বাড়িতে গিয়ে পৌঁছাই। সেখানে আমাদের নামতে বললে, আমরা সবাই নেমে পড়ি। এরপর বাড়িটির মাটির নিচের এক বিশাল কক্ষে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানে আরো কিছু শিশু-কিশোরদের দেখতে পাই। ওরা ভয়াতুর চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওদের চাহনী দেখে আমি মারাত্মক ভয় পেয়ে যাই। তারপরও আমি সাহস সঞ্চয় করে ওদের একজনকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করতে চাইলে, সে চোখ মুছতে মুছতে পিছনে সরে যায়। এতে আমি আরো বিচলিত হয়ে পড়ি। এরপর আরেকটি কিশোরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু সে ভয়ে ভয়ে কি বলে, তা আমি ঠিক বুঝতে পারি না। মনে হলো হিন্দী ভাষায় কথা বলে। তখন আমি আরো বেশি ঘাবড়ে যাই। আমার এ অবস্থা দেখে, তৃতীয় আরেকটি কিশোর ভয়াতুর দৃষ্টিতে চারদিক দেখে নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসে। এরপর সে চুপি চুপি আমাকে বলে, “তোমাদের ভাগ্যও আমাদের মতো খারাপ। তোমরা খুব মারাত্মক জায়গায় এসে পড়েছো! এটা হলো গিয়ে মানুষের ফার্ম  কসাইখানা। মুরগীর ফার্মে মুরগীর বাচ্চা লালন-পালনের মতো, এখানে মানব শিশু লালন-পালন করা হয়। এরপর জবাই করে হার্ট ও কিডনি বিক্রি করে দেয় – – – ! ” শাহীনের মুখেএতটুকু শোনার পরই তার সাথীর চোখে-মুখে নেমে আসে মৃত্যুর বিভীষিকা। থর থর করে কাঁপতে থাকে। একপর্যায়ে হাউ-মাউ করে কাঁদতে চায়। শাহীন ঝট করে তার সাথীর মুখে হাত দিয়ে চুপ করতে বলে। শাহীনের কথায় সে চুপ করলেও ছেড়ে দেয় মুক্তির বা বাঁচার আশা। এভাবে একজন একজন করে সবার সাথেই সে কথা বলে। তার স্বপ্নের কথা শুনে কম-বেশি সবাই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু শাহীন অনেকটাই আলাদা। সে নিজের মনকে শক্ত করে রাখার চেষ্টা করে। অন্যদেরকেও প্রবোধ দেয় এই বলে যে, আল্লাহ আছেন। আল্লাহই আমাদেরকে রক্ষা করবেন

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top