বাউলা
( বাউলা কে বানাইলো রে..
হাসন রাজারে বাউলা কে বানাইলো রে..)
ঠিকঠাক আছে সব, জীবন সংসার
অথচ দিনে ও রাতে কারা যেন ডাকে মিহি সুরে !
কোন মহাসভা ডাকে ?
ডাকে কোন বিরান প্রান্তর ?
সাগর, পাহাড়, ঢেউ ?
নাকি কোনও বিরহী অন্তর ?
ভাঁজভাঙ্গা ভোরবেলা রোদ ডাকে শিশির গলায়,
হঠাৎ ঝনাৎ করে কড়া নড়ে হৃদয়ের গভীর তলায় !
ফুলের আস্কারা পেয়ে বাউরি বাতাস শেখে ছিনালী স্বভাব
চকিতে ঝাউলি মারে পরিপাটি জামার হাতায়।
খিলখিল হাসি ফলে পান-খাওয়া ঠোঁটে
ডাহুকী গ্রীবায় জ্বলে রোদের ঝিলিক
আঁচলে মুদ্রিত দেখি মনিপুরী নাচ
শশক গোড়ালি ছোটে বিড়ালী আয়েশে
নরম বালিতে করে ছাপ ঝিকিমিকি
সবুজ দীঘির জলে কালশিটে ছায়া
টলমল করে ওঠে চোখের মতন
চোখের তারার মতো নেচে ওঠে প্রেয়সী দোয়েল
শারদীয় রোদ ঝরে কাশফুল নদীর উঠানে
ঘাড়ে নিয়ে গো-শালিখ লেজ নাড়ে
লাজরঙা অনাথ বাছুর
ছেঁড়াখোঁড়া সাদা মেঘ নীল মাঠে ইতিউতি ছোটে
গাঁয়ের কিষাণী বউ ঘোমটার নীচ থেকে
ধরাপড়া চোখে দেখে, আপন মরদ
কিভাবে মাটিতে ঢালে সকল দরদ
এসব আউলা ছবি কলিজার গোড়া ধরে
দেয় জোরে টান !
আমারে বাউলা করে !
একতারা দিয়ে বলে ধর শালা গান !
গানের নেশার কাছে মহুয়ার রস মারা পড়ে
তবু দেখি ফিসফিস করে ওঠে
একক দশক পড়া সংসারী মন
তবে কী আমিই ডাকি
আরেক আমাকে ?
কে ডাকে জানিনা আমি রাত দিন
শুধু জানি ডাকের ঢোলক বাজে
আমার উঠানে !