সুখের নীড়
তিস্তার তীরে মোর ছোট্ট একটি নীর ।
খরের ছাউনি দেয়া নয় ইটের প্রাচীর ।
ছেয়ে আছে আপন করে বটের ছায়ায় ।
সমুখে গাঙ্গের ধারা বয়ে যায় ।
মৃদু পবনে বট পত্রে বাজে রিনিঝিনি ।
প্রাতে জেগে উঠি পক্ষির গান শুনি ।
গাঙ্গের শীতল জলে নাইতে দারুণ মজা ।
আনন্দে কাটি সাঁতার উল্টা বাঁকা সোজা ।
বিলের জলে শাপলা ভাসে ।
রুপের গর্বে কমল হাসে ।
উড়ে এসে বসে থাকে শুভ্র বকের দল ।
ওদের সনে খেলতে আমার মন হয় চঞ্চল ।
বর্ষায় ঘরেতে হয় হাঁটু জল ।
ভেসে এসে ধরা দেয় বোয়াল চিতল ।
চকিতে নিয়ে উনুন করি রান্না ।
ধুয়ার জ্বালায় রাঁধুনির আসে কাঁন্না ।
তবুও রান্নার কি দারুণ স্বাদ !
সে লোভে কুটুম হয় গগনের চাঁদ ।
মেঝেতে ঘুমাই বিছিয়ে পাটি ।
বক্ষে জড়িয়ে সোনার মাটি ।
দখিণা বায়ু আসে বেড়ার ফাঁকে ।
মাঝ রাতে কাঁশ বনে শিয়াল ডাকে ।
তা শুনে করিওনা ভয়ে কম্পন ।
সবাই পড়শি মোরা সবার আপন ।
চন্দ্র তারা ছুটে আসে জ্যোত্সা রাতে ।
মন ভরে হাসে যখন ফোকলা দাঁতে ।
তার আলোয় বসে বসে গল্প বলি ।
চাঁন্দের বুড়ি আর ঠাকুমার ঝুলি ।
তিমির রাতে নেচে নেচে জোনাই জ্বলে ।
ছোটন বাবু হাতে নিয়ে কথা বলে ।
তুই যে আমার খেলার সাথী ।
পড়ার সময় আলোর বাতি ।
গাছে দেখ কত শত তাজা তাজা ফল ।
দীঘির আয়না জলে ভাসছে কাতল ।
চায় যদি আনব ডাঁশা ডাঁশা পেয়ারা ।
টল টলে জামরুল অঢেল জাম্বুরা ।
গুড়া মাছে শাক ভাজা ।
খেতে কি যে মজা !
এসে যদি খাও তবে কচু ফুলের ডাল ।
এর স্বাদ মুখে লেগে থাকবে চিরকাল ।
দেখে যাও কত সুখ ! করছি আমন্ত্রণ ।
আকাশ চুম্বি কেল্লার নেই প্রয়োজন ।