বৃদ্ধাশ্রম থেকে পাঠানো এক মায়ের চিঠি
খোকা তুই কেমন আছিস ?বউমা আর আমাদের ছোটো দাদুভাই সবাই ভালো আছে তো?জানি ,তোদের তিন জনের ছোটো সংসারে প্রত্যেকেরই খুব কাজ ;তবুও তোদের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ : একদিন একটু সময় করে এই বুড়িটাকে দেখতে আয় না !কিরে , আসবি না ?
ওঃ বুঝতে পেরেছি !এখনো আমার উপর থেকে অভিমান যায় নি বুঝি !জানি শেষ দিনটাতে একটু বেশি রকমেরই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছিলাম ; তাছাড়া আর কিইবা আমি করব বল :সময় মতো ওরা এসে আমার জিনিসপত্র সব জোর করে ওদের গাড়িতে উঠিয়ে নিল, তারপর বারবার তাগদা দিতে লাগল ।কিন্তু আমি তবুও তোর আসবার অপেক্ষায় বুক বেঁধে ছিলাম ।আমি তোকে জন্ম দিয়েছি ;জল-আগুন-অসুখ থেকে তোকে এতগুলো বছর বাঁচিয়ে রেখেছি।তাই যাবার আগে আমাকে কি তুইনা দেখে থাকতে পারবি? কিন্তু তুই এলি না !
আর সেদিন আমার সেই জেদ দেখে বউমা তো রেগেই আগুন;তাছাড়া তার তো রাগবারই কথা!
আমাকে নিয়ে যেতে যারা এসেছিলো; অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা যা তড়িঘড়ি শুরু করে দিল…
তা দেখবার জন্য পাশের বাড়ি থেকে কেউ কেউ উঁকি দিতে লাগল ।
সেদিন তোদেরকে যে অপমান করে এসেছি :তোরা সেসব ভুলে যাস কেমন করে !আমার কথা ভাবিস না ।আমি খুব ভালো আছি !আর কেনই-বা ভাল থাকবনা বল ?তোরা তো আমার ভালো থাকবারই বন্ধবস্ত করে দিয়েছিস ।আর যেদিন থেকে আমি বুঝতে পেরে গেছি : আমাকে এখানে পাঠিয়ে তোরা বেঁচে গেছিস ;ভুল করেও ,সাত জন্ম আর এ পথ মারাবিনা ;
সেদিন থেকে আরো ভালো আছি।তবে একটা কথা :আমার কথা যদি তোর কখনো-কোনোদিন মনে পড়ে ;তখন যেন নিজেকে তুই শেষ করে দিস না ।তুই এখনো একশ বছর বেঁচে থাক ।
আমি তো মা :তোর জন্য কত সয়েছি ! এরপরেও সয়ে যাবো ॥
ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত